
সোমবার (২১ নভেম্বর) ভোরের ভূমিকম্পের প্রভাবে সচিবালয়ের নতুন নির্মিত ১ নম্বর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই ভবনের পশ্চিম-উত্তর প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অফিস করেন।
কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ফাটলের কারণে আতঙ্কিত হয়েছেন। তবে গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, এক নম্বর ভবনের ইটের নির্মিত ৫ ইঞ্চি পুরু দেওয়ালের কিছু স্থানে ফাটল ধরা দিয়েছে। অন্যান্য ভবনেও কিছু ফাটল দেখা গেছে। তবে এই ফাটল ভবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং শিগগির মেরামত করা হবে।
ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কেঁপে ওঠে। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭। এর কেন্দ্রস্থল নরসিংদী। পরে রাজধানীতে আরও দুটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মঙ্গলবার ১ নম্বর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা গেছে। ১০ তলার ৯৩০ নম্বর কক্ষের দরজার নিচের দিকে উত্তর দেওয়ালে বড় ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এখানে পলেস্তরা অনেকটাই খসে গেছে। একই সঙ্গে ১০ তলার ১০০ নম্বর কক্ষের সামনের দেওয়ালের মাঝামাঝি ফাটল দেখা গেছে। এই দুটি তলায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা অফিস করেন। একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘শত কোটি টাকায় নির্মিত নতুন ভবনে ফাটল অনেকের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কারণ এটি চালু হওয়ার এক বছরও হয়নি।’
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুনতাসির মামুন জানান, ‘এক নম্বর ভবনের ফাটল আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। ইটের তৈরি ৫ ইঞ্চি পুরু দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে পিলারসহ মূল স্ট্রাকচারে কোনো সমস্যা নেই। তাই এটি ভবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’
সচিবালয়ের প্রাণকেন্দ্র ২০ তলার এক নম্বর ভবনটি ৪৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর চলতি বছরের মে মাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ ভবনে কার্যক্রম শুরু করে।
এই ‘সচিবালয়ে ২০ তলাবিশিষ্ট নতুন অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের আওতায় দুটি বেজমেন্টসহ ২০ তলা সুপার স্ট্রাকচার বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়, যার ব্যয় হয়েছে ৪৬১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।