
ন্যাশনাল ব্যাংকের রাজশাহীর আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন (রাজশাহী) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বগুড়ার হোটেল ক্যাসেল সোয়াদের কনফারেন্স রুমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপ-ব্যবস্থপনা পরিচালক ইমরান আহমেদ, রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবস্থাপক ও ভিপি মো. রেজুয়ানুল হক, রাজশাহী অঞ্চলের ২৮টি শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, অপারেশন্স ম্যানেজারবৃন্দ ও উপশাখার ব্যবস্থাপকরা অংশ নেন। সম্মেলনে আবদুল আউয়াল মিন্টু ন্যাশনাল ব্যাংককে তার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সব স্তরের কর্মীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি শ্রেণীকৃত ঋণ আদায় ও আমানত সংগ্রহে জোর দেন। বিশেষ করে ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার জন্য আবদুল আউয়াল মিন্টু কর্মীদের নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে, শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ব্যবসায় সম্প্রসারণ, গ্রাহক সেবার মানোন্নয়ন ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, সম্মেলনের পূর্বে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ মতবিনিময় সভায় ব্যাংকের গ্রাহকদের সাথে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে নেই কর্মচাঞ্চল্য, বেকার অনেক শ্রমিক
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। নেই চিরচেনা কোলাহল; বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ। বিপাকে আছেন ব্যবসায়ীরা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। চিরচেনা হাঁকডাক, হৈচৈ, ট্রাকের হর্ন কিছুই নেই। বন্দর চত্বর জুড়ে নীরবতা। যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশ। গত দুই মাস ধরে ভারত ও জানুয়ারিতে ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বাংলাবান্ধা বন্দরে নেই আগের কর্মযজ্ঞ।২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এই স্থলবন্দর দিয়ে ৩৩ হাজার ৪১১টি পণ্যবাহী ট্রাকে পাথরসহ ৯ লাখ ১১ হাজার ৬৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। ভুটান থেকে আমদানি করা পাথরের ট্রাকগুলোর স্লট বুকিং ইস্যুতে, ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরে চলছে ট্রাক চালকদের আন্দোলন। এতে ৪ জানুয়ারি থেকে ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ।অন্যদিকে, বাড়তি ট্রাকভাড়া ও পাথরের মান কমে যাওয়ায়, নভেম্বর থেকে ভারতের পাথর আমদানি বন্ধ। যদিও রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে কয়েকটি পাথর বোঝাই ট্রাক এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্দরে নেই আগের কর্মচাঞ্চল্য। কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। তারা বলেন, ‘কাজ না থাকায় আয়ও নেই। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও ভারত ও ভুটানের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় পাথর আমদানি হচ্ছে না। এতে কমেছে রাজস্ব আয়।’ বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ভারত ও ভুটানের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় পাথর আমদানি কম হওয়ায় রাজস্ব আয় কমে গেছে।’স্থলবন্দরটিতে দিয়ে ভারত ও ভুটানের পাশাপাশি নেপালের সঙ্গেও আমদানি-রফতানির সুবিধা আছে। পাথরের ছাড়াও আমদানি হয় চাল, ডালের মত নিত্যপণ্য।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন-২০২৫ রাজধানীর প্যান প্যাসিফিকসোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ফরমান আর চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সভায় পর্ষদের পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদু, মো. শাহীন উল ইসলাম, এম আবু ইউসুফ ও মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাফাত উল্লা খান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাদিম, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. ফজলুর রহমান চৌধুরী, মো. আসাদুজ্জামান ভূঁঞা, মো. আমিনুল ইসলাম ভূঁঞা, মোহাম্মদ হোসেন, কাজী মাহমুদ করিম, এসএম আবু জাফর, ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীগণ, জোনাল হেডগণ ও২২৬টি শাখার ব্যবস্থাপক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায় পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালক পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাজা শাহরিয়ার বলেন, ‘গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাসের কারণেই আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক দেশের অন্যতম সেরা ব্যাংক। ব্যাংকের আধুনিকায়ন, কর্মক্ষতা বৃদ্ধি, ব্রান্ডিং, ডিজিটাল ইনোভেশন ও অটোমেশন এবং নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা আমরা গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সচেষ্ট। সুশাসন, জবাবদিহিতা ও দায়িত্ববোধকে আরো সুসংহত করে আমরা টেকসইউন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে চাই।’ তিনি ব্যাংকের খেলাপি বিনিয়োগ আদায় ও কমিয়ে আনতে শাখা ব্যবস্থাপকরে বিশেষ নির্শেনা দেন। ফরমান আর চৌধুরী শাখা ব্যবস্থাপকগণকে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে টার্গেট অর্জনের প্রতি আরও মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আমানত ও মান সম্পন্ন বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’ ফরমান আর চৌধুরী গ্রাহক সেবায় শাখাগুলোকে আরও আন্তরিক হওয়ার মাধ্যমে উন্নত ও দ্রুত সেবা প্রদানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। ‘আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গ্রাহকদের সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।’ উল্লেখ্য, অনিরীক্ষিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৭৩৫কোটি টাকা। এ সময় আমদানি ও রপ্তানির পরিমান ছিলো যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৩৮২ কোটি এবং ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এ সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ হাজার ১৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের সাথে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম এলএনজি রপ্তানি চুক্তি
বাংলাদেশ সরকারের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই করেছে আর্জেন্ট এলএনজি নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে। সংবাদ রয়টার্সের। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। লুইজিয়ানাভিত্তিক মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি উৎপাদনের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি শিল্প সহায়ক নীতির প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে এমন দেশগুলোতে, যেগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নেই। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তাদের রপ্তানি ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরশনে আর্জেন্ট এলএনজি প্রকল্পটি যদি ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা এই এলএনজি আমদানি করবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, ‘এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।’ বাংলাদেশ বর্তমানে তার দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে এবং এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তাদের বাজার মূল্য-সংবেদনশীল যার কারণে ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর সময় এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ সস্তা কয়লার দিকে ঝুঁকেছিল। মার্কিন প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে এই চুক্তি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ছুটির দিনে জমজমাট বাণিজ্য মেলা
