কেজি দরে সরকারি বই বিক্রি করেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

আক্কেলপুরে কেজি দরে সরকারি বই বিক্রি করা সেই প্রধান শিক্ষক এলাকাবাসীর তোপের মুখে বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হলেন। মঙ্গলবার অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তার অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করলে নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। অভিযুক্ত শওকত আনোয়ার শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিগত বছরের বই ফেরত নেন। গত রোববার সেই বই জালাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। জালাল হোসেন ভ্যান বোঝাই করে বই নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েক যুবক তাঁকে আটক করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। নিয়মবহির্ভূতভাবে বইগুলো বিক্রির কথা স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে সমকালে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইমরান হোসেনকে। মঙ্গলবার শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে তদন্ত করতে যান। এ সময় অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। প্রধান শিক্ষকের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যান তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন। অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বই বিক্রি, ভর্তির জন্য টাকা দাবি করা, স্কুল উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ, প্রাইভেট বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি দুর্নীতিবাজ শিক্ষক। এরকম শিক্ষককে এই প্রতিষ্ঠানে চাই না। তাঁকে দ্রুত অপসারণ করা হোক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ঘটনার তদন্ত চলছিল। এ সময় উত্তেজিত অভিভাবকরা তাঁর অপসারণ দাবি করেন। প্রধান শিক্ষকের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাঁকে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সত্যতা পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেসরকারি কলেজে ঈদের আগেই বেতন-বোনাস দেওয়ার আহ্বান

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস ছুটির আগেই পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং ও ইভালুয়েশন দপ্তর থেকে প্রকাশিত একটি স্মারকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাহাব উদ্দিন আহাম্মদের সই করা এই স্মারকে বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও সভাপতিদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ঈদের ছুটির আগেই সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, ঈদের আনন্দ সবার জন্য নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিত করতে যথাসময়ে আর্থিক পাওনাদি পরিশোধে প্রয়োজন। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রত্যাশা করা হয়েছে। এই নির্দেশনার অনুলিপি বেসরকারি কলেজগুলোতেও পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজ থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ডাকে তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে অর্ধদিবস কর্মবিরতি শেষ হয়েছে রোববার (২৫ মে)। সোমবার (২৬ মে) থেকে তারা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভপতি এবং সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে তিন দফা দাবিতে ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এক ঘণ্টা, ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দুই ঘণ্টা, ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তাদের তিন দফা দাবি হলো: কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ। ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া। এ ছাড়া বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী শুক্র ও শনিবার বিদ্যালয় বন্ধ রাখা এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেন অনুষ্ঠিত হয় সে দাবিও তারা করেছেন।

ঢাবি উপাচার্যের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক, টাকা চাইছে প্রতারক চক্র

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় একটি প্রতারক চক্র উপাচার্যের পরিচিতদের কাছে অর্থ চাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সহায়তায় আপাতত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে অ্যাকাউন্টটি কীভাবে ও কখন হ্যাক হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর ডিবি পুলিশের সহায়তায় নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। ওই নম্বর থেকে যেসব নম্বরে চ্যাট করা হয়েছে, সেসব নম্বরে শনিবার দুপুরে হ্যাকার ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করার জন্য মেসেজ পাঠান। এই মেসেজ পেয়ে অনেকে বিস্মিত হন। পরে জানা যায়, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি হ্যাকিংয়ের শিকার। এ বিষয়ে সাকিব হাসান নামে সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, আমার নিউজগুলো আমি ভিসি স্যারের হোয়াটস্যাপে সেন্ড করি ম্যাক্সিমাম সময়। স্যারের হোয়াটস্যাপ অ্যাকাউন্ট সম্ভবত হ্যাক হয়েছে। আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা চাচ্ছে। অন্য এক সাংবাদিককে উপাচার্যের নম্বর থেকে ১৫ হাজার টাকা চেয়ে মেসেজ পাঠানো হয়। মেসেজে বলা হয়, বিকাশে ১৫ হাজার টাকা হবে? আমার আর্জেন্ট লাগবে। এখন পাঠিয়ে দেওয়া যাবে? এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, উপাচার্য স্যারের দাপ্তরিক ফোন নম্বর হ্যাকড হয়েছে। সেখান থেকে অনেকের কাছে টাকা চেয়ে মেসেজ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে আমরা ডিবিতে জানিয়ে নম্বরটি বন্ধ রেখেছি। তবে উপাচার্যের ব্যক্তিগত নম্বর নিরাপদ আছে।

প্রাথমিক শিক্ষকরা সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ডাকে তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে অর্ধদিবস কর্মবিরতি আজ রোববার শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ সমকালকে বলেন, দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করবেন। এর আগে তিন দফা দাবিতে ৫ মে থেকে ১৫ পর্যন্ত ১ ঘণ্টা, ১৬ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত ২ ঘণ্টা , ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। শিক্ষকদের তিন দাবি হলো- কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান। এছাড়া বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার ও শনিবার বিদ্যালয় বন্ধ রাখা এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেন অনুষ্ঠিত হয় সে দাবিও জানয়েছেন শিক্ষকরা।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী

চলতি বছরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৩১ মে (শনিবার) বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ৭টি বিভাগের ৮৭৯টি কেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষায় অংশ নেবে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে রোববার (২৫ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে একটি জুম মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। এতে দেশের সব কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিবরা অংশগ্রহণ করবেন। মিটিংয়ের লিংক, আইডি ও পাসওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট কলেজ কেন্দ্রসমূহের ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে ১৪ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আশেক কবির চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৪৭টি কেন্দ্র, খুলনা বিভাগে ১৫৬টি কেন্দ্র, রাজশাহী বিভাগে ১৪৩টি কেন্দ্র, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৪টি কেন্দ্র, রংপুর বিভাগে ৯৬টি কেন্দ্র, বরিশাল বিভাগে ৫৯টি কেন্দ্র এবং সিলেট বিভাগে ৪৪টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন সরকারি কলেজের পাশাপাশি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। ১০০টি প্রশ্নের উত্তর এক ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। মেধাতালিকা প্রস্তুতিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৪০ শতাংশ এবং এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৬০ শতাংশ যোগ করে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে। তবে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র এবং এইচএসসি রেজিস্ট্রেশন কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা গেলেও মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রসঙ্গত, প্রথমে গত ৩ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে তা ২৪ মে করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা ৩১ মে পুনর্নির্ধারণ করে।

৮০ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন তিন ছাত্রনেতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, সাম্য হত্যার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রায় ৮০ ঘণ্টা ধরে অনশনরত তিন ছাত্র অনশন ভেঙেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের আশ্বাসের পর তারা অনশন ভাঙেন। শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাবির ডা. মোহাম্মদ মর্তুজা মেডিকেল সেন্টারে পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান উপাচার্য। এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, বিকেলে অনশনরতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এছাড়াও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজাহার আগেই ডাকসু নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান তিনি। তার এই আশ্বাসের ফলে অনশনরত তিন ছাত্র অনশন ভাঙতে রাজি হন। তিন দফা দাবিতে গত বুধবার (২১ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। একই দিন সন্ধ্যায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাহতাব ইসলাম অনশনে বসেন। পরবর্তীতে ২২ মে সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে অনশনে বসেন স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দিন মোহাম্মদ খালিদ।

এইচএসসি পরীক্ষায় নকল-প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ৩৩ নির্দেশনা

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৬ জুন। এ পরীক্ষায় সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে শেষ করার জন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রতি একগুচ্ছ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে মোট ৩৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- পরীক্ষার সময়সীমা, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ ও বিতরণ, প্রশ্নফাঁস ও নকল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, শিক্ষার্থীদের আসনবিন্যাস, কক্ষ পরিদর্শকের হার, পরীক্ষার দিনে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ক্লাস বন্ধ রাখা এবং স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে পরীক্ষার দিনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের চিভনিং ও কমনওয়েলথ স্কলারদের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংবর্ধনা

যুক্তরাজ্য সরকারের কমনওয়েলথ ও চিভনিং স্কলারশিপ পেয়ে যেসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, তাদের সংবর্ধনা দিয়েছে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন। শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে হাইকমিশনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কমনওয়েলথ ও চিভনিং স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ৪০ জন শিক্ষার্থীকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন প্রতিনিধি এবং ঢাকাস্থ ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম বলেন, কমনওয়েলথ ও চিভনিং স্কলারদের এই অসাধারণ অর্জন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী করে তোলে। এই মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপ অর্জনের মাধ্যমে আপনারা শুধু নিজেদের আলাদা করে তুলেননি, বরং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্ব আরও সুদৃঢ় করেছেন। এসময় যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পুরো সময়জুড়ে হাইকমিশনের তরফ থেকে শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন হাইকমিশনার। বাংলাদেশের চিভনিং ও কমনওয়েলথ স্কলারদের সংবর্ধনা বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, এ ধরনের স্কলারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মধ্যে সস্পর্ক আরও জোরালো হবে। চিভনিং সেক্রেটারিয়েট ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু চ্যাডউইক বলেন, স্কলারশিপ সংখ্যা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে রয়েছে। সবাই সেটাই চায়। কিন্তু ফান্ড সীমাবদ্ধতার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে প্রতিযোগিতাও বেশি। স্কলারশিপ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন এবং কোম্পানির সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করা হবে। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ম্যাগি গনকাভস বলেন, কমনওয়েলথ স্কলারশিপের সঙ্গে অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের সম্পর্ক রয়েছে। আশা করি এই স্কলারশিপের আওতায় যারা যুক্তরাজ্য পড়াশোনা করতে এসেছেন তারা দেশে ফিরে গিয়ে সেটি কাজে লাগাবেন। নিজেদের কমিউনিটিতে উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।

স্কুলের দরজা-জানালা বিক্রি করেছে বিএনপির ৩ নেতা, সহযোগিতায় ছিলেন প্রধান শিক্ষক

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবনের লোহার দরজা, জানালা ও রড বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির ৩ নেতার বিরুদ্ধে। জানা গেছে, যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের এফএমবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ভবনের মালামাল বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা ভাগাভাগি করেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন, দেয়াড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম সাগর এবং বিএনপি নেতা আমিন হোসেন। বিএনপি এ কাজে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন স্কুলের ইট ও সুড়কি দিয়ে নিজের বাড়ির রাস্তার কাজ করায়। এ ছাড়াও স্কুলের ঘর ভাঙার লোহার দরজা, জানালা ও লোহার রড বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেয় আরও ২ নেতা। তবে বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই বিদ্যালয়টি গ্রামের শিক্ষার প্রাণ। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলটির এক শিক্ষক বলেন, ‘আমরা খুব আতঙ্কে আছি। কিছু বললে হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কায় আছি।’ এ বিষয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে মালামাল নিয়েছি। আর মাত্র ২হাজার টাকার সুড়কি আমার বাড়ির রাস্তার জন্য ব্যবহার করেছি। প্রধান শিক্ষক আমাদের বিক্রি করার জন্য দিয়েছিল, তাই আমরা ওই মালামাল স্কুল থেকে নিয়ে এসেছিলাম।’ বিএনপি নেতা শাহ-আলম সাগর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ওই স্কুলে ওয়াশব্লকের কাজ দেখতে গিয়েছিলাম।’ এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহান ঝরনা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা স্কুলের জন্য একটি রুমের বরাদ্দ পেয়েছি। এ কারণে একটি ঘর ভাঙতে হয়েছে। ঘর ভাঙার সব মালামাল আমির হোসেন ও সাগর নিয়ে গেছে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে তারা সুযোগ পেয়েছে। মালমালের বিষয় তিনি বলেন, আমির ও সাগর ২৬ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে বলে আমায় জানিয়েছে। আমাকে ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তা গ্রহণ করেনি। তিনি আরও বলেন, ‘পরে জানতে পারি তারা ওই সকল মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে। পরবর্তীতে আমি টাকা না নিয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে (এটিও) জানিয়েছি।’ এ বিষয় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সোহেল রানার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। যশোর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি এ বিষয় কিছুই জানেন না। তবে খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী কোটা বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানে এতদিন মোট শিক্ষক পদের মধ্যে শহরাঞ্চলে ৪০ শতাংশ এবং মফস্বল অঞ্চলে ২০ শতাংশ পদে নারী প্রার্থী নিয়োগ বাধ্যতামূলক ছিল। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। ১৫ মে সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রারম্ভিক স্তরে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের ক্ষেত্রে নারী কোটা থাকবে না। ফলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ নারী কোটায় নির্ধারিত এ পদগুলোতে পুরুষ প্রার্থীদের সুপারিশ করত না। এবার সে বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হল। তবে এমপিও নীতিমালায় বেসরকারি স্কুলের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বেসরকারি কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক পদে নিয়োগের যোগ্যতা ও শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের এ আদেশ প্রজ্ঞাপন স্বাক্ষরের দিন থেকে কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা কোটা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও আগের শর্ত অনুযায়ী বেসরকারি গার্লস স্কুলের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বেসরকারি মহিলা কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক পদে নারী প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশ পাবেন।” নিয়োগের জন্য নির্ধারিত পদের বিপরীতে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশের দায়িত্ব পালন করে এনটিআরসির শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান অনুবিভাগ। এ বিভাগের পরিচালক ও যুগ্ম সচিব কাজী কামরুল আহছান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০১২ সালে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে মহিলা প্রার্থীদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষক পদের ৪০ শতাংশ এবং মফস্বল অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষক পদের ২০ শতাংশ নারী প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত ছিল৷ “তবে হাওর অঞ্চল, দুর্গম এলাকা তিন পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকা ছাড়া অন্যান্য স্থানের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী প্রার্থীদের জন্য কোনো কোটা নির্ধারিত ছিল না।” আন্দোলন চলার মধ্যে গত বছর ২৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারি চাকরির কোটার নতুন বিন্যাস ঠিক করে দিয়ে আদেশ জারি করে। আদেশে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। বাকি ৯৩ শতাংশ পদে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে।

কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভিসির পদত্যাগ

শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি প্রফেসর ড. মো: হযরত আলী। তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার ড. মো. আনিসুর রহমান ভূঞা। তিনি জানান, বুধবার (২১ মে) তিনি ইউজিসিতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে পদত্যাগের কারণ এখনই জানানো সম্ভব নয়। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে চলছে অচলাবস্থা। পরে শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের প্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। গত ১ মে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি শিক্ষকরা। ছাত্রদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানায় কুয়েট শিক্ষক সমিতি।

শরিফুলের হাফেজ হতে লাগলো মাত্র ৬ মাস

শরিফুল ইসলাম, বয়স ১৩ বছর। অভাব অনটনের সংসারে বেড়ে ওঠা। সাত বছর বয়সেই হারিয়েছে বাবাকে। কয়েক বছর না যেতেই তার মা চলে যান নতুন সংসারে। তখন ছোট্ট শরিফুলের জন্য এগিয়ে আসেন এক মাদরাসা শিক্ষক। বছরখানেক আগে তাকে তার মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। কায়দা ও আমপারা শেখার পর মাত্র ছয় মাসেই পবিত্র কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছে সেই শরিফুল। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের ঈদুলপুর গ্রামের আজিজার-জুলেখা দম্পতির ছেলে শরিফুল ইসলাম। সে এলাকার দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসার শিক্ষার্থী। মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হওয়ায় খুশি তার মা ও স্থানীয়রা। আনন্দিত মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। স্থানীয়রা জানান, যখন শরিফুলের বয়স মাত্র সাত বছর তখনই তার বাবা মারা যান। বাবা হারা শরিফুলের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া অভাবের সংসারে প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। ঠিক সেই সময়ে দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসার পরিচালক মুফতি হাসান আহমেদ আফেন্দী শিশুটির পাশে দাঁড়ান। গত বছরের ডিসেম্বরে তার ব্যক্তিগত খরচে শিশুটিকে মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। এদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর নতুন সংসারে চলে যাওয়া শরিফুলের মা জুলেখা বেগম সন্তানের ভরণপোষণ দিতে পারেননি। দিতে পারেরনি পড়ালেখার অর্থের যোগান। কিন্তু সন্তানের টানে মাঝেমধ্যে ঠিকই ছুটে আসতেন মাদরাসায়। খোঁজ রাখতেন শরিফুলের। সন্তানের এই অর্জনে খুশি মা জুলেখা। এ জন্য তিনি মাদরাসার পরিচালক হাসান আহমেদ আফেন্দীর আন্তরিকতা, প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতাকে স্মরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। হাফেজ শরিফুল ইসলাম বর্তমানে উপজেলার জায়গীরহাট পুরাতন গরুহাটি সংলগ্ন দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসায় পড়ালেখা করছে। তার এই অর্জন মাদরাসার অন্য শিক্ষার্থী এবং এলাকার মানুষজনকে কোরআন শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সাজু মিয়া জানান, ছেলেটা (শরিফুল) খুব মেধাবী। তার এই সাফল্যে আমরা গ্রামবাসী গর্বিত। ছেলেটিকে যদি সরকারি সহযোগিতা করা যায়, তাহলে সে আরও উন্নতি করতে পারবে। শরিফুল ইসলাম বলে, আমি বড় হয়ে বরেণ্য আলেম হতে চাই। ইসলামের খাদেম হতে চাই। আল্লাহ যেন আমাকে কবুল করেন। শিশুটির শিক্ষক দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসার পরিচালক মুফতি হাসান আহমেদ আফেন্দী বলেন, শরিফুল খুবই মেধাবী ও উদ্যমী। বাবা-মাকে হারানো এই শিশুটিকে ছোটবেলা থেকে আমার সঙ্গে রেখেছি। মসজিদ ও মাদরাসামুখী শরিফুল কায়দা, আমপারা শেষ করলে গত বছরের ডিসেম্বরে আমার মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। ছয় মাসেই সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছে। তিনি আরও বলেন, শরিফুলের এমন অর্জনে আমাদের সবাই খুবই খুশি। তার এই সাফল্যে দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসার নাম উজ্জ্বল হয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ উন্নতি কামনা করছি। মহান আল্লাহ তাকে অনেক বড় আলেম হিসেবে কবুল করুন সেই দোয়া করি।

সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের মশাল মিছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে ছাত্রদল। সোমবার (১৯ মে) রাত ৮টার দিকে ঢাবি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘খুনি কেন বাইরে, প্রশাসন কী করে’, ‘আমার ভাই মরল কেন, শাহবাগ থানা জবাব চাই’সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ১৩ মে রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি এএফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

আজ থেকে পাবিপ্রবিতে তিন-দিনব্যাপী ‘ট্রেনিং অন ই-জিপি’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন-দিনব্যাপী ‘ট্রেনিং অন ই-জিপি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-রিসোর্স সেন্টারে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল বলেন, সবকিছুতে পরিবর্তন চলছে। পরিবর্তনের সাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ খুবই কার্যকর পদ্ধতি। প্রশিক্ষণে প্রাপ্ত জ্ঞান পেশাগত কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে হবে, সেবা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্মীদের দক্ষ করার সকল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতা পেলে কাজে গতি আসবে, বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় দেশ চলে, সরকার চলে। এই টাকার সঠিক ব্যবহার শিখতে হবে। প্রশিক্ষণার্থীরা ই-জিপি বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করে পেশাগত কাজে লাগালে বিশ্ববিদ্যালয় উপকৃত হবে। উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জ্ঞান চর্চা না করলে প্রশিক্ষণের কোন কার্যকারিতা থাকবে না। কেবল সনদপ্রাপ্তি হবে। প্রশিক্ষণের জ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে লাগাতে হবে। প্রশিক্ষণ নিয়মিত প্রক্রিয়া,এটাকে যথাযথভাবে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে হবে। পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম গোলজার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রোগামার প্রকৌশলী শহিদুল হক পলাশ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিভিন্ন দপ্তরের ২৪ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করছেন।

৭ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতসহ সংশ্লিষ্ট যৌক্তিক দাবিগুলো প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট উপস্থাপন না করায় বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে চবি ছাত্রশিবির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৭ দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, উপাচার্য স্যার বলেছেন, ‘তোমাদের দাবির সাথে আমার দাবিগুলো যুক্ত করো।’ আমরা আপনার দাবিগুলো কাকে জানাবো? আপনিই তো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। আপনার দাবি যদি থাকতো, তাহলে আমাদের দাবির সাথে যুক্ত করে কেন সেটা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে উপস্থাপন করেননি? এর জবাব আপনাকে দিতে হবে। তিনি বলেন, আপনি বলেছেন যারা অবৈধ ও টাকার মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে, তাদের কারণে ৪০ বছর এই বিশ্ববিদ্যালয় অকেজো থাকবে। তাহলে তারা কেন শিক্ষকের পদে থাকবে? যারা আমাদের ভাইকে হত্যা করেছে, শহীদ মিনারে রক্ত ঝড়িয়েছে, তারা কেন এখনো বিভিন্ন পদে পদায়ন হচ্ছে? কেন তাদেরকে বহিষ্কার করা হচ্ছে না? তাদেরকে সাথে নিয়ে আপনারা কিসের কনফারেন্স-সেমিনার করেন? বিক্ষোভ সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি, মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক খুররাম মুরাদ, চবি শাখা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী, শাখা শিক্ষা সম্পাদক পারভেজ উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রশিবিরের ঘোষিত ৭ দফা দাবি হচ্ছে শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে, সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করতে হবে, জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সাথে জড়িত সকলের বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।

