স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৪০৬তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

শরি‘আহ্ ভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ৪০৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ড রুমে এ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। সভায় অংশ নেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান একেএম আবদুল আলীম, পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহ্মদ, পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান কামাল মোস্তফা চৌধুরী, পরিচালক ফিরোজুর রহমান, এসএএম হোসাইন, মোহাম্মদ শামসুল আলম, গুলজার আহমেদ, মো. জাহেদুল হক, ফেরদৌস আলী খান, মো. আবুল হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক গোলাম হাফিজ আহমেদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও মো. সিদ্দিকুর রহমান ও কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান।

শিবলী রুবাইয়াত ও শামসুদ্দিনসহ বিএসইসির ৯ কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিল

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও সাবেক কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদসহ প্রতিষ্ঠানের ৯ কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।অন্য যে সাতজনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, সাইফুর রহমান, রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এসকে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রশীদুল আলম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে এই ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল করে। একই সঙ্গে শিবলী রুবাইয়াতসহ ৯ জনেরই দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উল্লিখিত ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা বিএসইসির দায়িত্বে থাকার সময় শেয়ারবাজারে লুটপাটে সহায়তা করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন শিবলী রুবাইয়াত। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে ফিরে যান। এদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। অভিযোগের মধ্যে আছে কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়াতে তিনি কারসাজিকারকদের নানাভাবে সহায়তা করতেন। তাঁর প্রশ্রয়ে শেয়ারবাজারে একটি চক্র গড়ে ওঠে। এই চক্র শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটে নানাভাবে তাঁর কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা পেত। গত ৮ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রয়েছেন।

ডিএসইর ‘অ্যাডভান্সড টেকনিক্যাল এনালাইসিস উইথ প্রাকটিকেল এনালিটিক্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

‘শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হল নিজেদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা। প্রাইস মূভমেন্ট ও ভলিউম অব ট্রেডসহ অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করা হয়। এই মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য শুধু ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসই যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি টেকনিক্যাল এনালাইসিসও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো একে অপরের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পর্কিত। টেকনিক্যাল এনালাইসিস একটি সিগন্যাল দেয় বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে।’ ডিএসই ট্রেনিং একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী (১২-২৮ জানুয়ারি) ‘অ্যাডভান্সড টেকনিক্যাল এনালাইসিস উইথ প্রাকটিকেল এনালিটিক্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপণী দিনে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে ডিএসই’র পরিচালক মো. কামরুজ্জামান এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র টেনিং একাডেমির উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আল আমিন রহমান এবং রিসোস পারসন ফিনটেলেক্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামনুন বিন জাফর। অনুষ্ঠানে মো. কামরুজ্জামান আবও বলেন, ‘আপনারা হয়তো টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। কিন্তু এটি কিভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন।’ কর্মশালায় এডভান্স টেকনিক্যাল এনালাইসিস, ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজিস, ডিজাইনিং ট্রেডিং সিস্টেম, ট্রেডিং সিস্টেম ব্যাক টেস্টিং ও ট্রেডিং টেস্টিং অপটিমাইজেশনের উপর প্রশিক্ষণ দেন শামনুন বিন জাফর।

নির্মাণ খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আট প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাথে রিহ্যাবের চুক্তি

নির্মাণ খাতে নতুন করে আরো ১০ হাজার দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে ৮টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এর আগে ৩ দফায় রিহ্যাব ২১ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে । যাদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানিসহ বিদেশে চাকুরি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কমপিটিটিভনেস এ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম (এসআইসিআইপি) এর আওতায় এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে রিহ্যাব। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জানুয়ারি দুপুরে রিহ্যাবের কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তিতে সই করেন রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূইয়া। এ সময় রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) আব্দুর রাজ্জাক, এসআইসিআইপি-রিহ্যাব প্রজেক্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও রিহ্যাব ট্রেনিং ইন্সটিটিউট স্ট্যান্ডিং কমিটির (আরটিআই) চেয়ারম্যান রিহ্যাব পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. মঞ্জুরুল ফরহাদ ফিলিপ, কো চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মো. শোয়েব উদ্দিন, রিহ্যাব ট্রেনিং ইন্সটিটিউট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও রিহ্যাবের পরিচালক এফএম উবায়দুল্লাহ, সুরুজ সরদার, মুহাম্মদ লাবিব বিল্লাহ্ এবং প্রকল্পের চিফ কো-অর্ডিনেটর কাজী আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে নিজ নিজ প্রতিনিধিরা সই করেন। আবাসন শিল্পে দক্ষ নির্মাণ শ্রমিক তৈরি করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। একই সঙ্গে কোর্স শেষে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে। প্ল্যাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং, মেশন্যারী ও স্টিল বাইন্ডিং, টাইলস এ্যান্ড মার্বেল ওয়ার্কস, ইলেকট্রিক্যাল ইন্সটলেশন এ্যান্ড মেইনটেনেন্স- এই ৪টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণের মেয়াদ হবে চার মাস। প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীদের দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে।

পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজের নারায়ণগঞ্জ ডিজিটাল বুথ উদ্বোধন

আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানের প্রত্যয় নিয়ে পূবালী ব্যাংক পিএলসিরর নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় নারায়ণগঞ্জ শাখা ও ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোর নতুন ঠিকানায় দ্বারোদঘাটন এবং পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের নারায়ণগঞ্জ ডিজিটাল বুথের উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী। গেস্ট অব অনার ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাসুদুজ্জামান, বাংলাদেশ ইয়ার্নমার্চেন্ট এসোসিয়েশন ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি এম সোলায়মান।বিশেষ অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আহছান উল্যা,ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং উইং প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক দেওয়ান জামিল মাসুদ।অনুষ্ঠানের সভাপত্বিত করেন ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান ও উপমহাব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ব্যবসায়ী, বিশিষ্ট ব্যক্তি, গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীসহ অন্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪১৪তম পর্ষদীয় সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ৪১৩তম সভা মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করাহয় এবং বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় পর্ষদের পরিচালক মো. শাহীন উল ইসলাম, মো. আব্দুল ওয়াদুদ, এম আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফরমান আর. চৌধুরী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাফাত উল্লা খান, ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁঞা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির এক সভা মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা ও শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পুঁজিবাজারে বিশেষ তহবিলের আকার ও সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য গভর্নরকে ডিবিএর চিঠি

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের আকার প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকায় বৃদ্ধি করার চিঠি দিয়েছে স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরকে দেওয়া চিঠিতে বিশেষ তহবিলের সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করারও সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামের স্বাক্ষরে এই চিঠি দেয়া হয়। চিঠির অনুলিপি শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে দেয়া হয়। চিঠিতে ডিবিএর পক্ষে থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের শেয়ারবাজার একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের শেষ থেকে আমাদের বাজারে দীর্ঘ মন্দা বিরাজ করছে, যার ফলে ইক্যুইটি বাজার মূলধন (প্রায় ৪০ শতাংশ বা ২,৩০০ বিলিয়ন টাকা) উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই মন্দা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী (যেমন, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ড) এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী, স্টক-ব্রোকার এবং অন্যান্য অংশীদারদের সহ ২০ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারীকে প্রভাবিত করেছে।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এই তহবিলের আওতায় অনেক স্বনামধন্য তফসিলি ব্যাংক শেয়ারবাজারে তাদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করেছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে যাদের পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ৪০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আছে। এই মুহূর্তে এই ধরনের তহবিল বন্ধ করলে পোর্টফোলিও অ্যাকাউন্টে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে এবং বিনিয়োগকারীসহ শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ এ অবস্থায় শেয়ারবাজার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ওই বিশেষ তহবিলের সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে এই তহবিলের আকার প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের জন্য অতিরিক্ত ১০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে ৩০০ কোটি টাকা করার জন্য গভর্নরের নিকট সুপারিশ করেছে ডিবিএ। উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করতে ও বাজারের তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ডিওএস সার্কুলার নম্বর ১’-এর মাধ্যমে তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে শেয়ারবাজারে তাদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগের জন্য একটি বিশেষ তহবিল প্রদানের নির্দেশনা জারি করে। এই বিশেষ তহবিলের আকার প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি টাকায় নির্ধারণ করা হয়। এই তহবিলের মেয়াদ আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

দুর্বল ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের সুখবর দিলেন গভর্নর

দুর্বল ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের হতাশ না হওয়ার অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, ‘চলতি বছরই আমানতকারীরা তাদের টাকা কিংবা এর পরিবর্তে বন্ড বুঝে পাবেন।’ ব্যাংক খাতের অনিয়ম দুর্নীতির জেরে আলোচিত শিল্পগ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা কয়েকটি ব্যাংক দুর্বল হয়ে গেছে। এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী তাদের আমানত তুলতে পারছেন না। টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সাহায্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কর্মশালায় গভর্নর বলেন, ‘দুর্বল ব্যাংকের ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০ বছর আগে থেকে বলে এসেছি, আপনারা এস আলমের ব্যাংকের টাকা রাখবেন না, আপনারা রাখছেন। ২ শতাংশ বেশি লাভের আশায় এখন ধরা খেয়েছেন।’টাকা উদ্ধার করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সময় দিতে হবে। এখনই পারা যাবে না। ধাপে ধাপে এই বছরই হয়তো করা হবে। টাকা বা বন্ড কিছু একটা পাবেন।’সমবায় সমিতির নামে গ্রাহক হয়রানি ঠেকানোর উদ্যোগ নেয়া হবে জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সমবায় সমিতির আন রেগুলেটে মার্কেট তৈরি হচ্ছে। এতে করে স্ক্যাম তৈরি হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ধরনের লাইসেন্স দেয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা বিবেচনা করা হবে। কারণ এগুলো লোন শার্ক তৈরি করছে স্থানীয়ভাবে।’ক্ষুদ্র ঋণের প্রভাবে দারিদ্রতা কমছে কিনা, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘আগামীতে ডিজিটাল ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

গত অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগের ২৯ শতাংশ এসেছে ইপিজেডে

