ইউনিয়ন ব্যাংক ধ্বংসকারী তিন কর্মকর্তাই এখন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নীতিনির্ধারক, দুদকের তলব
৯৮ শতাংশ খেলাপি ঋণে প্রায় অস্তিত্বহীন অবস্থায় রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক, শেষ ভরসা হিসেবে আছে শুধু শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক নিয়ে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক। এক সময়ের শক্তিশালী এই ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপ লুট করেছে, আর এতে সহযোগিতা করেছে ইউনিয়ন ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। নামে-বেনামে বহু ঋণ দেওয়া হয়েছে; এমনকি ঋণ দেওয়ার তালিকা থেকে বাদ যাননি ঝাড়ুদার, ড্রাইভার ও কাজের বুয়াও। অসাধু কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ব্যাংকটির তৎকালীন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও বিনিয়োগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, সাবেক ভিপি ও হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মনসুর আহমেদ, এবং সাবেক এভিপি সালাহউদ্দিন। এই তিনজনই বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মো. হাবিবুর রহমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), মনসুর আহমেদ ব্যাংকের বর্তমান মানবসম্পদ প্রধান, এবং মো. সালাহউদ্দিন প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইউনিয়ন ব্যাংকে কর্মরত থাকাকালে এস আলম গ্রুপের অনুকূলে ২৬০৭ কোটি টাকার অনিয়মিত ঋণ অনুমোদনে সরাসরি জড়িত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বর্তমান এমডি হাবিবুর রহমান। ইউনিয়ন ব্যাংক ছেড়ে ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তারিখে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে এমডি পদে আসীন হন হাবিবুর রহমান। হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক মামলা রয়েছে। ২০০০ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ক্রেডিট বিভাগে দায়িত্বে থাকাকালে তিনি ‘প্যাট্রিক ফ্যাশনস’ নামের এক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ গোপন করে নতুন করে ৮ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের জন্য মিথ্যা তথ্য দেন; এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলা হয় (মামলা নং ২৭২/২২)। ২০২৪ সালে এ মামলায় চার্জশিট দাখিলের পর হাইকোর্ট (রিট নং ৫২১৭/২০২৪) বাংলাদেশ ব্যাংককে ৬০ দিনের মধ্যে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এর পরপরই তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদনও দেয়। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরই ব্যাংক লুটপাটে এস আলমকে সহযোগিতা করায় পুরস্কার হিসেবে আগষ্ট'২৪ এ বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই কোন অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক দেউলিয়াপনার কারণে আবারও তাকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হিসেবে অনুমোদন দেয় যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে চার্জশিটভুক্ত ও পালাতক আসামীর এমডি পদে আসীন হওয়ার একমাত্র ও সর্বশেষ ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এর পর থেকেই তিনি একছত্র আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ ও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তার দোসরদের নিয়ে। এই সিদ্ধান্ত ব্যাংক খাতে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ একই মামলায় চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামি রবিউল ইসলামকে প্রথমে এনআরবিসি ব্যাংক এমনকি পরবর্তীতে এসবিএসি ব্যাংকেও এমডি পদে অনুমোদন (NOC) দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দেউলিয়াত্বকে তুলে ধরে। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ একাধিক সূত্র জানায়, পুনঃনিয়োগের পর থেকেই হাবিবুর রহমান ব্যাংকে “অস্বাভাবিক ক্ষমতার প্রভাব” বিস্তার করেছেন। তিনি কয়েক মাসের মধ্যে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বেআইনি ও অযৌক্তিকভাবে চাকরিচ্যুত করেন। ব্যাংকের বর্তমান মানবসম্পদ প্রধান মনসুর আহমেদকে হাবিবুর রহমানের ডানহাত হিসেবে চেনেন অনেকে। ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, যাদের চাকরির বয়স ২০ বছর হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করার দায়িত্ব তার। পরবর্তীতে সেই তালিকা ধরে করা হয়েছে ছাঁটাই। বিভিন্ন দুর্বল ব্যাংক থেকে ছাঁটাইকৃত ব্যাংক কর্মকর্তাদের লেনদেনের বিনিময়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে চাকরি দেন, আর এই কাজটি অতি সূক্ষ্মভাবে করে যাচ্ছেন মনসুর আহমেদ। বর্তমান এমডি হাবিবুর রহমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করে বিভিন্ন দুর্বল ব্যাংক যেমন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রমোশন দিয়ে ইভিপি ও ভিপি পদে নতুনদের আনছেন। মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মনসুর, সেকেন্ডম্যান সেলিম মোল্লা এবং উত্তরা ও পল্লবী শাখার ম্যানেজাররাও ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা। ধীরে ধীরে তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংককে নিজের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছেন। ব্যাংকটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. সালাহউদ্দিন, যিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট না হয়েও নিয়োগ পেয়েছেন। একসময়কার ইউনিয়ন ব্যাংকের এস আলমের সহযোগী এই কর্মকর্তাও কম যান না। এমডি হাবিবুর রহমানের আশীর্বাদে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে এসে প্রভাব খাটিয়ে চলছেন। এছাড়াও, এমডি হাবিবুর রহমানের পরিকল্পনায় ব্যাংকটির ম্যানেজার অপারেশন হিসেবে SBAC ব্যাংক থেকে বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা এ. এন.এম ময়েজ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি SBAC ব্যাংকে কর্মরত থাকা অবস্থায় গুরুতর অনৈতিকতা, আর্থিক অনিয়ম ও দূর্ণীতির দায়ে ১৪.০৩.২০২২ তারিখে বরখাস্তকৃত হন এবং ব্যাংকিং রীতি অনুসারে উক্ত ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন পোর্টালে ২৬.০৫.২০২২ তারিখে এন্ট্রি করা আছে। জনাব ময়েজকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি তে ভুয়া রিলিজ অর্ডার বানিয়ে বিশাল অংকের আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে চাকুরী থেকে বখাস্ত হওয়ার প্রায় তিন বছর পরে আবার নিয়োগ দিয়ে সবচেয়ে বৃহৎ ও প্রধান শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ম্যানেজার অপারেশন হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর ফলে একদা স্বনামধন্য এই ব্যাংক যে কোনো সময় বিপুল আর্থিক ক্ষতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সম্মুখীন হতে পারে। হাবিবুর রহমান এর আরেক দোসর প্রধান লিগাল কর্মকর্তা ও তার অপকর্মের সেফ গার্ড হিসেবে ব্যাংকে সংযুক্ত হয়েছেন সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি তে বোর্ডে অন্তর্কোন্দল সৃষ্টির অন্যতম কারিগর মো: আখতারুজ্জামান। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি এর লিগাল কর্মকর্তা নিয়োগের সার্কুলারের অধিকাংশ শর্তই আখতারুজ্জামান পালন করতে পারেননি এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ডেডলাইনের আগেই তাকে নিজেদের স্বার্থ হাচিলের জন্য তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়া হয়। সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক এই লিগাল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিকতা ও অভিযোগের কোন শেষ নেই। নিজে ব্যাংকের প্রধান লিগাল কর্মকর্তা হয়ে সকল ইল্লিগাল বা বেআইনী কাজের সাথে সংযুক্ত। একজন ব্যাংকার কিভাবে নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয় যা এনবিআর ও দুদকের তদন্তে খুব সহজের বের হয়ে আসবে। দূর্ণীতির দায়ে দুদকের মামলায় কানাডায় পালাতক শিক্ষাগুরু কায়সার আলমের শিষ্য আখতারুজ্জামান সাউথইস্ট ব্যাংকের বর্তমান ও প্রতিষ্ঠাকালীন মাননীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষানুরাগী ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব আবুল কাশেম কে সুদীর্ঘ এক দশকেরও বেশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বাহিরে রাখার প্রধান কুশিলব এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে বোর্ডের ডিরেক্টরদের অন্তর্কোন্দলের প্রধান কারিগর এই আখতারুজ্জামান যার প্রধান কাজই হচ্ছে বোর্ডের ডিরেক্টরদের অন্তর্কোন্দলের সুযোগ নিয়ে কোর্ট ফি, এটর্ণি ফি, দায়রা ও হাইকোর্ট জজদের ম্যানেজের নাম করে ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেওয়া। এছাড়াও কথিত আছে, লোন সেটেলমেন্ট সহ বিভিন্ন বিষয়ে বড়ো অংকের কমিশন ও আর্থিক অনিয়মের ভাগাভাগি সরাসরি এমডির সাথে করে থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা অত্যন্ত ধ্রুত এই কর্মকর্তা। দুদক সম্প্রতি এই তিনজনকেই (হাবিব, মনসুর ও সালাহউদ্দিন) ইউনিয়ন ব্যাংকের অর্থ পাচার তদন্তে তলব করেছে। দুদকের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলার চার্জশিট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বলা যায়, দুইটি গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি ব্যাংকের এমডি পদে থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকের গ্রাহকদের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে এবং BRPD সার্কুলার-৫-কে উপেক্ষা করে স্বপদে বহাল রয়েছে। অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসির ওপর গ্রাহক আস্থা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের আমানতে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে গ্রাহকদের আমানত কমেছে ৬৭ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকের ঋণ খেলাপির হারও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একটি ব্যাংকের ঋণ খেলাপি কম হলে সেটি স্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী ও সুস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়। পাশাপাশি, ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক আমানত বৃদ্ধি পেলে ব্যাংকটি বাজারে ভালো খ্যাতি অর্জন করে। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের পরিস্থিতি উল্টো দিকে যাচ্ছে। ১৯৯৯ সালে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করা এই ব্যাংকের ঋণ খেলাপি এবং কমতে থাকা আমানতের কারণে গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে ব্যাংকের ঋণ খেলাপি হয়েছে ২৯.৩১ শতাংশ, যেখানে ২০২৩ সালে তা ছিল মাত্র ৭.১২ শতাংশ। গ্রাহকদের আমানতও ব্যাপকভাবে কমেছে। ২০২৩ সালে ব্যাংকে আমানত ছিল ২২,৬৬৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ২০,৮৯০ কোটি ১২ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে আমানত কমেছে প্রায় ১,৭৭৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি এখন অন্য ব্যাংক থেকে MTDR নিয়ে এবং আন্তঃব্যাংক ধারদেনা করে কোন রকম CRR ও SLR রক্ষা করছে। সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা পরিদর্শন করে দেখা গেছে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে, টাকা উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে ব্রাঞ্চগুলোতে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাংকের লাভের চেয়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ব্যক্তিগত লাভের দিকে ধাবিত হচ্ছেন বলেই ব্যাংকের মুনাফা কমছে। এই অসাধুচক্র থেকে ব্যাংকটি বাঁচাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। অন্যদিকে ব্যাংকের এমডির স্বেচ্ছাচারিতায় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অন্তর্কোন্দল দেখা দিয়েছে। ইনক্রিমেন্ট না দেওয়ায় কর্মকর্তাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, চাকরি হারানোর ভয়ে মুখ খুলে প্রতিবাদ করতে পারছেন না কেউই। মুখ খুললেই করা হচ্ছে ছাঁটাই। প্রশ্ন উঠেছে, দুর্বল ব্যাংক থেকে প্রমোশন দিয়ে কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার পেছনে এমডি হাবিবুর রহমানের স্বার্থ কী? সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক এই লিগাল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিকতা ও অভিযোগের কোন শেষ নেই। নিজে ব্যাংকের প্রধান লিগাল কর্মকর্তা হয়ে সকল ইল্লিগাল বা বেআইনী কাজের সাথে সংযুক্ত। একজন ব্যাংকার কিভাবে নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয় যা এনবিআর ও দুদকের তদন্তে খুব সহজের বের হয়ে আসবে। দূর্ণীতির দায়ে দুদকের মামলায় কানাডায় পালাতক শিক্ষাগুরু কায়সার আলমের শিষ্য আখতারুজ্জামান সাউথইস্ট ব্যাংকের বর্তমান ও প্রতিষ্ঠাকালীন মাননীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষানুরাগী ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব আবুল কাশেম কে সুদীর্ঘ এক দশকেরও বেশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বাহিরে রাখার প্রধান কুশিলব এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে বোর্ডের ডিরেক্টরদের অন্তর্কোন্দলের প্রধান কারিগর এই আখতারুজ্জামান যার প্রধান কাজই হচ্ছে বোর্ডের ডিরেক্টরদের অন্তর্কোন্দলের সুযোগ নিয়ে কোর্ট ফি, এটর্ণি ফি, দায়রা ও হাইকোর্ট জজদের ম্যানেজের নাম করে ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেওয়া। এছাড়াও কথিত আছে, লোন সেটেলমেন্ট সহ বিভিন্ন বিষয়ে বড়ো অংকের কমিশন ও আর্থিক অনিয়মের ভাগাভাগি সরাসরি এমডির সাথে করে থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা অত্যন্ত ধ্রুত এই কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ঢাকাওয়াচকে বলেন, “আমি ১৭ বছর যাবৎ দক্ষতার সহিত কাজ করে আসছি, আমাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “এমডির খামখেয়ালিপনায় প্রায় আড়াইশ কর্মকর্তাকে জোর করে ছাঁটাই করা হয়েছে।” বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান ঢাকাওয়াচকে বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হয়নি। ব্যাংকটি কনভেনশনাল থেকে ইসলামী শরিয়াহ বেসড ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়েছে, কিন্তু এরপরও সুবিধা করতে পারেনি। ব্যাংকটি অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আমরা ব্যাংকটিকে কঠোর নজরদারিতে রেখেছি।” এ বিষয়ে হাবিবুর রহমানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রতিবেদককে তুচ্ছতাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণ দেখান। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও আমাকে কেন এমডি করা হয়েছে, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রশ্ন করুন।”