
ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট জাইর বলসোনারোর ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণের জন্য দোষী সাব্যস্ত ১০ জনকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আসে এক প্রাক্তন পুলিশ প্রধান প্যারাগুয়েতে পালানোর চেষ্টা করার সময় ধরা পড়ার পর।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেকজান্দ্রে ডি মোরেস আদেশ জারি করার পর প্যারাগুয়ের কর্তৃপক্ষ একজন প্রাক্তন পুলিশ কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করে। তিনি জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে এল সালভাদরের একটি ফ্লাইটে ওঠার চেষ্টা করছিলেন।
ফেডারেল হাইওয়ে পুলিশের প্রাক্তন পরিচালক সিলভিনেই ভাস্কেসকে শুক্রবার রাতে ব্রাজিলে প্রত্যর্পণ করা হয় এবং তাকে প্রাক-বিচারের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভাস্কেস তার গোড়ালির মনিটর ছিঁড়ে ফেলেছিলেন এবং একটি ভাড়া গাড়িতে প্যারাগুয়ে চলে গিয়েছিলেন।
ডি মোরেস বলেন, “১০ জন কর্মকর্তা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনায় সহায়তা করেছেন, আইনি ন্যায্যতা চেয়েছেন অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন যাতে বলসোনারো ক্ষমতায় থাকতে পারেন।” তাদের মধ্যে রয়েছেন বলসোনারোর প্রাক্তন উপদেষ্টা ফিলিপ মার্টিন্স।
মার্টিন্সের আইনজীবী জেফ্রি চিকুইনি জানিয়েছেন, তারা আপিল দায়ের করবেন। তার ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে বলা হয়েছে, “ফিলিপ মার্টিন্স ইলেকট্রনিক গোড়ালি মনিটর পরে ছিলেন এবং শহর ত্যাগ করতে পারতেন না। এখন কী পরিবর্তন হয়েছে?”
সুপ্রিম কোর্টের আদেশে গৃহবন্দীত্বের পাশাপাশি, তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া পাসপোর্ট ও আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমতিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট বলসোনারোকে ২০২২ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত করে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। ৭০ বছর বয়সী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এই মামলায় আরও একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা হলেন প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান আলেকজান্দ্রে রামাগেম, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, বলসোনারো দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। নভেম্বর থেকে তিনি কারাভোগ করছেন এবং সম্প্রতি ডাবল হার্নিয়া অস্ত্রোপচারও হয়েছে। তার স্ত্রী মিশেল বলসোনারো জানিয়েছেন, দীর্ঘ নয় মাস ধরে তার স্বামীর শারীরিক কষ্ট চলছেই।
ব্রাজিলে সামরিক শাসনের পরে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও এই ষড়যন্ত্রের ঘটনায় অভিযুক্ত জেনারেল ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার তীব্র নজরদারিতে পরিচালিত হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে বলসোনারোর বিচারকে “ডাইনি-হান্ট” হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন এবং বিচারকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর মার্কিন প্রশাসন এ বিষয়ে নরম অবস্থান নিয়েছে।