জনপ্রতিনিধিদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে

দেশে স্বাস্থ্য খাতের শোচনীয় অবস্থার জন্য গলদ রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি মনে করেন, এ অবস্থার উন্নতির জন্য জনপ্রতিনিধিদের বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে। বুধবার (২১ মে) বিকেলে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘যুবদের সংস্কার ভাবনা: কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি’ শীর্ষক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। নিজ জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। ডাক্তার নেই, সেবা দেওয়ার নার্স নেই, সরঞ্জাম নেই, ওষুধ নেই। এর কারণ হলো গলদ রাজনীতি। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা মনে করেন, এই দেশে আমাদের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কোনো রকম নির্বাচিত হলেই দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যান। তিনি বলেন, আমি শক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে। যেভাবে দ্বৈত নাগরিক হলে সংসদ সদস্য হওয়া যায় না, ঠিক তেমনই আইন করে সংসদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত যে কয়জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন, তাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। এটা আইন করে বাধ্য করতে হবে। বাঁচলে বাঁচবে, না বাঁচলে ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে। এই চোর, লুটেরা এবং বিবেকহীনদের দেশে তো আর কোনো উপায় নেই। আইন করেই করতে হবে। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের নিজের সন্তানকেও দেশে পড়াতে বাধ্য করতে হবে বলেও মত দেন বিএনপির এ নেতা। রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমি কখনো নিজের চিকিৎসা এবং মা-বাবার চিকিৎসা দেশের বাইরে করাইনি। ব্যক্তি হিসেবে এবং একজন রোগীর কেয়ারগিভার হিসেবে গত ২৫ বছর এ সেক্টরের সঙ্গে আমি জড়িত। সেবা নিয়েছি। তাদের প্রত্যেকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কেউ যদি বলে দেশে ভালো চিকিৎসা হয় না, এটা অত্যন্ত অন্যায় কথা। তারা বাংলাদেশে চিকিৎসা নেন না, নিতে চান না। সে কারণে বাংলাদেশের চিকিৎসা সম্পর্কে ভালো জানেন না। হ্যাঁ, আমাদের কিছু জায়গায় কিছুটা বিচ্যুতি আছে। এখানেও আলোচনায় এসেছে। বেতন কম, সুবিধা নেই। একজন ডাক্তারকে ২০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে ২৪ ঘণ্টা খাটাবেন, এটা বেস্ট সেবা হবে না। চিকিৎসা টিম ওয়ার্ক। এর সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও সরঞ্জাম জড়িত। সব জিনিসের মান ভালো না হলে চিকিৎসাও ভালো হবে না। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেট কমানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০২৫ সালের বাজেটে শিক্ষাখাতে তিন হাজার কোটি এবং স্বাস্থ্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষায় ৯১টি প্রকল্প এবং চিকিৎসায় ৩৫টি প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে। ওইসব প্রকল্পে কেনাকাটা, দুর্নীতি হয়। আপনি এই টাকা ডাক্তারদের বেতন, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষিত করার পেছনে ব্যয় করতে পারতেন না? আপনাকে বাজেট কমাতেই হলো? বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, জিডিপির এক শতাংশও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করি না। আমাদের ডাক্তার অপ্রতুল। নার্সের সংখ্যাও কম। যন্ত্রপাতি বা উপকরণ কম। সেখানে বিশ্বমানের সেবা চান কীভাবে? এ সময় চিকিৎসকদের ওপর হামলার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, হাসপাতালে কেউ মারা গেলে অনেক সময় ডাক্তারকে আক্রমণ করতে যাই। অন্যসব ক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর নির্ভর করি, এখানে ভাঙচুর করি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও অধ্যাপক লিয়াকত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী প্রমুখ।

কালকে রায়, আজ রাত যমুনায় থাকার সিদ্ধান্ত ইশরাকের

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে এ কথা জানান আন্দোলনকারীরা। তারা জানান, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) উচ্চ আদালতের রায় ঘোষণা পর্যন্ত দলটির নেতাকর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন। আদালতের রায় তাদের পক্ষে না গেলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি কাকরাইলে অবস্থান করা নগরবাসীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে নিতে উৎসাহ দেবো। তাদের সঙ্গে সারারাত যমুনার সামনে অবস্থান করবো। ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে আসছেন। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না এলে কঠোর কর্মসূচি ও ঢাকা অচল করে দেওয়ার হুমকি দেন। এর আগে আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে হাইকোর্ট সংলগ্ন মৎস্য ভবন ও যমুনার প্রবেশমুখে (কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন) অবস্থান নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা প্রথমে মৎস্য ভবন মোড়ে জড়ো হয়ে এ পথ হয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দেন। পরে কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকা হয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ছয়টা পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

তিনজনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনায় হান্নান মাসউদকে এনসিপির শোকজ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে দলটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অব্যাহতি পাওয়া নেতা-কর্মীদের মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডি থানার আওতাভুক্ত একটি আবাসিক এলাকায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করে ধানমন্ডি থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উক্ত তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সত্ত্বেও, আপনি সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনের মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে তাদের জামিন করিয়েছেন। মধ্যরাতে হাক্কানীর মালিকের বাসায় মবের হানা, আটক তিন সমন্বয়ককে ছাড়িয়ে নিলেন হান্নান মাসউদমধ্যরাতে হাক্কানীর মালিকের বাসায় মবের হানা, আটক তিন সমন্বয়ককে ছাড়িয়ে নিলেন হান্নান মাসউদনোটিশে আরও বলা হয়, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার ব্যাখ্যা এবং আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত বিবরণ আগামী তিন (০৩) দিনের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের কাছে উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

সমর্থকদের সঙ্গে রাজপথে নামার ঘোষণা দিলেন ইশরাক

রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার বিকেলে ফেসবুকে তাঁর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এ ঘোষণা দেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‌‘আন্দোলনকারী জনতার প্রতি সর্বাত্মক সংহতি জানাতে এবং তাদের সঙ্গে যতদিন প্রয়োজন রাজপথে সহঅবস্থান করার জন্যে অল্প সময়ের মধ্যেই হাজির হব ইনশাআল্লাহ।’ এর আগে দুপুরে ফেসবুক তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে সমর্থকদের রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর আগ পর্যন্ত সমর্থকদের উদ্দেশে রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে দিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নির্দেশ একটাই- যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে ওঠে আসা যাবে না।’ এদিকে দুপুরে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি আজ আবারও গ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ বুধবার এ দিন ধার্য করেন। এর আগে বুধবার সকাল থেকেই ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এ দিন সকাল ১০টার মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসায় নতুন এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এই কর্মসূচির ফলে সকাল থেকে শাহবাগ, কাকরাইল, হাইকোর্টসহ বেশকিছু এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে নগর ভবনের সামনের সড়ক ফাঁকা দেখা গেছে দুপুরের দিকে । সেখানে কোনো লোকজন দেখা যায়নি। তবে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জাতীয়তাবাদী সমর্থিত কর্মচারী সমিতির লোকজন। অন্যান্য দিনের মতো আজও নগর ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিসে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন তারা। একইসঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ময়লা পরিবহন কার্যক্রম, নাগরিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানির ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ

সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বুধবার (২১ মে) এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের সময় দেশকে বিভিন্ন সিন্ডিকেটে বিভক্ত করে লুটপাট চালানো হয়েছে। জাতির অর্থভাণ্ডার লুট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই সিন্ডিকেটের ভূত এখনও জাতির ঘাড়ে আগের মতোই চাপিয়ে রাখা হলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষ করে প্রবাসীরা তাদের জীবনের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে নিজেদের আরাম-আয়েশের দিকে না তাকিয়ে উপার্জিত অর্থের প্রায় সবটুকু দেশে পাঠান। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে। অথচ অর্থলোভী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সেই প্রবাসীদের নিয়ে তামাশা করে আসছে। সম্প্রতি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জাতিকে বিচলিত করেছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা অতীব জরুরি।’

বিএনপিপন্থি ৩ উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, উপদেষ্টা প্যানেলে থাকা বিএনপিপন্থি তিন উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। বুধবার (২১ মে) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সামনে এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই বক্তব্য দেন। সমাবেশ থেকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, তড়িঘড়ি করে গঠিত এই নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিতর্কিত এবং এটি বিএনপির দালালি করছে। তাই কমিশনের সকল সদস্যের পদত্যাগ দাবি করা হয়। দাবি পূরণ না হলে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নেতারা। নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ তিনজনই বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। এদের দ্বারা বাংলাদেশের আইন ও অর্থনীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের পদত্যাগ করাতে আমরা বাধ্য হবো। তিনি আরও বলেন, জনগণ যেভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, আমরাও তাদের ছুঁড়ে ফেলবো। ইসি পুনর্গঠন ছাড়া এনসিপি দেশের কোনো ভোটে অংশ নেবে না। বর্তমান ইসি বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের মতো কাজ করছে। সালেহউদ্দিন আহমেদের প্রতি তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনি ভারতের দালাল হয়ে গেছেন। ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশকে ধ্বংস করছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনার টালবাহানা দেশের সঙ্গে বেইমানি। এই ঘোষণাপত্র না দিলে আপনি দেশে থাকতে পারবেন না। সমাবেশে আরও দাবি করা হয়, বিএনপি এখন ‘লাশের রাজনীতি’ শুরু করেছে এবং আওয়ামী লীগের টাকায় বিএনপি বড় বড় কথা বলছে, এমনকি নগর ভবন পর্যন্ত বন্ধ করছে।

নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে এনসিপি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবিতে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (২১ মে) দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশটি শুরু হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিপির কলাবাগান থানার প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ। এদিকে, এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন ভবনের আশপাশে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিরাপত্তা রক্ষায় কড়া অবস্থান নেয় পুলিশ। ভবনের সামনের রাস্তায় দেওয়া হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড। সেখানে পুলিশের পাশাপাশি কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র‌্যাব ও সেনাসদস্যদের রয়েছে সতর্ক উপস্থিতি। এর আগে মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, অনতিবিলম্বে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।

টানা অষ্টম দিন নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভ

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে অষ্টম দিনের মতো নগর ভবনে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাক সমর্থকরা। বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা থেকে ডিএসসিসি ভবনে এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ইশরাক সমর্থকরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, চলবে না, চলবে না’, ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও, লড়াই করো’, ‘জনতার মেয়র কে, ইশরাক ইশরাক’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন। ইশরাক সমর্থকরা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে হবে। বিলম্ব করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।তারা আরও বলেন, আদালত ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এখন তালবাহানা করছে। এটি বন্ধ করতে হবে, ইশরাক হোসেনের সঙ্গে মেয়র পদ নিয়ে কোনো অন্যায্যতা মেনে নেয়া হবে না। উল্লেখ্য, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসি’র মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে গত ১৪ মে থেকে আন্দোলন করছেন তার সমর্থকরা।

এনসিপির বিক্ষোভের ডাক, ইসিতে নিরাপত্তা জোরদার

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি আজ বুধবার (২১ মে) বেলা ১২টা থেকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ বিক্ষোভকে ঘিরে ভবনের সামনে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ইসি ভবনের সামনে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। বিজিবির দুই-একটি গাড়ি মাঝে মাঝে টহল দিচ্ছে। যৌথ বাহিনীও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে। দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, বিক্ষোভকে ঘিরে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। এর আগে মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ইসি ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন। বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের সামনে কাল ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে পরে এই সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে ১২টায় নির্ধারণ করা হয়। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নিয়ে আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সমাধানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। পক্ষপাতমূলক গ্যাজেট প্রকাশ হয়েছে। ওই আমলের সব নির্বাচনই আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ নাহিদ বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া হোক। দেশের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিতে হলে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় আপনারা (ইসি) যে ছলচাতুরী করছেন তা বন্ধ করুন।

আসিফ-মাহফুজকে পদত্যাগের আহ্বান জানালেন ইশরাক

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। বুধবার (২১ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি। পোস্টে ইশরাক হোসেন লেখেন, গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন। এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে। তিনি লেখেন, আপনাদেরই নাহিদ ইসলাম যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছে সেটাই অনুসরণ করুন। উনি চাইলে হয়তো আরও কিছুদিন মন্ত্রীত্ব করে তারপর এনসিপিতে যেতে পারতেন। একটা সময় ছিল সার্জিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহরা জোরালভাবে দাবি করলে ওনারাও হয়তো মন্ত্রিত্ব নিতে পারতেন। কিন্তু তারা রাজনীতি করবেন বলে সেই কর্মপন্থা বেছে নিয়েছেন। হয়তো একদিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে পূর্ণাঙ্গভাবে মন্ত্রীর দায়িত্ব, ক্ষমতা ও সম্মান আবার পাবেন। বিএনপির এই নেতা লেখেন, আপনারা পদত্যাগ করলে বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতার ইমেজই বৃদ্ধি পাবে। এখনো মনে করি সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দলীয় ও সাংগঠনিক কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে দেশ ও জনগণকে আপনারা আরও ভালো কিছু দিতে পারবেন। আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নাই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই। তিনি লেখেন, এখন নিশ্চয়ই বলবেন বা ভাববেন ক্ষমতার লোভে অবৈধ মেয়র হওয়ার জন্য দিনের পর দিন আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়ে জনভোগান্তি তৈরি করে নিজেকে সাধু বানিয়ে আমাদের নীতিবাক্য শোনাচ্ছেন তাই না? আমি নিজেও কি কম সমালোচনার শিকার হয়েছি এটি করতে গিয়ে? কিন্তু আমার আর কোনো উপায় ছিল না। আপনাদেরকে যে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিল। এবং আজ অবধি আমাকে বাধা দেওয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে এটা মিনিমাম রাজনৈতিক বোধ সম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলব, এটা ছিল ওনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া। আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কী করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে। তিনি আরও লেখেন, বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে। আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই। আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?

