
কারাগারে খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে, দাবি মির্জা ফখরুলের
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, কারাগারে ম্যাডামকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে।’ রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ম্যাডামের লিভার সিরোসিস হয়েছে জেলখানার মধ্যে। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, কারগারে তাকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। এটা যদি ম্যাডামকে জিজ্ঞাসা করেন উনি বলবেন না। কারণ উনি সেই ধরনের মানুষ না... একবারের জন্য বলবেন না।’ তিনি বলেন, ‘ম্যাডামকে যে ঘরে রাখা হয়েছিল সেই ঘরটা ছিল স্যাঁতসেঁতে, সমস্ত দেয়ালের আস্তর ভেঙে ভেঙে পড়ছিল এবং ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করত… এ রকম অবস্থা ফেইস করেছেন আমাদের ম্যাডাম। এর পরেও…. আমি বেশি বলতে চাই না, ‘কাদম্বিনীকে মরিয়া প্রমাণ করতেই হইবে যে সে মরে নাই। এখন নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ উনি (খালেদা জিয়া) লন্ডনে এখন বেটার আছেন। আজ সেখানে ঈদ উদযাপন হচ্ছে। এই ঈদ ফ্যামিলির সঙ্গে আট বছর পরে উনি উদযাপন করছেন। দিস ইজ এ গুড থিংক ফর আস।’

জনগণ ১৭ বছর প্রার্থনা করেছে স্বাধীন দেশে ঈদ উদযাপনের: তারেক রহমান
দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে লন্ডনে অবস্থানরতবিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণ প্রার্থনা করেছিল যে তারা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবে।’ রোববার (৩০ মার্চ) বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তারেক রহমান বাংলাদেশের জনগণ এবং বিশ্বজুড়ে ঈদ উদযাপন করা মুসলমানদের ঈদ শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ‘১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণ প্রার্থনা করেছিল যে তারা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবে, যেখানে স্বৈরাচারী সরকার আর তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারেনি। ২০২৪ সালে সেই প্রার্থনার ফল পেয়েছেন তারা। এক ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দুই হাজারেরও বেশি প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচারীর শৃঙ্খল থেকে মুক্ত।’ ‘প্রায় দুই দশকের মধ্যে প্রথম বারের মতো এই ঈদে আমরা স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত একটি দেশে পবিত্র রমজান মাসের পর এই বরকতময় দিনটি উদযাপন করছি। এ জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি এই অভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শহীদ ও আহতদের জন্য প্রার্থনা করছি।’ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘সর্বজনীন এই ঐক্যের মাধ্যমে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা-কর্মীসহ সব বাংলাদেশিকে আহ্বান জানাচ্ছি, স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আমাদের প্রথম ঈদের আনন্দ যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের প্রতি আহ্বান, আপনারা সব সম্প্রদায়ের মানুষের যত্ন নিন, দেশের নারী-পুরুষ সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন। এতিমখানায় থাকা শিশুদের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খান, নিহত তরুণরাম যারা আজ পরিবারে অনুপস্থিত, তাদের বাড়িতে ঈদ উদযাপনে অংশ নিন, দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ান, যাতে অর্থনৈতিক দুর্দশা তাদের আনন্দঘন মুহূর্ত কেড়ে না নেয়।’ পরিবহনমালিকদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছে আবেদন করছি যে অতিরিক্ত ভাড়া আরোপ করা থেকে বিরত থাকুন, যাতে ঘরমুখী মানুষ কোনো রকম হয়রানি ছাড়া তাদের পরিবারের কাছে যেতে পারে এবং ঈদ উদযাপনে মিলিত হতে পারে।’ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যখন একটি উৎসব করতে যাচ্ছি, তখনো পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য মরিয়া। আমি সব নাগরিককে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা এই কষ্টার্জিত ফসলকে ব্যাহত করতে চায়, তারা যেন কোনো এজেন্ডা কাজে লাগাতে না পারে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে ব্যর্থ হই, তাহলে এই শক্তিগুলোকে আমাদের ঐতিহাসিক বিজয়কে নষ্ট করে দেবে, যা আমাদের জন্য ঝুঁকির।’ ‘পরিশেষে বলব, আমি দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ঈদের সময় আরও সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এবং যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনসাধারণের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি করতে চায়, তাদের প্রতিহত করুন।’ তারেক রহমান বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম ঈদ হোক সবার জন্য শান্তি, ঐক্য ও আনন্দের। আমি আল্লাহর কাছে এই আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।’

