জনতার মন জয় করতে টং দোকানে চা আড্ডায় সারজিস
- লালমনিরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:২৪ পিএম, ২৯ মে ২০২৫

লালমনিরহাটে মহাসড়কে হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে সোজা পাশের টং দোকানে চলে গেলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক ( উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। সেখানে চা অর্ডার দিয়ে দোকানের আগন্তুক লোকদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেন তিনি। চমকে উঠেন স্থানীয়রা। মুহূর্তে ভিড় জমে যায় জাহাঙ্গীরের চা দোকানে।
বৃহস্পতিবার(২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পথ সভা শেষে ফেরার পথে হাতীবান্ধা হাফেজ সাহেবের মাজারের সামনের চা দোকানে নামেন তিনি।
জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির একদিনের দলীয় সফরে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটে আসেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক(উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। জেলার ৫টি উপজেলায় পথসভার জন্য ৬টি স্থান নির্বাচন করে দলীয় নেতাকর্মীরা। শুরু হয় জেলার শেষ প্রান্ত পাটগ্রাম উপজেলা থেকে। সেখানে শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাঙ্গী মোড়ে পথসভা করেন সারজিস আলম। এরপর লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক হয়ে ফিরছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলার মেডিকেল মোড়ের দ্বিতীয় ভেনুর উদ্দেশ্যে। তার গাড়ি বহরে দুইটি মাইক্রোবাস ছিল।
সারজিসকে বহন করা গাড়িটি হঠাৎ হাতীবান্ধা উপজেলার হাফেজ সাহেবের মাজার এলাকায় দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে নেমে আসেন এনসিপি নেতা সারজিস আলম। সোজা টং দোকানে গিয়ে সবার জন্য চা অর্ডার করেন তিনি। দোকানদার জাহাঙ্গীর আলমসহ সকলে অবাক। রাজপথ কাঁপানো নেতা এবং যার অগ্নিঝড় তোলা বক্তব্যে সারাদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে। সেই তরুন নেতাকে সামনে দেখে অবাক তারা। তাদের কাছে এ যেন স্বপ্নের মত।
সবার সাথে এমন ভাবে কথা বলছেন যেন সবাই তার আপনজন এবং পরিচয় যেন জন্ম-জন্মান্তরের। বুকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার প্রকাশ করছেন সারজিস আলম। চা পানের সাথে চলছে কুশল বিনিময় ও এলাকার সমস্যা সম্ভাবনার খবর জেনে নিচ্ছেন সারজিস। সাধারণ মানুষের পরামর্শও মনোযোগ সহকারেই শুনছেন। ফ্যাসিস্ট আমলের তাদের কষ্টের কথা যেমন শুনছেন একই ভাবে শুনছেন কেমন বাংলাদেশ চান অবহেলিত জনপদের এসব মানুষ।
চা দোকানের বয়োবৃদ্ধ সুকর আলী বলেন, এমন নেতাই তো চেয়েছিলাম আমরা। প্রথমে তো চিনতেই পারিনি। এতদিন যার বক্তব্য টিভিতে দেখতাম। আজ সেই কণ্ঠযোদ্ধা সারজিস আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে চা পানের দাওয়াত দিয়েছে। নিজে থেকে শুনেছেন আমার এলাকার সমস্যা আর সম্ভাবনার কথা।
চা দোকানদার জাহাঙ্গির আলম বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম স্বপ্ন দেখছি। পরে দেখি স্বপ্ন নয়। সারজিস সত্যি আমার ভাঙ্গা দোকানের কাস্টমার(ক্রেতা) হয়ে এসেছেন। চা পান করতে করতে অনেক কথা বলেছেন এবং শুনেছেন।
চা বিরতি শেষে সারজিস আলম বলেন, গ্রামের টং দোকানে চা পানের অভ্যাস আমার পুরোনো। চা দোকানে বসলে আসল খবরটা শোনা যায় এবং বুঝা যায়। তাই চলতি পথে সুযোগ পেলেই টং দোকানে বসে যাই। এসব দোকানে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের পাওয়া যায়। সত্যি অসম্ভব সুন্দর লাগছে লালমনিরহাটের টং দোকানের চা।