সপ্তাহের বাকি ছয় দিন ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখানে আসা হয় না। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকালে উঠেই নাশতা সেরে চলে এসেছি। থাকবো সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিনবো প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসও। কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতিমা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে মালিবাগ থেকে বাণিজ্য মেলায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রায়হান রহমান। তিনি বলেন, অফিসের কাজে সারা সপ্তাহ ব্যস্ত থাকতে হয়। সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে সেভাবে সময় দেওয়া হয় না। তাই ভাবলাম আজ যেহেতু শুক্রবার, তাকে নিয়ে একটু বের হই। সে কারণেই মেলায় আসা। এখন বিভিন্ন স্টল ঘুরে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি তার জন্য কয়েকটা শাড়ি-থ্রিপিসও কিনবো। স্কুলশিক্ষক নাজমুল হাসান। শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে কামরাঙ্গীরচর থেকে তিনি এসেছেন ৯ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে। তিনি বলেন, সারা সপ্তাহ কাজের অন্ত থাকে না। এমনও হয় কোনো কোনো দিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরেও কাজ করতে হয়। পরিবার-পরিজনদেরকে সে অর্থে সময় দেওয়া হয় না। এদিকে মেয়েও অনেকদিন ধরে বায়না করছে, বাবা আমাকে মেলায় নিয়ে যাও। অবশেষে আজ সেই সুযোগ হলো। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভোরেই বাপ-বেটি উঠে চলে এসেছি। এখন আমরা সারাদিন ঘুরবো, খাওয়া-দাওয়া করবো, আর দিনশেষে কেনাকেটা করে ঘরে ফিরবো। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় গৃহস্থালি সামগ্রী, শীতের পোশাক ও খাবারের স্টলে। কারণ, এসব স্টলে চলছে হরেক রকমের অফার। কর্মীরাও হাঁক-ডাকে তুলে ধরছেন নিজেদের পণ্যের কথা। এর বাইরে নারীদের প্রসাধনী ও পোশাকের দোকানেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। এ সময় অনেককে সেলফিবন্দি করে মেলার স্মৃতি সংরক্ষণ করতে দেখা যায়। কেনাবেচা কেমন হচ্ছে জানতে একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ মানুষের ঢল নেমেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। তবে সময় যত গড়াবে, আরও জমজমাট হবে বেচাবিক্রি। প্রসঙ্গত, এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। বাকি ১১টি স্টল ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া—এই ৭ দেশের। মাসব্যাপী এ মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও অস্বস্তি চাল-মুরগির দামে
শীতকালীন শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় থাকায় এখন অনেকটাই স্থিতিশীল সবজির বাজার। সঙ্গে ডিম-মাছ-মাংসের বাজারেও দাম বাড়েনি নতুন করে। এরপরও সাপ্তাহিক বাজার উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারছে না ক্রেতা সাধারণের কাছে; চড়া দামে কিনতে হচ্ছে চাল আর মুরগি। আসন্ন রমজানে দাম আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়ছে অনেকের। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার চড়া। আমনের ভরা মৌসুমের পাশাপাশি শুল্ক কমানো ও আমদানিসহ কয়েকটি উদ্যোগ নিলেও কোনো কাজে আসছে না। মানভেদে বিভিন্ন ধরনের চালের কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। মধ্যবিত্তের চালখ্যাত সরু বা মিনিকেট চাল মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। গরিবের মোটা বা গুটি স্বর্ণা জাতের চালও কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়। এ ছাড়া নাজিরশাইল জাতের চালের খুচরামূল্য মানভেদে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি বা ব্রি-২৮ ও পায়জাম জাতের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকায়। মোটাদাগে বাজারে ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো চালই। এদিকে চালের মতো কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির বাজার ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দামও। এ জাতের মুরগির কিনতে হলে এখন কেজিপ্রতি খরচ পড়ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা; যা আগে ৩০০-৩২০ টাকা ছিল। তবে স্বস্তির খবর, বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বড় বাজারে ফার্মের প্রতি ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। পাড়া মহল্লার দোকানে তা মিলছে ১৪০-১৪৫ টাকা। অন্যদিকে বাজারে গত কয়েক মাস ধরে অস্বস্তি ছড়ানো আলুর দাম এখন ২০-২৫ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া প্রতিকেজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০, শিম ৩০ থেকে ৫০, কাঁচা পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করল্লা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে। প্রতি পিস ফুল ও বাঁধাকপি মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা এবং লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। মুদি বাজারেও দামের তেমন হেরফের দেখা যাচ্ছে না। প্রতিকেজি আমদানি করা মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ ও দেশি চিকন মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ থেকে টাকা, মুগডাল ১৬৫ থেকে ১৭০ ও ছোলার কেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশে নতুন বন্দর নির্মাণ করতে চায় ডিপি ওয়ার্ল্ড ও মায়ারস্ক
পৃথিবীর দুই শীর্ষ স্থানীয় বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এপি মুলার-মায়ারস্ক বাংলাদেশের শিপিং শিল্পে বড় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নতুন বন্দর নির্মাণ ও বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করতে চায়। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সামিট চলাকালে ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম এবং এপি মুলার-মায়ারস্কের চেয়ার রবার্ট মায়ারস্ক উগলা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং এ প্রস্তাব দেন। সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম জানান, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কনজেশন কমাতে এবং দূষণ হ্রাসের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা বাড়াতে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চান। সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক এই লজিস্টিক কোম্পানির সিইও জোর দিয়ে বলেন, ‘নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ বাংলাদেশকে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং দূষণ কমাতে সহায়তা করবে। ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও উল্লেখ করেন, তারা ২০২২ সালেও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। তবে, তখনকার সরকার তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে একটি ডিজিটাল অনলাইন কাস্টমস প্রক্রিয়া চালু করতে চান, যা দুর্নীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে ইনলাইন কনটেইনার ডিপোতেও বিনিয়োগ করতে চান।’ প্রধান উপদেষ্টা সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েমকে জানান, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করতে চায় এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলে আরও বন্দর নির্মাণ করতে চায়। ‘আমাদের এটা করতে হবে। কারণ, আমাদের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। আমরা অঞ্চলটিকে বৃহত্তম বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা বাড়াতে চায়। কারণ, দেশটি মনে করে এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো নেপাল ও ভুটানের মতো দেশের কনটেইনার পরিচালনার জন্য একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হতে পারে।’ ‘আমাদের দ্রুত কাজ করতে হবে কারণ সময়েরও একটা মূল্য রয়েছে।’ ডেনমার্কভিত্তিক এপি মুলার মায়ারস্ক চেয়ার রবার্ট মায়ারস্ক উগলা জানান, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছাকাছি লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চান এবং তাদের কারিগরি সহায়তায় এটিকে একটি সবুজ বন্দর হিসেবে রূপান্তরিত করতে চান। রবার্ট মায়ারস্ক উগলা বলেন, ‘তারা মরক্কো এবং ওমানেও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। তাদের বিনিয়োগের মাধ্যমে ওমানের সালালাহ বন্দর বিশ্বের সেরা বন্দরের একটি হয়ে উঠেছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান উগলা।’ প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এপি মুলার-মায়ারস্কের কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানান। ‘আমাদের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে একাধিক বন্দর নির্মাণ করতে হবে, যেন আমরা একটি আঞ্চলিক ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে আমাদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহার করতে পারি,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশি বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।