‘এক রুমে বন্দি’ থেকে মুক্ত খালেদার সাত বছর পর পরিবারের সাথে ঈদ
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি বিএনপির নেতাকর্মীরা। কখনও হামলা বা মামলার ভয়ে বাড়ি-ঘর ছাড়া, আবার কখনও কারাগারেই করতে হয়েছিল ঈদ। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সুদিন ফিরতে শুরু করেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। এবার তারা স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করবেন। বিগত বছরগুলোর মতো এবার আর দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকেও ‘এক রুমে বন্দি’ অবস্থায় ঈদ উদযাপন করতে হচ্ছে না। নির্জন কারাবাস থেকে গৃহবন্দি, দীর্ঘ সাত বছর পর এবারই পুরোপুরি মুক্ত হয়ে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ উদযাপন করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তার অবর্তমানে ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। প্রসঙ্গত, ঢাকায় যখন ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে তখন লন্ডনে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ। বিএনপি রচেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। তখন তিনি তিন মাস বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। ওই বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ঈদুল আজহা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে উদযাপন করেন। দীর্ঘ সাত বছর পর আবার নিজ পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপার্সনের কর্মকর্তারা জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলে তার। বর্তমানে তাকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, লন্ডনে তারেক রহমানের পরিবার ছাড়াও আছেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও তার দুই মেয়ে। তাই এবার তিনি ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করছেন ছেলে, ছেলেদের স্ত্রী ও নাতনিদের সঙ্গে। ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন খালেদা জিয়া। তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। ওই বছরে দুটি ঈদ কারাগারে একটি কক্ষে গৃহকর্মী ফাতেমার সঙ্গে কাটে তার। কারাগারে তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছিলেন। ২০১৯ সালে কারাবন্দি অবস্থায় রাজধানীর বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই কক্ষেই তার ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা কাটে। তখনও তার সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা। হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কিছু সময়ের জন্য সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মুখে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকারপ্রধান নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেন খালেদা জিয়াকে। ফলে করোনার মধ্যে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় কোয়ারেন্টাইন মেনে এক কক্ষের মধ্যে ওই বছরের দুটি ঈদ কাটে তার। ২০২১ সালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় এভার কেয়ার হাসপাতালের কেবিনে ঈদুল ফিতর কাটে খালেদা জিয়ার। আর ঈদুল আজহা কাটে ফিরোজায়। একই নিয়মে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গৃহবন্দি অবস্থায় ফিরোজায় ছয়টি ঈদ উদযাপন করেন খালেদা জিয়া। সেখানে তার সঙ্গে ঈদ করতে কয়েকবার লন্ডন থেকে দেশে এসেছিলেন ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান ও তার দুই কন্যা। এ ছাড়া ঈদের দিন দলের স্থায়ী কমিটির নেতারা তার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘সর্বশেষ ২০২৪ সালের ঈদে আসতে পারেননি সৈয়দা শর্মিলা রহমান। এ ছাড়া এর আগের সবগুলো বছর ঈদের আগে কিংবা পরে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন এবং শাশুড়ির সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন। অনেক সময় তার দুই মেয়েও দাদির সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকায় এসেছিলেন।’ এপ্রিলে দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া: উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। গত তিন মাস সেখানে অবস্থান করলেও কবে নাগাদ তিনি দেশে ফিরতে পারেন তা নিয়ে দল কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানানো হয়নি। তবে, আগামী এপ্রিল মাসের যে কোনো সময়ে তিনি দেশে ফিরতে পারেন বলে জানা গেছে। শায়রুল কবির খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ম্যাডামের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ম্যাডামের আসার বিষয়ে এখনও কোনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। তবে, তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে দ্রুত দেশে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে তার।’ এবার খালেদা জিয়ার লন্ডনে ঈদ উদযাপনের কারণে ঢাকার নেতারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। লন্ডনে ঈদের দিন তার কোনো কর্মসূচি নেই বলেও জানা গেছে। শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ঈদের দিন লন্ডনে ম্যাডামের রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।’ ঢাকায় ঈদ করবেন স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য, অন্যরা এলাকায়: এবার ঈদুল ফিতরের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য ঢাকায় অবস্থান করবেন। দলের অন্যান্য নেতাকর্মী ঈদ করতে ইতোমধ্যে নিজ-নিজ সংসদীয় আসনে চলে গেছেন। ঈদ করে তারা আবার ঢাকায় ফিরবেন। ঈদের দিন সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মির্জা ফখরুল। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ডাক্তার জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে আছেন। আর মঈন খান আমেরিকায় এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদ উদযাপন করবেন। শায়রুল কবির বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির নেতারা ছাড়া অন্য নেতাকর্মীরা নিজ-নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।’

ভয়হীন পরিবেশে এবারের ঈদ উদযাপন করছে জনগণ: তারেক রহমান
রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পর গুম, খুন, অপহরণের ভয়হীন-স্বাধীন সার্বভৌম এক গণতান্ত্রিক পরিবেশে দেশের আপামর জনগণ এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রোববার (৩০ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন তিনি। পোস্টে তারেক রহমান বলেন, ‘ত্যাগ-তাকওয়া আর সংযমের শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ব্যক্তি, পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনকে সুন্দর ও পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর বিশ্বজনীন ঐক্য, সংহতি, সহমর্মিতা এবং অনাবিল আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতি জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও মোবারকবাদ। ঈদ মুবারক।’ ‘ব্যক্তি জীবনকে পরিশুদ্ধ ও সংযমী করে গড়ার লক্ষ্যে মোমিন মুসলমানেরা মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর হৃদয় আনন্দে উপচে পড়া ঈদুল ফিতর সমাগত হয়।’ ‘বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পর গুম, খুন, অপহরণের ভয়হীন-স্বাধীন সার্বভৌম এক গণতান্ত্রিক পরিবেশে দেশের আপামর জনগণ এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। এবারের ঈদ আনন্দে তাই যোগ হয়েছে উচ্ছ্বাস-উৎসাহ উদ্দীপনার এক নতুন মাত্রা।’ ‘তবে মানুষের মনে পবিত্র আনন্দ-উচ্ছ্বাসের এমন এক বাধাহীন ঊর্মিমুখর সময়েও অনেক মায়েদের মনে আনন্দ নেই। অনেক পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। কারণ ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ দেড় দশকের গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম নির্যাতনে সন্তান স্বজনহারা লাখো পরিবারে নেমে এসেছিলো জাহেলিয়াতের অন্ধকার। শুধুমাত্র জুলাই-আগস্টেই পলাতক স্বৈরাচারের পতনের শেষ দিনগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন নানা শ্রেণি পেশার হাজারো মানুষ। ছাত্র-যুবক-কৃষক-শ্রমিক-রাজনৈতিক কর্মী কিংবা নিরীহ পথচারী এমনকি নারী শিশু বৃদ্ধ পর্যন্ত ফ্যাসিস্টের বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি। আহত হয়েছেন ২০ সহস্রাধিক মানুষ।’ ‘ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারগুলোতে আজ তাই ঈদ উৎসবের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নেই। ঈদের দিনেও হয়তো সন্তানহারা কোনো মায়ের চোখে অশ্রু। এই আনন্দঘন সময়েও স্বজনদের হৃদয়ে আপনজন হারানোর নিঃশব্দ কান্না। মাফিয়া চক্রের নির্মমতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত প্রিয় মানুষটির কাছে বসেই অনেককে ঈদ আনন্দের এই দিনটি কাটাতে হচ্ছে আশা নিরাশা আর হতাশায়।’ ‘ঈদুল ফিতর নির্মল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী মানবজাতির কাছে পৌঁছে যায় তা হচ্ছে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। এই মর্মবাণী মানসিক কদর্য, অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুর সামাজিক অসাম্যকে অতিক্রম করে এক নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধের প্রেরণা জাগায়। আর এই প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে সমাজের অপেক্ষাকৃত দরিদ্র, অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া মুসলমান হিসাবে আমাদের কর্তব্য।’ ‘দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালাতে গিয়ে যারা মানুষের ঈদ উৎসবের আনন্দকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যারা অস্ত্রের জোরে মায়েদের বুক থেকে তাদের প্রিয় সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে, যারা দেশের অসংখ্য অগণিত সন্তানকে পিতৃহারা-মাতৃহারা করেছে, এই বাংলাদেশে তাদের বিচার হতেই হবে। যে কোনও মূল্যে পলাতক স্বৈরাচার আর তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সন্তানহারা মায়েদের মনে স্বজন হারা শোকসন্তপ্ত পরিবারে একটু হলেও সান্ত্বনার বার্তা দেয়া হবে। এবারের ঈদে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’ ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভিঘাত সত্বেও ঈদ আমাদের জাতীয় জীবনের সংস্কৃতির দ্যোতক, আবহমানকাল থেকে শুভেচ্ছা ও আনন্দের আদান প্রদান।’ ‘ঈদুল ফিতরের দিনে আমি আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য।’

