
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনকে ‘আন্ডারে নেওয়া’ সংক্রান্ত জামায়াত নেতা ও সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা ও ঢাকা-৬ আসনের দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
পোস্টে শাহজাহান চৌধুরীকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইশরাক লেখেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করার পরিকল্পনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল) ও জামায়াতে ইসলামী একই মনমানসিকতার ধারক ও বাহক তা বলা বাহুল্য। যে সব আসনে এই নব্য ফ্যাসিবাদরা মাথাচাড়া দেবে, তাদের ঘরে ঢুকিয়ে দিতে হবে। কয়দিনের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে পারবে স্বৈরাচার আর রাজাকার, মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। পুলিশ দিয়ে ভোট ডাকাতির বাসনা সেখান থেকেই এসেছে।’
এর আগে শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন শাহজাহান চৌধুরী। সেখানে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর জন্য বর্তমান পরিস্থিতি এক বিরল সুযোগ। তিনি দাবি করেন, ভবিষ্যতে এমন সুযোগ আর নাও আসতে পারে।
বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, (দেশের) দুর্নীতির টাকা বাদ দিলে ‘পার্শ্ববর্তী দেশ হিন্দুস্তান থেকে বস্তা বস্তা টাকা দেশে ঢুকবে। আর অস্ত্র ঢুকবে।’ একই সঙ্গে তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, ‘যারা আছে প্রশাসনে, তাদেরকে অবশ্যই আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।’
সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় এক নেতাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারকে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষককে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। পুলিশকে আপনার পেছনে পেছনে হাঁটতে হবে। ওসি সাহেব আপনার কী প্রোগ্রাম সকাল বেলায় জেনে নেবে, আর আপনাকে প্রোটোকল দেবে। টিএনও (ইউএনও) সাহেব যা উন্নয়ন এসেছে, সমস্ত উন্নয়নের হিসেবে যিনি নমিনি, তার থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, সংগঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া বিজয় সম্ভব নয়। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু আওয়ামী লীগের লোক নিয়ে দেশ শাসন করতে চেয়েছে। জনগণকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তাই জনতার আন্দোলনের মাঝে আওয়ামী লীগের নেতারা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।’
তবে শাহজাহান চৌধুরীর এই বক্তব্য জামায়াতের অবস্থান নয় বলে জানিয়েছেন দলটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম জোন প্রধান মুহাম্মদ শাহজাহান। রোববার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘বক্তব্যটি আমরা দেখেছি। এটা একান্তই উনার বক্তব্য। এটার ব্যাখ্যা উনি ভালো দিতে পারবেন। তবে তার এই বক্তব্য জামায়াত সমর্থন করে না। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এ ঘটনায় আমরা অভ্যন্তরীণভাবেও আমাদের মতো ব্যবস্থা নিচ্ছি।’