ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে এক হওয়ার আহ্বান জামায়াত আমিরের

ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে অভিমান ভুলে আবারও এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। জামায়াত আমির লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে মান, অভিমান ও ক্ষোভ একদিকে রেখে, জাতীয় স্বার্থে দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানাই।’ তিনি বলেন, ‘যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি।’ দোয়া চেয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আল্লাহ তা’য়ালা এই জাতিকে সাহায্য করুন এবং সব ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন।’

ডিসেম্বরে নির্বাচন না দিলে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে: সরকারকে বিএনপি

চলতি বছরের মধ্যেই নতুন জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচন ধরে অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এর অন্যথায় সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানাচ্ছে বিএনপি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এটিই প্রধান দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। লিখিত বক্তব্যে ড. মোশাররফ বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অগণতান্ত্রিক বর্বর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা, বৈষম্যহীন ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্নপূরণের জন্য এ দেশের মানুষ অপেক্ষমাণ। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে, বিজয়ী হয়েছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, কিন্তু গত সাড়ে ৯ মাসে জনপ্রত্যাশা বা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু এর মধ্যে পূরণ হয়েছে তা একটি বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অথচ আগামীর বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি এই ঐক্যকে বজায় রেখে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখার কথা ছিল। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনো কোনো মহলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বক্তব্য আমরা বারবার উচ্চারণ করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা যাদের বক্তব্যে এবং কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা তুলেছিলাম। অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। অথচ সরকারের মুখপাত্র হিসাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন- ‘এই সরকারের সবকিছু করার ম্যান্ডেট রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, মানবিক করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে কিনা সেটা সর্বাগ্রে বিবেচনায় নেওয়া দরকার। এছাড়াও এমন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদি নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী সরকারের আছে বলে এ দেশের জনগণ মনে করে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, দেশের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে যাতে দেশে অস্থিতিশীল কোনো পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত কেবল জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার কর্তৃক জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত হওয়াই সমীচীন। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব উপদেষ্টা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বুঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। খন্দকার মোশাররফ বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার গতকালকের (বুধবার) বক্তব্য আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর কয়েকজন উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা ইতোপূর্বে অনেকবার উত্থাপন করেছি। তিনি আরও বলেন, একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই এই সরকারের প্রধান কাজ, তাই মাথাভারী উপদেষ্টা পরিষদ না রেখে শুধুমাত্র রুটিন ওয়ার্ক (দৈনন্দিন কার্যক্রম) পরিচালনার জন্য একটি ছোট আকারের উপদেষ্টা পরিষদ রাখাই বাঞ্ছনীয়। তিনি বলেন, জুলাই-ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিগগিরই জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই, আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ।

‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ঐক্যের বার্তা মাহফুজের

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার আগেকার ‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্য ও শব্দচয়নের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তির ঐক্য ও ধৈর্যের কথা বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘ব্যক্তির আদর্শ, সম্মান ও আবেগের চেয়ে দেশ বড়’ শিরোনামে এক পোস্টে তিনি এ বার্তা দেন। মাহফুজ আলম বলেন, ‘দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগেকার যে কোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল- সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সরকারে আর একদিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরাতন বন্দোবস্তের বিভেদকামী শ্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠকে হত্যাযোগ্য করে তোলে, সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। ’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে। ’

আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছেন ইশরাক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনস্থলে এসে তিনি এ ঘোষণা করেন। এর আগে বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। তারা সারারাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপি নেতাকর্মীরা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। একই সঙ্গে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করছেন তারা। যমুনারে যমুনা আমরা কিন্তু যাব না, এই মাত্র খবর এলো ইশরাক ভাই মেয়র হলো, এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার, দফা এক দাবি এক নির্বাচিত সরকার, যমুনারে যমুনা শপথ ছাড়া যাব না— বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

উচ্চ আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘উচ্চ আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।’ আজ বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতে রায় ঘোষণার পর, থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব ভার্চুয়ালি সাংবাদিকদের এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত আইনের প্রতি সন্মান দেখিয়ে যেটা হওয়া উচিত, সেই ধরণের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।’ তিনি বলেন, এটাতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটা বিজয় হয়েছে। আমরা জানি যে যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জোর-জবরদস্তি করে এর ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলো। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিলো। ইশরাক হোসেনের শপথ দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আশা করব যে, মন্ত্রণালয় আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে, দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন।’ রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট, এই সংকট দূর করবার একটিমাত্র পথ তা হচ্ছে, অতি দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এখানে অন্য কথা বলে লাভ নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারণ সংস্কারের যে বিষয়টা আছে, সেটা চলমান প্রক্রিয়া। এটাও প্রোপজ করবে যারা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে আছে তারা অতিদ্রুত যে গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হয়েছে, সে গুলো তারা ঘোষণা করবেন। যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য করে সনদ তৈরি করবেন। সুতরাং এটা নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করা, কিংবা এটা নিয়ে টানাহেচড়া করা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলবে।’ তিনি বলেন, সেই কারণে জনগণের প্রত্যাশা যে, অতি দ্রুত একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলমান যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো, যেগুলোতে ঐক্যমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন। আর যেসব সংস্কার প্রস্তাবে ঐক্যমত্য হবে না, সেগুলো সনদের ভেতরে নিয়ে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে রাখবেন। নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি মনে করি যে, যেহেতু আদালতে এ বিষয়ে রায় হয়েছে, জনগণের বিজয় হয়েছে। এখন আর এই বিষয়টাতে সেই ভাবে সড়ক অবরোধ করে না রেখে... আশা করার যায় যে, সরকারের সুমতি হবে... তারা ইশরাককে শপথ দেয়ার ব্যবস্থা নেবেন (নেতা-কর্মী-সমর্থকরা) জনগণের স্বস্তির জন্যে রাস্তা থেকে সরে যাবেন।’ গত ১৪ মে চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য বিএনপি মহাসচিব ব্যাংকক যান। পরদিন ব্যাংকক রুটনিন আই হসপিটালে তার বাম চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিতসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।

এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে কলঙ্ক দেওয়ার চেষ্টা চলছে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে সচেতনভাবেই এক ধরনের কলঙ্ক দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ছাত্র উপদেষ্টারা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চায়- এমন গুজব ছড়িয়ে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করার নানান কার্যক্রমও চলমান। এই চক্রান্ত কয়েকটি দিক থেকে পরিচালিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। গতকাল ২১ মে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে সময় দিয়েছেন, আমরা সেটিকে সমর্থন করেছি। এর মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তবে আমরা এর মধ্যে বিচার ও সংস্কারের কথা বলেছি। হাসনাত লেখেন, অন্যদিকে ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ১০ মে বলেন- ‘ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।’ তিনি একাধিকবার নির্বাচন বিষয়ে এই অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ‘তারপরও দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ হওয়া দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়া মোটেই স্বাভাবিক কোনো বিষয় বলে মনে করি না।’ এনসিপির এ নেতা আরও লেখেন, আমাদের সাব-কনশাস মাইন্ডে আর্মিকে রাজনৈতিক সালিশের ক্ষমতা দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অথচ বিএনপি ঐতিহাসিকভাবে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ভুক্তভোগী একটা দল। আমরা এখনো ওয়ান-ইলেভেনের ইতিহাস ভুলে যাইনি, এখনো তারেক রহমানের নির্যাতনের ঘটনা আমাদের স্মরণে রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে সচেতনভাবেই তিনি লেখেন, সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার। দেশের প্রয়োজনে, সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনে, আমরা প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা থেকে ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে আমরা মেনে নেবো না। রাজনৈতিক সালিশের সুযোগ দিয়ে আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথ কেউ প্রশস্ত করছে কি না- তা নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ফেসবুকে হাসনাত লেখেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে আমরা যাদের পাশে পেয়েছি, তাদের প্রতি আমাদের ঐতিহাসিক কৃতজ্ঞতা থাকবে। আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতেও সব পক্ষকে এক থাকতে হবে। এই দাবিতে বড় কোনো দলের নির্লিপ্ততা আমাদের হতাশ করে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা, আওয়ামী লীগের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনে যাওয়ার লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। ক্ষণস্থায়ী ফায়দা লুটতে গিয়ে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত বিপুল সম্ভাবনার জনআকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করা হলে তা হবে একটি ঐতিহাসিক ব্যর্থতা। তিনি আরও লেখেন, আমরা যেন নিজেরাই বিভাজনের পথ বেছে নিয়ে অন্য কাউকে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ না দেই। বাইরের কাউকে রাজনৈতিক মাতব্বরি করার সুযোগ দিয়ে দেশের শুদ্ধ গণতান্ত্রিক সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে না ফেলি। বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে।

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি গণঅধিকার পরিষদের

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে নুরুল হক নুর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান এসব দাবির কথা জানান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স ৯ মাস অতিক্রম করে ১০ মাসে পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার দেশেকে স্থিতিশীল করতে পারেনি। ঢাকা শহরে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সরকারের ওপর মানুষের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ।’ রাশেদ খান বলেন, ‘সরকার তার ১০ মাসে এসেও এখনও কার্যকর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।’ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরাসরি পরামর্শে ও তত্ত্বাবধানে গঠিত নির্বাচন কমিশন নিয়েও প্রশ্ন তুলছে কেউ কেউ। যখন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় সব দলের মতামত নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে নির্বাচনকে অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে নিয়ে যাওয়া। নির্বাচন বানচাল করে আরেকটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করতেই কেউ কেউ এমন দিবাস্বপ্ন দেখছে।’ ‘বরং উপদেষ্টা পরিষদ গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হয়নি। যে কারণে উপদেষ্টা পরিষদের কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে।’ বলেন মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘সরকার থেকে একজন পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। কিন্তু তাদের নেক্সাসের আরও দুই জন উপদেষ্টা হিসেবে রয়ে গেছেন। তারা এখন ওই দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু সরকারে থেকে দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা শপথ ভঙ্গের শামিল। ইতোমধ্যে তারা নানামুখী বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছেন।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘অনতিবিলম্বে এই দুজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছে গণঅধিকার পরিষদ। নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীর নেতা মুহাম্মদ এজাজকে উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে অপসারণ করে গ্রেফতার না করা হলে যমুনা ঘেরাও করা হবে।’ গণঅধিকার পরিষদের পাঁচ দফা দাবি হলো– শেখ হাসিনার রাষ্ট্র দখলের আইন প্রয়োগ করে প্রশাসক নিয়োগ চলবে না। এই অবৈধ আইনে নিয়োগ করা প্রশাসকদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে; আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংলাপ শুরু করতে হবে; আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে; জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপদেষ্টা ও সরকারের সব দফতর থেকে এনসিপির ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করতে হবে এবং করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রেখছেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন। আরও উপস্থিত ছিলেন, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোরশেদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ।

