
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় গত কয়েক দিনে বড় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হলেও তার মূল জটিলতাগুলো নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল সূত্র। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের মতে, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস–সংক্রান্ত সমস্যাগুলো উঠানামা করছে। এ কারণেই তাকে কয়েক দিন ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হচ্ছে।
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) রাতে চিকিৎসা ও বিদেশযাত্রা-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে জড়িত একটি সূত্র জানায়, তার সর্বশেষ অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসকেরা বিদেশে নেওয়ার সম্ভাব্য সময় আরও দুই দিন পিছিয়েছেন। দীর্ঘ যাত্রার ঝুঁকি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার ওপর।
সূত্র বলছে, গতকাল রাত অবধি তার অবস্থা না উন্নত হয়েছে, না অবনতি- প্রায় একই রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার রাতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জরুরি বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করেন। এরপর শনিবার ও রোববার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আজ সোমবার চিকিৎসকদের আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা যেখানে নতুন রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা পরিকল্পনায় কোনো সংশোধন আনা হবে কি না তা নির্ধারণ করা হবে।
চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার প্রতিটি শারীরিক পরিবর্তন ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে তার ডায়াবেটিস, কিডনির কার্যকারিতা, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকেরা বাড়তি সতর্কতা বজায় রেখেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও চিকিৎসায় অংশ নিচ্ছেন। লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে তিনি প্রতিদিন হাসপাতালে খালেদা জিয়ার অবস্থার খোঁজ নিচ্ছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পরিস্থিতিকে পুরোপুরি স্থিতিশীল বলা যাচ্ছে না, যদিও হঠাৎ কোনো গুরুতর অবনতিও দেখা যায়নি। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যাগুলো কিছু সময় নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আবার বেড়ে যায়, ফলে তাকে এখনো ঝুঁকিমুক্ত বলা যাচ্ছে না। সর্বশেষ পরীক্ষায় কিডনি ও ফুসফুসের কিছু অগ্রগতি মিললেও তা সামগ্রিক ঝুঁকি কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
এই অনিশ্চয়তার কারণেই খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার সম্ভাব্য সময় বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। বিএনপি প্রথমে জানিয়েছিল, তাকে ৫ ডিসেম্বর ভোরে লন্ডনে নেওয়া হবে। পরে তা পিছিয়ে ৭ ডিসেম্বর করা হয়। আবার নতুন সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ৯ ডিসেম্বর জানানো হয়। তবে এখনো কোনো সময়ই নিশ্চিত হয়নি।
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সংকটপূর্ণ শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে।