যশোরে আ.লীগের তিন নেতা ও ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা


যশোরে আ.লীগের তিন নেতা ও ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

এক যুগেরও বেশি সময় আগের একটি ঘটনায় মারধর, চাঁদা দাবির অভিযোগ এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যশোরে আওয়ামী লীগের তিন নেতা ও ৯ পুলিশ সদস্যসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপির এক নেতা।

সোমবার, ৬ অক্টোবর, যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগটি দায়ের করেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু। বিচারক জাকিয়া সুলতানা মামলাটি তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী দেবাশীষ দাস।

মামলার অভিযোগপত্রে অ্যাডভোকেট মিন্টু দাবি করেন, ২০০৮ সালের ১৬ জুন রাতে তিনি যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামে তার চাচা আব্দুল মালেকের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় শার্শা থানার তৎকালীন এসআই আব্দুস সালাম, এসআই রকিবুজ্জামান, এসআই ইকবাল আহমেদ এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান কবিরউদ্দিন তোতা, রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম তাকে সালাম জানানোর কথা বলে থানায় নিয়ে যান।

থানায় নেওয়ার পরপরই তার হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। একপর্যায়ে এসআই রকিবুজ্জামান ও এসএম বদরুল আলম তার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, নির্যাতনের সময় তাকে বেদম মারধর করা হয় এবং টাকা জোগাড় করতে বাধ্য করা হয়। একপর্যায়ে ওসি তার চোখ বেঁধে, হাত পিছনে নিয়ে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেন এবং তার পায়ের পাতায় পানি ভর্তি বোতল, রুল ও আগ্নেয়াস্ত্রের কাঠের বাট দিয়ে মারধর করেন।

পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে মিন্টুর চাচাতো ভাই আব্দুস সালাম থানায় গিয়ে ৫ লাখ টাকা ওসিকে দেন। তবুও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। বরং আওয়ামী লীগ নেতাদের সরবরাহকৃত একটি শাটার গান ও দুই রাউন্ড গুলি সহকারে তাকে আদালতে চালান দেওয়া হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

এই ঘটনার ফলে গুরুতর আহত অ্যাডভোকেট মিন্টুকে দেশ ছাড়াও ভারতে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তার নির্যাতনের খবরে মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মিন্টু জানান, “দীর্ঘদিন চিকিৎসা, এলাকাছাড়া জীবন এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।”

মামলায় আসামি হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন: আওয়ামী লীগ নেতা কবিরউদ্দিন তোতা, রফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম; শার্শা থানার তৎকালীন ওসি এসএম বদরুল আলম; এসআই আব্দুস সালাম, রকিবুজ্জামান, ইকবাল আহমেদ; এএসআই আজাদ হাওলাদার; কনস্টেবল সুলতান আলম, এরশাদুল হক, আবুল কালাম ও রিয়াজুল ইসলাম। পাশাপাশি অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×