ভাল আছেন খালেদা জিয়া, লন্ডনে পরিবারের সাথে ঈদ করছেন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখন ভালো আছেন খালেদা জিয়া। লন্ডনে পরিবারের সাথে ঈদ করছেন।’ রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ উনি (বেগম খালেদা জিয়া) লন্ডনে এখন বেটার আছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ সেখানে ঈদ উদযাপন হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে আট বছর পর উনি এই ঈদ উদযাপন করছেন। ‘দিস ইজ এ গুড থিংক ফর আস।’ কবে আসবেন বিএনপির চেয়ারপারসন- এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ম্যাডাম সম্ভবত যতটুকু শুনেছি আমি, নিশ্চিত না, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে তিনি দেশে ফিরবেন।’ গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসনকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। খালেদা জিয়ার কারাগার জীবন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের লিভার সিরোসিস হয়েছে জেলখানার মধ্যে। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি যে, কারাগারে তাকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। এটা যদি ম্যাডামকে জিজ্ঞাসা করেন উনি বলবেন না। কারণ উনি সেই ধরনের মানুষ না... একবারের জন্য বলবেন না।’ তিনি বলেন, ‘ম্যাডামকে যে ঘরে রাখা হয়েছিল, সেই ঘরটা ছিল স্যাঁতস্যাঁতে। সমস্ত দেয়ালের আস্তর ভেঙে ভেঙে পড়ছিল এবং ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করত। এরকম অবস্থা ফেইস করেছেন আমাদের ম্যাডাম। এরপরও আমি বেশি বলতে চাই না যে, কাদম্বিনীকে মরিয়া প্রমাণ করতেই হইবে যে, সে মরে নাই। এখন নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে।’ ‘খালেদা জিয়ার লন্ডনে এটি তৃতীয় ঈদ উদযাপন। এবার দশ বছরের মধ্যে প্রথম বারের মতো তিনি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ঈদ পালন করছেন। এর আগে ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ছেলের বাসায় ঈদুল আজহা উদযাপন করেছিলেন। এরও আগে এক-এগারোর পরে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় আট বছর পর লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ উদযাপন করেছিলেন।’ গত ৮ জানুয়ারি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য লন্ডন পৌঁছান, হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে সরাসরি তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ডেভেনশায়ার প্লেসে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ এ ভর্তি করা হয়। তিনি এই হাসপাতালে অধ্যাপক জন প্যাট্টিক কেনেডির তত্ত্বাবধায়নে ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর লন্ডন ক্লিনিকে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন থাকবেন খালেদা জিয়া। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৫ সালে লন্ডনে ঈদের পর ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ওই অনুষ্ঠানে মায়ের পাশে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানও ছিলেন। ২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। করোনার সময়ে তাকে বিশেষ কারামুক্তি দেওয়া হয়। কারাবন্দি অবস্থায় তার চারটি ঈদে কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