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মোট বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ২৯ শতাংশ এসেছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ইপিজেডে। আর একই অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয়ের ১৬ শতাংশ এসেছে ইপিজেড থেকে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। রাজধানীর গ্রিন রোডে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর, সদস্য (প্রকৌশল) মো. ইমতিয়াজ হোসেন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বেপজার জনসংযোগ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ মো. আনোয়ার পারভেজ। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানান, বৈশ্বিক ও দেশের অভ্যন্তরীণ নানা কারণে গত ছয় মাসে ইপিজেডগুলোতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২২ শতাংশ কমে গেছে। তবে বিনিয়োগ কমলেও রপ্তানি বেড়েছে। ইপিজেডের রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি। ইপিজেডগুলোতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা। আশরাফুল কবীর জানান, বর্তমানে দেশে বেপজার অধীনে মোট আটটি ইপিজেড ও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে– চট্টগ্রাম, ঢাকা, মোংলা, কুমিল্লা, উত্তরা, ঈশ্বরদী, কর্ণফুলী ও আদমজী ইপিজেড এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল। গত অর্থবছরে দেশে মোট ১৪৬ কোটি ৮২ লাখ ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসে। এর মধ্যে শুধু ইপিজেডে এসেছে ৪২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। অন্যদিকে গত অর্থবছরে দেশের মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ডলার। বেপজা থেকে রপ্তানি হয়েছে ৭০৭ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২৪ সালে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বেপজার সঙ্গে ২৮টি নতুন বিনিয়োগ চুক্তি হয়েছে বলে জানান আশরাফুল কবীর। তিনি বলেন, এসব চুক্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। এ পর্যন্ত বেপজার ইপিজেডগুলোতে ৩৮টি দেশ থেকে বিনিয়োগ এসেছে। সবচেয়ে বেশি এসেছে চীন থেকে।

এনসিসি ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত

সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবসায় সম্পসারণের লক্ষ্যে এনসিসি ব্যাংক পিএলসির দুই দিনের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিলেটের হবিগঞ্জে দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে সম্প্রতি এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম সম্মেলন উদ্বোধন করেন।ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ব্যাংকের পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দীন, প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার এবং স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মীর সাজেদ উল বাসার বিশেষ ছিলেন। অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম, মো. জাকির আনাম ও মোহাম্মদমিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম বিগত বছরের অর্থনীতির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ব্যবসায়িক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্য সকলকে অভিন্দন জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের ব্যবসায়ের পরিধি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য আমাদের আরো আন্তরিকতার সাথে সেবার মান অক্ষুন্ন রাখতে হবে এবং স্ব স্ব এলাকায় ব্যবসায়ের নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে হবে।’ আগামী দিনেও ব্যাংকের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং সুনাম বৃদ্ধিতে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য শাখা ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।স্বাগত বক্তৃতায় এম. শামসুল আরেফিন ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকের উন্নতির কথা তুলে বলেন, ‘বিগত বছরে ডলার সঙ্কট ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ধীরগতি সত্বেও ব্যাংকের ঋণ, বিনিয়োগ, মোট সম্পদ, রেমিট্যান্স, বকেয়া ঋণ আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য দিকে, তহবিল সংগ্রহ ব্যয় ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। এছাড়া, সম্মেলনে চলতি বছরে ব্যাংকের বিভিন্ন ব্যবসায় কৌশল নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। ব্যাংকের পরিচালকরা আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির অধিক ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে ব্যাংকের ব্যবসায় বৃদ্ধির উপর জোর তাগিদ দেন; যাতে বিদ্যমান প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিতে এনসিসি ব্যাংকের অবস্থান সুদৃঢ় থাকে।

পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা

শিল্পখাতে গ্যাসের দাম প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পখাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, গ্যাসের দাম বাড়লে পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। শিল্পায়ন ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বরাবর পাঠানো চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল ও বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) চেয়ারম্যান হোসেন মেহমুদ চিঠিতে সই করেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বেশকিছু প্রতিবেদনের সূত্রে আমরা অবগত হয়েছি যে, সরকার শিল্পখাতে গ্যাসের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে, যা প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৭৫ টাকা করা হতে পারে। এরূপ মূল্য বৃদ্ধি কার্যকর করা হলে তা শিল্পায়ন ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’ করোনা মহামারির অভিঘাত মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতে আমাদের বস্ত্র ও পোশাক খাত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির চাপের সম্মুখীন হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, তবে বিগত তিন অর্থবছরের তুলনামূলক প্রবৃদ্ধি বিচারে রপ্তানিতে স্থবিরতা বিরাজ করছে, যা অর্থনীতির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্বেগজনক। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে গ্যাসের মোট সরবরাহ ছিল ২৫ হাজার ৯৪৭ এমএমসিএম, যার ১৮ শতাংশ সরবরাহ করা হয়েছে শিল্পখাতগুলোয়। শিল্পে ব্যবহৃত মোট গ্যাসের প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ হয় পোশাকখাতে, সেই হিসেবে এই শিল্পের বার্ষিক গ্যাস চাহিদা প্রায় ১ হাজার ৪০০ এমএমসিএম। গ্যাসের মূল্য যদি প্রতি ঘনমিটারে ৪৫ টাকা বৃদ্ধি পায়, তবে এই খাতে বার্ষিক অতিরিক্ত প্রায় ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ বৃদ্ধি পাবে, যা রপ্তানি আয়ের প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। পাশাপাশি, টেক্সটাইল শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো দেশের মোট গ্যাস সরবরাহের প্রায় ১০ শতাংশ ব্যবহার করে, যার পরিমাণ বছরে প্রায় ২ হাজার ৫৯৫ এমএমসিএম। ৪৫ টাকা হারে মূল্য বৃদ্ধি করা হলে টেক্সটাইল শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোকে বছরে প্রায় অতিরিক্ত ১১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা খরচ বহন করতে হবে, যা বার্ষিক পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ, এই ব্যাপক হারে খরচ বৃদ্ধি শিল্পের সক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে, ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা রয়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বৈশ্বিক পর্যায়ে পোশাকের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমেও ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আংকটাড প্রকাশিত গ্লোবাল ট্রেড আপডেট প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সালে বিশ্বে পোশাক আমদানি ৫ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আমাদের শিল্পে, বিশেষ করে রপ্তানি মূল্যের ওপর। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারগুলোতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের মূল্য যথাক্রমে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়।’ অপরদিকে, বস্ত্র ও পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে চলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, আর ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ৯ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট কার্যকর করা হয়েছে। বিগত ৫ বছরে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ, বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ডিজেলের মূল্য বেড়েছে ৬৮ শতাংশ এবং ব্যাংক সুদ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪-১৫ শতাংশ হয়েছে। সার্বিকভাবে বিগত ৫ বছরে কারখানার গড় উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই রপ্তানিখাতে প্রচলিত প্রণোদনা কমিয়ে আনা হয়েছে। যেমন: দেশীয় বস্ত্রের বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া, জুলাই বিপ্লবের পূর্বে ও পরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়া, ব্যাংকিং সেক্টরে সংকট, শ্রম অসন্তোষ ও সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যু, ইত্যাদি কারণে শিল্পের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং সাপ্লাই চেইন বিপর্যস্ত হয়েছে। চিঠিতে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বর্তমানে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন আমাদের কারখানাগুলো গ্যাসের অপর্যাপ্ত চাপ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে এবং ব্যাপক আর্থিক লোকসানের শিকার হচ্ছে। আমাদের শিল্পঘন এলাকাগুলোতে বিশেষ করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ এবং সাভারে অবস্থিত কারখানাগুলোয় গ্যাস সংকটের কারণে ৫০-৬০ শতাংশ হারে উৎপাদন কমে গেছে। ফলে, কারখানাগুলোর প্রোডাকশন শিডিউল এবং সরবরাহ চেইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে পোশাক খাতে সময়মতো কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে শিল্পে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে, লিড টাইম ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং আমরা ক্রেতাদের আস্থা হারাচ্ছি। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে যখন শিল্পখাতে গ্যাসের মূল্য ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল, তখন শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তার সুফল শিল্প পায়নি।’ সম্প্রতি বস্ত্র ও পোশাকখাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে পোশাক শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং বস্ত্রখাতে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ১৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে তা বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং চলমান মিল ও কারখানাগুলোকে সংকটে ফেলবে। মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রাক্কালে যখন ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতে বিনিয়োগ প্রয়োজন, তখন এরকম একটি উদ্যোগ বিনিয়োগ সহায়ক নয়। ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘বস্ত্র ও পোশাকখাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, সামাজিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। অতএব অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এই শিল্পের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বৈশ্বিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জ এবং দুর্বলতার কারণে শিল্পটি এরই মধ্যে একটি সংকট পার করছে, এই পরিস্থিতিতে দুটি সুপারিশ বিবেচনার অনুরোধ করেন তারা।’ এগুলো হল শিল্পখাত ও ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোয় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্থগিত করা এবং এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি প্রতিযোগিশীল ও টেকসই মূল্য নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়ন এবং শিল্পখাতে বিরাজমান গ্যাসের সংকট মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ। যেমন: সিএনজি স্টেশন থেকে সিলিন্ডারের মাধ্যমে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে মধ্য-দীর্ঘমেয়াদি কৌশল ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।’ এই বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের সঙ্গে বিশদ আলোচনার জন্য এবং প্রয়োজনীয় আরও তথ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত আছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন। শিল্পখাতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে দেড়গুণ বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। জ্বালানি বিভাগের অনুমোদনের পর গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে এ প্রস্তাব দেয় তারা। কমিশন সভায় বিইআরসি বাড়তি দামের অনুমোদন দিলেই বাড়বে গ্যাসের দাম। তবে এ বিষয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিইআরসির সচিব ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, ‘চলতি মাসের কমিশন সভা হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী কমিশন সভা বসবে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ বিইআরসিকে পাঠানো পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়, ‘পুরোনো গ্রাহকের ক্ষেত্রে অনুমোদিত লোডের বাড়তি ব্যবহৃত গ্যাসের বিল হবে নতুন দামে। যেসব শিল্পকারখানা নতুন সংযোগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আগের দাম দিতে হবে। এর বাইরে বাকি খরচের জন্য নতুন দাম প্রস্তাব করা হয়েছে।’ শিল্পে গ্যাস ব্যবহারের এক চিত্র তুলে ধরেছে পেট্রোবাংলা। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত হিসাবে দেখা গেছে, শিল্পে অনুমোদিত লোডের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাপটিভে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে পুরোনো কারখানায় বাড়তি এমন ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্যাসের বিল হবে নতুন দামে। পেট্রোবাংলা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে দেশে উৎপাদিত গ্যাস কিনে নেয়। এতে প্রতি ইউনিটে তাদের গড়ে খরচ হয় ৬ টাকা ৭ পয়সা। এছাড়া তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে খরচ হচ্ছে প্রতি ইউনিটে ৭৫ টাকার বেশি। এতে লোকসানে আছে সংস্থাটি। তবে নতুন করে ভর্তুকি দিতে রাজি নয় সরকার। ফলে এখন এলএনজি আমদানির খরচ পুরোটাই শিল্পের ওপর চাপাতে চাইছে পেট্রোবাংলা। এলএনজি আমদানি করে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৬ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ঘাটতি হতে পারে বলে এক হিসাব দেখিয়েছে পেট্রোবাংলা। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেনা এলএনজির খরচ হিসাব করে প্রতি ইউনিটের দাম প্রস্তাব করেছে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা। এর মধ্যে আমদানি খরচ ৬৩ টাকা ৫৮ পয়সা। বাকিটা শুল্ক, কর ও পরিচালন খরচ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম গড়ে ৮২ শতাংশ বাড়ানো হয়। তখন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৩০ টাকা। ক্যাপটিভে ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছিল। পরে ক্যাপটিভে আরেক দফা গ্যাসের দাম বাড়িয়ে করা হয় ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা। শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে ব্যবসায়ীদের হতাশ হওয়া প্রসঙ্গে গত ৮ জানুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘যদি এতো বেশি দাম বাড়ানো হয় তবে ব্যবসায়ীদের হতাশ হওয়াটা যৌক্তিক। পেট্রোবাংলা প্রস্তাব করেছে আর সেটা চিন্তাভাবনা আলোচনা না করে কার্যকর হবে সেটা নয়। আপনারা এ বিষয় নিয়ে বসুন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি ন্যায্য প্রস্তাবনা দিন। দাবিগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করুন। যেটা যৌক্তিক সেটা হবে।’ শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘আমি আমার ব্যবসায় ত্যাগ করেছি, আপনাদের ব্যবসায় এগিয়ে নেওয়ার জন্য। যে কোনো যৌক্তিক দাবি নিয়ে আপনারা আসুন। একসঙ্গে বসি, সমস্যাগুলো সমাধান করি। তবে উভয়পক্ষকে সব সমস্যা উপলব্ধি করে সমাধান চিন্তা করতে হবে।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘দাম বাড়ানো বা বিভিন্ন কর বাড়ানো সরকারের পক্ষে কিন্তু স্বস্তিদায়ক নয়। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে করতে হচ্ছে, কারণ বিগত সরকার এ দেশে বড় নৈরাজ্য করে গেছে। প্রচুর টাকা পাচার করে নিয়েছে। যার ভার এখন বহন করতে হচ্ছে সবাইকে। এতে সাময়িক কষ্ট হলেও ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।’ এর আগে বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে শিল্প উদ্যোক্তারা কারখানা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবেন। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী সরকার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাহলে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার আর বর্তমানের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে পার্থক্য কী থাকল?’ তিনি বলেন, ‘আমরা (ব্যবসায়ীরা) না বাঁচলে সরকার বাঁচবে কীভাবে? সরকারের কাছে আর কিছু চাইবো না। এখন বলবো নিজে বাঁচুন। গত ১৫ বছর সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি।’ বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘গ্যাসের দাম এতো বেশি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের কিছু জানানো হচ্ছে না। এতে পোশাকখাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ব্যবসায় পরিস্থিতি খুব খারাপ। এ অবস্থায় ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়েও চিন্তা করতে হবে। আমাদের রিজার্ভ, ব্যাংক লুটপাট হয়েছে, এখন গ্র্যাজুয়েশনে গেলে সেটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।’ বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘এক সময় এ দেশে পোশাক শিল্প বড় হয়েছিল কম খরচে এনার্জি ও শ্রমের কারণে। এখন এসব খাতেই বড় খরচ হচ্ছে। আবার এ দেশে ব্যাংকের লোন দীর্ঘমেয়াদি নয়। সুদের হার চড়া। সবকিছু মিলে ব্যবসায়ের পরিস্থিতি ভালো নয়।’

