
আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) এল-ফাশের শহর দখলের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মুসলিম বিশ্বকে সুদানের রক্তপাত বন্ধে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এরদোয়ান সোমবার ইস্তানবুলে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) আয়োজিত অর্থনৈতিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘যার হৃদয় আছে, তিনি কখনোই এল-ফাশেরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো সাম্প্রতিক গণহত্যা মেনে নিতে পারবেন না। আমরা আর নীরব থাকতে পারি না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সুদানে রক্তপাত দ্রুত বন্ধ করার সর্বোচ্চ দায়িত্ব নিঃসন্দেহে মুসলিম বিশ্বের ওপরই বর্তায়। মুসলমান হিসেবে আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে হবে, অন্যদের কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত নয়।’’ এরদোয়ান জোর দেন যে এই সংকটময় সময়ে সুদানের জনগণের পাশে দাঁড়ানো, মানবিক সহায়তা ও উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখা জরুরি। পাশাপাশি তিনি সুদানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তুরস্ক বর্তমানে ৫৭ সদস্যবিশিষ্ট ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার মূল লক্ষ্য মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ রক্ষা ও পারস্পরিক ঐক্য জোরদার করা।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে চলমান সুদানের সংঘাতে তুরস্ক সেনাবাহিনীকে সমর্থন করছে। দেশটির সেনাবাহিনী আরএসএফের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, আরএসএফ যোদ্ধারা ১৮ মাসের অবরোধ শেষে সেনাবাহিনীকে এল-ফাশের থেকে বিতাড়িত করার পর মাত্র এক সপ্তাহে প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
এল-ফাশের শহরে এখনও দশ হাজারের বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছেন। সেখানে নির্বিচারে হত্যা, যৌন সহিংসতা, লুটপাট, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা এবং অপহরণের ঘটনা ঘটছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, সংঘাতের কারণে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এই পরিস্থিতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে।
সূত্র: এএফপি