
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে করা আপিলের টানা ষষ্ঠ দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম দিনের শুনানি। ২৮ অক্টোবর চতুর্থ দিনের শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তার আগের দিন, ২৩ অক্টোবর তৃতীয় দিনের শুনানিতে ইন্টারভেনর হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।
২২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২১ অক্টোবর।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেন আদালত। পরে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল দাখিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে গৃহীত হয় ত্রয়োদশ সংশোধনী। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট ওই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করা হলে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ওই রায়ের ধারাবাহিকতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী বিল, যার গেজেট প্রকাশিত হয় ৩ জুলাই।
সরকার পরিবর্তনের পর ২০১১ সালের ৫ আগস্ট রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি: তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও গত ১৬ অক্টোবর একই বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন জমা দেন। পরে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।