২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল রিজার্ভ
দেশে ডলারের সংকট এখনো কাটেনি। ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ফের দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘বুধবার (২২ জানুয়ারি) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।’ প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৫ জানুয়ারি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৩ কোটি ডলার। ওই দিন মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত ৬ দিনে বিপিএম-৬ মান অনুযায়ী রিজার্ভ কমেছে ২০ কোটি ডলার। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আছে। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার জোগানের চেষ্টা করছে। তবে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ ছিল ২১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে, এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

পৃথিবীর শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করেছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত।’ সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বিনিয়োগকারী কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ইউনূসকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলছি, বাংলাদেশ বড় আকারে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা একাধিক সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন কোম্পানির নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের কথা তুলে ধরে বিনিয়োগ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’ ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, চীনসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন এবং আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন যে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।’ প্রেস সচিব বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশ যে একটি রপ্তানি কেন্দ্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাখে, সে বিষয়টিও প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন বৈঠকে তুলে ধরছেন।’ এদিকে, আমিরাতভিত্তিক বন্দর পরিচালনাকারী কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান। ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগও বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ডাভোসে পৌঁছানোর পর প্রধান উপদেষ্টা ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে’ তার তৃতীয় ব্যস্ত দিন পার করছেন।

২০২৪-২৫ অর্থবছর: ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা
ডিসেম্বরেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমেছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। দেশ পরিচালনায় খরচ মেটাতে চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা সাজিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে আন্দোলন, সংঘাত, ক্ষমতার পালাবদলের কারণে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মাঝেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার।এমন প্রেক্ষাপটে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আয় করতে পারছে না এনবিআর। সংস্থাটির হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে, রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা কম। বছর ব্যবধানে কমেছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ।’তবে ডিসেম্বরে গত বছরের তুলনায় মোট রাজস্ব আদায় বাড়লেও পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। ডিসেম্বরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ৬৩২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কম।চলতি অর্থবছরের কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি এনবিআর। জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। জুলাইয়ে রাজস্ব আদায় কমেছে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।পরের মাস আগস্টেও একই অবস্থা দেখা গেছে। ওই মাসে ৩১ হাজার ৬০৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৯ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।আর অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।এছাড়া, নভেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৫ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে সাড়ে ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার বেশি।

জুলাইয়ের পর বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৭১ শতাংশ
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭১ শতাংশ কমেছে। যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিনিয়োগ কমার পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকার পতন হলে তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি। এরপরও কাটেনি অস্থিরতা, নানা দাবিতেই বিভিন্ন সংগঠন বারবারই পথে নেমেছে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক কাঠামো ঝুঁকিতে পড়ে। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে এক বিলিয়ন ডলারের কম। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ এসেছে ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার নিয়ে গেছেন। এতে নিট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কমেছে ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৭১ শতাংশ। এমন সময় বিদেশি বিনিয়োগে খরার তথ্যটি সামনে এসেছে যখন বিনিয়োগ টানতে বিডা হিটম্যাপ ঘোষণা করেছে। তবে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘দেশে আগেও ব্যবসায়-বাণিজ্যের পরিবেশ খুব একটা অনুকূলে ছিল না। বিনিয়োগ আকর্ষণে অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলেও সেগুলো ব্যর্থ হয়েছে।’ ফরেন ইনভেস্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, ‘আমাদের ১০০টা প্রয়োজন নেই। আমরা তিনটা ভালো ইকোনমিক জোন যদি করতে পারি, দেশের বিভিন্ন ভাগে, তাহলেই কিন্তু অনেক উন্নতি হবে। ঠিক মতো ফ্যাসিলিটি দিয়ে যেখানে পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ আছে, সেটা যদি করতে পারি তার মাধ্যমেই কিন্তু বিনিয়োগ আসবে।’ চলতি অর্থবছর প্রথম প্রান্তিকে সর্বোচ্চ এফডিআই এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে ৬২ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৬১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ও চীন থেকে বিনিয়োগ এসেছে ৫৫ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার । সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে তৈরি পোশাক খাতে।

ফ্লোরিডায় ২৬-২৭ এপ্রিল পঞ্চম ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ট্যাম্পা বে
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ট্যাম্পা হাইটস ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে ‘পঞ্চম ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ট্যাম্পা বে ২০২৫’ আগামী ২৬-২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দিয়েছে আয়োজকরা। এসোসিয়েশন অব ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ইউএসএ আইএনসি এ ইভেন্টটির আয়োজন করছে। সংগঠনটি প্রবাসী বাংলাদেশি ও বৈশ্বিক কমিউনিটির মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই গ্লোবাল ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক সংস্কৃতির আদান-প্রদান, ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ভ্রমণ ও বাণিজ্য খাতকে সহজতর ও সমৃদ্ধ করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবেন। সংবাদ সম্মেলেনে বলা হয়, ‘ইভেন্টে প্রধান অতিথি থাকবেন ফ্লোরিডার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ সুসান এল ভালডাস এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রাক্তন স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ ডেইজি মোরাল। ইভেন্টে প্রায় ৩০টি দেশের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ থেকে এফবিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে তুলে ধরবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ কনসোলেট জেনারেল অব মিয়ামি ইভেন্টে ভিসা ও ভিসা-সংক্রান্ত সেবা দেবে।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইভেন্টে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে বিশেষ আকর্ষণ। এবারের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে থাকছেন মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। বিশেষ অতিথি থাকবেন অভিনেত্রী মৌসুমী। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবেন প্রতিক হাসান, রেশমি মির্জা, শারমিন সিরাজসহ আরও অনেকে। ‘অংশগ্রহণকারীদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ডিনার ক্রুজের আয়োজন করা হয়েছে। ইভেন্টের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে আরটিভি ও বায়ান্ন টিভি এবং ট্যুর পার্টনার হিসেবে থাকবে হ্যাভেন ট্যুরস অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড।’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জয়েন্ট কনভেনার মোক্তার আহমেদ, এসোসিয়েশন অব ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ইউএসএ আইএনসির ডিরেক্টর আতিকুর রহমান, হ্যাভেন ট্যুরস অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা মোস্তফা, প্রোমোশন অফিসার আহসান ভাবনা, এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি জাকির হোসেন নয়ন, সাইদুল করিম চৌধুরী, জাকির হোসেন, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও সাউদুল করিম। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংস্কৃতি, ব্যবসায় ও ভ্রমণ-বাণিজ্যে নতুন দ্বার উন্মোচনের জন্য আয়োজকরা সকলকে ইভেন্টে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

