
যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেপ্তারে প্রশ্ন তুলেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, “এটা নিছক একটা ভুয়া মামলা। ভুয়া মামলায় কেন তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে?”
সোমবার (২৫ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টায় নিজের ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, “যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা নিছক একটা ভুয়া মামলা। ভুয়া মামলায় কেন তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে? সে তেলবাজি করেছে, তেলবাজির মামলায় বা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ থাকলে সেটির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করতে পারত।”
তিনি আরও লেখেন, “তৌহিদ আফ্রিদিদের আমি কখনোই পছন্দ করি নাই। এদের তেলবাজি নিয়ে আমি বরাবরই প্রতিবাদ করেছি, বক্তব্যও দিয়েছি। বরাবর বলেছি, এসব তেলবাজরা তরুণদের আইডল হতে পারে না। যাই হোক, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা আইনের শাসনের কথা বলছি। ভুয়া মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা আইনের শাসন কায়েমের অন্তরায়। যার বিরুদ্ধে যতটুকু অভিযোগ, সে যতটুকু অন্যায় করেছে, তাকে ততটুকুই শাস্তি দিতে হবে।”
রাশেদ খান তার পোস্টে আরও লেখেন, “দ্বিতীয়ত, সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা ডামি এমপি বা মন্ত্রীরা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না? তৌহিদ আফ্রিদির থেকে তারা বড় অপরাধী। তারা সন্ত্রাসী পোষেছে, দুর্নীতি করেছে, শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছে। তাদের অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নিরাপত্তা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। বিচার শেষ হওয়ার পূর্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে সারা দেশে এরা জামিনও পাচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আমি ১ বছর এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় অনেকের বিরাগভাজন হয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের এসব কর্মযজ্ঞের সমালোচনা করায় যারা আমার সমালোচনা করেছে, তারা দেখি এখন সরাসরি ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সরকারের কঠোর সমালোচনা ও আক্রমণ শুরু করেছে। এজন্য আমি আপাতত সরকারের সমালোচনা বন্ধ করেছি, স্বার্থে আঘাত লাগায় বা সরকারের সঙ্গে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে বিরোধ তৈরি হওয়ায় আমার সমালোচকদের বিবেক জাগ্রত হয়েছে। তারা আপাতত সব পুষিয়ে দিচ্ছে।”
এদিকে, আলোচিত ওই মামলায় গ্রেপ্তার তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তৌহিদ আফ্রিদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। পরে বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক শুনানি শেষে তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক খান মো. এরফান শুনানিতে আফ্রিদির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
এই মামলায় এর আগে গত ১৭ আগস্ট গুলশান থেকে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা ও মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালত তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ড শেষে ২৩ আগস্ট নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীর পাকা রাস্তায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মো. আসাদুল হক বাবু। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এই মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।