চোখ তুলে নেওয়া সেই বেয়াইয়ের মৃত্যু, বেয়াইন গ্রেপ্তার


March 2025/Beyai.webp

যশোরে ‘ধর্ষণচেষ্টায়’ চোখ তুলে নেওয়া সেই বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটির (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আটক অভিযুক্ত বেয়াইনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে মারধরের শিকার হয়ে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটি শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে। এছাড়াও তিনি ওই নারীর (বেয়াইন) মেয়ের শ্বশুর।

শনিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এই মারপিটের ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ঘটনা নিয়ে উভয়ের পরিবার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে বেয়াই সিরাজুল বেয়াইনের বাড়িতে যান। এরপর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করছে। এর মধ্যে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান। এ ছাড়াও ভুক্তভোগী নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখতে পান।

পরে স্থানীয়রা তাদের থামান এবং গুরুতর অবস্থায় সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন।

এ সময় ওই নারী নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

এদিকে হাসপাতালে সিরাজুল ও তার স্বজনেরা জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে বেয়াইন ও তার মেয়ে এবং তার আরেক জামাতা মিলে সিরাজুলকে শাবল দিয়ে মারধর করেন। তার চোখেও গুরুতর জখম করেন।

অন্যদিকে বেয়াইন অভিযোগ করে জানান, সিরাজুল দীর্ঘ দিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ‘তাকে ধর্ষণচেষ্টা’ করেন। এসময় তিনি আত্মরক্ষায় তার হাত সিরাজুলের চোখে লাগে। এ ছাড়া তাকেও মারধর করা হয়েছে বলে তিনি পালটা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিমাদ্রী শেখর সরকার জানিয়েছেন, আহতের দুটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যা এখানে সেবা দেওয়া সম্ভব না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

এদিকে, সিরাজুলের মৃত্যুর পর রোববার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ওই বেয়ইনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, সিরাজুল চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় সিরাজুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় এক নারীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×