লে-অফ প্রত্যাহার ও এলসি খোলার অনুমতি চায় বেক্সিমকোর কর্মীরা
লে-অফ প্রত্যাহার করে বেক্সিমকোর গার্মেন্টস ডিভিশনের সব কারখানা খুলে দেয়ার পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্য শুরুর ও বিদেশিদের কার্যাদেশ প্রাপ্তির সুবিধার্থে ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে বেক্সিমকোর কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেডের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান আব্দুল কাইয়ুম বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের গার্মেন্টস ও এর সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার চাকুরীজীবিকে লে-অফের আওতায় জনতা ব্যাংকের ঋণ সুবিধায় জানুয়ারী- ২০২৫ পর্যন্ত বেতনাদি দেয়া হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই বিশাল জনবলকে আর কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে না। যার প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি-২০২৫ মাস থেকে ১৬টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং এগুলোতে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকুরী হারাবে। সেই সাথে এই ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পার্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বাড়িওয়ালা, দোকানদার, অটো রিকসা চালক, স্কুল-মাদ্রাসা-কিন্ডার গার্ডেন বন্ধ হয়ে যাবে; যার সাথে পরোক্ষও প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত আছে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের জীবন ও বেচে থাকার সব মৌলিক চাহিদা।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেক্সিমকোর মত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেলে ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকুরী হারাবে। তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২ লাখ পরিবারের সদস্য এবং এই শিল্প ও কর্মজীবীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কর্মসংস্থানের আরো প্রায় ৮ লাখ মানুষের রিজিক বন্ধ হয়ে যাবে। এই ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষের মাঝে প্রায় ২ হাজার প্রতিবন্ধী, শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং ৫ হাজারের মত ষাটোর্ধ ব্যক্তি রয়েছেন, যাদেরকে আমরা পরম মমতায় আর যত্নে সমাজ ও পরিবারের বোঝা হওয়া থেকে রক্ষা করছি। সরকারের সিদ্ধান্তের যদি কোন পরিবর্তন না হয়, তাহলে এরা সবাই মানবেতর জীবনের দিকে এগিয়ে যাবে। সেই সাথে প্রায় ৪২ হাজারের নতুন বেকার এবং ব্যবসায়-বাড়িভাড়া বঞ্চিত লাখো মানুষ নৈরাজ্য আর অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে গিয়ে নতুন সংকট তৈরি করবে।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে লে-অফ প্রত্যাহার করে ১৬টি বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, ‘বেক্সিমকো শুধু বাংলাদেশে নয়, এশিয়া মহাদেশের একটি বড় ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল গ্রুপ এবং শুধু মাত্র বেক্সিমকো গার্মেন্টস ডিভিশনই আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করতো। আজ সেই গার্মেন্টস ও সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোকে বন্ধ করে রাখায়, ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখায় সরকার ও জনগন সেই বিশাল বৈদেশিক মুদ্রা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা আমাদেও জাতীয় আয় ও রিজার্ভ ঘাটতির অন্যতম কারণ।’ এনাম উল্লাহ বলেন, বর্তমান সময়ের উপযোগী মেশিনারিজ, প্রযুক্তি আর ৪২ হাজার দক্ষ জনবল নিয়ে তিল তিল করে গড়ে উঠা আজকের বেক্সিমকোর গার্মেন্টস শিল্প মরিচা ধরার অপেক্ষায় আছে। আমাদের মাসিক প্রায় ৪০-৫০ লাখ পিস গার্মেন্টস তৈরির সক্ষমতা, এশিয়ার বৃহত্তম ওয়াশিং প্লান্ট এবং অত্যাধুনিক মেশিনে সজ্জিত প্রিন্টিং, এমব্রয়ডারী ও এক্সেসসরিজ তৈরির কাখানা, টেক্সটাইল মিল ও দক্ষ জনবল সকল বায়ারদের প্রধান আকর্ষন। তিনি আরও বলেন, ‘কম্পোজিট গ্রুপ হওয়ায় শুধুমাত্র তুলা ও ক্যামিক্যাল ক্রয় ছাড়া গার্মেন্টস তৈরির অন্য কিছুই বাহির থেকে ক্রয় বা আমদানি করতে হয় না। এসব সুবিধা বেক্সিমকো ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পার্কে বর্তমান থাকায় বায়াররা আমাদেরকে কার্যাদেশ দিতে সব সময় তৎপর থাকে। আমাদের করোনা মহামারী ও ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধকালীন বৈশ্বিক সঙ্কটের মাঝেও বেক্সিমকো গার্মেন্টস ডিভিশণ গার্মেন্টস রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে ছিল। এই রকম একটি লাভজনক, সুবিধাজনক ও শ্রমঘন প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দিয়ে ১০ লাখ মানুষের মুখের আহার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় প্রবৃদ্ধির ব্যাহত করে বর্তমান জননন্দিত সরকার কি সুবিধা লাভ করছেন, আমরা জানি না। তাই, সবিনয়ে অনুরোধ অবিলম্বে আমাদের কারখানাগুলোকে খুলে দিয়ে ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মচারি ও ১০ লাখ মানুষের খেয়েপড়ে বেঁচে থকার ব্যবস্থাটুকু নিশ্চিত করা হোক।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে বেক্সিমকোর ব্যাংকিং ও ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা দেয়ার দাবি জানিয়ে বেক্সিমকোর এই কর্মী বলেন, ‘ব্যাংকিং ও এলসি সুবিধা ছাড়া দেশি-বিদেশি কোন ব্যবসায় বাণিজ্যই করা যায় না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ৬ মাস ধরে বেক্সিকোর গার্মেন্টস ডিভিশনের সব ব্যাংকিং ও এলসি সুবিধা বন্ধ রাখা হয়েছে। একদিকে কারখানা বন্ধ, উৎপাদন নেই অন্যদিকে দায়-দেনার পরিমাণ প্রচার করে তা পরিশোধের জন্য সব প্রকার চাপ অব্যহত আছে। সেই প্রেক্ষিতে বলতে হয়- আয় থেকে দায় শোধ-ব্যাংকিং ও ঋণ ব্যবস্থাপনার মূলমন্ত্র যদি হয়ে থাকে তাহলে বেক্সিমকো গ্রুপের সব দায়-দেনা নিয়মিত পরিশোধের জন্য এর বন্ধ রাখা প্রতিটি কারখানা খুলে দিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরুর করার কোন বিকল্প নেই।’ এনাম উল্লাহ বলেন, ‘প্রয়োজন আপনাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্ধ থাকা ব্যাক টু ব্যাক এলসি ওপেন করে দেয়া। কিন্তু সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে দায় পরিশোধের চাপ সৃষ্টি শুধু অমানবিকই নয়, অন্যায্যও বটে। এই দায় বহন করার সক্ষমতা কোন সরকারের বা ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। কারখানা বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া যতই প্রলম্বিত হবে বেক্সিমকোর দায়ও তাতে বাড়তে থাকবে। তাই, অবিলম্বে বায়ারদের কার্যাদেশ পাওয়ার সুবিধার্থে বেক্সিমকোর ব্যাংকিং সুবিধার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নিয়ে উৎপাদন শুরু করার মাধ্যমে সব দায়-দেনা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’ বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের কাছে শ্রমিকদের অর্জিত ছুটির ২ বছরের টাকা জমে গেছে এবং অফিসারদের ৪ মাসের বেতনের টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। বর্তমান আর্থিক দূরাবস্থার ভেতর এই বকেযাগুলো পাওয়া গেলেও সন্তানদের স্কুল-কলেজে ভর্তির খরচটা মিটিয়ে ফেলা যেত। টাকার অভাবে সন্তানদের নতুন বছরে, নতুন ক্লাসে ভর্তি করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘বেক্সিমকোর যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে, তা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আদায় করা সম্ভব না। এই ঋণ আদায় করতে হলে প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেশকিছু প্রস্তাবও দিয়েছি। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব ছিলো ২৩ একর জমি বন্ধক রেখে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া। এই ঋণ চাওয়া হয় ৪ মাসের জন্য। এই ঋণ দেয়া হলে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করে বকেয়া ঋণও পরিশোধ করতে পারবো। সেক্ষেত্রে বছরে ৪০০ কোটি টাকার মতো বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব, এ ধরনের একটি প্লানও আমরা দিয়েছি।’ আর এক প্রশ্নের উত্তরে এনাম উল্লহ বলেন, ‘আমরা মালিক বলতে এখন আমাদের এমডি ওসমান কায়সার চৌধুরীকে বুঝি। এমডি আছেন, রিসিভার আছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এমডি বেক্সিমকোর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে আলোচন করেই সব ধরনের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।’

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৬
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরেক দফা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। কাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে সবশেষ গত ১৫ জানুয়ারি দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ১৬ জানুয়ারি থেকে। এ নিয়ে চলতি বছর দুই বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে দুই বারই। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

