
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন। এই মামলা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কারফিউর সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উসকানির দায়ে দায়ের করা হয়েছিল।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল, যার নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, তাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী আবেদন করেন। তবে ট্রাইব্যুনাল এই মুহূর্তে অনুমতি দেননি।
এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সময় চাইলে, পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। এই শুনানিতে মনসুরুল হক চৌধুরী সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের পক্ষে অংশ নেন এবং বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল জানায়, এই বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে। শুনানিতে প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষ উভয়ের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
শুনানির পর মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, "বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিতে হয়। পরে বার কাউন্সিলে আবেদন করতে হয়। তাদের অনুমতি পেলে আইনজী নিয়োগে কোনো বাধা থাকবে না। তাই ট্রাইব্যুনালে আমরা সেই দরখাস্ত করার পর আপত্তি দিয়েছে প্রসিকিউশন। আইনের ব্যাখ্যা শুনেছেন আদালত। আইন পর্যালোচনা করে পরবর্তী পর্যায়ে আদেশ দেবে।"
এর আগে ৪ ডিসেম্বর প্রসিকিউশন সালমান ও আনিসুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেল তা আমলে নেন।
প্রসিকিউশন জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ফোনালাপে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের দমন করার কথাও বলেছিলেন। তাদের কথার প্রভাবেই ২০২৪ সালের ১৯ জুলাইসহ পরবর্তীতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রসিকিউশন আরও জানায়, এই হত্যাকাণ্ডে তারা উসকানি দিতেই অভিযুক্ত, একইসঙ্গে হত্যার সঙ্গে সহায়তা ও সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে।
গত বছরের ১৩ আগস্ট পালানোর সময় গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তারা কারাগারে রয়েছেন।