
‘এখন আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া’ বলা এনসিপি নেতাকে শোকজ
শেখ হাসিনার মতো মাফিয়াকে বিতাড়িত করে দিয়েছি, এখন আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া এ বক্তব্য দেওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জোবাইরুল আলম মানিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এনসিপি। মঙ্গলবার (১০ জুন) এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এই নোটিশ দেন। নোটিশে বলা হয়েছে, গতকাল ৯ই জুন, সোমবার চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আপনার একটি আপত্তিকর ও অসাংগঠনিক বক্তব্য কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির নজরে এসেছে। আপনার এমন বক্তব্য জনপরিসরে এনসিপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং পার্টিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছে। এ অবস্থায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও পার্টির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার দায়ে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান জনাব আব্দুল্লাহ আল-আমিনের নিকট আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিত আকারে প্রেরণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। গত ৯ জুন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এনসিপি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুবাইরুল আলম মানিক বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছি। বিগত ১৬-১৭ বছর কেউ এ নেতৃত্ব দিতে পারেনি। এটি একটি রাজনৈতিক বিপ্লব। কেউ যদি বলে যে শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ শেষ করেছে, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাক। আমরা বলব, ১৬ বছরের একজন মাফিয়াকে হটাতে পারছে। আমাদের বুঝ দিয়ে আবার যদি কেউ মাফিয়া হয়ে উঠতে চায়; আমরা তাদের বলব, এখন বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই।

রাজধানীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪
রাজধানীর শ্যামপুরের দয়াগঞ্জ এলাকা থেকে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইনসহ থানা বিএনপির কার্যকরী সদস্য শুক্কুর আলীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী (সেনাবাহিনী ও পুলিশ)। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে কয়েক ঘণ্টা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্যসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গেছে, অভিযানে ১০ কেজি গাঁজা, ৩ হাজার পিস ইয়াবা, ৪টি দেশীয় অস্ত্র, ৮টি মোবাইল ও ৬০ হাজার নগদ টাকাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জব্দ মাদকসহ গ্রেপ্তারদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মুইন হাসান সাজিদকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ১১টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (১০ জুন) দুপুরে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার উত্তর ফুলদিঘী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাজিদ ওই এলাকার আনাম উদ্দিনের ছেলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি তিনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হামলায় অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে সাজিদের বিরুদ্ধে। তিনি ও দুর্বৃত্তরা মারাত্মক অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকজনকে গুরুতর জখম করে। তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬০ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকেই সাজিদ পলাতক ছিলেন।

জামায়াত ছাড়া অন্য দলে এত সৎ মানুষ নেই: আমীর হামজা
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী ইসলামী বক্তা মুফতি আমীর হামজা বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য কোনো দলে এত সৎ মানুষ নেই। এটা পরীক্ষিত হয়ে গেছে। রোববার (৮ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে ৫শ পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেব মন্ত্রিত্ব চালিয়ে ৩৬ টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই প্রথম। সুতরাং, এই দলে যারা আছে, তাদের ওপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে যে, এরা অন্তত মারিংকাটিং করবে না। নির্বাচন নিয়ে আমীর হামজা বলেন, অনেকে বলে- আপনাকে কেন ভোট দেবে? আমি বলি- ভোট দেবে না কেন! মানুষ তো ৫৪ বছর দেখেছে। এ দলে (জামায়াতে) যারা আছে, তাদের ওপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে। আমরা তো দ্বীনের জন্য, আল্লাহর জন্য কাজ করব। মানুষ এমনিতেই সাড়া দেবে। নির্বাচন ঘিরে প্রাসঙ্গিক সংস্কারের দাবি তুলে ধরে মুফতি হামজা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু তো হতেই হবে। অবশ্যই সুষ্ঠু হওয়া লাগবে। কিন্তু নির্বাচনের আগের কাজ হচ্ছে সংস্কার। সংস্কার না করে দেশে নির্বাচন দিলে আবার ওই দিনের ভোট রাতে হবে। আর এটা কেউ মানবে না। বিশেষ করে দেশকে যারা ভালোবাসে তারা কখনো মানবে না যে, সংস্কারের আগে নির্বাচন হোক। এর আগে কুষ্টিয়ায় নিজ গ্রামের বাড়িতে গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানির মাংস বিতরণ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি প্রার্থী মুফতি আমির হামজা। মুফতি হামজা জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মানবতার সেবায় যে কাজগুলো করা হচ্ছে, তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। এবার ৫০০ পরিবারকে দিয়েছি, আগামীতে আমরা যদি বাড়াতে পারি আমরা আরও বাড়াব ইনশাআল্লাহ। গতকালও আমার গ্রামের বাড়ি ডাবিরাভিটা, পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে পাঁচ মণের মতো ওজনের গরু ছিল, ওগুলো গরিবদের মাঝে দিয়েছি। এর পর ছাগল ছিল, একটা ভেড়া ছিল এগুলোও দেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এ সময় কোরবানির মাংস বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা জামায়াতের আমির মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি ডা. ইব্রাহিম খলিল, পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ইকবাল হোসেনসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে ৫শ পরিবারের মাঝে কোরবানির গরুর মাংস বিতরণ করা হয়।

‘জামায়াত নেতার হত্যাকারীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি রাখেনি বিএনপি’
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলন হত্যা মামলাটি রাজনৈতিক নয়। সামাজিক একটি ঘটনায় জামায়াত নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের উভয়ের (বিএনপি-জামায়াত) কথা হয়েছিল হত্যাকারী যেই হোক, তাকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু বিএনপি সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। বরং জঘন্যতম কথা বলা হচ্ছে যে জামায়াত একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করছে। কাউছার আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, তার ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত ছিল। সেটি কীভাবে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়? মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে জেলা জামায়াতের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (৯ জুন) শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে বিএনপির প্রেস ব্রিফিংয়ে নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জামায়াত এ আয়োজন করেন। জামায়াত নেতা রেজাউল করিম বলেন, বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে কাউছার এর আগে স্ট্রোক করেছেন, অতএব এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। এসব কথায় জাতি বিভ্রান্ত। ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে তাকে আঘাত করা হয়েছে। আবার তিনি চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতালে তাকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। এখন তার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। হত্যা নিয়ে রাজনীতিকরণ নিয়ে তিনি আরও বলেন, রাজনীতিকরণ কারা শুরু করেছে- সন্ত্রাসীরা তাকে আহত করেছে এবং তিনি মারা গেছেন। কিন্তু মামলার আসামিরা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। হামলার ঘটনার পর তারা বিরাট একটি মিছিল করেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আসছে। তাহলে রাজনীতিকরণের সূচনাটি কারা করলো? হত্যাকাণ্ডের পর ময়নাতদন্ত হয়, রিপোর্ট আসবে। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই কেউ কেউ বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা শঙ্কিত। প্রকৃত হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট আসবে বলে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন - জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যাহ, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহ-সেক্রেটারি মহসিন কবির মুরাদ, লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা জামায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম সুমন খান প্রমুখ। থানা পুলিশ ও জামায়াত জানায়, জামায়াতের ওলামা বিভাগের নেতা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার রোববার (৮ জুন) মামলা করেছেন। এতে এজাহারভুক্তরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাউছার বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হয়ে সন্ধ্যায় মারা যান। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের ওলামা বিভাগের সভাপতি ছিলেন।

হাসনাতকে নিয়ে ট্রল, সাংবাদিক জুলকারনাইনের উদ্বেগ প্রকাশ
ঈদের সময় বৃষ্টিতে ভিজে নিজ এলাকা ও আশপাশের দরিদ্র পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। এমন ছবি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে ট্রল করা শুরু হয়। এবার সেই ট্রল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন, এই হাসনাত আবদুল্লাহ ছেলেটার জন্ম ১৯৯৮ সালে, সেই হিসেবে বয়স দাঁড়ায় ২৭, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অভিভাবকেরা এই বয়সী সন্তানদেরও নিজেদের ছায়ার তলে রাখতে চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসনাতের বয়সী এমনকি ওর থেকে কম বয়সী ছেলেমেয়েরা সম্মিলিতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার কঠোর এক স্বৈরশাসকে কেবল পদচ্যুতই করেনি বরং পুরো ক্যাবিনেটসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে একপ্রকারের বাধ্য করেছে। তিনি আরও লেখেন, এই ছেলেটা কয়েকদিন আগে ঈদের সময় তার এলাকার কিছু পরিবারে সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই কোরবানির মাংস বিতরণ করেছে। তার সামর্থ অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব তাই সে করার চেষ্টা করেছে। আমি বেশ অবাক হয়ে দেখলাম আমার বয়সী এবং আরও বয়স্ক অনেকেই কিভাবে ওর বৃষ্টিতে ভিজে মাংসকে বিতরণের ছবিকে নিয়ে ট্রল করেছেন। বিষয়টাকে একটা ঠাট্টা-তামাশাতে পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। আপনারা যদি কাউকে উৎসাহ দিতে নাই পারেন, তবে অন্তত নিরুৎসাহিত করা থেকে বিরত থাকেন। ওদের অনেক সমস্যা হয়তো আছে, পরামর্শ দিয়ে সেসব শোধরানোও অসম্ভব কিছু না। কিন্তু যখন পজিটিভ কিছু করছে বা করার চেষ্টা করছে, তখন অন্তত সেটাকেও বিতর্কিত করা বা ট্রল করা থেকে নিজেকে সংবরণ করুন।

এপ্রিলে নির্বাচন হলে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে: মির্জা ফখরুল
আগামী এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যদি এপ্রিল মাসে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে তাহলে বিএনপির করণীয় কী হবে তা নিয়ে এখনও পার্টির ফোরামে আলোচনা হয়নি। আমরা আশা করছি সরকার বাস্তবতা বিবেচনা করবেন। আসলে এই সময়টা (এপ্রিল) নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত না। তিনি আরও বলেন, এপ্রিলে নির্বাচন হলে সময়টা হবে ঈদের কয়েক দিন পর। তাহলে ভাবুন, পুরো রমজান মাস প্রার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের কী অবস্থা হবে? আমি নিজেই এখন চিন্তিত যে প্রত্যেক দিন ইফতার পার্টি করতে হবে। এটা কোনও মজার বিষয় না। এতে নির্বাচনী খরচ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অথচ আমরা সবাই বলি নির্বাচনী খরচ কমাতে হবে। কিন্তু এতে আরও বাড়বে। মির্জা ফখরুল বলেন, দ্বিতীয়ত তখন প্রচণ্ড গরম থাকবে। ঝড়-বৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি হচ্ছে জনসভা করা। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি ও রোদের মধ্যে জনসভায় লোকজনের উপস্থিতি কষ্ট হবে। রোদের মধ্যে কে আসবে? রাতে গিয়ে মিটিং করতে হবে। বাংলাদেশে সব সময় ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুই বার এর বাইরে গেছে । সেই নির্বাচনে ঝামেলা হয়েছে। এখানে অনেকে আমাকে ভুল বুঝবেন যে, আমরা সংস্কার চাই না, নির্বাচন চাই। এটা একটি প্রোপাগান্ডা। আমরা অনেক আগে সংস্কারের কথা বলেছি। বলেছি এই ব্যবস্থা চলবে না। সেই কারণে অনেকের সঙ্গে পরামর্শ করে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে দিয়েছিলাম ভিশন ২০২৩। তারপর দিনের পর দিন আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছি। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা বলেছি টানা দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। তারপর একবার গ্যাপ দিয়ে আরেকবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে। এরপর আর হতে পারবে না।

এনসিপির উদ্যোগে গাংনীতে কোরবানির মাংস বিতরণ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা ও পৌরসভায় দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় ৩০০ অসহায় ও নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও জেলার প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ এর উদ্যোগে এই মাংস বিতরণ খরা হয়। রোববার (৮ জুন) সকাল থেকে গাংনীর বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়ায় গিয়ে এসব মাংস পৌঁছে দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির স্থানীয় নেতারা। কোরবানির এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে সাকিল আহমাদ জানান, আমরা চাই, ঈদের আনন্দ সবাই ভাগ করে নিক। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ যেন এই খুশি থেকে বঞ্চিত না হয় — সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা, যারা পুরো প্রক্রিয়া সুসংগঠিতভাবে পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য, ঈদুল আজহার প্রথম দিনেও একইভাবে ২৫০ পরিবারের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছিল এনসিপি মেহেরপুর। নেতাদের মধ্যে জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ যুক্ত ছিলেন আমির হামজা, শামীম আহমেদ আজম, ইমন, আকাশ প্রমুখ। এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে দলটি।

আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া বাংলাদেশে নেই: এনসিপি নেতা জোবায়ের
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জোবাইরুল আলম মানিক বলেছেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছি। ১৬-১৭ বছরের এক মাফিয়াকে হটাতে পারছি। আবারও যদি কেউ মাফিয়া হয়ে উঠতে চায় আমরা তাদের বলব, এখন বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই। সোমবার (৯ জুন) বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কালাবিবির দিঘির মোড়ে একটি কমিউনিটি সেন্টারে এনসিপি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জোবাইরুল আলম মানিক বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেকেই অনেক কিছু বলে তাতে আমার কিছু আসে যায় না, আমি বলছি এখানে কেউ যদি আবার জাবেদ হতে চায় (সাবেক মন্ত্রী সাফুজ্জামান চৌধুরী), আমাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়, তাহলে আমরা আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও ওয়াসিম আকরামের মতো শহীদ হয়ে তাদের রুখে দেব। এনসিপি নেতা দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও এম ইউ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণঅভ্যুত্থানে আহত মো. জাবেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদুল আলমসহ আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার জুলাই আন্দোলনে আহত যোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এদিকে তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোবায়ের আলম মানিক বলেন, আমি মূলত বলেছি আমরা শেখ হাসিনার মতো বড় মাফিয়াকে তাড়িয়েছি, এ দেশে কেউ আবারও ভোট কেড়ে নিতে চাইলে জুলাই আন্দোলনকারীরা আবারও বড় মাফিয়া হয়ে ফিরে আসবে। আমার এ বক্তব্যকে বিকৃত করেছে।

লন্ডনে বৈঠকে বসছেন ড. ইউনূস ও তারেক রহমান
লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এতথ্য জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে এই বৈঠক হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লন্ডনে তাদের মধ্যকার বৈঠক হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট। একইসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার স্থায়ী কমিটি দিয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) যে হোটেলে উঠেছেন সেখানেই বৈঠক হবে। এখানে সুনির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নেই।

‘ড. ইউনূস টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে’
ছাত্র-জনতার খুনের সঙ্গে জড়িত, এ দেশের মানুষের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ হলে তা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। সোমবার (৯ জুন) বিকালে হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের পর্যটন কেন্দ্র কমলার দিঘীর পাড়ে মেঘনা নদীর ভাঙনের কবলে ভিটেমাটি হারা স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন। আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ১৯৭১ সালের পর সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া স্বাধীন হয়েছে। মালয়েশিয়া পেয়েছিল মাহাথির মোহাম্মদের মতো সৎ ও নিষ্ঠবান শাসক। আর আমরা পেয়েছি শেখ মুজিবের মতো শাসক যার আমলে এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এ দেশের ওপর ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে অনেক শাসকের পরিবর্তন হয়েছে। তার মধ্যে কেবল মেজর জিয়া এদেরকে প্রকৃত পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছেন। ভারতের আগ্রাসী মনোভাব আমাদের মেজর জিয়াকে বাঁচতে দেয়নি। শেখ হাসিনার পতন এ দেশে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের পতন নয়, শেখ হাসিনার পতন মানে এ দেশে ভারতীয় আধিপত্যের পতন। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার জনজীবন দিয়েছে শুধু নির্বাচনের জন্য নয় উল্লেখ করে হান্নান মাসউদ বলেন, আপনারা নির্বাচন-নির্বাচন করছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এ দেশে নির্বাচন হবে, তবে তার আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। এ দেশের সব ঘর থেকে অস্ত্র উদ্ধার হলে, প্রতিটি অস্ত্রধারী গ্রেফতার হলেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে। নিজ জন্মভূমি হাতিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে আমার কাছে জানতে চায় আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করেও কেন হাতিয়া নিয়ে ভাবছি। আমি তাদেরকে বলি, হাতিয়ার মানুষের দুঃখ, দুর্দশার ভাগাভাগি করতে হাতিয়া যাচ্ছি। দীর্ঘ সময় থেকে হাতিয়া সন্ত্রাসের আখড়ায় রূপ নিয়েছিল। সেই সন্ত্রাসের আখড়া থেকে হাতিয়াকে বসবাসযোগ্য হাতিয়ার রূপ দেওয়ার জন্য আমি হাতিয়া নিয়ে ভাবছি। হাতিয়া কলেজের সাবেক শিক্ষক মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

লন্ডনে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস নির্বাচনের সময় ‘স্পষ্ট’ করার পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। রীতিমতো ‘টক অব দ্যা কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার ইস্যু। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল-বিএনপিও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘অনড়।’ এই অবস্থার মধ্যে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস। তবে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের গুঞ্জন উঠেছে। বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই এমন একটি বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এমন কোনো বিষয়ে জানানো হয়নি। ফলে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের কোনো বৈঠক হবে কি না, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। গত বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচির বিষয়ে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সেই সূচি অনুযায়ী, লন্ডন সফরে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে সাক্ষাৎ ছাড়াও রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়া সফরকালে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়াও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠক হবে। সেই সঙ্গে আলোচনায় আসবে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের বিষয়টিও। এছাড়া চার দিনের এই সরকারি সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন। সবমিলিয়ে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার পাশাপাশি অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরের কর্মসূচিগুলোকে ‘কনফিডেনশিয়াল’ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো কর্মসূচির বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়নি। আর সফরে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন এমন কথাও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। তবে এই বৈঠকের গুঞ্জনের মধ্যেই গত ৪ জুনের সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল- যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের কোনো কর্মসূচি আছে কিনা। ওইদিন রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘সফরসূচিতে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই’। যদিও ঢাকা ও লন্ডনে বিএনপি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে তারেক রহমানের সঙ্গে একটি বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশের পর দুই পক্ষই বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনায় রয়েছে। ঢাকা ও লন্ডনে বিএনপি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বা বিএনপির এমন একটি বৈঠকের বিষয়ে অনাগ্রহ নেই। তবে এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণার পর বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠক কিংবা তাদের মধ্যকার আলোচনার প্রয়োজনীয়তা কতটা আছে- সেই প্রশ্নও দলটির ভেতরে আলোচিত হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি উভয় পক্ষ বৈঠকের বিষয়ে একমতও হয়, তবে সেই বৈঠক কোথায় এবং কীভাবে হবে তা নিয়েও উভয় পক্ষে একাধিক মত রয়েছে। এমনকি সরকারি সফরের মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক ঠিক হবে কিনা এমনটাও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। যদিও সোমবার (৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের দপ্তরে সংযুক্ত কয়েকজন বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের এই বৈঠকটি হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। সূত্র:বিবিসি বাংলা

সরকারের অনেক উপদেষ্টা প্রচণ্ড বিএনপিবিদ্বেষী: রিজভী
অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা আছেন যারা প্রচণ্ড বিএনপিবিদ্বেষী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যে কোনো ইস্যুতে ধর্ম ও শহীদদের টেনে এনে দু-একটি রাজনৈতিক দল সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। এক সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দু-একটি রাজনৈতিক দল শহীদদের রক্ত ও ধর্মকে টেনে নিয়ে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার দু-একটি রাজনৈতিক দলের কথা শুনে পেন্ডুলামের মতো দুলছে। পরিকল্পিত এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ এটি। সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। ডিসেম্বর নির্বাচনের উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, কোনো এক রাজনৈতিক দলের নেতা বলছেন শহীদদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ করা যাবে না। তারা একাত্তরের শহীদদের কথা কি ভুলে গেছেন? ’৮৬ সালের নির্বাচনের কথা কি ভুলে গেছেন? আসলে তারা ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চান। তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে তো প্রচণ্ড খরতাপ থাকে, ঝড় বৃষ্টি হয়, এসএসসি পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা থাকে, মাদরাসার পরীক্ষা থাকে। সে সময় কেবল রোজার ঈদ শেষ হবে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে রমজানে প্রচারণা চালাতে হবে। রোজা রেখে প্রচারণা চালাবে কীভাবে! মানুষ রোজা রাখবে না নির্বাচনের প্রচারণা চালাবে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের আবেগ ধারণ করলে সরকার বিতর্কিত হবে না। তবে, বিশেষ কোনো দলকে সুবিধা দিতে গেলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লেও উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকার। কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য থেকে চামড়া বিক্রেতারাবঞ্চিত হয়েছেন। সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ করতে পেরেছে কি না- এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, চাঁদাবাজ-দখলদারদের কেন ধরা হচ্ছে না? সব অন্যায়ের বিপক্ষে বিএনপির অবস্থান।

দেশবিরোধী যে কোনো চক্রান্ত রুখে দিতে ছাত্রদল প্রস্তুত : রাকিব
ছাত্রদল সকল ইতিহাস-ঐতিহ্য বজায় রেখেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, অতীতে যেভাবে ছাত্রদল রাজপথে থেকে আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছে। গত জুলাই-আগস্টে সরকার পতনের আন্দোলনের পরও সেইভাবেই রাজপথ কাঁপিয়েছে ছাত্রদল। আগামীতে দেশবিরোধী যে কোনো ধরনের যড়যন্ত্রকে রুখে দিতে ছাত্রদল প্রস্তুত রয়েছে। রোববার ( ৮ জুন) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় রোডস্থ মহানগর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কার্যালয় উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলীয় কার্যলয়ে কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে ছাত্রদলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে জানিয়ে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে। তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য এবং দেশকে অন্যায়-অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সকলে হাতে হাত রেখে কাজ করবেন। তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছাত্রদলের নীতি-আর্দশকে বুকে ধারণ করে সকল ক্যাম্পাসে আমরা রাজনীতি করেছি। এ সময়ে আমরা একটি দিনের জন্যও পরিচয় লুকিয়ে রেখে কোনো ক্যাম্পাসে প্রবেশ করিনি। আমরা ছাত্রলীগের কিংবা ফ্যাসিস্টদের দোসরদের সঙ্গে হাত মেলায়নি। আমার ভাইদের গুলি করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে, তারপরও তাদের সহকর্মীরা ভয় পেয়ে রাজপথ ছেড়ে যাননি। সেভাবে ফ্যাসিস্টদের মোকাবিলা করে আজ আমরা হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে বসবাস করি। সেক্ষেত্রে গোপন কোনো সংগঠনের বাধা থাকলে আমরা দাঁতভাঙা জবাব দেব। ছাত্রশিবিরকে ইঙ্গিত করে রাকিব বলেন, একটি গোপন সংগঠন গত ১৫ বছর ছাত্রলীগের পতাকাতলে থেকে এবং তাদের আশ্রয়ে থেকে তারা একজনও প্রকাশ্যে আসার সাহস পায়নি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রানা, নবগঠিত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল হাকিম আজিজ, সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গোবিন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক আল মোহাম্মদ রাফসান সামি, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরুজ্জামান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক সুজা উদ্দিন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাইমুল করিম লুইন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ । এতে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। এর আগে ছাত্রদল সভাপতি ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে নিজ এলাকা ময়মনসিংহে আগমন করায় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে বিশাল মোটরসাইকেল বহরে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

শহীদদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন নির্বাচন দেখতে চাই না: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘খুব ভালো নির্বাচন আমরা আশা করি। কেউ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমাদের শহীদদের প্রতি আমরা ইমানদারি রক্ষা করতে পারবো না। আমাদের শহীদদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন কোনও নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। শহীদদের রক্তের মর্যাদা রক্ষা করে খুবই সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করি। নির্বাচনে কোনও দেশেরই হস্তক্ষেপ আমাদের দেশে থাকুক এটা কাম্য নয়। আমরাও কোনও দেশের কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা সবাইকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই।’ রবিবার (৮ জুন) দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে যে যা করেছে তার কিছু পাওনা তারা পেয়েছে, আরও পাবে। বাকিটা আখিরাতেও পাবে। একটা প্রতিহিংসামুক্ত সমাজ আমরা দেখতে চাই। আমি এই উপজেলার সন্তান, আমার বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের মামলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তখন আমার সেই বয়সও ছিল না। আমি সেই অর্থে কোনও সংগঠনের সঙ্গে মোটেই যুক্ত ছিলাম না। এখন যেহেতু আমি জামায়াতে ইসলামীর আমির, তাই আমাকে যুদ্ধাপরাধী বানানোর চেষ্টা হয়েছে। আমি কুলাউড়ার মানুষের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। ওরা যাদের কাছে গেছে উপযুক্ত জবাব পেয়ে চলে গেছে। ওরা একবার দুবার নয়, অনেকবার বৃথা চেষ্টা করেছে। কিন্তু কুলাউড়ার একটা মানুষও খারাপ কোনও কথা বলেনি। আমি এই ঋণ আজীবন শোধ করতে পারবো না।’ জামায়াত আমির বলেন, ‘আমার প্রতি যদি এরকম আচরণ করা হয়, তাহলে রাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে কী করা হয়েছে তা এখান থেকেই বোঝা যায়। আমরা এটার কোন প্রতিশোধ নেবো না। কে বা কারা করেছে আমরা সব জানি। প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধ যদি নিতেই থাকি, তাহলে এর কোনও শেষ নাই। এই সমাজ একটা অসুরের সমাজে পরিণত হবে। একটা মানবিক সমাজ আর বানাতে পারবো না। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের ন্যায়বিচার হোক, এই দাবি আমাদের বলিষ্ঠ। এখানে আমরা কোনও ছাড় দেবো না।’ বিভিন্ন পেশার বিপুলসংখ্যক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত এই মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা পল্টন থানা আমির শাহীন আহমদ খান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আজিজ আহমদ কিবরিয়া, পৌর আমির হাফেজ তাজুল ইসলাম প্রমুখ। পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট ছালিক আহমদ চৌধুরী, আনিসুর রহমান, মনির উদ্দিন চৌধুরী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ মাসুক উদ্দিন, মো. শফিক উদ্দিন, মোহাম্মদ শামসুল হক, অ্যাড. রবিউল ইসলাম, এনামুল ইসলাম, রাজানুর রহিম ইফতেখার, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, উপজেলা সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক প্রমুখ।

সৎ নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে: জামায়াত আমির
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সৎ নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমি সাধারণ একজন মানুষ। ন্যায়বিচারের দাবি যার, সে-ই ন্যায়ের পক্ষে ভাবে। যদি সৎ নেতৃত্ব আসে, তবে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে। আল্লাহ যেন দেশকে এমন নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন, যিনি ন্যায়ের ওপর অটল থাকবেন। আজ রোববার দুপুরে নিজ এলাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনশো আসনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, আমরা সারাদেশেই নির্বাচন করবো। যারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করবে, আমরা তাদের সঙ্গেই থাকবো। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাকে তিনবার দীর্ঘ সময় জেলে রাখা হয়েছে। গুম করা হয়েছে অনেককে। সিলেটের ইলিয়াস আলী আজও নিখোঁজ। সে বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে- তার পরিবারও জানে না। বাংলাদেশের মানুষকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে। ভয় আর নিপীড়নের মধ্যে মানুষ কথা বলার সাহস হারিয়েছে। অথচ সেই সময়ও বলা হতো, দেশ উন্নয়নের রোল মডেল! তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোনো রাজতন্ত্র নয়। অথচ গত দেড় যুগে যা হয়েছে, তা রাজতন্ত্রেও হয় না। গত ১৬ বছর আমাকে আপনাদের সামনে আসতে দেওয়া হয়নি। এ সময়ের মধ্যে অনেকেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের সামনে উপস্থিত হতে পারলে ভালো হতো। বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, মানুষকে সাজানো মামলায় ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। আমাদের রিমান্ডে নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হতো। আমরা তখন বলেছি- আমাদের স্বপ্ন মানবিক বাংলাদেশ। উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, ঢাকার পল্টন থানা জামায়াত আমির শাহীন আহমেদ খান, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, শ্রীপুর জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শামসুল হক, প্রিন্সিপাল আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক মনির উদ্দিন চৌধুরী, কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির দপ্তর সম্পাদক এনামুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