জবি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিউম্যান রাইটস সোসাইটি। এ সময় তারা জবি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের হামলায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। রোববার (১৮ মে) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে আয়োজিত এ মানববন্ধনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নেন। তারা ১৪ মে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের অতর্কিত হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে পুলিশ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে জল কামান, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়। মানববন্ধনে জবি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছিল। সেখানে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা করেছে। আমরা এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি জানাচ্ছি। ওমর ফারুক শ্রাবণ বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী, প্রত্যেকেরই মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপরই হামলা হয়েছে। নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, আমাদের শিক্ষক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা হয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। উপদেষ্টার আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ, যা একটি ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুনাইদ মাসুদ বলেন, পুলিশ প্রশাসন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, অথচ এখন পর্যন্ত কোনো দুঃখপ্রকাশ তো দূরের কথা, ক্ষমাও চায়নি। আমরা আমাদের শিক্ষকদের অপমানের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিচারের দাবি করছি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুযোগ বাড়াতে দূতাবাসের উদ্যোগ

দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়াতে এবং বৃত্তি প্রাপ্তির পথ সহজ করতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সেদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তৌফিক ইসলাম শতিল। শুক্রবার সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। আজ (শনিবার) প্রাপ্ত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত অংশগ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি তাাদের সমস্যা সমাধানে দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। রাষ্ট্রদূত সিউলে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিতে প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এদিকে সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি তথ্যভাণ্ডার (ডেটাবেজ) গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য দ্রুত পৌঁছে দেওয়া এবং কমিউনিটির কল্যাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে দূতাবাস।

৫ দফা না মানলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের

আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ এর রূপরেখা প্রকাশ ও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে ১৯ মে থেকে আবারও মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। শনিবার (১৭ মে) ইডেন মহিলা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ইউজিসি ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকেবি)’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু ঘোষণা ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমরা পাঁচ দফা দাবি জানাচ্ছি- ১. রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। ২. অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। ৩. অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী দুই কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ৪. আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে। ৫. আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুনের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একইসঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের সাত কলেজের এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। শুরু থেকেই আমাদের দাবি ছিল, সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি বাতিল করে এ কলেজগুলোর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের জরুরি নির্দেশনা মাউশির

শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা যাতে বেহাত না হয়ে যায়, সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনায় বলা হয়, রাজস্ব খাতভুক্ত সব ধরনের বৃত্তি (পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও অনার্স) ও উপবৃত্তির (পেশামূলক ও তফসিলী) অর্থ ইএফটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তফসিলভুক্ত অনলাইন ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য বৃত্তির এমআইএস সফটওয়্যারে প্রতিষ্ঠান থেকে এন্ট্রি বা সংশোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাধারণ কলেজ, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বুয়েট ও পাবলিক বা সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান। নির্দেশনায় জনানো হয়, বৃত্তি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মাউশির ওয়েবসাইটের নোটিশ বোর্ডে আপলোড করা হয়। ফলে এ বিষয়ে কোনও তথ্য মাউশি থেকে প্রতিষ্ঠান বা অভিভাবক বা শিক্ষার্থীর থেকে চাওয়া হয় না। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড, বিভিন্ন সরকারি অফিস ও বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রতারক চক্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছ থেকে অর্থ, প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড, ব্যাংক সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য এবং ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর বা ওটিপি চাচ্ছে।অথচ বৃত্তির অর্থ পাঠানোর জন্য এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য চাওয়া হয় না। বিধায় যেকোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য, ব্যাংক সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর বা পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর বা ওটিপি কারও সঙ্গে শেয়ার না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করা হলো।

দাবি আদায়ে সফল জবি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা

দাবি মেনে নেওয়ায় চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। শুক্রবার (১৬ মে) রাত রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাকরাইল মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো যেহেতু মেনে নেওয়ায় হয়েছে তাই চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে এই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে আবার আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

