
একটি শব্দই বদলে দিতে পারে আইনি ব্যাখ্যা—এমনই এক আলোচিত রায়ে যুক্তরাজ্যের হাই কোর্ট জানিয়েছে, কোনো পুরুষকে ‘বাল্ড’ (টাক) বলে অপমান করা আইনগতভাবে যৌন হয়রানি (Sexual Harassment) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে দেশজুড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
মামলাটির সূত্রপাত ২০১৯ সালে। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান টনি ফিন অভিযোগ করেন, তার কর্মস্থলের বস তাকে ‘stupid bald cunt’ বলে গালিগালাজ করেন। বিষয়টি কর্মক্ষেত্রে অপমানজনক ও হয়রানিমূলক আচরণ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে গড়ায়। শুনানি শেষে আদালত মত দেন, ওই মন্তব্য গ্রহণযোগ্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
রায়ে বিচারকেরা উল্লেখ করেন, টাক হওয়া বা চুল না থাকা বিষয়টি প্রধানত পুরুষদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাই কাউকে ‘বাল্ড’ বলে হেয় করা লিঙ্গভিত্তিক মন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যা যুক্তরাজ্যের সমতা ও বৈষম্যবিরোধী আইনের আওতায় পড়ে।
এই রায়ের একটি ব্যতিক্রমী দিক নিয়েও আলোচনার ঝড় উঠেছে—মামলাটির রায় দেওয়া তিন বিচারকই ছিলেন টাক। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক হাস্যরস ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
রায়ের পর অনলাইনে প্রতিক্রিয়া ছিল বিভক্ত। কেউ কেউ একে অতিরঞ্জিত সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করেছেন। আবার অনেকে মনে করছেন, যেভাবে নারীদের শারীরিক গঠন বা চেহারা নিয়ে কটূক্তিকে হয়রানি হিসেবে দেখা হয়, একই যুক্তিতে পুরুষদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা থাকা যৌক্তিক।
বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় কর্মক্ষেত্রে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যুক্ত করেছে এবং লিঙ্গভিত্তিক হয়রানির সংজ্ঞাকে আরও বিস্তৃত করেছে।