পর্যটন মৌসুম শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে রাজনৈতিক সহিংসতায় বড় ধরনের ধাক্কা খেল নেপালের পর্যটন খাত। সম্প্রতি জেন-জি আন্দোলনের জেরে হোটেল ভাঙচুর, বুকিং বাতিল এবং যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় খাতটি প্রায় ২৫ বিলিয়ন নেপালি রুপির আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) হিমালয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের ৮ ও ৯ তারিখে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় হঠাৎ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে, একাধিক হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পর্যটকদের ভ্রমণ পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়। এতে দেশটির রাজস্বনির্ভর এই খাতটি বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষতির মাত্রা এমন সময়ে বাড়তে থাকে যখন পর্যটনের প্রধান মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছিল। হোটেল অ্যাসোসিয়েশন নেপাল (HAN)-এর প্রাথমিক তথ্য বলছে, অন্তত ২০টিরও বেশি হোটেলে হামলা, লুটপাট বা ভাঙচুর হয়েছে। শুধুমাত্র কাঠমান্ডুর হিলটন হোটেলেই ক্ষতির পরিমাণ ৮ বিলিয়ন রুপি ছাড়িয়েছে।
এ ছাড়া পর্যটনে সমৃদ্ধ পোখারা, ভৈরহাওয়া, বিরাটনগর ও ধনগড়ী অঞ্চলেও বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে। এর ফলে দেশজুড়ে হোটেল বুকিং বাতিল এবং পর্যটক আগমন ব্যাহত হয়েছে।
তবে সব সংকট সত্ত্বেও নেপালের পর্যটন কর্তৃপক্ষ ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী দীপক রাজ জোশী বলেন, “পর্যটন অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে।” তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কোভিড-১৯ এর ধাক্কা থেকেও নেপালের পর্যটন শিল্প পুনরুদ্ধার হয়েছিল।
অর্থনীতিবিদ ড. সমীর খাতিওয়াড়া এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন - বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার।
হোটেল অ্যাসোসিয়েশন নেপালের চেয়ারম্যান বিনায়ক শাহ বলেন, “যেহেতু পর্যটন মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে, তাই নেপাল থেকে একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া এখন অত্যন্ত জরুরি।” তিনি আরও বলেন, এই শিল্প পুনরুদ্ধারে সব পক্ষকে একত্রে কাজ করতে হবে।
এদিকে, ট্রেকিং এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব নেপাল এবং মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন দ্রুত আস্থা পুনরুদ্ধারে যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে।