লক্ষ্মীপুরে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে টিপুর সেই বাড়ি


Feb 2025/Tipu 2.jpg

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাসের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। সেই সঙ্গে বাড়ির ছাদে ও নিচে বাজার সড়কে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাড়ি গুলোর অবস্থান লক্ষ্মীপুর শহরের তমিজ মার্কেট, আজিম শাহ মার্কেট ও রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কে। 

এদিকে টিপুর বাড়ির পাশেই থাকা টিপুর অন্য আরেকটি বাড়িও ভাঙতে শুরু করেছেন বিক্ষুব্ধরা।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে শত শত ছাত্র-জনতা হাতুড়ি-শাবল নিয়ে বাড়িগুলোতে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে রাতে টিপুর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙা শুরু করেন উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। যা এখনো চলছে। 
বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই উত্তেজিত জনতা এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাড়ির ভাঙার প্রস্তুতি নেন। সালাহউদ্দিন টিপু জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি।

এছাড়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান। তার বাবা লক্ষ্মীপুরের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আবু তাহের।  

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্র-জনতা বলেন, ‘দেশের মানুষ বর্তমানে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে। তবে দেশের বাহিরে থেকে খুনি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার পাঁয়তারা করছে। তারা মনে করেছে ছাত্র-জনতা ঘুমিয়ে গেছে। তাই আজ দেশ থেকে ফ্যাসিস্টদের মূল উৎপাটনে জনগণের টাকায় বানানো তাদের বাড়িঘরে আজকের এ প্রোগ্রাম। আজ যা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন।’

ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছে। এ ভবনগুলোতে ফ্যাসিবাদের আস্থানা। আমরা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো আস্থানা রাখতে চাই না। তাই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

অভিযোগ রয়েছে, গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। টিপুর বাড়ির ছাদ থেকে প্রকাশ্যেই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করা হয়৷ ওই দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে চার শিক্ষার্থী নিহত ও প্রায় তিন শতাধিক লোক আহত হন। বিক্ষুব্ধ জনতা ওইদিনই বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভানোর পর ওই বাড়ির ছাদ থেকে ২৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। যুবলীগ নেতা টিপু কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তখন। পর দিন ৫ আগস্ট পুনরায় টিপুর বাডিসহ নয়ন ও লোটাসের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×