টেবিলের নিচে টাকা দেওয়ার চেয়ে বাড়তি ভ্যাট ভাল: অর্থ উপদেষ্টা

টেবিলের নিচে টাকা দেওয়ার চেয়ে বাড়তি ভ্যাট ভাল বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বাড়তি ভ্যাট দিলেও অন্য দিক থেকে কিন্তু সুবিধা মিলবে। ব্যবসায়ীদের নানা খাতে কয়েকটি জায়গায় বাড়তি টাকা দিতে হবে না। শুধু ভ্যাটেই সীমাবদ্ধ থাকবে, আমরা সে কাজই করছি।’ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘রিফর্মস ইন কাস্টমস ইনকাম ট্যাক্স অ্যান্ড ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট টু অ্যাড্রেস দ্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। ভ্যাট প্রসঙ্গে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘একটু ধৈর্য ধরেন। আমরা বাড়তি ভ্যাট নিয়ে মাতারবাড়ি পোর্ট করছি। নানা উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা খরচ করছি। আমরা ভ্যাট নিয়ে নিজের পকেট ভারী করব না। জনগণের জন্য কাজ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রিফর্মগুলো আমরা করব। আমার মনে আছে, ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে এক সময় টেলিফোন লাইন নিয়েছিলাম। যাতে করে ঘুষ না দিতে হয়, সেই জন্য আমরা রিফর্ম করে যাব। ট্যাক্স, পলিসি ও ভ্যাটের রিফর্ম করব। ভ্যাটের বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে। কিন্তু আমরা রিফর্ম করব।’

এসকে সুরের ৩ লকার থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণ উদ্ধার

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এসকে সুর) ব্যক্তিগত তিনটি লকারে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণ পাওয়া গেছে। রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৭ সদস্যের দল সুরের লকার ভেঙে এসব টাকা ও স্বর্ণ উদ্ধার করে।দুদকের পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান জানান, তিনটি লকার থেকে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো, এক কেজি ৫৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গিয়েছে।এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সালেহা নুর ও দুদকের পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে উপস্থিত হয়। এরপর লকারের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে মিটিং সম্পন্ন হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা নাটকীয়তায় দুদক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকেই অবস্থান করেন। দীর্ঘ সময়েও তারা সুরের ব্যক্তিগত লকার খুলতে পারেননি। পরে সুরের তিনটি লকার তারা খুলতে সমর্থ হন।গত ১৯ জানুয়ারি এসকে সুরের ধানমণ্ডির বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও সাড়ে চার কোটি টাকার ফিক্স ডিপোজিটের ডকুমেন্ট উদ্ধার করে সংস্থাটি। সেখানেই বাংলাদেশ ব্যাংকে তিনটি লকার থাকার নথি পায় তারা। আদালতের নির্দেশে এসব লকার খোলার অনুমতি পায় দুদক। মূলত এসকে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন। কয়েকজন আসামির জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য।এর আগে গত আগস্টে এসকে সুরের পরিবারের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক। আলোচিত পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরপর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। গেল ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়। চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।’ এরপর বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক আরেক চিঠিতে জানায়, এসকে সুর তিনটি লকার নম্বরে মূল্যবান সামগ্রী রেখেছেন। এর মধ্যে তিনি গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বরের এসডি-৪৪/৬১ ও ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এসডি-৪৮/১২ নম্বরের নমিনি করেছেন স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীকে।এর আগে গত ২৯ মার্চ এসকে সুরকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এসকে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

চলতি মাসে যেসব ব্যাংকে আসেনি কোনো রেমিট্যান্স

চলতি জানুয়ারির ২৫ দিনে দেশে ২০ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে এই সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকসহ ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারির প্রথম ২৫ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি ব্যাংকসহ ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এরমধ্যে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়াও ৩টি বিদেশি ও ৩টি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। এছাড়াও জানুয়ারির ২৫ দিনে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমেও দেশে কোনো রেমিট্যান্স পাঠায়নি প্রবাসীরা।

গভর্নরের সাথে এফবিসিসিআইয়ের সভা: অনিচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের পুনর্বাসন চান ব্যবসায়ীরা

যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি নয়, তাদের জন্য নীতিসহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনীতিতে পুনর্বাসনের সুপারিশ করেছে শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার স্থিতিশীলসহ ডলারের যোগান স্বাভাবিক রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভায় এসব সুপারিশ তুলে ধরেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানাকে নীতিসহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়জনিত ক্ষতি মোকাবিলায় উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান, সময়মত এক্সপোর্ট বিল পরিশোধ, এসএমই এবং কৃষি খাতের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা সম্প্রসারণসহ দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় প্রতিনিধিরা। মতবিনিময় সভায়, স্থানীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখতে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন ব্যবসায়ী নেতারা। আহসান এইচ মনসুর জানান, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড়ভাবে কাজ করছে। অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা আহ্বান করেন তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, সহ-সভাপতি আবুল কাশেম হায়দার, আব্দুল হক, মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এসএম ফজলুল হক, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, সাধারণ পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন নয়ন ও মো. জাকির হোসেন প্রমুখ।

সাত ঘণ্টায়ও এসকে সুরের লকার খুলতে পারেনি দুদক

সাত ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এসকে সুর) গোপন লকার খুলতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। তার লকার খোলা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে এসকে সুরের লকার খুলতে দুদকের সাত সদস্যের একটি টিম আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। সবকিছুর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও সন্ধ্যায় ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লকার খোলা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে লকারের দায়িত্ব থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আমজাদ হোসাইন খানকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। প্রসঙ্গত, এর গত ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির ধানমন্ডিতে এসকে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)। এর পর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের এক সভা রোববার (২৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