খাগড়াছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম লাকীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর মঙ্গলবার (২০ মে) রাতেই তাকে দীঘিনালা থানায় নিয়ে আসা হয়। দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মাহমুদা বেগম লাকীর বিরুদ্ধে দীঘিনালা থানায় একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওসি আরও বলেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ আওয়ামী লীগের একটি ঝটিকা মিছিল থেকে মাহমুদা বেগমকে আটক করে। বর্তমানে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ আজ

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার (২১ মে) সকাল ১১টায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপি কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সদস্য সচিব আক্তার হোসেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনেন এনসিপির এই নেতা। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নিয়ে আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সমাধানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। পক্ষপাতমূলক গ্যাজেট প্রকাশ হয়েছে। ওই আমলের সব নির্বাচনই আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ নাহিদ বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া হোক। দেশের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিতে হলে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় আপনারা (ইসি) যে ছলচাতুরী করছেন তা বন্ধ করুন।’ এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ইশরাক সমর্থকদের আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, ‘দলীয় স্বার্থে সাধারণ মানুষ এখন নগর ভবন থেকে কোনো সেবা পাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতাহীনতার কারণেই নগর ভবনের সামনে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ভোটে কারচুপির অভিযোগ করে ইশরাক আদালতে মামলা করেন। গত ২৭ মার্চ নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন আদালত। এরপর গত ২২ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৭ এপ্রিল প্রকাশ করা হয় গেজেট। গেজেট প্রকাশের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, মতামত দেওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। আর ইসি বলছে, আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতেই বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই নানা কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকরা।

বাসায় এসে শপথ পড়ালেও লাভ নেই: ইশরাক

বিএনপির চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন বলেছেন, "আমার বাসস্থানে এসে শপথ পড়ানোর প্রস্তাব দিলেও লাভ নাই।" বুধবার (২০ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। একই পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন: ১. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে থাকা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ২. আদালতের যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেটি আইনানুগভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে — তা যেকোনো পক্ষেই যাক। এর আগে, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরতরা বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা। মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেলে ষষ্ঠ দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন ঢাকাবাসীর পক্ষে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি বলেন, "আমরা কাল সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এর মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে ঢাকায় কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।" এই অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করে ঢাকার সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের কর্মচারী ইউনিয়নগুলো নাগরিক সেবা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয়। কর্মসূচির মঞ্চে উপস্থিত হয়ে স্ক্যাভেঞ্জার অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহণ চালক ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজ কল্যাণ সমিতি এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী সমাজ কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, "বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে পরিচ্ছন্নতা, ময়লা পরিবহণ, বিদ্যুৎসহ সব নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।" এদিকে, ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে। হাইকোর্ট আগামীকাল বুধবার (২১ মে) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশ দেবেন।

জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় সরকার ভোটের কথা বলিনি : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে, এ কথা তো আমরা বলিনি। মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কিন্তু বলি নাই যে, জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনে গণপরিষদ নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক। তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে সবাইকে আশ্বস্ত করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিক। আমাদের সে বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে পরিকল্পিতভাবে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা হয়েছে জাতীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের বিরোধিতা কেউ কখনো করেনি। প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে সময় দিয়েছেন, আমরা কিন্তু সেটাকে সমর্থন করেছি। এর মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তবে এর মধ্যে আমরা বিচার এবং সংস্কারের কথা বলেছি। গণপরিষদ নির্বাচন একই সঙ্গে করতে হবে, সেই কথাটা আমরা বলেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিটা কিন্তু আজকে আমরা হঠাৎ দিচ্ছি না। এটা এর আগেও দেওয়া হয়েছে। নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি এই পরিস্থিতির সমাধান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য বক্তব্য রাখা এবং কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মাঝে হাজির হওয়া। আমরা কেবল দায়িত্ব পালন করছি।

ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধে থানায় যাই: সমালোচনার মুখে হান্নানের পোস্ট

রাজধানীর ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টি করে এক প্রকাশককে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসার সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তিন সমন্বয়ককে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন আব্দুল হান্নান মাসউদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি লেখেন, মোহাম্মদপুর থানা বৈবিছাআ-র আহ্বায়কসহ তিনজনকে আটক করা হয় মব সৃষ্টির চেষ্টাকালে, যার ফলে বৈবিছাআ-র পরিচয়ে স্টুডেন্টরা ধানমন্ডি থানায় গিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছিল। তিনি লিখেন, এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধে আমি সেখানে যাই। সেখানে গেলে প্রশাসনের অনুরোধে বিষয়টির মধ্যস্থতা করি। যেহেতু প্রশাসন ওদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ রুজু করেননি এবং করতেও চাচ্ছিল না। তিনি আরও লিখেন, তাছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী একটা মঞ্চের ব্যানারে নিয়মিত মব সৃষ্টি করা ব্যক্তিদের মধ্যেও একজন সেখানে ছিল, যেটা পরবর্তীতে আমি জানতে পারি। এ বিষয়ে প্রশাসনকে পরিপূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই মব সৃষ্টির মূলহোতারা দ্রুত এরেস্ট হবে, ইনশাআল্লাহ্। ডিএমপিকে ওদের ব্যাপারে ইনফর্ম করা হয়েছে।

ঢাকা উত্তরের প্রশাসককে সরানোর দাবি, যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। দাবি বাস্তবায়িত না হলে আগামী শনিবার (২৪ মে) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান। ডিএনসিসি প্রশাসককে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। সংগঠনটির নেতারা বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদের যেমন জায়গা হয়নি, তেমনি জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষ ও কোনো রাজনৈতিক দলের কথা না শুনে শুধু একটি দলের কথা শুনে দেশ পরিচালনা করছে। তারা দেশকে এনজিও প্রজাতন্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে। সরকার নির্বাচন বাদ দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দিচ্ছে বলেও সমাবেশে অভিযোগ তোলা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে ফারুক হাসান বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত ডিএনসিসি প্রশাসক এজাজ নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় নেতা ছিলেন। শুধু নেতা বললে ভুল হবে, প্রথম সারির নেতা ছিলেন। হিযবুত তাহরীর করার কারণে একাধিকবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশ করে কারাগার থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ করেছেন। ফারুক হাসান বলেন, আওয়ামী লীগের ধান্দাবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি প্রতিটি অপকর্মের সঙ্গে এজাজ সম্পৃক্ত ছিলেন। এরপর আন্দোলন-সংগ্রাম শুরুর পর খোলস পাল্টে এ সরকারের নব্যবিপ্লবী বনে যান। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে তলে তলে গোপন চুক্তি করে এই এজাজ আজকে সিটি করপোরেশনের ‘জমিদার’। ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, বৃহস্পতিবার (২২ মে) পর্যন্ত এ সরকার তথা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আলটিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে এজাজকে অপসারণ করে গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী শনিবার আমাদের কর্মসূচি হবে যমুনার সামনে। সংগঠনটির উচ্চ পরিষদ সদস্য আবু হানিফ বলেন, প্রশাসক এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তার করতে হবে। তাকে যারা নিয়োগ দিয়েছে তারা কত টাকার বিনিময়ে, কোথায় কীভাবে লেনদেন হয়েছে এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের রক্তে অর্জিত জুলাই বিপ্লবকে বিক্রি করে দিচ্ছে কতিপয় স্বার্থান্বেষী সমন্বয়ক নামধারীরা। গাবতলীর পশুর হাটের সর্বোচ্চ ২২ কোটি টাকা দরদাতাকে ইজারা দেয়নি প্রশাসক এজাজ। ঢাকায় এনসিপি নামের নতুন রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মী তৈরির জন্য এজাজ সাহেব নিজেই এই খাস কালেকশনের দায়িত্ব নিয়েছেন। যেন এনসিপির দিকে মানুষ ধাবিত হয় সেই কাজ করছেন তিনি। কারণ ঢাকা থেকে এনসিপির অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচন করবে।’ সমাবেশের আগে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের সামনে প্রশাসক এজাজের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। সমাবেশ শেষে নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল হয়। গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচির পাশাপাশি তেজগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদেরও পৃথকভাবে নগর ভবনের সামনে ডিএনসিসি প্রশাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত করার অভিযোগকে ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ডিএনসিসি। গত রোববার (১৮ মে) এক বিবৃতিতে ডিএনসিসির মুখপাত্র ও তথ্য কর্মকর্তা ফারজানা ববি ডিএনসিসির ফেসবুক পেজের এক পোস্টে বিষয়টি উল্লেখ করেন। পরে ডিএনসিসির সেই পোস্টটি আবার প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ তার ভেরিফায়েড পেজেও শেয়ার করেন। ডিএনসিসির সেই পোস্টে উল্লেখ করা হয়, এই অভিযোগগুলো মূলত তাদের কাছ থেকে এসেছে, যারা পূর্ববর্তী সময়গুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, পরিবেশের ক্ষতি ও স্বৈরাচারী আচরণের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং যাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে মোহাম্মদ এজাজ ধারাবাহিকভাবে সোচ্চার থেকেছেন। সেখানে আরও বলা হয়, মোহাম্মদ এজাজ একজন দীর্ঘদিনের পরিবেশকর্মী, লেখক ও চিন্তাবিদ। তিনি প্রায় ১৬ বছর ধরে নদী রক্ষা, জলাধার সংরক্ষণ এবং পানির ন্যায্য বণ্টন নিয়ে কাজ করে আসছেন। তিনি জল-সংকট, আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ও পানির ওপর নির্ভরশীল মানুষের অধিকার নিয়ে অবস্থান করে কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত করেছেন। ফলে পরিকল্পিতভাবে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে একটি চক্র।

‘১৭ বছর খাইনি, এখন খাব’, দুই বিএনপি নেতার ফোনালাপ ফাঁস

ঠিকাদারি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালেন রাজশাহী ও নওগাঁর দুই বিএনপি নেতা। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে হওয়া এক টেলিফোন কথোপকথন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজশাহী বিএনপির নেতা মাহবুবুর রহমান (রুবেল) প্রায় ১০ মিনিটের ওই ফোনালাপে নওগাঁর আরেক বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার শাহজাহান আলীকে হুমকি এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। এ ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে শোনা যায়, রাজপাড়া থানা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘১৭ বছর খাইনি, এখন খাব।’ তিনি অভিযোগ করেন, শাহজাহান কোনো যোগাযোগ না করে নিজের মতো দরপত্রে অংশ নিয়ে কাজ পেয়ে গেছেন। উত্তরে শাহজাহান বলেন, ‘আমিও তো ১৬ বছর পর একটা কাজ পেয়েছি।’ জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত রাজশাহীর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বৃক্ষপালনবিদের কার্যালয়ের একটি দরপত্রকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহী অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে থাকা সরকারি গাছ বিক্রির জন্য ৯টি লট তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করে। এতে নওগাঁর শাহজাহান আলী অংশ নেন এবং প্রায় ছয় লাখ টাকায় দুটি লটের কাজ পান। মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা হিসেবে তার ও তার অনুসারীদেরও দাবি ছিল দরপত্র প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার। শাহজাহান তা উপেক্ষা করায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান ফোনালাপের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের অনেক কর্মী আছে। একটা কাজ হলে তারা প্রত্যাশা করে কিছু পাবে। শাহজাহান দেখা করেনি, তাই ফোনে বলেছি। তবে অশোভন ভাষা ব্যবহার ঠিক হয়নি। রাগের মাথায় হয়ে গেছে।’ জানতে চাইলে ঠিকাদার শাহজাহান আলী বলেন, ‘ওদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। সড়ক অফিসও ওই এলাকায়। ওদের অনেক কথাই থাকে। আমাকে ফোন করে বলেছে। আমার তো কিছু করার নেই।’ বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, এই ঘটনায় বিএনপির একাধিক নেতা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, ‘একটা দরপত্র নিয়ে এমন আচরণ কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।’ স্থানীয় এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এই ঘটনাটি রাজনীতিতে চাঁদাবাজি ও প্রভাব খাটানোর সংস্কৃতির একটি নগ্ন উদাহরণ। যেখানে গণতন্ত্রের চর্চা হবার কথা, সেখানে ‘খাই খাই’ মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ঢাকায় বৃষ্টি নাকি শামসুজ্জামান দুদুর দেওয়া কর্মসূচি? দ্বিধায় সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তবে তার বক্তব্যের একটি অংশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। দুদুর দেওয়া ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এনসিপির আরেক নেতা সারজিস আলম। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পর পর দুটি স্ট্যাটাস দেন বিষয়টি নিয়ে। আজ দুপুর থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এগুলো বৃষ্টি নাকি দুদুর দেওয়া কর্মসূচি? দ্বিধায় পড়েছেন সারজিস আলম। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিএনপি চলে–এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর এ কথার জবাবে আজ একটি আলোচনাসভায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করে দেন তাহলে এই প্রস্রাবের তোড়ে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বা। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। বিএনপির সম্পর্কে যে অভিযোগ করছ, সেই অভিযোগের জবাবে বিএনপি যদি শুধু থুথু ফেলে সেই থুথুর মধ্যে তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’তার এই বক্তব্যের পতিক্রিয়া সারজিস আলম সর্বশেষ পোস্টে বলেন, ‘ঢাকায় মুষলধারে যেটা হচ্ছে সেটা বৃষ্টি নাকি দুদু ভাইয়ের দেওয়া কর্মসূচি? Confused !’ এর আগে আরেক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘এত কিছু না করে বিগত ১৬ বছরে দুদু ভাই একটা গণপ্রস্রাব কর্মসূচির ডাক দিলেই পারতেন!'