করিডোরের নামে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন নাঃ শামসুজ্জামান দুদু

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। সেই দেশটাকে মানবিক করিডরের নামে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এদিকে না গিয়ে দেশকে রক্ষা, যুদ্ধমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের’ উদ্যোগে ‘রাখাইনে মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশের একটা বন্দর নিয়ে কথা উঠেছে, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক যিনি বর্তমান সরকার প্রধানের সহকারী উপদেষ্টা তিনি বলেছেন, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করার প্রয়োজন নাই। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, এই সরকার শুধুমাত্র জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যাবে। এটা কোনও রেগুলার সরকার নয়, নির্বাচিত সরকার নয়। অনেক উপদেষ্টা বলেছিলেন, তারা নির্বাচিত। আত্মপ্রতারণা করা ঠিক হবে না। দেশের জনগণ আপনাকে (ড. ইউনূস) সম্মানের সঙ্গে বসিয়েছে, সম্মান রক্ষা করে জনগণের সেন্টিমেট অনুধাবন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে দিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের যে ঘৃণ্য কৌশল, তাদের যে বিরোধিতা এবং ফ্যাসিস্টকে আশ্রয় দেওয়া, তাদের সম্বন্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা মনে করি, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও খেটে খাওয়া মানুষ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে রক্ষা করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি মো. শামিম কায়সার লিংকন, কৃষক দলের পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক রাজি প্রমুখ।

সংকট নিরসনে একমাত্র পথ অতিদ্রুত নির্বাচনঃ মির্জা ফখরুল

দেশের চলমান সংকট নিরসনে একমাত্র পথ অতিদ্রুত নির্বাচন বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো কথা বলে কোনো লাভ নেই। বৃহস্পতিবার (২২ মে) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেন শপথ ইস্যুতে আদালতের রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, এটাতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটা বিজয় হয়েছে। যখন মেয়র নির্বাচন হয় তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। ইশরাক হোসেনের শপথ দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আশা করব যে, মন্ত্রণালয়ে আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট, এই সংকট দূর করার একটিমাত্র পথ, তা হচ্ছে অতিদ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এখানে অন্য কথা বলে লাভ নেই। নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি মনে করি, যেহেতু আদালতে এ বিষয়ে রায় হয়েছে, এখন আর এই বিষয়টিতে সড়ক অবরোধ করে না রেখে রাস্তা থেকে সরে যান।

আমাদের কি আসিফ নজরুলের পদত্যাগ চাওয়া উচিত নয়: সারজিসের প্রশ্ন

টাকা আর রাজনৈতিক দলের সুপারিশে অনেক হত্যাকারী আওয়ামী লীগারদের জামিন হয়ে যায় বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ দাবি করেন তিনি। পোস্টে সারজিস আলম লেখেন, টাকা আর রাজনৈতিক দলের সুপারিশে অনেক হত্যাকারী আওয়ামী লীগারের জামিন হয়ে যায়। টাকা আর রাজনৈতিক সুপারিশ নাই বলে আওয়ামী আমলে জুলুমের শিকার অনেক মজলুমের জামিন হয় না। তিনি লেখেন, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডে হেফাজতের ওপরে চাপানো মিথ্যা মামলায় অনেক মজলুম আলেম এখনো আদালতে চক্কর কাটে, কারাগারে বন্দি থাকে। অথচ এমন অনেক দাগি আসামি বিগত কয়েক মাসে জামিন পেয়েছে, যারা বিএনপির সঙ্গে সংযুক্ত হলেও বিএনপির সময়ে তাদের কৃতকর্ম ও অপরাধের জন্য জেলে গিয়েছে। এগুলো কীভাবে হয়? কার সুপারিশে হয়? কোন আইনজীবী এবং বিচারকের প্রত্যক্ষ মদদে হয়? তিনি আরও লেখেন, প্রকাশ্য দিবালোকে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো মানুষ খুন হলো, এতগুলো মানুষের রক্ত ঝরল, তারপরও নয় মাসে একটা বিচারকার্য সম্পন্ন হয় না! একটা খুনের বিচার হয় না! এই দায় আইন উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ নজরুল স্যার কি কোনোভাবে এড়াতে পারে? তাহলে কি আমাদের এখন তার পদত্যাগ চাওয়া উচিত নয়? এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায়, তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কী?

