
কলম্বিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি স্কুলবাস খাদে পড়ে অন্তত ১৭ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় বাসটিতে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কসহ মোট ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। খবর জানিয়েছে ডেইলি মেইল।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে আনতিওকিয়া বিভাগের গভর্নর আন্দ্রেস জুলিয়ান জানান, বাসটি ক্যারিবীয় উপকূলীয় শহর টোলু থেকে মেডেলিনের দিকে যাচ্ছিল। এতে লিসেও আনতিওকেনো হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ছিলেন। গভর্নর জানান, শিক্ষার্থীরা সমুদ্রসৈকতে তাদের গ্র্যাজুয়েশন উদযাপন শেষে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরের এমন সময়ে এই দুর্ঘটনা পুরো সম্প্রদায়ের জন্যই অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এল কলোম্বিয়ানো জানায়, দুর্ঘটনা ভোর আনুমানিক ৫টা ৪০ মিনিটে রেমেদিওস ও সারাগোসা সংযোগকারী সড়কের এল চিসপেরো এলাকায় ঘটে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বাসটি প্রায় ৮০ মিটার গভীর খাদে পড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো তদন্তাধীন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভ্রমণটি স্কুলের আনুষ্ঠানিক কোনো কার্যক্রম ছিল না; এটি শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন বাসচালক জনাতান তাবোর্দা কোকাকোলো। তিনি পর্যটন পরিবহন সংস্থা প্রিকালচারের হয়ে কাজ করতেন। আনতিওকিয়া পর্যটন নেটওয়ার্ক তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
সেগোভিয়ার মেয়র এডউইন কাস্তানেদা জানান, আহতদের বয়স ১৬ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। তাদের সেগোভিয়া ও রেমেদিওসের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রেমেদিওসের সান ভিসেন্তে দে পল হাসপাতালে ১৬ জন আহতকে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ জন কিশোর।
লিসেও আনতিওকেনো হাই স্কুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমাদের শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ২০২৫ সালের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা যারা এই ভ্রমণে অংশ নিয়েছিল, এই গভীর শোকের মুহূর্তে আমরা তাদের এবং আমাদের পুরো সম্প্রদায়ের পাশে আছি।” শোকের প্রতীক হিসেবে স্কুলটি তাদের প্রোফাইল ছবিতে কালো ফিতা যুক্ত করেছে।
জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা সংস্থা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রেমেদিওস পৌরসভার আওতাধীন সেগোভিয়া-আনতিওকিয়া মহাসড়কে এই সড়ক দুর্ঘটনায় তারা গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, দুর্ঘটনার কারণ ও নিহত-আহতের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত চালাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা সংস্থা সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানাচ্ছে। ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এড়ানোর মাধ্যমে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব, যা কলম্বিয়ার অসংখ্য পরিবারকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।