বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে মাঙ্গলিক বর্ণাঢ্য ধর্মীয় শোভা যাত্রা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধমুর্তি স্নান
- রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০১:০০ পিএম, ১১ মে ২০২৫

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২৫৬৯ বুদ্ধাব্দ উপলক্ষে দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙ্গামাটিতে ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় মাঙ্গলিক বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধমুর্তি স্নান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১১ মে) সকালে জেলা শহরের আসামবস্তি এলাকার বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি ও বড়ুয়া জনকল্যান সংস্থার উদ্যোগে শহরের তবলছড়ি মিনিস্ট্রিয়াল কমিউনিটি মাঠ প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে ধর্মীয় শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক।
এর পর বর্ণাঢ্য ধর্মীয় শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আসামবস্তি বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে গিয়ে ধর্মীয় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ পতাকা হাতে নিয়ে পুণ্যার্থী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষ অংশ নেন।
বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত করুণাপাল থেরোর সভাপতিত্বে বিহার প্রাঙ্গণে আয়োজিত বুদ্ধ পূর্ণিমার ধর্মীয় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি সদর জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল জুনাঈদ উদ্দীন শাহ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু সাদাৎ মো: সায়েমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভিক্ষুসংঘ এবং সাধারণ ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্মীয় আলোচনা সভায় সমবেত ধর্মপ্রাণ পূণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্ম দেশনা প্রদান করেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। এছাড়া প্রধান ধর্মীয় আলোচক হিসেবে ছিলেন, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ করুনাপাল ভিক্ষু।
এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় ভিক্ষু সংঘরা এই বুদ্ধ পূর্ণিমার মধ্যদিয়ে সকল প্রকার লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার হিতোপদেশ দেন।
ধর্মীয় দেশনা শেষে বুদ্ধ মুর্তিকে পবিত্র চন্দন জল দিয়ে স্নান করিয়ে জাগতিক ও পরকালের শান্তি কামনা করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থীরা। এছাড়াও অন্যান্য বৌদ্ধ বিহারগুলোতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সমবেত প্রার্থনা, বুদ্ধ পূজা, পিন্ডদান, প্রাতঃরাশ, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় পৃথিবীর মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ভগবান গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও পরিনির্বাণ লাভ এইদিনে হয়েছিল। ত্রিস্মৃতি বিজড়িত তাই এই পূর্ণিমাকে বুদ্ধ পূর্ণিমাও বলা হয়। এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।