
ইসলামী বক্তা কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম সম্প্রতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরের আদর্শে বেড়ে ওঠা প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তিনি বলেন, “একাত্তর প্রজন্মের মতো খারাপ প্রজন্ম মনে হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিলো না। একাত্তর প্রজন্মটা এতো মিথ্যুক, এদের নেতা মিথ্যুক, এদের কর্মী মিথ্যুক, এদের সমর্থক মিথ্যুক, এদের যুদ্ধ মিথ্যা, এদের স্বাধীনতা মিথ্যা, এদের সবকিছু মিথ্যা।”
তিনি আরও দাবি করেন, স্বাধীনতা মূলত ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট আসে, এবং বাংলাদেশিরাই পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। তিনি বলেন, “বাংলাদেশিরাই ৬০ ভাগ যুদ্ধ করেছে পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য। আর পাঞ্জাবী পাঠানরা করেছে ৪০ ভাগ। আমাদের শেরে বাংলা ফজলুল হকসহ, শেখ মুজিবও ছিল এই আন্দোলনে, সমস্ত আলেম ওলামারা মিলে। অধিকাংশ সংগ্রাম-চেতনা দিয়েছে এই বাংলাদেশিরা। সেটা কি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিলো না।”
তার বক্তব্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকেও ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্র ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অংশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিনি দাবি করেন, “এই দেশ, এই জাতিকে খুন করেছে ৭১-এ ভারত আর আওয়ামী লীগ মিলে। ঠিক নয় কি? পিলখানা দেখিয়েছে যে, এরা বিদ্রোহ করেছে ডালভাত বিদ্রোহ। শয়তানি কথা।”
ইব্রাহিম ওই ভিডিওতে নামাজ প্রসঙ্গে বলেন, “তুমি তো জোহর পড়ছোই। এখন আবার কী পড় এটা? তুমি তো আছর পড়ছো, ফরজ তুমি তো পড়ছো, আদায় হয়ে গেছে কিনা? আছর তো পড়ছো, এখন তুমি এক ঘণ্টা পরে সূর্য ডুবো ডুবো এই সময় আবার তুমি কইতোছো আবার আছর পড়বো। এটা কী?”
এক পর্যায়ে তিনি ভারতের বন্ধুদের বাংলাদেশে শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “ড. ইউনূস সাহেব, সকল ভারত বন্ধু- বাংলাদেশের জঘন্য শত্রু, এগুলোর বিচার করি। দরকার হয় বিচারের পরে আমরা ভোল পাল্টাবো। কোনো ভারত বন্ধুকে বাংলাদেশের কোথাও চেয়ারে রাখবো না ইনশাআল্লাহ। আপনারা রাজি আছেন? আমি এটার ঘোষণা দিয়ে গেলাম ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে দিয়ে গেলাম।”
উল্লেখযোগ্য, কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের একই ধরনের মন্তব্যযুক্ত আরও কিছু ওয়াজের ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করা আছে, যা সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।