বিএনপির গুম-খুন নেতাকর্মীদের পরিবারের প্রতি সরকার উদাসীন: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী যারা গুম, খুন ও হত্যার শিকার হয়েছেন তারা ও তাদের পরিবারের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার উদাসীন।’ রোববার (৩০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল আয়োজিত গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের মাঝে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ঈদ উপহার প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে রুহুল কবির আরো বলেন, ‘এসব পরিবারের শোক ও মাতম আমরা দেখতে পাই না। তাদের ব্যথা শুধু তাদের পরিবারই বুঝতে পারে। জুলাই আন্দোলনে ১৭ থেকে ১৮ জন রিকশাচালক শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবারগুলো অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছে। তাদের সন্তানরা যারা স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে, তাদের বেতন দিতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘আজকের অন্তর্বর্তী সরকার যেমন ছাত্রদের, তেমন সাধারণ জনগণ ও শ্রমিকদেরও। এসব পরিবারকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব এই সরকারের।’ রুহুল কবির বলেন, ‘কী সংস্কার করবে না করবে তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গরিমসি করছে। নির্বাচন নিয়ে সরকার একেক সময় একেক কথা বলছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিখোঁজ হওয়া, হারিয়ে যাওয়া, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করা দুনিয়া কাঁপানো আন্দোলনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তারা নির্বাচন দিতে দেরি করে কেন?’ তিনি বলেন, ‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে এত গুম হলো, শহীদ হলো, আহত হলো- অথচ সরকার তাদের কোনো খোঁজ নিচ্ছে না। কিছু কিছু উদ্যোগ চোখে পড়লেও সামগ্রিক উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। অথচ সরকারের কিছু লোক এলাকায় এমপি হবেন, মন্ত্রী হবেন এসব নিয়ে ব্যস্ত আছেন। কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপি নেতাকর্মীদের হঠাৎ গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে ঈদের প্রাক্কালে। কী কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে তা বলছে না, আমি চার থেকে পাঁচবার এসপিকে ফোন দিয়েছি, তিনি ফোন ধরছেন না। বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসিনার অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, হত্যার শিকার হয়েছে। আপনারাও যদি হাসিনার মতো কাজ করেন, আপনারা দেশটাকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন?’ রুহুল কবির আরও বলেন, ‘প্রশাসনে রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো হাসিনার দোসর রয়েছে। তাদের আপনারা লালন করছেন। যারা একটু বিএনপির সমর্থক সরকারি কর্মকর্তা আছেন তাদের ঢাকা থেকে বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাদের নাজেহাল করা হচ্ছে। এখনো প্রশাসনে হাসিনার জীবাণুরা রয়ে গেছে, তারাই নানা প্রকার ষড়যন্ত্র করছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সহ-সভাপতি আব্দুল আওয়াল।

নিরপেক্ষতা না থাকলে উপদেষ্টাদের বের করে দেয়া দরকার: ফখরুল
নিরপেক্ষতা না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা উপদেষ্টাদের বের করে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।ফখরুল বলেন, ‘কিছু কিছু মহল সচেতনভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চায়। এই ব্যাপারে বাধা দেখা গেলে রাস্তায় নামতে হবে।’কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্যে আশাহত হয়েছেন জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে। নিরপেক্ষতা না থাকলে উপদেষ্টাদের বের করে দেয়া উচিত।’একটি দলকে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধার খবর পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘সরকারি টাকা বরাদ্দ, উন্নয়নের জন্য কাজ নেয়ারও ঘটনা ঘটছে।’বিএনপিকে এখন ভারতপন্থি হিসেবে নতুন করে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি সবসময় বাংলাদেশপন্থি।’সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা কোনোভাবেই উচিত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের সময় যে ভূমিকা পালন করেছে তাতে নিজেদের দেশপ্রেমিক হিসেবে প্রমাণ করেছে সেনাবাহিনী।’জনপ্রিয়তা কমাতে বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, জণগনের বৈধতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত সরকারের শক্তি আর অনির্বাচিত সরকারের শক্তি এক নয়।’‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দেয়াটা অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা থেকে আসছে। সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিলে অনেক সংকট কমে যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপিv চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ড. ইউনূসের চীন সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক বিএনপি। ভূরাজনৈতিক কারণেই চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলাটা জরুরি।’চার দিনের সফরে ২৬ মার্চ চীনে পৌঁছান মুহাম্মদ ইউনূস। চীনের হাইনানের কিয়ংহাই বোয়াও বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনাসহ উষ্ণ অভ্যর্থনা দেয় দেশটির সরকার। পর দিন ২৭ মার্চ বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। এদিন বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি ও আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।এরপর চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগে অংশ নেন তিনি। একই স্থানে টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ টু পয়েন্ট জিরো উৎপাদন ও বাজার সুযোগ, সামাজিক ব্যবসা ও যুব উদ্যোক্তা এবং তিন শূন্যের বিশ্ব-এই তিনটি বিষয়ের ওপর তিনটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেন ড. ইউনূস।এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং, চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রী লি গোইয়িং, রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি ওভারচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) চেয়ারম্যান বান কি-মুন সাক্ষাৎ করেছেন।সফর শেষে সফরসঙ্গীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকায় পৌঁছান।

ভোটের অধিকার বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : ফখরুল
জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্যোগে নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে…ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। আবার ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যে। আমরা সেটা হতে দেবো না, খুব পরিষ্কার কথা। সবাই সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব।’ মির্জা ফখরুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো…এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনটা চাই। আমরা এখনো বলছি, রাস্তায় নামি না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি এই ঈদ সামগ্রি নিয়ে, ইফতার সামগ্রি নিয়ে, তাদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি।’ ‘কিন্তু আমাদের স্বার্থে যদি, জনগণের স্বার্থে যদি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয় তাহলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে। মাঠে নেমে তারা দাবি আদায় করে নিতে জানে। আমি কথাটা বলছি এজন্যে যে, আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খুব পরিষ্কার কথা। যে যেখানেই থাকেন, সেই ইউনাইটেড স্টেটে থাকেন, ফ্রান্সে থাকেন আর আমেরিকায় থাকেন; আর সেখান থেকে মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। সুতরাং আমাদেরকে কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিষ্কার কথা, আমরা ভারতের পক্ষেও নই, আমরা পাকিস্তানের পক্ষেও নই…আমরা আমেরিকার পক্ষেও নই, আমরা ইংল্যান্ডের পক্ষেও নই। আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ…আমরা বাংলাদেশি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৯০ শতাংশ নেতা-কর্মীকে জেলে নেওয়া হয়েছিলো। আমাদের ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকার হত্যা করেছিল। প্রায় ১৭শ নেতা-কর্মীকে গুম করেছিলো। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়েছিলো। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এই ধরনের নজির খুব কম। সেই একটা অবস্থা আমরা পার হয়ে এসেছি। আল্লাহতালার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করি যে তার অশেষ রহমতে…আমার কাছে মনে হয়, আল্লাহতালার অশেষ অলৌকিক শক্তি তার মাধ্যমে তিনি হঠাৎ করে একদিন হাসিনাকে যেন গুম করে দিলেন। হাসিনা গুম হয়ে গেছে আল্লাহতালার নির্দেশে। যে অত্যাচার-নির্যাতন তিনি মানুষের ওপরে করেছেন সেখান থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে একটা মুক্ত পরিবেশে একটা জায়গায় আমরা এসে দাঁড়িয়েছি।’ মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তহিরুল ইসলাম তুহিন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুম।

ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানালেন চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই) ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বাণীতে পীর চরমোনাই দেশের সর্বস্তরের জনতাকে আন্তরিক মোবারক জানিয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটি নির্মম স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের একটি মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা হাজির রয়েছি। এমন মুক্ত ও স্বাধীন পরিস্থিতিতে উদযাপিত হওয়া ঈদের এই দিনে সবাইকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’পীর চরমোনাই আরো বলেন, ‘রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে মাহে রমজান এসেছিল। পবিত্র রমজান সকলকে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, পরনিন্দা ও চোগলখুরি ছেড়ে দিয়ে আত্ম সংযম অর্জন করতে শিখায় এবং আল্লাহর ভয় অর্জনের শিক্ষা দেয়। সকল প্রকার ফেৎনা-ফাসাদ ছেড়ে দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সত্যিকার দেশপ্রেমিক হিসেবে ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দেয়। সকল ভেদাভেদ ভুলে মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দেয়।’তিনি বলেন, ‘ঈদ একটি ইবাদত ও আনন্দের উপলক্ষ। এই দিনে আমাদের আনন্দ যেনো কোনোভাবেই শরীয়াহ সীমা লঙ্ঘন না করে সেইদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান করবো। জুলাই আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ আপনার স্বজনকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করবেন। এবং সবরের জন্য আপনারাও মর্যাদাবান হবেন। আহত সকল যোদ্ধাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’পীর চরমোনাই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং স্বৈরাচার বিরোধী সকল রাজনৈতিক সংগঠন ও নেতা-কর্মীদেরকে হৃদয় উজার করে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। সেইসাথে সাংবাদিক, দেশের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োজিত পেশাজীবী এবং ছোট-বড় সকল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দ আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান তিনি।ইসলামী আন্দোলনের আমীর প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক জানিয়ে বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিকালে আপনাদের ভূমিকা জাতি সম্মানের সাথে স্মরণ করছে এবং করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা সকলে মিলে আগামীর বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করবোই ইনশাআল্লাহ।’রমজানের শিক্ষা নিয়ে তওবায় শুদ্ধ হয়ে সকলে মিলে গঠন করবো নতুন বাংলাদেশ এই প্রত্যাশা করেন।তিনি সর্বস্তরের জনতার প্রতি ঈদুল ফিতরের অনাবিল আনন্দ, সুখ-সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। পীর চরমোনাই দলীয় সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সব মুজাহিদ, মুহিব্বীন-এর প্রতি ঈদের শুভেচ্ছা জানান।সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম নিজ গ্রাম বরিশালের ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদ্রাসা মসজিদে ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন এবং জামাতের পর এলাকার গণ্যমান্য, দলীয় নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি এবং সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই নিজগ্রাম চরমোনাই ঈদের নামাজ আদায় করবেন। মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ঢাকার জুরাইনে ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন এবং ঈদশেষে জনতার সাথে কুশল বিনিময় করবেন।

দেশ ও জনগণের স্বার্থে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি মির্জা ফখরুলের
যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপি সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ১০০ ফিটের বেরাইদ এলাকার দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে, কোনোভাবে কোনো চক্রান্ত সফল হতে দেয়া হবে না। ফ্রান্স, লন্ডন, আমেরিকা থেকে কেউ যদি দেশের মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন, তবে তা রুখে দেয়া হবে। দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ মেনে নেয়া হবে না।’‘বিএনপি এখন রাস্তায় নামে না। কিন্তু দল ও দেশের জনগণের স্বার্থে আঘাত এলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে।’বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি ভারতের পক্ষেও নয়, পাকিস্তানের পক্ষেও নয়। আমেরিকার পক্ষেও নয়, ইংল্যান্ডের পক্ষেও নয়। বিএনপি বাংলাদেশের পক্ষে।’ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘১৭ বছর লড়াই সংগ্রাম হলো, সুখি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার জন্য এই লড়াই। কিন্তু কেউ কেউ এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু তা হতে দেয়া যাবে না। আমরা তিস্তা নদীর পাড়ে গিয়ে প্রতিবাদ করেছি।’মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বিএনপি সব পরিবর্তন এনেছে, সংস্কার বিএনপি করেছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে।এ সময় গত ১৭ বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন দলটির মহাসচিব। ‘এত নির্যাতন, এত মামলা, গুম, খুন, সহ্য করেছে বিএনপি। বিএনপি করে এমন মানুষ নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ৯৯ শতাংশ। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে হাসিনাকে আল্লাহ গুম করে দিলেন, মানুষ শান্তি পেল। ডাইনির হাত থেকে আল্লাহ দেশের মানুষকে রক্ষা করেছেন। নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।’ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভয়াবহ দানবের থেকে দেশ মুক্তি পেয়েছে উল্লেখ করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে দেশের মানুষ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচন দেয়ার জন্য। সমস্ত সংগ্রাম হয়েছে নির্বাচনের জন্য, তাইতো বিএনপি নির্বাচনের কথাই বলে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সরকার ক্ষমতায় বসে থাকবে, জনপ্রতিনিধিত্বে কেউ থাকবে না এমনটা মেনে নেয়া গবে না।’বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, একটি মহল দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য নির্বাচনকে পেছাতে চাইছে।

ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার বিকল্প নেই: আহমদ কাইয়ূম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেছেন, ‘ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার বিকল্প নেই।’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলা উত্তরের মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের দারো বাজার এলাকায় শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঈদ উপলক্ষে দলের আমীরের পক্ষ থেকে ঈদ হাদিয়া লুঙ্গি বিতরণ পূর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আহমদ কাইয়ূম আরো বলেন, ‘বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ বস্তি ও ঝুঁপড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করে। খোলা আকাশের নিচে, বৃষ্টি ভিজে ও রোদে পুড়ে। অপরদিকে এক শ্রেণির মানুষ টাকার তোষকে অতি আরামপ্রিয় জীবন যাপন করে। অতি অপচয় করে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে সেকেন্ড হোম তৈরি করে। প্রচলিত অর্থব্যবস্থায় গরিব আরো গরিব এবং ধনী আরো ধনী হয়। এই বৈষম্য দূর করতে হলে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রবর্তণ করতে হবে। সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবে ইসলামী তথা যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থাই একমাত্র বিকল্প।’ তিনি ইসলামী অর্থব্যবস্থার প্রবর্তণ করে বৈষম্যহীন ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম, যুবনেতা মাওলানা শোয়াইব আহমদ। দারোরা ইউনিয়নের সভাপতি হাফেজ শরিফুল ইসলাম সাদ্দামের সভাপতিত্বে ও ছাত্রনেতা আহসান হাবিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, যুবনেতা জহিরুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মূসা হায়দার।

ফ্যাসিস্ট সরকার আর এক বছর থাকলে আমাকে ঝুলিয়ে দিত: বাবর
শুক্রবার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে ছাত্রদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তবে এখানে কারো একার কৃতিত্ব দেওয়া ঠিক হবে না। লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছে তাদের সুচিকিৎসা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, সাড়ে ১৭ বছর কারাগারে থাকার পর যে আমি এখানে এসেছি তা কল্পনাও করতে পারি নি। দীর্ঘ সময় কারাবাসের পর গত ১৬ জানুয়ারি মুক্তি পান লুৎফুজ্জামান বাবর। এর আগে ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান তিনি।

৩ মে রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে হেফাজত
আগামী ৩ মে রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার (২৮ মার্চ) কেন্দ্রীয় খাস কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এদিন বিকেলে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থসম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী প্রমুখ। সভায় পরামর্শক্রমে ৫ মে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, ২০২১ সালে মোদী বিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের ছাত্রজনতার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যার বিচার এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আমলে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে ৩ মে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে সংগঠনটি। এছাড়া আগামী জুন মাসে সব জেলা ও মহানগর প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় গৃহীত আরেক প্রস্তাবে বলা হয় যে, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করুন।

দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন, সরকারকে আমীর খসরু
অন্তর্বর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এখন শেখ হাসিনার মতো একটি সুর শোনা যাচ্ছে। যারা বলছেন দেশের উন্নয়ন করছি, দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছি। তাদের বলতে চাই, ‘সরি, এটা আপনাদের দায়িত্ব না। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।’ চট্টগ্রাম ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের মানুষের মনোজগতে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, তা রাজনীতিবিদসহ সবাইকে ধারণ করতে হবে। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গঠন করতে হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন বাংলাদেশ, নতুন রাজনীতি, নতুন যে প্রত্যাশা সেটা সবাইকে অনুধাবণ করতে হবে। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। আর দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এ জন্য সুন্দর একটা নির্বাচন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি ও সসমনা দলগুলো যুগপৎ আন্দোলন করেছে। এখন যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, জাতীয় সরকারের মাধ্যমে সেটা বাস্তবায়ন করা হবে। ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

নির্বাচনের পরে সংস্কার হবে না: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান তৈরির কথা বলছি। আমরা মনে করি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচার ছাড়াই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে আগাই তাহলে নির্বাচনের পরে যে সরকার আসবে তারা যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান রাখবে সে নিশ্চয়তা আমাদের নেই। তাই আমরা চাই বিদ্যমান আইনের মধ্যেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার করতে হবে। শুক্রবার বিকেলে সিরাজগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষ্যে আয়োজিত ইফতারপূর্ব সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি তরুণদের উদ্যোগে গঠিত একটি রাজনৈতিক দল, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। আমরা বলেছি রাষ্ট্রের সংস্কার হতে হবে, রাষ্ট্রের মৌলিক পরিবর্তন হতে হবে, কারণ পরিবর্তনের জন্যই এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যদি সংস্কার ও পরিবর্তন না হয়, তাহলে কেন এতো মানুষ জীবন দিলেন, কেন এতো মানুষ রক্ত দিলেন। আমরা দেখছি অনেকে সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনের দিকে যেতে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের মানুষের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম আগামীতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, এস এম সাঈদ মোস্তাফিজ, উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক জুথি, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্য নেহাল, ফজল হোসেন ও মহসিন রেজা প্রমুখ।

অন্তর্বর্তী সরকারের কথায় হাসিনার কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ধোঁয়াশা তৈরি করছে এবং তাদের কথার সঙ্গে হাসিনার কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে।’ শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা, ভ্যান ও অটোচালকদের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তারা। এ সময় রিজভী বলেন, ‘সরকারকে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্টভাবে মাস, তারিখ দিয়ে ঘোষণা দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলেই জুলাই আন্দোলন হয়েছে। এ সরকার ভোটে নির্বাচিত না হলেও তার জনসমর্থন রয়েছে।’ একই অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। একটি মহল তার আদালতের মেয়র ঘোষণার রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইশরাক হোসেন বলেন, ‘ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই আদালতে গিয়েছিলাম, আইনি প্রক্রিয়া শেষে ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসনের দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে।’

