জুলাই শহীদের মেয়েকে ধর্ষণ

দুই আসামির ১৩ বছর ও একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড


দুই আসামির ১৩ বছর ও একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড

পটুয়াখালীর দুমকীতে একটি কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে তিন কিশোরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে ১৩ বছর করে এবং অন্যজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত তিন আসামি আদালতে হাজির ছিল। এছাড়াও, ভুক্তভোগী কিশোরীর মা, দাদা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো: সাকিব মুন্সি, সিফাত মুন্সি ও ইমরান মুন্সি। আদালত ধর্ষণ মামলায় এই তিন আসামিকে ১০ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এর পাশাপাশি, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে সাকিব এবং সিফাতকে অতিরিক্ত তিন বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ধর্ষণ মামলার এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার। তারা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন: "আমাদের প্রত্যাশা ছিল আসামিদের ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।"

বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এই মামলায় আসামিদের বিচার কার্যসম্পন্ন হয়েছে শিশু আইনের অধীনে। এই আইনি প্রক্রিয়ার কারণেই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোরী ছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার একজন শহীদের বড় মেয়ে এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই তিনি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।

আসামিরা মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক তাকে একটি বাগানবাড়িতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করলেও আশেপাশে বসতবাড়ি না থাকায় কেউ তা শুনতে পায়নি। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর ছবি তোলে এবং কাউকে কিছু জানালে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরদিন দুমকী থানায় ভুক্তভোগী কিশোরী এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে সাকিব মুন্সিকে আটক করে। পরে সিফাত মুন্সি এবং তথাকথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সিকে আটক করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য পরবর্তী সময়ে আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক ৬ নং রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×