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৪ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারনের কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন হবে। ধারণা করা হচ্ছে ইশরাক হোসেন ইস্যুতে পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি খারিজ করেন। এর ফলে মেয়র পদে ইশরাকের শপথে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আদালত। ইশরাকের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, এই আদেশের ফলে মেয়র পদে ইশরাকের শপথে বাধা নেই। এ সময় আগামী ২৬ মে’র মধ্যে ইশরাককে শপথ না পড়ালে আদালত অবমাননা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে বুধবার (২১ মে) বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের আদেশের দিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার ধার্য করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন।

আসিফ-মাহফুজ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সড়ক ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে হবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ইশরাকের সমর্থকরা। বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। তারা সারারাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এর ফলে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এই খবর পেয়ে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এ সময় স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন, ‘এই মুহূর্তে খবর এলো, ইশরাক মেয়র হলো’, ‘এই মাত্র খবর এলো, জনগণের বিজয় হলো’। তাদের দাবি, এটি তাদের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু তাদের নতুন আরেকটি দাবি আছে। সেটি হলো স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজের পদত্যাগ। তারা দুজন সরকারের উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন যুবদলের মতিঝিল থানা কমিটির সাবেক নেতা আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, তারা ইশরাককে শপথ পড়ানোর পাশাপাশি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান করছেন। যতক্ষণ না ওই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বৃষ্টির মধ্যেই সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে ছাত্রদল

বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর আগে গত ২১ মে বিচার দাবি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। ছাত্রদল জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাংলা একাডেমি সংলগ্ন স্থানে কতিপয় সন্ত্রাসীর ছুরিকাঘাতে শাহরিয়ার আলম সাম্য নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতকসহ সব আসামিকে গ্রেফতার, সুষ্ঠু বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ছাত্রদল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পিয়াল হাসানসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

কাকরাইলে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান

বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব প্রদান দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়ে নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সকাল ১০টার দিকে কাকরাইল মোড় থেকে যমুনার দিকে যাওয়ার পথে সড়কের ডান পাশে পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে শতাধিক নেতা-কর্মীকে বসে ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। আশপাশের এলাকায় ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন আরও কয়েকশ নেতা-কর্মী। সারা রাত অবস্থান করা কিছু নেতা-কর্মীকে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। কেউ কেউ রাস্তায় বিছানো ত্রিপলের ওপর শুয়ে বা বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে হাজারো নেতা-কর্মী ‘যমুনা’র সামনে অবস্থান নেন। এর ফলে হেয়ার রোড, মৎস্য ভবনের মোড়, কাকরাইল ও সার্কিট হাউস সড়কসহ আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরো এলাকা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এ সময় তারা, ‘রাজপথের ইশরাক ভাই, আমরা তোমার ভুলি নাই’; ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’; ‘যমুনারে যমুনা, আমি কিন্তু যাব না’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না, চলবে না’, ‘আদালতে হস্তক্ষেপ, চলবে না, চলবে না’, ‘এ লড়াইয়ে জিতবে কারা, ইশরাক ভাইয়ের সৈনিকেরা’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দেন। কাকরাইল এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা জানান, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব না দেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতেই হবে। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। যারা তাকে দায়িত্ব নিতে বাধা দিচ্ছেন, তাদের বিচার চান তারা। তারা বলেন, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের শপথ না পড়ানো পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তাদের নেতাকে অন্যায়ভাবে মেয়রের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আন্দোলনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ার দেন তারা। গত সপ্তাহের বুধবার প্রথমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয়ে তারা আন্দোলন শুরু করেন। সেই থেকে নগর সেবা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ নগর সংস্থার প্রধান কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয় ও ওয়ার্ড কার্যালয় সবই তালাবদ্ধ। নগরবাসী সেবা পাচ্ছেন না। ভেঙে পড়েছে বর্জ্য অপসারণ, মশক নিয়ন্ত্রণ, সড়কবাতি প্রজ্বালন এবং সড়ক সংস্কারসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

নুরের বিষয়ে গণ অধিকারের বিবৃতি, ডিএনসিসি প্রশাসকের গ্রেপ্তার দাবি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে গণ অধিকার পরিষদ। একই সঙ্গে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ বুধবার সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে নুরুল হক নুর’ শীর্ষক ডিএনসিসির একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি গণ অধিকার পরিষদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীর নেতা ও জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের পর প্রশাসকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। মোহাম্মদ এজাজের হিযবুত তাহরীর ও জঙ্গিবাদের কার্যক্রমে যুক্ত থাকা ও একই অভিযোগে ২০১৫ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টেও উঠে এসেছে। যে কারণে সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই মুহাম্মদ এজাজকে প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। যেখানে গণ অধিকার পরিষদ ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সমর্থন জানায়।তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে যে, নুরুল হক নুরের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায় গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সামনে বিশৃঙ্খলা করেছে। যা একেবারে অসত্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। বরং দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও গণ অধিকার পরিষদের একজন সদস্যকে কমিশন ব্যতীত কাজ না দেওয়ার প্রেক্ষিতে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অবহিত করা হলে, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে অবহিত করতে বলেন। মুহাম্মদ এজাজের পরামর্শেই নুরুল হক নুর তাকে বিষয়টি তাকে জানান।ইতোপূর্বে গাবতলী পশুর হাটসহ কয়েকটি বিষয় গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে যে, কমিশন ও পছন্দের লোক ছাড়া ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ অন্য কাউকে কোনো ধরনের কাজ প্রদান করে না। মূলত নিজের অভিযোগ আড়াল করে অন্যত্র জনদৃষ্টি ফেরাতেই মোহাম্মদ এজাজ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়াচ্ছে। এমনকি গণ অধিকার পরিষদের গতকালকের বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য নিজের মামাসহ বেশ কয়েকজনকে পাঠিয়ে আর্থিক অফারের মাধ্যমে সমঝোতা করতে চেয়েছে। নিজেও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের অসংখ্যবার কল করেছে। কিন্তু গণ অধিকার পরিষদ কর্মসূচি স্থগিত করেনি। গণ অধিকার পরিষদ অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সাথে সম্পৃক্ত এবং দুর্নীতিবাজ এজাজকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে।