দুষ্কৃতকারীদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই লোমহর্ষক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই। এজন্য দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। না হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।’ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক নিন্দা, প্রতিবাদ ও শোক বিবৃতি তিনি এসব কথা বলেন। গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় এই বিবৃতি দেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়, নাসির উদ্দিনকে সশস্ত্র দুস্কৃতিকারীরা বর্বর ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুস্কৃতিকারিরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। একই সঙ্গে নৈরাজ্যের সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুস্কৃতিকারিদের নির্মম ও পৈশাচিক হামলায় নাছির উদ্দিন নিহতের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ। আর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এ ধরণের লোমহর্ষক ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই এসব দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই। এতে আরো বলা হয়, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওঁত পেতে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসররা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে। নাছির উদ্দিনকে হত্যাকারী দুস্কৃতিকারিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানাই। বিবৃতিতে নিহতের রুহের মাগফিরাত কামনাসহ শোকার্ত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

আ. লীগ দেশের মানুষের সঙ্গে বারবার প্রতারণা করেছে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু স্বাধীনতা পাওয়ার পরও দেশের গণতন্ত্র বারবার হরণ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা সব সময় মিথ্যা ও ভাঁওতাবাজি করে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কথা ও কাজের সঙ্গে মিল ছিল না। তিনি জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে নিজে মালিক সেজে বসেছিলেন। ব্যাংক-বীমা ও বড় বড় প্রকল্পের আড়ালে তার পরিবার অর্থ লুট করেছে। যা সব দেশের বাইরে পাচার করেছে শেখ পরিবার।’ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কথার সঙ্গে কাজের যথার্থ মিল থাকা উচিত। ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও সেটি আবার মার্চ বা জুনে চলে যায় কিভাবে? আমরা নির্বাচনের জন্য দ্রুত সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানাই।’ ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আপসকামী বিরোধী রাজনীতিবিদদের জন্য ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ‘প্রথম স্বাধীনতা’ ও ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসনের ভুক্তভোগী ছিলেন, তাদের কাছে এটা অবশ্যই স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট আমরা নতুন করে স্বাধীন হয়েছি। অন্যদিকে, এই সময়টাতে যাদের ব্যাংক–ব্যালেন্স অক্ষুণ্ন ছিল, যারা আপস করে বিরোধী রাজনীতি করেছে- তাদের জন্য হয়তো এটা স্বাধীনতা নয়। কারণ তারা হয়তো সব আমলেই স্বাধীন ছিলেন। তাদের কাছে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ না। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাতের স্বাধীনতা। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ২০২১ সালের মোদীবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে এর আয়োজন করে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম মোদীবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলনে মোদী বিরোধী আন্দোলনের তাৎপর্য অনেক বেশি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় দলগুলো একই কাতারে নেমে এসেছিল। সেই আন্দোলনে পুলিশসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগ সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। কিন্তু সেই হত্যাকাণ্ডে কতজন মারা গেছেন, সেই সংখ্যাটা এখনও নিরূপণ করা যায়নি। এ সময় তিনি নিহতদের তালিকা করে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে হিন্দু ‘নির্যাতনের গল্প’ প্রচার করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে অবস্থান করছেন। ভারত গণহত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়ে কোনো ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করেনি। গণহত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম এগোচ্ছে। ভারত এসব অপরাধীদের ফেরত দেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এর মাধ্যমেই বোঝা যাবে, ভারত এ দেশের সঙ্গে কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোদীবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হোসেন, আন্দোলনে নিহত হাফেজ জোবায়েরের বাবা ফজলুল হক, আসাদুল্লাহ রাজিনের বাবা শফিকুল ইসলাম, হারেস মিয়ার বাবা আলতাফ আলী, কামাল মিয়ার বাবা মো. জালালউদ্দিন, আল আমিনের বাবার সুফি আলী প্রমুখ।

পাকিস্তানপন্থিরা প্রতিশোধ নিচ্ছে: জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের নেতারা বলেছেন, জাতির দুর্ভাগ্য ৫৪ বছরের মাথায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানপন্থিরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের নাম-নিশানা-ইতিহাস-স্মারক চিহ্ন মুছে ফেলছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মীমাংসিত বিষয়গুলো অমীমাংসিত ও অস্বীকার করছে। বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি, শ্রমিক জোট, জাতীয় যুব জোট ও ছাত্রলীগ নেতারা শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাসদ নেতারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠতম অর্জন, সর্বোচ্চ গৌরব, অহংকার ও মর্যাদার বিষয়। স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রমাণ করেছে বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যেমন ঐতিহাসিক ন্যায্যতা ছিল ঠিক, তেমনই স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র ও জাতীয় বিকাশের ঐতিহাসিক সহজাত আত্মশক্তির বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও বাঙালি জাতি নিজের মধ্যে ধারণ করে। জাসদ নেতারা আরও বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থাৎ গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার ভিত্তিতে পরিচালিত করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ আরও বহুগুণ অগ্রগতি-উন্নয়ন-সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারতো। দেশের সাধারণ মানুষের মানবিক জীবনমান আরও বহুগুণ উন্নত হতো। এ রকম পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুনরুদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত করার জন্য সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির প্রতি জাসদ নেতারা আহ্বান জানান। তারা মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারী, পুরুষ, শিশু এবং স্বজনহারাদের সমবেদনা জানাতে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের গণশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জাসদ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, জনসংযোগ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন, সহ-সম্পাদক আলী হাসান তরুন, দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন, ঢাকা জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম দাস, জাতীয় যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বাচ্চু, ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিদুল হক ননী, যুব জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অংকুর, মোতালেব হোসেন প্রমুখ।

দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই: মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকের স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘যারা বলেন, তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসকে খাটো করতে চান, একাত্তরের স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তারা খাটো করতে চান। আমি বলব, তারা যেন এখানেই বিরত থাকেন। এই স্বাধীনতা দিবসকে যেন সম্মান জানান এবং সম্মান করেন।’ আজ বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে সকাল সোয়া আটটার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আমরা সেখানেই বিশ্বাস রাখতে চাই। এখানে আমরা বিশ্বাসের পরিবর্তন করতে চাই না।’ নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, এমন এক প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই প্রতিপক্ষ। নির্বাচন হবে না—এমনটা বিশ্বাস করতে চাই না।’ ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপির পদক্ষেপ কী হবে—এমন প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন হবে না—এমনটা আমরা বিশ্বাস করি না। তেমন কিছু হলে সময় এলে দেখা যাবে।’

জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা কঠিন: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘সংস্কারের অনেকগুলো জায়গা আছে যেগুলো নির্বাচনের আগেই নির্বাহী আদেশে সংস্কার করা সম্ভব। আবার অনেকগুলো সংস্কারের প্রশ্ন যেগুলো কাঠামোগত, এগুলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের করতে হবে। সেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা আসলে কঠিন।’ বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বলছি, সংস্কারের ক্ষেত্রে যেভাবে এরইমধ্যে ঐকমত্য কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে, তাদের এই কাজটি করার ছিল, রাজনৈতিক দলগুলো সর্বসম্মত জায়গায় দাঁড়াবে। সেটি আমাদের জাতীয় সনদ আকারে সামনে আসবে। সেই পরিবর্তনগুলো আসবে। আর যেসব জায়গায় অনৈক্য আছে, দ্বিমত আছে সেই সংস্কারগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো অধিকতর জনমত গঠন করবে। জনগণের সমর্থনের ওপর বিষয়টি নির্ভর করবে।’ তিনি বলেন, ‘এদিকে আমরা যতটুকু সংস্কার করতে পারি তার অনেকগুলো হয়তো নির্বাচনের আগেই নির্বাহী আদেশে সম্ভব। আর যেগুলো পরিবর্তনের অঙ্গীকার থাকবে আগামী নির্বাচন যাতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এই সংবিধান বদলাতে পারে, সংস্কার করতে পারে, সেজন্য আমরা বলেছি, সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন দরকার।’ গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার যেহেতু আমাদের লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে, তাই আগামী সংসদ হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ। যেখানে সংস্কার হবে জনগণের সম্পূর্ণ ম্যান্ডেট নিয়ে। ফলে আদালত এটাকে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না সেটির দিকে তাকাবে না, আদালত এই সংস্কারকৃত সংবিধানকে সুরক্ষা দেবে। সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, ফলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংস্কার কাজটির সম্পন্ন করতে হবে। যে সময় আছে এই সময়ের মধ্যে ঐকমত্য সম্ভব। এই ঐকমত্যের যে অংশগুলো নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা দরকার সেগুলো নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। আমরা মনে করি যথেষ্ট সময় আছে সংস্কারের জন্য।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস এবারের আরও অনেক গভীর তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। বিশেষভাবে চব্বিশের জুলাই-আগস্টের যে গণঅভ্যুত্থান সেটা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্ন তৈরি হয়েছিল, যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, সেটিকে আবার নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।’ জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের যে অঙ্গীকার ছিল রাষ্ট্রের, ৫৪ বছরে সেটি হয়নি। জুলাই-আগস্ট আবার বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে সামনে এনে ৭১ সালকে নতুন করে আবার আমাদের সামনে হাজির করেছে। জুলাই-আগস্টে মানুষ যেভাবে আত্মত্যাগ করেছে, শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আরেকটি সুযোগ বাংলাদেশের কাছে এসেছে যে, আমরা কীভাবে রাষ্ট্র ও সব কাঠামোকে জনগণের পক্ষে জনগণের রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি।’ এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

অনৈক্য কিছু নেই, আছে স্বার্থের সংঘাত: মির্জা আব্বাস
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য কিছু নেই, আছে স্বার্থের সংঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকটা দলের নিজস্ব আদর্শিক জায়গা ও মতাদর্শ আছে। সবাই যার যার মতাদর্শ থেকে কথা বলে। এটাকে আমি অনৈক্য বলবো না। তবে দলগুলোর মধ্যে স্বার্থের সংঘাত আছে।’ বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতা দিবসে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। তিনি এও বলেন, ‘যদি কখনও এমন সময় আসে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। তখন কিন্তু আমরা সবাই এক হয়ে যাব। এখানে কোনো ভুল নাই। এখন দলীয় আদর্শিক স্বার্থে হয়তো আলাদা কথা বলছি। কিন্তু যখন জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন হবে, তখন বাংলাদেশের জনগণ এক হয়ে যাবে।’ মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘আজকে স্মরণ করছি স্বাধীনতার ঘোষক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, অতঃপর দেশে থেকে যুদ্ধ করে তিনি দেশকে স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ মাঝে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম। গত ৫ আগস্টের পর আবার নতুন করে পেয়েছি। আমি স্বাধীনতার ৭১-এর বীর শহীদ যারা নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছিলেন, রক্তের বিনিময়ে যারা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, তাদের স্মরণ করছি। তাদের পরিবারের যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আজকের এই দিনে দেশবাসীকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র কিছু দিন আগে জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে একটা নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকে স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নাই। যারা বলে তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসে খাটো করতে চায়, ৭১-এর স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তারা খাটো করতে চায়।’ মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইব এবং এই স্বাধীনতাকে যেন ধরে রাখতে পারি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে এই স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে পারে এজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করবো।’ এ সময় জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি, বিএনপির নেতা আমানুল্লাহ আমান উপস্থিত ছিলেন।