ঈদের নামাজ নিয়ে দ্বন্দ্বে বোমা হামলা, বিএনপি কর্মী নিহত
যশোরের শার্শায় ঈদের নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আব্দুল হাই (৫০) নামে বিএনপির একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মো. জিয়া (৩২) নামে অপর একজন আহত হয়েছেন। শনিবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডুবপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার সকালে বাহাদুরপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এদিন আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ঈদের নামাজ পড়তে বাধা দিয়েছিলেন ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জামসেদ আলীর ছেলে আবু সাইদ। বিষয়টা নিয়ে আব্দুল হাইসহ উপস্থিত বিএনপির অন্যান্য নেতারা প্রতিবাদ করেন। এরপর আবু সাইদ তার অনুসারীদের নিয়ে ঈদের মাঠ থেকে চলে যান। রাতে আব্দুল হাই ডুবপাড়া জামতলা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আবু সাইদ তাকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে আব্দুল হাই গুরুতর আহত হন এবং তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্ত্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা জিয়া নামের অপর এক বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন। তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন বলেন, ঈদের নামাজ পড়তে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আবু সাইদ নামের এক সন্ত্রাসী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সে বিএনপির কেউ না, গেল ৫ আগস্টের পর বিএনপি সাজার চেষ্টা করছে। মূলত সে একজন সন্ত্রাসী এবং নেশাগ্রস্ত। তার বাবাও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

ত্যাগের শিক্ষায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদ শুভেচ্ছায় এনসিপি
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার (৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ শুভেচ্ছা জানানো হয়। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় বলা হয়েছে, ঈদুল আজহা আমাদেরকে ত্যাগ ও ধৈর্যের শিক্ষা দেয়। এই পবিত্র দিনে আমরা শুধু পশুই কোরবানি করি না; বরং নিজের অহংকার, স্বার্থপরতা এবং অন্যায়ের সঙ্গে আপসের মনোভাবকেও ত্যাগ করার শপথ নিই। সমাজে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি-চাঁদাবাজি বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সত্য ও সুন্দরের পথ নির্মাণই হোক আজকের দিনের প্রত্যাশা। এতে আরও বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে এই জনপদের মানুষের ত্যাগের সর্বোচ্চ রূপে ফুটে উঠেছিল। সাহসী ও ত্যাগী মানুষেরা নিজেদের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে কর্তা হয়ে না উঠলে পরিবর্তন আসে না আর আত্মত্যাগ ছাড়া মুক্তি অসম্ভব। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই সব শহীদদের, যাদের রক্তে এই জাতি নতুন আশার আলো দেখেছিল। ‘আজ ঈদের এই পবিত্রতায় আমরা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। শহীদদের আত্মত্যাগের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে দ্রুত জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণা প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে। ত্যাগের শিক্ষায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ।’

ফের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইল জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। শনিবার (৭ জুন) সকালে এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে ১০ দলীয় এই জোট। বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে। বিবৃতিতে সমমনা জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, আমরা মনে করি- রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় জাতীয় নির্বাচনের জন্য ওই সময় উপযুক্ত নয়। তাছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান কেন সম্ভব নয়, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি। অধিকন্তু দেশের গণতন্ত্রকামী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তাই আমরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি। তারা আরও বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষ গত প্রায় দেড় যুগ ধরে গুম, খুন, হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, আহত ও নির্যাতিত হয়েও অব্যাহত লড়াই চালিয়ে গেছে। স্বৈরাচারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। তাই সরকারকে বলব, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আপনারা জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন এবং নির্বাচনকে অহেতুক প্রলম্বিত না করে জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিম খান, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এসএম শাহাদাত হোসেন এবং পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ।

শুধু বিএনপি নয়, ৩৬টি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়: ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল
শুধু বিএনপি নয়, ৩৬টি দল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল। শনিবার (০৭ জুন) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি উল্লেখ করে খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, গতকাল আমাদের স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসেছিল। এখনও পর্যন্ত ডিসেম্বরে নির্বাচন নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ব্যাখ্যাটি ভুল। বিএনপির সঙ্গে ৩৬টি দল আছে, যারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। তিনি বলেন, বিগত ৫ আগস্ট থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত একটা লম্বা সময়। এই সময়ই যথেষ্ট সংস্কারের জন্য। আমার মনে হয় সংস্কার যদি করতে হয়, এক বছরই যথেষ্ট। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সময় নষ্ট করছে। এটাও আমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। সকাল ৮টায় শহরের কাজী পাড়াস্থ জেলা ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আবু বকর। জামাতে নামাজ আদায় করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, জেলা জামায়াতে ইসলামির আমির মোবারক হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। পরে নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মুনাজাত করা হয়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোকোর কবর জিয়ারত করলেন রিজভী
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (৭ জুন) দুপুরে বনানী কবরস্থানে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত ও মোনাজাতে অংশ নেন বিএনপি নেতারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

হানাহানির রাজনীতি ফিরে আসুক কখনই চাই না: হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, আমার গ্রামের মানুষ দল-মত নির্বিশেষে খুবই শান্তিপ্রিয় এবং আমার আপনজন। হানাহানির রাজনীতি দেশে ফিরে আসুক আমরা কখনোই তা চাই না। শনিবার (৭ জুন) নোয়াখালীর হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের নিজ গ্রামের মসজিদে ঈদের নামাজ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পূর্বে আন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি এ দেশের মানুষকে পাড়ায় মহল্লায় শোষণ করেছে। আমার বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমার গ্রামের মানুষ তা রুখে দিয়েছে। পরে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ করেন। এরপর হান্নান মাসউদ তার গ্রামের মানুষের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করেন। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হাতিয়া প্রতিনিধি মো. ইউসুফ রেজাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নির্বাচনের জন্য এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়: মির্জা ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের জন্য ‘এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৭ জুন) ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১১টায় শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এপ্রিল মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য কেনো অনুপযোগী তার কারণ জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যে সময়টি (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে সেই সময়টি বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এপ্রিল মাসে প্রচন্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে; ওই সময়টি রোজার পরে পরেই; তারপর পাবলিক পরীক্ষা আছে। সময়টা খুব চিন্তা করে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, এছাড়া নির্বাচনি প্রচারণা করতে হবে রোজার মাসে যেটা কঠিন হবে। আমাদের মন্তব্যসমূহ সম্বন্ধে স্ট্যাডিং কমিটি গতকাল রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতামত জানিয়েছেন। আমরা মনে করি যে, ডিসেম্বরই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্যে সবচেয়ে উপযোগী হবে। ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের কোনো একটি দিন জাতীয় নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে ঘোষণা দিয়েছেন সে সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা গতকালই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমরা বরাবরই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম। জনগণের প্রত্যাশাও তাই ছিল। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এর আগে সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এজেডএম জাহিদ হোসেনকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এসময় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবদুল হালিম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ আলী, আমিনুল হক প্রমুখ নেতারা ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০০৮ সালে কারাগারে যাওয়ার আগে প্রতি ঈদে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। মির্জা ফখরুল বলেন, দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমি দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি, শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই দিনে আমরা ত্যাগের মাধ্যমে সত্যকে অন্বেষণ করি এবং মহান আল্লাহতালার কাছাকাছি আমরা পৌঁছাতে চাই।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ
আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপিসহ ৫০ এর অধিক দল ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা যৌক্তিকভাবে আমাদের বক্তব্য দিয়ে আসছি। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বিষয়টি আমলে নেননি।’ এপ্রিলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এমন সময়ে নির্বাচনের আয়োজনের কথা বলেছে ওই সময়ে অনেকগুলো পাবলিক পরীক্ষা থাকে, আবহাওয়া সঠিক থাকে না। আমাদের জানামতে ফেব্রুয়ারির ১৬ অথবা ১৮ তারিখের দিকে পবিত্র রমজান শুরু হবে। তাহলে ঈদ হবে মার্চের মাসে শেষার্ধে। নির্বাচন তফসিল ঘোষণা ক্যাম্পেইনের জন্য যে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। সেটা তাহলে রমজানের মধ্য পড়ে যাবে। এটা একটা অযৌক্তিক সময়। দ্বিতীয়ত, ওই সময় এইচএসসি ও এসএসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে খুব বেশি হলে জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারতো। হয়তো এটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হতো। কিন্তু তিনি সেটা আমলে নেননি। এছাড়া এপ্রিলে নির্বাচন হলে এক মাসের মধ্য পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে হবে, যা অনেক কঠিন। কারণ আমাদের অনেক বেশি পরিকল্পনা রয়েছে।’

এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না: নাহিদ
আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে বক্তব্য জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার (০৬ জুন) রাতে বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি সবসময় বলে আসছি বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন এই সরকারের প্রধানতম কর্তব্য। ঐক্যমত কমিশনের বৈঠকে আমরা বলেছিলাম যাতে জুলাই সনদ হওয়ার পরেই যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। আজ (শুক্রবার) প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছেন। কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনের তারিখ জানতে চাচ্ছিল তাদেরকে হয়ত আশ্বস্ত করার জন্য তিনি বলেছেন। নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থান এবং জনগণের বৃহত্তর অংশকে আশ্বস্ত করার জন্য জুলাই সনদ অতি জরুরি। রাষ্ট্রের কি কি সংস্কার হচ্ছে এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার জন্য সরকার ৩০ কার্যদিবস সময় চেয়েছিল তার কিছুদিন বাকি আছে। আশা করি সেটি যথাসময়ে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন জুলাই সনদ জুলাই মাসের মধ্যে হবে। জুলাই ঐক্যমতের ভিত্তিতে যদি সংস্কারের রূপরেখাটি আসে এরপর তিনি লেভেল ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচনের দিকে যেতে পারেন। আমরা আপাতত প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত রোডম্যাপকে স্বাগত জানাই। তিনি আরও বলেন, আমরা আগেও বলেছি জুলাই সনদ, সংস্কার ও বিচার যদি নিশ্চিত হয় ডিসেম্বর থেকে জুন যেকোনো সময়ই হতে পারে। এই মুহূর্তে জুলাই সনদটাই আমাদের প্রধান দাবি। এটি যাতে উনি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, নির্বাচনের যেহেতু মাসটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেটার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার কথা বলেছি, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সম্ভব না। এই প্রক্রিয়াগুলো যাতে দ্রুত শুরু হয় সরকারের প্রতি আমাদের এই আহ্বান থাকবে।