সিএসইর নতুন ট্রেডিং সময়সূচী প্রত্যাহারের দাবী ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের
সম্প্রতি চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) তাদের ট্রেডিং সময়সূচীতে পরিবর্তন এনে ব্রোকারেজ হাউজে চিঠি দিয়েছে। নতুন সময়সূচী অনুযায়ী সিএসই আগামী রোববার (২৬ জানুয়ারি) থেকে তাদের ট্রেডিং সময়সূচী সকাল ১০টার পরিবর্তে সাড়ে ৯ টায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) পক্ষ থেকে সিএসর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিদ্যমান সময়সূচী বহাল রাখার জোর দাবী জানিয়েছে। ডিবিএ বলছে, ‘কোন একটি দেশে একই টাইম জোনে একাধিক স্টক এক্সচেঞ্জে পৃথক ট্রেডিং সময়সুচী থাকার বিষয়টি নজিরবিহীন ও চিন্তাবহির্ভূত।’ ‘ডিএসই ও সিএসই উভয় এক্সচেঞ্জে একই সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় হয়। প্রতিদিন একই সময়ে একই সাথে ট্রেডিং শুরু হওয়ার ফলে বিনিয়োগকারী উভয় এক্সচেঞ্জ যাচাই বাছাই করে প্রতিযোগীতামূলক উপযুক্ত দরে তাদের চাহিদা মাফিক শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে।’ডিবিএর দাবি, ‘ডিএসই অপেক্ষা সিএসই’র শেয়ার ভলিয়্যুম ৫ শতাংশের মত। ট্রেডিং কার্যক্রম ও ভলিয়্যুমের দিক থেকে সিএসই’র অবস্থান বিবেচনা করলে ভলিয়্যুমের স্বল্পতা এবং সব ব্রোকারের অংশগ্রহণ সীমিত হওয়ার কারণে প্রারম্ভিক ট্রেডিংয়ে শেয়ার প্রাইস ডিসকভারী বাধাগ্রস্ত হবে।’ ‘উভয় এক্সচেঞ্জে পৃথক ট্রেডিং সময়সূচীর ফলে দ্বৈত সদস্য কোম্পানীগুলোতে ট্রেডিং সেবা ও কার্যক্রম ব্যহত হবে এবং হাউজগুলোতে বিশৃংখলা তৈরী হয়ে বাজার ও বিনিয়োগকারীর আস্থায় এবং সামগ্রীক বাজার ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’ দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে বিনিয়োগকারীর আস্থার কারণে মন্দা বিরাজ করছে। দীর্ঘ এ মন্দার ফলে বিনিয়োগকারীসহ বাজার অংশীজন ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই, বিনিয়োগকারী ও বাজারের স্বার্থে সিএসই’র নতুন ট্রেডিং সময়সূচীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিদ্যমান সময়ে সকাল ১০ টায় বহাল রাখার জন্য সিএসই পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ডিবিএ। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ডিবিএ।’

পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নাফিজের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট ও ভিলা জব্দের আদেশ
পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন। দুদকের পক্ষে থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থপাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া, পাঁচ বেডের একটি ভিলা কিনেছেন। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থপাচার করেছেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্পদ দিয়ে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন তিনি। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, তাদের ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। দুদকের তথ্য বলছে, ‘চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে ঢাকার গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২-এ রয়েছে ২০ তলা বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় তাঁর ২৫ কাঠা জমি রয়েছে। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে ঢাকা পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তাঁর। এর বাইরে তার নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।

এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে দিনাজপুরে ‘ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়ন’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে সম্প্রতি দিনাজপুরে ‘ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়ন’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম কর্মশালা উদ্বোধন করেন। এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির আনাম এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শফিকুল আলম, এনসিসি ব্যাংকের এসভিপি এবং এসএমই ও কৃষি প্রধান শরীফ মোহাম্মদ মহসীন এবং উত্তর অঞ্চলের প্রধান ওমর শরীফ অতিথি ছিলেন।এছাড়া, এনসিসি ব্যাংকের দিনাজপুর শাখার ব্যবস্থপক মো. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলার ৪২টি তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০৪ জন কর্মকর্তাসহ প্রায় ৯০ জন উদ্যোক্তা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্মশালায় মো. রফিকুল ইসলাম ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ব্যাংকংগুলো অঞ্চলভিত্তিক এই ধরনের অর্থায়নে এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মো. জাকির আনাম ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়নের বিভিন্ন সুবিধাজনক দিকগুলো তুলে ধরেন এবং এনসিসি ব্যাংকবাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক এই ধরনের অর্থায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পূবালী ব্যাংকের খামারবাড়ি শাখায় ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ উদ্বোধন
গ্রাহকদের ইসলামী ব্যাংকিং সেবার চাহিদার কথা বিবেচনা করে সব শাখায় ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্যাংক পূবালী ব্যাংক পিএলসি। এসব কর্নারের মাধ্যমে গ্রাহকরা সহজেই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সব সেবা নিতে পারবেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২২ জানুয়ারি) পূবালী ব্যাংক ঢাকার খামারবাড়ি শাখায় নান্দনিক ও গ্রাহকবান্ধব ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম। গেস্ট অব অনার ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী। পূবালী ব্যাংকের ঢাকা উত্তর অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান ও মহাব্যবস্খাপক একেএম আব্দুর রকীবের সভাপতিত্বেঅনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামিক ব্যাংকিং উইং প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক দেওয়ান জামিল মাসুদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাহিনুল ইসলাম, পরিচালক (হর্টিকালচার উইং) এসএম সোহরাব উদ্দিন, সাবেক মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খামারবাড়ি শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক বদরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিং কেবল একটি আর্থিক সেবা নয়; এটি নৈতিকতা ও ধর্মীয়মূল্যবোধভিত্তিক একটি আর্থিক ব্যবস্থার অংশ। পূবালী ব্যাংকের এ উদ্যোগ গ্রাহকদের জন্য ইসলামী ব্যাংকিং সহজলভ্য করে তুলবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার স্থাপন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গ্রাহকদের ইসলামী মূল্যবোধ ও নীতি মেনে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য পূবালী ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের দেশে ইসলামী ব্যাংকিং সেবার চাহিদা ক্রমবর্ধমান এবং সেই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পূবালী ব্যাংক ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন শাখায় ‘ ইসলামিক ব্যাংকিং কর্নার’ স্থাপন করেছে। এতে গ্রাহকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও নিরাপদ ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিয়ে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী তাদের লেনদেন পরিচালনা করতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পূবালী ব্যাংক সমাজে শুদ্ধ ও নৈতিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রসারে আমাদের এ প্রচেষ্টা গ্রাহকদেরকে সেবার নতুন অভিজ্ঞতা দিবে, যেখানে তারা তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন। আমরা আশা করি, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এই সেবা পৌঁছে দিয়ে পূবালী ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিংয়ে একটি মানদণ্ড স্থাপন করবে।’

