বিসিবিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিপিএলকে জমকালো করার রেসিপি দিলেন তামিম


November 16/tamim_bpl_bcb_20250130_115131693.jpg

এবার বিপিএল শুরুর আগে বলা হচ্ছিলো গড়া হবে নতুনত্বের ইতিহাস৷ নতুন অনেক কিছু হয়েছে বটে, তবে সেই নতুন আসলে কলঙ্কের। নজিরবিহীন ঘটনা দেখা গেছে এবারের বিপিএল। বিদেশি তারকার ঘাটতি, খেলার মান নিয়ে প্রশ্ন, প্রশ্নবিদ্ধ ম্যাচ, এবাদে বিশ্বব্যাপী বিপিএলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ইস্যুতে তোলপাড় এবারের বিপিএল। বিপিএলের ১০ টা আসর পেরিয়ে গেলেও কেনো এখনো সমস্যার কার্যকর সমাধান হচ্ছে না? বিসিবি কি তার দায় এড়াতে পারে? ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালের মতে বিপিএলের হাজারটা অনিয়মের জন্য ফ্রাঞ্চাইজি গুলোর পাশাপাশি দায় আছে বিসিবিরও।

অনিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ বিপিএলের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন তামিম। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটা হলো– টুর্নামেন্ট আয়োজনের সময় এগিয়ে আনা, দল কমানো, ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ার ক্ষেত্রে যাছাই-বাছাই করা।

সংবাদসম্মেলনে বিপএলের আমেজ বাড়াতে পরামর্শ দিয়ে তামিম বলেন, ‘আমরা বিপিএল শুরু করেছিলাম ৮টা দিয়ে, ৭টা দল দিয়ে। ক্রিকেটাররা হয়তো অভিযোগ করতে পারে, দল একটা বেশি থাকলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ থাকবে বেশি।’

‘অন্যভাবে চিন্তা করলে দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতাও তো বাড়বে! এনসিএল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে বিপিএলে দল নিশ্চিত করার ক্ষুধাটা বাড়বে। আমার মতে, বিপিএলে ৬ দলের বেশি হওয়া উচিত নয়, ৫ দল হলে বেশি ভালো, সর্বোচ্চ ৬টি হতে পারে।’

গতবছরের মতো এবারও বিপিএলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। ফলে ভালো মানের বেশিরভাগ ক্রিকেটার বিপিএল খেলতে আসেননি। এতে এমন অনেক ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো, যাদের মান নিয়ে প্রশ্ন। এমন বিদেশি ক্রিকেটারদের পরিবর্তে সর্বোচ্চ দুজন বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম বিপিএলে করা যায় কিনা, এমন প্রশ্ন যায় তামিমের কাছে। তামিম দল কমানোর কথাই বললেন।

‘আমার মতে চার বিদেশি ঠিক আছে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি সংখ্যা নিয়ে আপনি ভাবতে পারেন। দেখেন, আমাদের চেয়ে অনেকবেশি ক্রিকেটার কিন্তু পাকিস্তানে। তবু পিএসএল যখন শুরু হয়েছে, পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে হয়েছিল। যে কারণে সেখানে ক্রিকেটের মান খুব খুব ভালো। আস্তে আস্তে এক-দুইটা ফ্র্যাঞ্চাইজি বেড়েছে।’

এদিকে এবারের বিপিএলে ভরা ছিল নিম্ন মানের বিদেশি ক্রিকেটারে। শাহীন শাহ আফ্রিদি, অ্যালেক্স হেলসসহ কয়েকজন তারকা খেললেও তারা এসেছিলেন অল্প কয়েকটি ম্যাচের জন্য। সবমিলিয়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল অচেনা বিদেশিতে ভরা। শুধু দল কমানো না তামিম চেয়েছেন সূচির পরিবর্তনও। 

তার যুক্তি যেহেতু বিপিএলের সময় ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি, এস এ টি-টোয়েন্টি কিংবা বিগ ব্যাশের মতো নামি লিগ হয় তাই সূচি পরিবর্তন করে এগিয়ে নেওয়া আসা উচিত। তাতে আরও ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়া যাবে। বিপিএলের সূচি নিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমার মনে হয় বিপিএলের প্রথম শিডিউল ছিল অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে। এটা ভালো সময় ছিল। এ সময় এসএ-টোয়েন্টি ও আইএলটি-টোয়েন্টি এই দুই মেজর লিগের সাথে সাংঘর্ষিক হবে না।’

এমন কথার পেছনে যুক্তি দেখিয়ে তামিম বলেন, ‘একবার বিপিএলের সূচি পরিবর্তন হয় বাংলাদেশ দলের খেলা থাকায়। এছাড়া ঐ সময়েই হতো। কারণ তখন তেমন খেলা থাকে না। তখন শুধু হয়ত আবুধাবি টি-টেন। একটা টুর্নামেন্টের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া দুটার চেয়ে ভালো।’

এদিকে পারিশ্রমিক ইস্যুতে ফ্রাঞ্চাইজি নির্বাচনে বিসিবির অদূরদর্শিতার সমালোচনা করে বলেন, ‘যখন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিচ্ছেন খুব সতর্ক হওয়া উচিৎ, কাকে দল দিচ্ছেন কাকে দল দিচ্ছেন না। দিনশেষে একটা দল যদি খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে না পারে। অতীতে এমন হয়েছে ৫০ শতাংশ বাকি, শেষপর্যন্ত দর কষাকষি করে ২৫ শতাংশ দিয়ে খুশি হয়ে চলে যায়। দোষ তো খেলোয়াড়দের না। ওরা তো ১৬ ম্যাচ ভালো করে। দোষ হলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ও বিসিবির। ওরা এই দর কষাকষি কেন খেলোয়াড়দের সাথে করে? এখনও শেষ হয়নি। আশা করি সমাধানের চেষ্টা করবেন।’

সঠিক ফ্রাঞ্চাইজিতে দল না দিলে কি কি সমস্যা হতে পারে তা জানিয়ে তামিম বলেন,‘এটা শুধু বিপিএলকেই ছোট করে না। দেশের ব্যাপারেও বাজে বার্তা দেয়। অনেক বিদেশি ক্রিকেটার আসতে চায়। এসব হলে সমস্যা হয়ে যায়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ঠিকঠাক বেছে নেওয়া সবচেয়ে জরুরী।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×