পূবালী ব্যাংকের রাজশাহী অঞ্চলের ‘প্রথম শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত

সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবসায় সম্প্রসারণে ব্যবস্থাপকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পূবালী ব্যাংক পিএলসির রাজশাহী অঞ্চলের ‘প্রথম শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন- ২০২৫’ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে পূবালী ব্যাংকের রাজশাহী অঞ্চলাধীন শাখাগুলোর ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশ নেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী।বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের সংস্থাপন ও সাধারণ সেবা বিভাগ প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী অঞ্চল প্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাজিদুর রহমান।২০২৫ সালে ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিভিন্ন কৌশল ও দিক নিয়ে সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

জানুয়ারির ২৫ দিনে রেমিট্যান্স এল ২০ হাজার কোটি টাকা

দেশে চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৫ দিনে বৈধপথে ১৬৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২০ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮১৮ কোটি টাকা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৫ দিনে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আলোচিত সময় কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে। এগুলো হল সরকারি খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি খাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে দেশে এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ১৯৩ কোটি মার্কিন ডলার এবং ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এর আগে, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।

‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নে জাপানের সহায়তা চান নৌপরিবহন উপদেষ্টা

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জ্বালানি পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে জাইকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। জাইকার সার্বিক সহযোগিতায় মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া, সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনায় জাপানের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশের মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে জাইকাকে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছে সরকার।’ রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে গত ৫০ বছরের বেশি সময়েও বাংলাদেশে কোন সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি বন্দর পৃথকভাবে তাদের কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন আধুনিক ও সমন্বিতভাবে কার্যকর বন্দর ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন অটোমেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বেশি বেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট র্স্ট্যাটেজি’ প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সব সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে।’ জাইকার সহযোগিতায় ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। জাইকার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ জাপানের অকৃত্রিম বন্ধু। জাপান সব সময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে।’ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জাইকার প্রতিনিধি দল। বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অগ্রগতি পর্যালোচনাপূর্বক বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যেই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইসিগুসি টমোহাইডের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এলএনজি আমদানি: মার্কিন কোম্পানির সাথে চুক্তি, জানে না ক্রেতা প্রতিষ্ঠান

বছরে ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজির সাথে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) করা চুক্তিকে ‘চুক্তি নয়’ ‘প্রাথমিক ধাপ’ বলে মনে করছে জ্বালানি বিভাগ। বিডার এই চুক্তির ফলে জ্বালানি বিভাগের কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়নি বলেও মনে করছেন জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এদিকে, চুক্তির বিষয়ে দেশে এলএনজির একক ক্রেতা পেট্রোবাংলা ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) কিছুই জানে না। সংস্থা দুটির সংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন, বিডার চেয়ারম্যানের করা চুক্তি সম্পর্কে তারা অবহিত নয়। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তারা জেনেছেন। তবে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিডা থেকে তাদের জানানো হয়েছে, এ ধরনের একটি চুক্তি হতে পারে, নাও পারে। তবে দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এ ধরনের চুক্তি থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ, দেশে এলএনজি ক্রয়ের কোনো বেঞ্চমার্ক নেই। তার পরও চুক্তি করা হলে তো বিগত সরকারের মতোই হয়ে গেল। স্বচ্ছতা থাকল না। সবকিছুতে স্বচ্ছতা আনা উচিত।’ এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এটা নন-বাইন্ডিং একটা চুক্তি। এটা চুক্তি না, চুক্তির একটি প্রাথমিক ধাপ। এতে করে আমাদের কোনো অবলিগেশন্স ক্রিয়েট (বাধ্যবাধকতা তৈরি) হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন এ কোম্পানিটি গ্যাস এক্সপ্লোর করবে, তারপর এলএনজি আকারে সরবরাহ করবে। এটা সময়ের ব্যাপার।’ মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে করা চুক্তি বিষয়ে বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আজ ট্রাম্পের নতুন এনার্জি এক্সপোর্ট ম্যান্ডেটের ওপর ভিত্তি করে একটা ল্যান্ডমার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট সাইন করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আমরাই প্রথম দেশ কোনো ডিল সাইন করলাম। ট্রাম্পের ইলেকশন প্রমিজের মধ্যে ‘ড্রিল, বেবি ড্রিল’ এই স্লোগানটা বেশ পপুলার ছিল। সেটা এই এনার্জি এক্সপোর্টকে ঘিরেই। আমাদের দেশে গ্যাসের বিশাল সংকট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ, কর্মসংস্থান ইত্যাদির জন্য আমাদের লং টার্ম গ্যাস সাপ্লাই সলিউশন বের করতেই হবে। মিডল ইস্টের বাইরে আমেরিকা একটা ইন্টারেস্টিং অলটারনেটিভ। কিন্তু, এই সাইনিংয়ের গুরুত্ব অন্য জায়গায়। ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির অ্যাঙ্গেল থেকে। ট্রাম্প সরকারের স্টাইল খুবই ডিফারেন্ট। তারা জাত ব্যবসায়ী। আঁতেল টাইপের কথাবার্তায় নেই। স্ট্রেইট অ্যাকশন দেখতে চায়। লুইজিয়ানার সিনেটর বিল ক্যাসিডি সাইনিংয়ের কথা শুনে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরল! আগামী বছরগুলোতে আমরা যখনই বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে যাবো, আমরা বলতে পারব যে, বাংলাদেশ কিন্তু তার প্রথম পার্টনার ছিল। তার আমেরিকা ফার্স্ট এর সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশ ফার্স্ট। আর আমাদের জন্য বাংলাদেশের ইন্টারেস্ট ফার্স্ট!’ বিষয়টি নিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দেশে বছরে ৫০ লাখ টন তরলীকৃত গ্যাস সরবরাহ করবে মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বড় ধরনের একটি নন-বাইন্ডিং চুক্তির আওতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছে এ গ্যাস সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আর্জেন্ট এলএনজি বছরে আড়াই কোটি টন এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতার একটি অবকাঠামো গড়ে তুলছে লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরচনে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সেখান থেকে পেট্রোবাংলার কাছে চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি বিক্রি করতে পারবে।’ এ ব্যাপারে আশিক চৌধুরী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্পে ক্রমবর্ধমান নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকেও শক্তিশালী করবে।’ তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানে না পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএল। এই দুটি সংস্থার তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।’ তারা বলেন, ‘এলএনজির কোনো চুক্তি করতে হলে পণ্যটির একক ক্রেতার মতামত অবশ্যই নিতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া, সরকার পর্যায়ে চুক্তি করতে হলে উভয় পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে। সরকার কখনো অন্য দেশের বেসরকারি কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে না। কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হলে, উভয় দেশের কোম্পানি পর্যায়ে চুক্তি হতে হবে। এখানে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিডা কীভাবে মাকিন বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটা সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরাই বলতে পারবে।’ তবে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বিডা থেকে জানানো হয়েছিল এ ধরনের কোনো চুক্তি হতে পারে, আবার নাও পারে। তবে বিস্তারিত জানানো হয়নি। এ বিষয়ে জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সরকারকে বিরত থাকাই উচিত। যারা কিনবে তারা জানে না, অথচ চুক্তি হলো।’ তিনি বলেন, ‘দেশে এলএনজি কেনার কোনো বেঞ্চমার্ক নেই। তাই, কার থেকে কোন দামে এলএনজি কেনা হবে- এগুলো স্বচ্ছ থাকা জরুরি।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের উপশাখা ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উপশাখা ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন শনিবার (২৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার শেরাটন হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মজনুজ্জামান। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল লাইস মোহা. খালেদ। সম্মেলনে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. মাহবুব আলম, মো. রফিকুল ইসলাম, ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মো. মাকসুদুর রহমানসহ ২৬৫টি উপ-শাখার ইনচার্জ এবং প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়: বিসিআই

অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও ব্যবসায়-বাণিজ্যে স্বস্তি না ফেরার বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) বলেছে, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়।’ তাই ‘যত দ্রুত সম্ভব’ অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটির তেজগাঁওয়ে বিসিআইয়ের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যত শর্ট টার্ম হোক, যত কুইক হোক, অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া উচিত।’ ‘তাতে সবার মধ্যে একটা স্বস্তি আসবে। ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়।’ সংবাদ সম্মেলনে বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা একে অপরকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও অর্থনীতি নিয়ে কিছু বলছেন না।’’ পোশাক খাতে জেনারেলাইজড স্কিম অফ প্রিফারেন্সেস (জিএসপি) ফিরে পেতে সরকার শ্রম আইন বাস্তবায়ন করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে সরকার, এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ করে বাকিটা বাস্তবায়নে অন্তবর্তী সরকার পথনকশা করে দিতে পারে বলে মনে করেন বিসিআইয়ের সভাপতি। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক নীতি নিয়েছে; তারল্য সরবরাহ কমিয়েছে।’ ‘কিন্তু আইএমএফের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কিছু জায়গায় প্রস্তুতি নিতে পারি; কমপ্ল্যায়েন্স পূরণ করার জন্য অনেক জায়গায় কাজ করতে পারি। আইএমএফের প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’’ আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘সরকার এক দিকে সুদহার বাড়িয়ে রেখেছে, অন্যদিকে আছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি। এতে ব্যাংকের ‍ঋণ বিতরণ কমবে।’ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের কথা আছে বাংলাদেশের। তবে, এই সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পেছানো দরকার বলে নিজের পর্যবেক্ষণ দেন তিনি। বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘গত (আওয়ামী লীগ) সরকার বাহবা নেওয়ার জন্য ফোলানো-ফাঁপানো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে উত্তরণের পথে হেঁটেছিল। আমরা ব্যবসায়ীরা মনে করছি, এই সময়সীমা পেছানো না হলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে।’ বিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, পরিচালক শহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এসএম শাহ আলম, জিয়া হায়দার, জাহাঙ্গীর আলম ও খায়ের মিয়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।