বিএনপি এলে স্বৈরতন্ত্র হবে, এসব গালগল্প দিয়ে ১৮ কোটি মানুষকে দমানো যাবে না: মঈন খান

বিএনপিকে নিয়ে অপতথ্য ও কুৎসা রটানোর অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। এ ব্যাপারে শক্ত জবাব দিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘যারা বলে, বিএনপি এলে নাকি আবার স্বৈরতন্ত্র হবে, তাদের উদ্দেশে বলি, এসব গল্পকাহিনি, গালগল্প দিয়ে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে দমানো যাবে না। বিএনপি স্বৈরতন্ত্র করেছে, এই উদাহরণ কেউ দেখাতে পারবে না। যারা বিএনপির নামে মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, প্রোপাগান্ডা প্রচার করে কুৎসা রটাচ্ছে, তার শক্ত জবাব দিতে হবে।’ আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় শহীদ জিয়া’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি নামের একটি সংগঠন। সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলুসহ অনেকে বক্তব্য দেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় গুরুত্বারোপ করে মঈন খান বলেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা না থাকলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আপনারা দেখছেন, ১৬ বছর সংবাদপত্রের কী অবস্থা করেছিল আওয়ামী লীগ।’ এ সময় দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থে আজকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশের কল্যাণে আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।’ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পার্থক্য দেখিয়ে দিয়ে মঈন খান বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন সৈনিক হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগ শব্দ উর্দু, এর অর্থ হলো জনগণের দল। জনগণের দল হয়েও আওয়ামী লীগ কী করেছে? তারা গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রে গিয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির প্রভেদ।’ এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে আরেক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা হারিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ওপর আস্থা, আপনাদের ওপর বিশ্বাস—সবকিছুই মানুষ আজ হারিয়ে ফেলেছে। এসব হারিয়ে যাওয়ার পর কী হবে? কেউ লন্ডন চলে যাবে, কেউ আমেরিকা চলে যাবে। কেউ পরিবেশের নামে বিদেশ চলে যাবে। যারা কান-কথা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, তারা তখন কেউই আপনার পাশে থাকবে না। আপনার সুনাম এবং আপনার অর্জনকে এরা ক্ষুণ্ন করে চলে যাবে।’ জয়নুল আবদীন ফারুক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হাসিনার বিচারের প্রতি আমার আস্থা ছিল, কিন্তু এখন নেই। দেখলাম হামিদ নাটক, নাটক দেখলাম আইভীর, আরেক নাটক দেখলাম ফারিয়ার। হচ্ছেটা কী দেশে? বাংলাদেশের জনগণের মূল দাবিগুলো অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, কী এসব?’

এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়: ইশরাক

বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে মেয়র পদে শপথের দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশ নিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে তিনি এই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি থেকে আমরা বুঝতে পারছি—সরকার বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করেছে, নির্বাচন কমিশনকে চাপে রেখেছে এবং পুরো প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আমি একজন প্রার্থী হিসেবে যদি এমন আচরণের সম্মুখীন হই, তাহলে জাতীয় নির্বাচন হলে কি নিরপেক্ষতা আশা করা যায়? না। এই সরকারের অধীনে কখনোই না। পূর্বেও যা ঘটেছে, এখনো তা-ই ঘটছে—বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ধ্বংস, প্রশাসনের অপব্যবহার।’ ইশরাক বলেন, ‘অদৃশ্য চাপে নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায়। অথচ নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম সংস্থা। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এই চর্চা যদি আমরা এখনই বন্ধ না করি, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র কখনোই সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না। অতীতে যেমন হয়েছে, এখনো ভিন্ন ব্যানারে একই কার্যক্রম চলছে। আইন মন্ত্রণালয় মতামত দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একমাত্র দায়িত্ব—প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আমার শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। তাদের কোনো মতামত দেওয়ার এখতিয়ার নেই; কারণ, নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পেলাম, একটি নতুন রাজনৈতিক দল, যাদের নিয়ে আমি শুরুতে আশাবাদী ছিলাম। আমি মনে করেছিলাম, তরুণ নেতৃত্ব রাজনীতিকে নতুন দিশা দেবে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই দলের কয়েকজন প্রতিনিধি এখনো সরকারের ভেতরে রয়ে গেছে। এর মানে, আমরা যে উদ্দেশ্যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম—একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, সেই দাবি থেকে আমরা আবার পিছিয়ে পড়লাম।’রাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না, ইশরাকের নির্দেশরাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না, ইশরাকের নির্দেশ তিনি বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্রে যারা জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য জনগণের সামনে উন্মোচন করা আমাদের কর্তব্য। আমি মনে করি, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করি না, কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে তাঁকে সরকারের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়া উচিত।’ সবশেষে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এই আন্দোলন কারও ব্যক্তিগত মেয়র হওয়ার জন্য নয়; এটি আপনাদের, আমাদের, সকল নাগরিকের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। আমি এই আন্দোলনে সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করছি এবং অবস্থান কর্মসূচিতে যুক্ত থাকব। আমাদের দাবি যত দিন পূরণ না হবে, তত দিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। এই আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা এখানেই—আমাদের দাবিগুলো মানতে হবে, অন্যথায় আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’ এর আগে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ইশরাক হোসেন নির্দেশ দেন, ‘যতক্ষণ দরকার, রাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না।’ আজ বেলা ১১টা থেকে মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন তাঁর অনুসারীরা। বিকেল ৪টায় বৃষ্টি নামলেও তা উপেক্ষা করে ইশরাকের শপথ ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। এদিকে আজও নগর ভবনের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে টানা সপ্তম দিনের মতো নগর ভবনের কার্যক্রম বন্ধ।