ফার্নিচার শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘ফার্নিচার শিল্পে আমাদের বেশ সম্ভাবনা আছে। এ শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন।’ সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রি: আনলকিং এক্সপোর্ট পটেনশিয়াল শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো ও বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশন এ সেমিনারের আয়োজন করে। পরিবর্তন সুযোগের সূচনা করে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ফার্নিচার শিল্পে অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্য ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব না। তবে এ খাতে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে।আমাদের সব রিসোর্স একত্রিত করে, রাষ্ট্রীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কত দ্রুত ফার্নিচার বিশ্বে স্থান করে নিতে পারি, তা ভাবতে হবে ‘ বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ছিলো ভারত কেন্দ্রিক। এ কারণে সম্ভবত রপ্তানি বাজার খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। বিশ্ববাজার টার্গেট করে আমাদের ফার্নিচার উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে।’ আমাদের অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে ব্যাংকিং ও গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরের সম্ভাবনাকে অসম্ভবভাবে নষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে ব্যবসায়ীসহ এ দেশের জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে। দেশের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে, আমাদের ডিগনিটিকে নষ্ট করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে তাদের দুর্বৃত্তায়নের বোঝা আমাদের বহন করতে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বহন করতে হবে।’ শুধু বন্ড সুবিধা দিয়ে ব্যবসায় বাড়ানো সম্ভব না। বন্ড সুবিধার কারণে দেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ হয়েছে। তবে অনেক শিল্পের ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসবে, এটা ফেরাতে পারবেন না। বাণিজ্য উদারীকরণ হবে, নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ালে ভবিষ্যতে টিকতে পারবেন না।’ বেশি সংখ্যক দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করলে ব্যবসায় বাড়বে এটা ঠিক না। ইউরোপের যে দেশের মার্কেটে আমাদের এক্সেস আছে, তাদের সাথে এফটিএ করলে বরং দেশের ক্ষতি হবে। এফটিএ করতে হবে সে সব দেশের সাথে যাদের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অনেক ক্ষেত্রেই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এটি বন্ধ করতে হবে। বন্ড, এফটিএ সুবিধা দিয়ে যতটা কাজ হবে তার থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নেবে। অনেক দেশেই আমরা শুল্কছাড় সুবিধা পাচ্ছি।’ সেমিনারে কী-নোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশনের পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশিদ। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের সাবেক প্রফেসর আবু ইউসুফ, বুয়েটের ম্যাটারিয়ালস এন্ড ম্যাট্যালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রফেসর ড. আহমেদ শরীফ, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ডিজাইনের ডীন প্রফেসর ফুয়াদ এইচ মল্লিক, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান খান চৌধুরী, হাতিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান। উল্লেখ্য, রপ্তানি প্রসার ও প্রণোদনামূলক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে প্রতি বছর একটি পণ্যকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার বা বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়। এ বছর বর্ষপণ্য হিসেবে ফার্নিচারকে বর্ষ পণ্য ঘোষণা করা হয়। গত ১ জানুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফার্নিচারকে ২০২৫ সালের বর্ষ পণ্য ঘোষণা করেন।

যেসব খাতে ভ্যাট হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করল এনবিআর
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারসহ শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে, তীব্র সমালোচনা ও দাবির মুখে পণ্য ও সেবায় ভ্যাটের হার কমানো হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে গত ৯ জানুয়ারি সরকার ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫‘ ও ‘দ্যা এক্সাইসেস অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করেছে। একই উদ্দেশ্যে কিছু পণ্য ও সেবার ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্কের হার পুনঃনির্ধারণ করে এনবিআর কিছু প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পরবর্তী বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও অংশীজনের অনুরোধ বিবেচনা করে বৃহত্তর জনস্বার্থে এনবিআর কিছু পণ্য ও সেবায় বিদ্যমান ভ্যাটের হার, উৎসে ভ্যাট কর্তনের হার ও সম্পূরক শুল্কের হার কমিয়ে ৪টি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।যেসব খাতে ভ্যাটের হার পরিবর্তন করা হয়েছে:ওষুধ: সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে ওষুধ শিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বাড়ানো ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে আগের ২ দশমিক ৪ শতাংশে বলবৎ রাখা হয়েছে। ওষুধের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করায় ওষুধ শিল্পের ধারাবাহিক বিকাশ বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের দাম বাড়বে না। মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা: দেশের চলমান ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও একটি আধুনিক আইটি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম বির্নিমান এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল ফোনের সিম/রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার উপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক এবং আইএসপি সেবার ওপর নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবার উপর বর্ধিত বা নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এই দুই খাতে ভোক্তাদের খরচ বাড়বে না। রেস্তোরাঁ: দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভমূল্যে রেস্তোরাঁয় খাবার গ্রহণের সুবিধার্থে থ্রি-স্টার, ফোর-স্টার ও ফাইভ স্টার হোটেল ব্যতীত অন্য সব রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে সাধারণ জনগণ আগের দামেই এসব রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে পারবেন। মোটর গাড়ীর গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ: জনস্বার্থে মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ সেবার ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে এ সংশ্লিষ্ট সেবা মূল্য বৃদ্ধি পাবে না।অন্যান্য: একই বিবেচনায় নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক ব্যতিত অন্যান্য পোশাক বিপণনের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া, নন এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার, ও নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে সেবার ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের আপামর জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে গত কয়েক মাসে এনবিআর ভোজ্য তেল, চিনি, আলু, ডিম, পেঁয়াজ, চাল, খেজুর ও কীটনাশকের ওপর আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর ও আগাম করের ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে করছাড় দিয়েছে। বাংলাদেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পুস্তকের সহজলভ্যতা, আধুনিক ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ই-বুক সেবায় স্থানীয় সরবরাহ ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দ্রুতগামী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেল সেবার উপর ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া, হজ যাত্রীদের খরচ কমানোর লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হজ্ব টিকিটের ওপর আরোপযোগ্য আবাগারি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে।

মোবাইল কলরেট ও ওষুধে বর্ধিত কর প্রত্যাহার
মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা এবং ওষুধের ওপর নতুন আরোপিত শুল্ক-কর প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভ্যাট বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। শুল্ক-কর প্রত্যাহারে আগের দামে সেবা ও পণ্য কেনা যাবে। এনবিআর বলছে, ‘দেশের চলমান ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও একটি আধুনিক আইটি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম বিনির্মাণ এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল ফোনের সিম ও রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক এবং আইএসপি সেবার ওপর নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ গত ৯ জানুয়ারি সিগারেট, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, ইন্টারনেট সেবা, কোমল পানীয়, সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক ও কর বৃদ্ধি করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশে মোবাইলফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ হতো। এটি বাড়িয়ে পরে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির ওপর প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছিল। অন্যদিকে, ওষুধের বিষয়ে নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজতর করার লক্ষ্যে ওষুধ শিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে পূর্বের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে।’ ওষুধের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করায় ওষুধ শিল্পের ধারাবাহিক বিকাশ বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি পাবে না বলে মনে করে এনবিআর।

পেছাল বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি
আগামী ৫ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় উঠার কথা ছিল সংস্থাটির চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়টি। তবে, সংস্থাটির বোর্ড সভা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের জন্য ঋণ ছাড়ের বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১২ মার্চ আইএমএফের বোর্ড সভায় উঠতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকাওয়াচকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের আইএমএফের কার্যক্রম এক মাস বন্ধ ছিল। মূলত এ কারণেই বোর্ড সভার সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে সংস্থাটি। এছাড়া, ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সংস্থাটি থেকে চাপ ছিল। এক্ষেত্রে আমরা ইতিমধ্যে বাজারের কাছাকাছি চলে আসছি।’ তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফের চতুর্থ কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের শর্ত ও ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে সংস্থাটি। তবে এনবিআরের একটি সূত্র দাবি করছে, ঋণের চতুর্থ কিস্তি পেতে এনবিআরের দিক থেকে কোন সমস্যা নেই। কারণ, ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ঋণের তিনটি কিস্তি পেয়েছে। চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পেতে পারে। এদিকে, ৪৭০ কোটি ডলারের চলমান এই ঋণ কর্মসূচির আকার আরও ৭৫ কোটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। এই অর্থ দিতেও সম্মত হয়েছে আইএমএফ। তবে, এ জন্য কর আদায় ও নীতি গ্রহণকারী সংস্থাকে আলাদা করাসহ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মত কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আইএমএফের মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই ঋণ ছাড়ের বিষয়টি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় উঠবে। সেখানে অনুমোদিত হলে তার দিন পাঁচেক পরে, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে। চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তবে, রাজস্ব আয় বাড়ানো- সংক্রান্ত একটি কমিশন গঠনসহ কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ সভায় চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। বোর্ড অনুমোদন দিলে ঋণ ছাড় করা হবে। একই সঙ্গে চলমান কর্মসূচির আওতায় ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৩০ কোটি ডলার করতেও তারা সম্মত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সেবা আরো বাড়ানোর আহ্বান বিজিএমইএর
চট্টগ্রাম কাস্টমস্ বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিজিএমইএ’র নেতৃবৃন্দ। বিজিএমইএ’র সহায়ক কমিটির সদস্য এমডিএম. মহিউদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে কমিশনারের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রাক্তন পরিচালক এএম মাহাবুব চৌধুরী, হাসানুজ্জামান চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন শেখর দাশ, সাইফ উল্লাহ মনসুর, এএম শফিউল করিম খোকন। সাক্ষাৎকালে এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ হিসেবে খ্যাত রপ্তানিকারক তৈরী পোশাক শিল্প আজ ইতিহাসের কঠিন সংকটে। বিগত সরকারের সম্পদ ও অর্থ লুটপাটের জেরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেসামাল। টানা মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলার সংকট, ব্যাংকিংসহ নানামুখী সমস্যায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাণের এই রপ্তানিকারক তৈরী পোশাক শিল্প। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যে শিল্প গড়ে উঠে ছিল, তা আজ টিকে থাকার লড়াইয়ে অবতীর্ণ। তিনি আরো বলেন, ‘গত ৫ বছরে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ। পক্ষান্তরে, বিদেশী ক্রেতা পোশাকের দাম ১ সেন্টও বৃদ্ধি করে নাই। নতুন করে আবার শ্রমিকদের ৯ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিতে আমাদেরকে কঠিন সংকটে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের সব মানুষের সাথে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কঠিন এই সময়ে সরকারী বিভিন্ন আইনগত সামষ্ঠিক বিষয় গুলির সহজীকরণ ছাড়া এশিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে না।’ মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প স্থাপন ও কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বন্ড কমিশনারেট সচেষ্ঠ রয়েছে।’ পোশাক শিল্পের বন্ড সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে বিদ্যমান জটিলতা নিরসন পূর্বক দ্রুততার সহিত কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। বন্ড ও বিজিএমইএ’র মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে যে কোন উদ্ধুত সমস্যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পাদন ও কার্যক্রম সহজীকরণ করে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে মর্মেও মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বিজিএমইএন নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।

এবার ওএমএসে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমও বন্ধ করল সরকার
সরকার সাশ্রয়ী দামে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) বিভিন্ন পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ডিম, আলু-পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ভোক্তাদের ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের মধ্যে গত অক্টোবরে খোলা বাজারে কৃষি পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ ১০ টি পণ্য বিক্রয় করা হত।গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ থাকা এই কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে না বলে জানিয়েছেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বাজারে কৃষি পণ্যের দাম কমে আসায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের আরও জানান, বিভিন্ন পণ্যের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করার কারণে মূল্য বৃদ্ধিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে কিছু কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপের বিষয়ে আগামী বাজেটে সমন্বয় করা হবে।বর্তমানে চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ পদ্ধতিতে কিছু জটিলতার কারণে মাঝে চালের দাম বেড়েছিল। চাষাবাদে ঘাটতি মেটাতে ইউরিয়া সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’বিশেষ ওএমএসের কৃষি পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি আলু, ১৩০ টাকায় এক ডজন ডিম, ৭০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ, ৫০ টাকায় এক পিস লাউ ইত্যাদি।