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র আঁচ করছেন ফখরুল

সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থেকে এসব ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২০ মে) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। আগামী ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে যৌথসভা শেষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ‘বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে’—এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রে উত্তরণের যখন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখনো একটা কালো ছায়া এসে দাঁড়াচ্ছে। সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন, জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিভাজনের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে। গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের মধ্যে কিছু অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল করতে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরস্পরের মুখোমুখি করার একটা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সজাগ থাকতে হবে, সেই সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে সমস্ত চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য। সীমান্তের ওপার থেকে যে ষড়যন্ত্র চলছে—সে ব্যাপারেও সজাগ থাকতে হবে। কেউ যেন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিলীন করতে না পারে। সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগামী জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আট দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এসব কর্মসূচি পালিত হবে। এর মধ্যে, আগামী ২৭ ও ২৮ মে ঢাকায় হবে তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশ। ২৯ মে বেলা ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই দুই দিন মৃত্যুবার্ষিকীর অন্য কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আর ৩০ মে সকালে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নেতা-কর্মীরা।

বিএনপির ৮ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা: চলবে বিভাগীয় পর্যায়ে আন্দোলন

দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আট দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দল ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আট দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যৌথ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে রিজভী বলেন, যেহেতু ৭ জুন কোরবানি ঈদ। সেজন্য আমাদের কর্মসূচি কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। কর্মসূচি হবে আট দিনব্যাপী। অর্থাৎ ২৫ তারিখ থেকে ২ জুন পর্যন্ত। ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আলোচনা সভা, দুঃস্থদের মধ্যে চাল-ডাল ও বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। তিনি বলেন, শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুইদিন নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনমিত রেখে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ করবে এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা নেবে দলটি। কর্মসূচির মধ্যে আছে- ২৯ মে বিকেল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ এবং মসজিদে মসজিদে গণদোয়া প্রভৃতি। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে দুঃস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও সারা দেশে জেলা ও উপজেলা-থানা-পৌর ইউনিটগুলোও জিয়াউর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা, দুঃস্থদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। এরপর সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান। ওই বছরের ৭ নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লবের’ পর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এএসএম সায়েমের নেতৃত্বে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন প্রেসিডেন্ট জিয়া। বিএনপি দিনটি তার ‘শাহাদাৎ দিবস’ হিসেবে পালন করে। যৌথ সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

লুটপাট চূড়ান্ত করার জন্য ইশরাককে মেয়র পদে বসতে দেওয়া হচ্ছে না : দুদু

লুটপাট চূড়ান্ত করার জন্য সরকার ইঞ্জিনিয়ার ইশরাককে মেয়র পদে বসতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ভারত ও আওয়ামী লীগের মতো এখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও মেয়র হতে দেওয়া হয়নি ইশরাককে। কোর্ট রায় দেওয়ার পরও তাকে শপথ করানো হচ্ছে না। মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি গণতন্ত্র সুশাসন প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এখন সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক কাজ করছে সরকার। লুটপাট চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাককে মেয়র পদে বসতে দিচ্ছে না। কোর্টের আদেশ যদি কেউ না মানে তাকে নব্য ফ্যাসিস্ট বলা যায়। সরকার সেই লাইনে যাচ্ছে কি না চিন্তার বিষয়। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিএনপি চলে– এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর এ কথার জবাবে তিনি বলেন, আমি তাকে আবাল বলব। কথা বলার আগে একটু চিন্তাভাবনা করে বলতে হয়। আবালের মতো কথা বললে তোমাদের সম্বন্ধে মানুষের ধারণা কোথায় যাচ্ছে একটু চিন্তা করো। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। হিসাব করে চলা ও বলা এবং গণতন্ত্রের রীতিনীতি না মানলে ফ্যাসিস্ট হিসেবে চিহ্নিত হবা। এরকম প্রতিহিংসামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশ যেদিকে যাচ্ছে সন্দেহ-অবিশ্বাস বাড়ছে। এ সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন, আশা ও বিশ্বাস ছিল, সেই সমর্থন আশা ও বিশ্বাস আস্তে আস্তে টুটে যাচ্ছে। সরকারকে এ জিনিসটা বুঝতে হবে। আমরা ড. ইউনূসের মধ্য দিয়ে একটা ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশা করি। যদি ড. ইউনূস ফেল করেন তাহলে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করব এ দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য। সুপ্রিম কোর্টেরও দায়িত্ব আছে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, অতি সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি অনুধাবন করে দ্রুত একটি ভালো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে তিনি যাবেন এ প্রত্যাশা করি। ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভারত সভ্য দেশ হলে আরেকটি সভ্য দেশের ভিসা বন্ধ করত না, বাংলাদেশের ট্রানজিট বন্ধ করত না। সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশিদের হত্যা করত না। তিস্তা নদীর পানি বন্ধ করত না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।

সরকার গায়ের জোরে ইশরাককে মেয়র হতে দিচ্ছে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বয়স অনেক কম। হঠাৎ গুরুতর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এজন্য তার কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে।’ সরকার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে না দেওয়ার জন্য ‘গায়ের জোর খাটাচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (২০ মে) খিলক্ষেতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত রাকিবুল হাসানকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। আদালতের রায় ঘোষণার পরও ইশরাককে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘এখানে অন্তর্বর্তী সরকার গায়ের জোর খাটাচ্ছে।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন— ‘চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত মেয়র হতে পারলে ইশরাক কী দোষ করলো? অর্থাৎ সরকার গায়ের জোরে ইশরাককে মেয়র হতে দিচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত অপরাধীদের এখনও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। কাজের চাইতে অকাজ বেশি করছে অন্তর্বর্তী সরকার।’ সম্প্রতি আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যখন আবাসনের দাবিতে যমুনার সামনে যান, তখন তাদের অসম্মান করা হয়, পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনাও পুলিশ দিয়ে এভাবে নির্যাতন করতেন।’ ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন— ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মো. আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন। এসময় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত রাকিবুল হাসানের শরীরের খোঁজ নেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দলটি। রাকিবুলের মায়ের সাথেও কথা বলেন তারা। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা ও সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় এবং যেকোনও প্রয়োজনে রাকিবুল হাসানের পাশে থাকার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন নেতারা। প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন— জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, ছাত্রদল দল নেতা মশিউর রহমান মহান, আব্দুল্লাহ আল মিসবাহসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা।

বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে আন্দোলন করবেন ইশরাক

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভোটার ও তার কর্মী সমর্থকদের বিশেষ বার্তা দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি বর্তমান সরকারে থাকা বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর আন্দোলন করার ঘোষণা দিলেও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে সমালোচনা করতে বলেছেন। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে ইশরাক ফেসবুকে এরকম একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আন্দোলনরত ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনগণ ও ভোটারদের বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের বাদে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের নেতার বিরুদ্ধে যত ক্ষোভ থাকুক না কেন, আমরা তাদের অসম্মান হয় এরকম কিছু করা থেকে শতভাগ বিরত থাকি। আমরা সমালোচনা করি, রাজনৈতিক বক্তব্যর মধ্য দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করি, তাদের ভুল ধরিয়ে দেই কিন্তু অবশ্যই ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে।’ ইশরাক আরও লিখেন, ‘অনেক তো দেখে আসছি আর পেছনের দিকে দেশটাকে নিতে চাই না। অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করব, দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবো, নির্বাচনী স্পষ্ট রোডম্যাপ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নিব। এমনকি বর্তমানে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও করবো। কিন্তু ভাষা ও ব্যবহার জাতে শত্রুও সমালোচনা করতে না পারে।’

যৌথসভা ডেকেছে বিএনপি

যৌথসভা ডেকেছে বিএনপি। আজ বেলা ২টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সভায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া যৌথসভায় উপস্থিত থাকবেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিববৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবগণ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/আহ্বায়ক/সদস্য সচিবগণ। যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।