
নোয়াখালীর হাতিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। হুমকির লক্ষ্য ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দরোড বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক যুবকের নাম ইসরাত রায়হান অমি (২৭)। তিনি চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ফেসবুকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আব্দুল হান্নান মাসউদের চাচা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শামছল তিব্রিজ এই জিডিটি করেন।
জিডিতে সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময়ে নানা কৌশলে আব্দুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, যেকোনো সময় তারা বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এই ঘটনার প্রতিবাদে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাতিয়া থানার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা সমবেত হয়ে হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়।
জিডির বর্ণনা অনুযায়ী, ‘ইসরাত রায়হান ওমি’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এনসিপির এক কর্মীর মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অমি লিখেছেন, ‘আবদুল হালিম আজাদকে নাকি গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে কতিপয় নেতা। হান্নান বল আর তানভির বল যেই নেতাই হোক, খোদার কসম করে বললাম, উত্তর অঞ্চলে চলাচল হারাম হয়ে যাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা ডাইরেক্ট গিলে খেয়ে ফেলবে। এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তোর নেতাকে এটা কপি করে পাঠাইছ।’
এ বিষয়ে শামছল তিব্রিজ বলেন, ‘আমরা সাতজনের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি করেছি। ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। আশা করি পুলিশ সবাইকে গ্রেপ্তার করবে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
নিজের প্রতিক্রিয়ায় আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো ন্যাক্কারজনক অপরাধ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার সুস্পষ্ট অপচেষ্টা এবং গণতান্ত্রিক চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত। জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনলে এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা আরও বাড়বে।’
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত ইসরাত রায়হান অমিকে আটক করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।