
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন অভিযোগ করেছেন, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে পরিকল্পিতভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এ জন্য তিনি বিএনপি ও তাদের মিত্র দলগুলোকে দায়ী করেছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ১৪তম দিনের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, ‘মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়গুলো যেন কমিশনের প্রস্তাবে না আসে, সেই উদ্দেশ্যে বিএনপি ও তাদের সহযোগী দলগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে একটি বিরূপ পরিবেশ তৈরি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে আলোচনার জায়গাটি টেবিলেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। কেউ যদি মাঠপর্যায়ে এজেন্ডা নির্ধারণের পরিস্থিতি তৈরি করে, তাহলে আমরাও প্রয়োজনে রাজপথে নামবো।’
আলোচনার অগ্রগতিতে বাধার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো বিষয়গুলোতে প্রায় সব দল একমত হলেও, মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের ক্ষেত্রে কিছু দল গোঁড়ামি করছে। বিশেষ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা আলোচনায় এগোতে চাচ্ছে না।’ এ বিষয়ে তিনি কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং ভবিষ্যতে যুক্ত হওয়ার সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক অনুচ্ছেদ (৫৮(খ), ৫৮(গ), ৫৮(ঘ)) সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা অবশ্যই গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদন করতে হবে।’
তিনি জানান, সংবিধান সংশোধনের জন্য এনসিপি সংসদের দুই কক্ষ—নিম্নকক্ষ ও প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের পক্ষে। তবে বিশেষ অনুচ্ছেদগুলোর ক্ষেত্রে গণভোট অপরিহার্য বলেও মত দিয়েছেন তারা।
উচ্চকক্ষ গঠনে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির পক্ষে এনসিপি। আখতার হোসেন বলেন, ‘যাতে এক শতাংশ ভোট পেলেও কোনো দল উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আরও শক্তিশালী হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মূল্যায়ন সংখ্যার ভিত্তিতে করা হচ্ছে— যেমন ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে ১২টি মানছি, আটটি মানছি না। কেন সব প্রস্তাব মানতে হবে, তা নিয়ে একটি ভুল দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
নির্বাচন কমিশনে এনসিপির নিবন্ধনের প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও গঠনতন্ত্র কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিশন কিছু মতামত দিয়েছে। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করে পুনরায় আবেদন জমা দেওয়া হবে।’