
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ডটকমের গ্রাহকরা টাকা ফেরতের দাবিতে শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সিগন্যালে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কিউকম ডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রিপন মিয়া অনলাইনে চমকপ্রদ অফারের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তাদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়েছেন, কিন্তু পণ্য সরবরাহ করেননি।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের সড়কের মাঝখানে না আসার অনুরোধ করে।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু বলেন, “কিউকম ডটকমের সিইও রিপন মিয়ার মিয়াকে গ্রেপ্তার ও পাওনা টাকা ফেরত পেতে তারা প্রথমে সড়ক অবরোধ করে। পরে আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে উঠিয়ে পাশে নিয়ে আসি। তারা আধাঘণ্টার মতো বিক্ষোভ করে পরে চলে যান।”
বিক্ষোভকারীরা জানান, কিউকম থেকে পণ্য অর্ডার করলেও তা সরবরাহ করা হয়নি। তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। একাধিক মামলা হলেও ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো অর্থ ফেরত পাননি। তাদের দাবি, সারাদেশে হাজার হাজার মানুষ এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এর আগে ২৮ জুলাই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা রিপন মিয়ার সম্পদ জব্দ ও আইনি ব্যবস্থার দাবি জানান।
সেখানে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে হাবিব বিন আবদুল্লাহ বলেন, “কিউকমের কর্ণধার রিপন মিয়া ফেসবুক লাইভ ও অনলাইনে ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ কম মূল্যে পণ্যের চমকপ্রদ অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেন। এরপর পণ্য ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে সরবরাহ করার কথা বলে অগ্রিম টাকা নেন। এতে আকৃষ্ট হয়ে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের দিকে হাজার হাজার মানুষ পণ্য অর্ডার করেন। কিন্তু বেশির ভাগ গ্রাহক সেই পণ্য বুঝে পাননি। কিছু গ্রাহক কমিশনের মাধ্যমে সামান্য টাকা ফেরত পেলেও বেশির ভাগই এখনও টাকা ফেরত পাননি। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি চারটি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তিনি এই টাকা নিয়েছেন। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তিনি প্রায় ১৫০ কোটি টাকা জমা নিয়েছেন।”
হাবিব বিন আবদুল্লাহ আরও জানান, রিপন মিয়া প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার নেন। তখন সরকার নির্দেশ দেয়, পণ্য ডেলিভারি ছাড়া কোনো টাকা ছাড়া যাবে না। এই প্রেক্ষাপটে কিউকমের গেটওয়েতে ৩৯৬ কোটি টাকা আটকে যায়।
পরে রিপন মিয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা নিতে শুরু করেন এবং এমনকি ব্যাংক ডিপোজিটের চেকের মূল কপিও জমা নেন, যাতে গ্রাহকদের কাছে কোনো প্রমাণ না থাকে। গ্রাহকদের দাবি, ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে জমা দেওয়া প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা এখনও তারা ফেরত পাননি।