খাগড়াছড়ির সেই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসক


খাগড়াছড়ির সেই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসক

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে সম্প্রতি একটি ধর্ষণের অভিযোগে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ, হামলা-পাল্টা হামলা, নিহত-আহত ও ১৪৪ ধারা জারি—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন বলছে, ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হননি।

সোমবার ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহ্মেদ। তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে। ধর্ষণের কোনও আলামত পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারের কাছে হস্তান্তর করেছি।”

প্রাথমিকভাবে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জয়া চাকমার নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য ছিলেন মোশাররফ হোসেন ও নাহিদা আক্তার। বোর্ডের প্রধান জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই এবং ধর্ষণের আলামতও নেই।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আরেফিন জুয়েল বলেন, “সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে গেছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। মিথ্যা অভিযোগ তুলে পুরো পার্বত্য এলাকা অস্থিতিশীল করা হয়েছিল।”

এরপরও ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে ডাকা সড়ক অবরোধ মঙ্গলবারও চলেছে। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কে কিছুটা শিথিলতা থাকলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কে অল্পসংখ্যক অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। জেলা সদর ও গুইমারায় ১৪৪ ধারা এখনও বহাল।

অবরোধ চলাকালীন গুইমারার রামেসু বাজারে সহিংসতা, পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে তিন জন নিহত হন—সবই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সদস্য। আহত হন অন্তত ২০ জন, যাদের মধ্যে একজন সেনাবাহিনীর মেজর।

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিচ্ছে। সোমবার থেকে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”

নিহতরা হলেন- আথুই মারমা (২১), দেবলছড়ি চেয়ারম্যানপাড়া, সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন, আথ্রাউ মারমা (২২), হাফছড়ি ইউনিয়ন সাং চেং গুলিপাড়া, তৈইচিং মারমা (২০), রামেসু বাজার বটতলা এলাকা

সিভিল সার্জন জানান, আহত ১৪ জনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়; ১৩ জন চিকিৎসাধীন ও একজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঘটনার রাতে প্রাইভেট পড়ার পথে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আহত অবস্থায় একটি ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে ছয় দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×