আছিয়া ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ির গাছও কেটে নিয়ে গেছে স্থানীয়রা


March25 Naeem/magura-rape-.jpg

মাগুরার আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার অভিযুক্তদের ঘরের ইট, টিন ও গাছপালা কেটে নিয়ে গেছে স্থানীয়রা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) দিনভর জেলা শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপাড়ার ওই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, যে বাড়িতে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটেছে, সে বাড়ি আমরা এলাকায় রাখবো না।

হিটু শেখের প্রতিবেশী রাবেয়া খাতুন বলেন, ইফতারের পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ সেখানে এসে বাড়িটিতে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর চালাতে থাকে। তারা টিনের চালা খুলে নিয়ে যায়। ঘরের দেয়াল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা আমাদের এলাকায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই- এমন স্লোগান দেয়।

মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর পুলিশ কয়েক দফা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধদের প্রতিরোধের মুখে সেটি সম্ভব হয়নি। তবে গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের জানমালের যাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকালে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এর আগে বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।

ওই দিনই হেলিকপ্টারে করে তার মরদেহ নিজ গ্রামে নেওয়া হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চার জনের নামে মামলা করেন। এই ঘটনায় শিশুটির ভগ্নীপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×