অ্যাটর্নি জেনারেল-পিপি-বিচারপতি বিএনপির হাতে, এটা ওপেন সিক্রেট: হান্নান মাসউদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল, পিপি, হাইকোর্টের বিচারপতি, নিম্ন আদালতের বিচারক বদলি এখন বিএনপির হাতে। বুধবার (২১ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এমন দাবি করেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে আব্দুল হান্নান মাসউদ লেখেন, ‘আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের নিম্ন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ, সব বিচারকের বদলি, হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগ এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ কীভাবে হয়েছে। তখন দেশ একটি কেয়োটিক সিচ্যুয়েশনে (নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি) থাকার কারণে এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনেকের কাছেই অজানা।’ অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি লেখেন, ‘রাষ্ট্রের আইন অঙ্গনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন অ্যাটর্নি জেনারেল। যিনি সরকারপক্ষ হয়ে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করেন। বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৭ আগস্ট, যখন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিতও হয়নি তখন। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিএনপির রানিং কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একজন ব্যক্তিগত উপদেষ্টা। শুধু অ্যাটর্নি জেনারেলই নন, বরং গোটা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে যাদের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডিপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের ৯৫ শতাংশ বিএনপিপন্থি আইনজীবী। সমীকরণটা চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো হলেও সত্য। ফলে সুপ্রিম কোর্টের সব বিষয়াদি সরকারপক্ষ হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে বিএনপি।’ হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে এনসিপির এ নেতা লেখেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে প্রথম দফায় যে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তার পুরোটাই বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা (অধ্যাপক আসিফ নজরুল) মিলে নিয়োগ দিয়েছেন। যেটি আইন অঙ্গনে ওপেন সিক্রেট। ফলে নিয়োগকৃত ২৩ জন পুরোটাই বিএনপির হাতেই হয়েছে এবং এই বিচারপতিদের মধ্যে যারা বিএনপিপন্থি নন তাদের নিয়োগও বিএনপির সম্মতি নিয়েই দেওয়া হয়েছে।’ পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগের বিষয়ে তিনি লেখেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলার নিম্ন আদালত সরকারে আইনজীবী হিসেবে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটরদের সঙ্গে অ্যাডিশনাল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটররা মূলত সরকারের পক্ষ হয়ে আদালতে মামলা পরিচালনা করেন। আইনজীবী পাড়ায় আওয়ামী আইনজীবীদের অবস্থান না থাকায় পুরোটা তখন বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের দখলে ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে এত গুরুত্বপূর্ণ পজিশনগুলোতে সারাদেশে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিএনপি ও আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রযোজনায়। এটা আদালত পাড়ার একটা ওপেন সিক্রেট।’ ‘বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পাবলিক প্রসিকিউটর হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের যত নেতাকর্মী, দোসররা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের জামিন দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে সব ধরনের শেল্টার বর্তমানেও দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো দলীয় সরকার না হলেও নিম্ন আদালতগুলোতে বিএনপির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানেও সেটি পুরোদস্তুর চলছে।’ বিচারক বদলির বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ লেখেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন না হওয়ায় নিম্ন আদালতের বদলি ক্ষমতা এখনো আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনেই রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যত বিচারক যত জায়গায় বদলি হয়েছেন তার পুরোটাই আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করেছে বিএনপি। ফলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহর ও জেলার চিফ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজসহ সব জায়গায় বিএনপি তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছে। যে কারণে সারাদেশের আইন আদালতগুলো পুরোটাই বিএনপির নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে।’ তিনি লেখেন, ‘কার্যত জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্গান যেটি রাষ্ট্রের মূল ভারসাম্য রক্ষা করে এবং রাষ্ট্রের সব নাগরিককে জবাবদিহির মধ্যে রাখে- সেই বিচার বিভাগকে বিএনপি এভাবে একচ্ছত্রভাবে দলীয়করণ করেছে। যা বিচার বিভাগে আওয়ামী লীগেরও নগ্ন হস্তক্ষেপকে হার মানায়।’ এনসিপির এ নেতা প্রশ্ন রাখেন, ‘বর্তমানে বিচার না চেয়ে নির্বাচন চাওয়া বিএনপি নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগের অধীনে জুলাই গণহত্যার বিচার দেখতে পাবো কি না বা সম্ভব কি না সেটিই ছাত্র-জনতার প্রশ্ন।’