কাকরাইল মোড়ে গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা

চার দফা দাবিতে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কাকরাইল মোড়ে অনশন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। অনশন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র ও ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ ভূইঁয়া। শিক্ষার্থীরা গণঅনশন শুরু করেন। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে অনশনে বসেন। সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের দেখাশোনা করছেন স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়েছে কাকরাইল মসজিদ মোড়। সাবেক-বর্তমান মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশে জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে গণঅনশনের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন। তিনি বলেন, 'আমাদের আন্দোলন এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, আমাদের আর পেছনে ফেরার জায়গা নেই। বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরছি না।' গতরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন জানান, শুক্রবার জুমার পর তারা গণঅনশনে বসবেন। আজ সকাল থেকেই কাকরাইল মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে জবির সাবেক শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। দুপুর ২টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, 'দাবি আদায় করতে গিয়ে আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। জাতীয় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছেন। কিন্তু এই সরকারের আমাদের রক্তের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিতি হয়েও তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার মেনে নিতে চাইছেন না।' জবি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে দাবি ছিল তিনটি। এগুলো হলো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন। এসব দাবি নিয়ে গত বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য যাওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং জানান যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা না করে তারা ফিরে যাবেন না এবং শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার নিশ্চিত করাও দাবির অন্তর্ভুক্ত করেন। পরে সেদিন রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাদের সঙ্গে কথা বলতে এলে, তার দিকে বোতল ছুঁড়ে মারাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। পরে, গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বিকেলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় 'শাটডাউন' ঘোষণা দেন। রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় বৈঠক করলেও, কোনো সমাধান আসেনি। তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে 'জবি ঐক্যের' পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। তিনি আরও জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড়েই অবস্থান করবেন শিক্ষার্থীরা। রইছউদ্দীন বলেন, আমরা সরকারের কাছে আমাদের অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মেরেছে কিন্তু আমাদের অধিকারের বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। এমনকি ৩৫ ঘণ্টা পার হলেও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রশাসন। সরকার থেকে কোনো বার্তা আসেনি। তিনি আরও বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাল জুমার পর গণঅনশন শুরু করবেন। এতে সাবেক ও বর্তমান জবিয়ানদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনস্থলে জবিয়ান সমাবেশ শুরু হবে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে পুলিশ কতৃক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালনের ঘোষণা দেন তিনি।

সকাল ১০টায় সমাবেশ, জুমার পর গণঅনশন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আবাসনসহ তিনটি দাবির পক্ষে আজ শুক্রবার (১৬ মে) কাকরাইলে সমাবেশ ও গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড় ছাড়বেন না। সকাল ১০টায় বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা কাকরাইলে সমবেত হবেন, আর জুমার নামাজের পর শুরু হবে গণঅনশন। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন। দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে জবি প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামী ১৪ মে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধে গতকাল বৃহস্পতিবার অচল হয়ে পড়ে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারী ও যাত্রীসাধারণ। আন্দোলনকারীরা দাবি করছেন, তারা কোনো আশ্বাসে ফিরবেন না। দাবি বাস্তবায়ন হলেই আন্দোলন থেকে সরে আসবেন। বুধবার আন্দোলনে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, সরকার আন্তরিক হলে জনদুর্ভোগ থাকবে না। আন্দোলনের উদ্দেশ্য জনদুর্ভোগ সৃষ্টি নয়, বরং শিক্ষার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা। শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো: বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু। জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প একনেক সভায় পাশ ও দ্রুত বাস্তবায়ন। ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

যমুনা অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের বাধা, লাঠিচার্জ-টিয়ারশেল

আবাসন ভাতা ও প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনসহ তিন দফা দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে লংমার্চে অংশ নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে কাকরাইল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ তাদের পথ আটকে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছোড়ে ও লাঠিচার্জ চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জের কারণে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারী কয়েকজন। এর আগে এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে এ যাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কাকড়াইল এসে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তাদের লংমার্চ। এদিকে পুলিশের বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বসে পড়ে নানা স্লোগান দিতে শুরু করেন। রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, দিয়েছি রক্ত আরও দেব রক্ত ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। তাদের সরাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।