মাঠে নেমেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইলেন ইশরাক

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেছেন ইশরাক হোসেন। তার দাবি, চক্রান্ত করে তাদের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২১ মে) রাতে রাজধানীর কাকরাইলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই দাবি তোলেন। ইশরাক বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটাই মানতে হবে। একটি নতুন দল, যাদের নিয়ে আমি আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু দলগঠন করার পর সরকারের মধ্যে এদের অংশ রয়ে গেল। কাজেই নিরপেক্ষ সরকার আমরা পাইনি। সরকারের মধ্যে অনেকেই আছে যারা বিএনপি যাতে নির্বাচনে ভালো করতে না পারে সে চক্রান্ত করছে। সরকারের ভেতর থেকে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে ইশরাক বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। তাহলে কী আশা করা যায় যে এই সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে? তিনি আরও বলেন, আমরা কি আরেকটা স্বৈরাচারী সরকার তৈরি হতে দিতে পারি? আমরা হাসিনাকে যেভাবে বিদায় করেছি সেভাবে সব স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করতে পারবো। মেয়র হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়র বুঝি না, এই সরকার নিরপেক্ষ নয় তা সবার সামনে উন্মোচিত। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমকে পদত্যাগ করতে হবে। তারা পদত্যাগ করে নিজেদের রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করুক, কিন্তু সরকারে থেকে এসব করা যাবে না। তিনি বলেন, পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নাই। যতদিন দাবি মানা হবে না ততদিন আমরা এখান থেকে যাব না। গত ৭ দিন ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথ গ্রহণের দাবিতে রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন তার সমর্থকরা। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ইশরাক নিজেই। তাকে সরাসরি মাঠে পেয়ে সমর্থক আন্দোলনকারীরা আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছেন।

জনপ্রতিনিধিদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে

দেশে স্বাস্থ্য খাতের শোচনীয় অবস্থার জন্য গলদ রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি মনে করেন, এ অবস্থার উন্নতির জন্য জনপ্রতিনিধিদের বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে। বুধবার (২১ মে) বিকেলে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘যুবদের সংস্কার ভাবনা: কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি’ শীর্ষক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। নিজ জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। ডাক্তার নেই, সেবা দেওয়ার নার্স নেই, সরঞ্জাম নেই, ওষুধ নেই। এর কারণ হলো গলদ রাজনীতি। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা মনে করেন, এই দেশে আমাদের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কোনো রকম নির্বাচিত হলেই দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যান। তিনি বলেন, আমি শক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে। যেভাবে দ্বৈত নাগরিক হলে সংসদ সদস্য হওয়া যায় না, ঠিক তেমনই আইন করে সংসদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত যে কয়জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন, তাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। এটা আইন করে বাধ্য করতে হবে। বাঁচলে বাঁচবে, না বাঁচলে ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে। এই চোর, লুটেরা এবং বিবেকহীনদের দেশে তো আর কোনো উপায় নেই। আইন করেই করতে হবে। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের নিজের সন্তানকেও দেশে পড়াতে বাধ্য করতে হবে বলেও মত দেন বিএনপির এ নেতা। রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমি কখনো নিজের চিকিৎসা এবং মা-বাবার চিকিৎসা দেশের বাইরে করাইনি। ব্যক্তি হিসেবে এবং একজন রোগীর কেয়ারগিভার হিসেবে গত ২৫ বছর এ সেক্টরের সঙ্গে আমি জড়িত। সেবা নিয়েছি। তাদের প্রত্যেকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কেউ যদি বলে দেশে ভালো চিকিৎসা হয় না, এটা অত্যন্ত অন্যায় কথা। তারা বাংলাদেশে চিকিৎসা নেন না, নিতে চান না। সে কারণে বাংলাদেশের চিকিৎসা সম্পর্কে ভালো জানেন না। হ্যাঁ, আমাদের কিছু জায়গায় কিছুটা বিচ্যুতি আছে। এখানেও আলোচনায় এসেছে। বেতন কম, সুবিধা নেই। একজন ডাক্তারকে ২০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে ২৪ ঘণ্টা খাটাবেন, এটা বেস্ট সেবা হবে না। চিকিৎসা টিম ওয়ার্ক। এর সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও সরঞ্জাম জড়িত। সব জিনিসের মান ভালো না হলে চিকিৎসাও ভালো হবে না। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেট কমানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০২৫ সালের বাজেটে শিক্ষাখাতে তিন হাজার কোটি এবং স্বাস্থ্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষায় ৯১টি প্রকল্প এবং চিকিৎসায় ৩৫টি প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে। ওইসব প্রকল্পে কেনাকাটা, দুর্নীতি হয়। আপনি এই টাকা ডাক্তারদের বেতন, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষিত করার পেছনে ব্যয় করতে পারতেন না? আপনাকে বাজেট কমাতেই হলো? বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, জিডিপির এক শতাংশও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করি না। আমাদের ডাক্তার অপ্রতুল। নার্সের সংখ্যাও কম। যন্ত্রপাতি বা উপকরণ কম। সেখানে বিশ্বমানের সেবা চান কীভাবে? এ সময় চিকিৎসকদের ওপর হামলার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, হাসপাতালে কেউ মারা গেলে অনেক সময় ডাক্তারকে আক্রমণ করতে যাই। অন্যসব ক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর নির্ভর করি, এখানে ভাঙচুর করি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও অধ্যাপক লিয়াকত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী প্রমুখ।

কালকে রায়, আজ রাত যমুনায় থাকার সিদ্ধান্ত ইশরাকের

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে এ কথা জানান আন্দোলনকারীরা। তারা জানান, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) উচ্চ আদালতের রায় ঘোষণা পর্যন্ত দলটির নেতাকর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন। আদালতের রায় তাদের পক্ষে না গেলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি কাকরাইলে অবস্থান করা নগরবাসীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে নিতে উৎসাহ দেবো। তাদের সঙ্গে সারারাত যমুনার সামনে অবস্থান করবো। ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে আসছেন। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না এলে কঠোর কর্মসূচি ও ঢাকা অচল করে দেওয়ার হুমকি দেন। এর আগে আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে হাইকোর্ট সংলগ্ন মৎস্য ভবন ও যমুনার প্রবেশমুখে (কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন) অবস্থান নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা প্রথমে মৎস্য ভবন মোড়ে জড়ো হয়ে এ পথ হয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দেন। পরে কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকা হয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ছয়টা পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

তিনজনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনায় হান্নান মাসউদকে এনসিপির শোকজ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে দলটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অব্যাহতি পাওয়া নেতা-কর্মীদের মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডি থানার আওতাভুক্ত একটি আবাসিক এলাকায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করে ধানমন্ডি থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উক্ত তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সত্ত্বেও, আপনি সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনের মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে তাদের জামিন করিয়েছেন। মধ্যরাতে হাক্কানীর মালিকের বাসায় মবের হানা, আটক তিন সমন্বয়ককে ছাড়িয়ে নিলেন হান্নান মাসউদমধ্যরাতে হাক্কানীর মালিকের বাসায় মবের হানা, আটক তিন সমন্বয়ককে ছাড়িয়ে নিলেন হান্নান মাসউদনোটিশে আরও বলা হয়, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার ব্যাখ্যা এবং আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত বিবরণ আগামী তিন (০৩) দিনের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের কাছে উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

সমর্থকদের সঙ্গে রাজপথে নামার ঘোষণা দিলেন ইশরাক

রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার বিকেলে ফেসবুকে তাঁর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এ ঘোষণা দেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‌‘আন্দোলনকারী জনতার প্রতি সর্বাত্মক সংহতি জানাতে এবং তাদের সঙ্গে যতদিন প্রয়োজন রাজপথে সহঅবস্থান করার জন্যে অল্প সময়ের মধ্যেই হাজির হব ইনশাআল্লাহ।’ এর আগে দুপুরে ফেসবুক তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে সমর্থকদের রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর আগ পর্যন্ত সমর্থকদের উদ্দেশে রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে দিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নির্দেশ একটাই- যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে ওঠে আসা যাবে না।’ এদিকে দুপুরে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি আজ আবারও গ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ বুধবার এ দিন ধার্য করেন। এর আগে বুধবার সকাল থেকেই ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এ দিন সকাল ১০টার মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসায় নতুন এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এই কর্মসূচির ফলে সকাল থেকে শাহবাগ, কাকরাইল, হাইকোর্টসহ বেশকিছু এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে নগর ভবনের সামনের সড়ক ফাঁকা দেখা গেছে দুপুরের দিকে । সেখানে কোনো লোকজন দেখা যায়নি। তবে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জাতীয়তাবাদী সমর্থিত কর্মচারী সমিতির লোকজন। অন্যান্য দিনের মতো আজও নগর ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিসে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন তারা। একইসঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ময়লা পরিবহন কার্যক্রম, নাগরিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানির ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ

সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বুধবার (২১ মে) এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের সময় দেশকে বিভিন্ন সিন্ডিকেটে বিভক্ত করে লুটপাট চালানো হয়েছে। জাতির অর্থভাণ্ডার লুট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই সিন্ডিকেটের ভূত এখনও জাতির ঘাড়ে আগের মতোই চাপিয়ে রাখা হলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষ করে প্রবাসীরা তাদের জীবনের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে নিজেদের আরাম-আয়েশের দিকে না তাকিয়ে উপার্জিত অর্থের প্রায় সবটুকু দেশে পাঠান। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে। অথচ অর্থলোভী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সেই প্রবাসীদের নিয়ে তামাশা করে আসছে। সম্প্রতি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জাতিকে বিচলিত করেছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা অতীব জরুরি।’