
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন: তারেক রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশে বিদেশে সম্মানিত দক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিত্ব অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের নেতৃত্বে জাতি অবিলম্বে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে।’ তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক, জনগণকে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই। এই সরকারের মাধ্যমেই দেশের সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে পাবে জনগণ।’ রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের সঙ্গে দেখা করে আবারও রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের তারিখ, সুস্পষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের ভেতরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপিসহ যারা একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করেছি, আমরা আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। তারেক রহমান বলেন, অতীতেও পরাজিত স্বৈরাচারের আমলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলগুলো নানা রকম দমন পীড়ন এবং ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। এনসিপিও সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি। দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া শাসন- শোষণ হটিয়ে আমরা মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার যেন আর কোনো রূপে কোনোক্রমেই ফিরতে না পারে, এই সময় সেটিই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য। দেশে স্বৈরাচার রুখে দিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দেশের জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদ, সরকার গঠিত হলে অবশ্যই সেটি জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।’ রাষ্ট্রের নাগরিকদের রাষ্ট্র ক্ষমতা নিশ্চিত থাকলে সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘সরকারের চরিত্র যেমনই হোক না কোনো সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা না গেলে ক্ষমতাসীন সরকার নিজের অজান্তেই স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। এবং এ কারণেই হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে হলেও সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে।’ তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতির গুণগত মানের পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। এর কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমার কাছে মনে হয়, পুথিগত সংস্কারের চেয়েও প্রায়োগিক সংস্কার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রতিটি নাগরিককে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার থাকতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে এবং তাদের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের রাগ কিংবা মান অভিমানের কোনো সুযোগ নেই।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘হাজারো শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈধতার সংকট নেই তবে অবশ্যই এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি মূলক নয়। এ কারণেই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের সামনে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে রেখে, রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনাই টেকসই হয় না; এবং হবেও না।’ তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকার সকল দায়িত্ব পালন করবে, জনগণ এমনটা আশা করে না। তবুও সরকারের নিয়ম মাফিক কিছু কাজ করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সমস্যা সমাধানের অভিজ্ঞতা না থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ম মাফিক চলতি বছরের বাজেট ঘোষণা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে প্রতিটি বছর জাতীয় বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিপক্ষ। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনবিআর এর হয়তো সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই তবে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এমন বাস্তবতায় বাজেট পাশের ঠিক আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হঠাৎ করেই এনবিআরের সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যে একটি অচল অবস্থা সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য সুখকর নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকার রাখতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ তারেক রহমান বলেন, ‘একটি বিষয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বাংলাদেশে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ধরনের অযুহাত কিংবা গড়িমসির সুযোগ নিয়ে পতিত পলাতক স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট তাঁবেদার অপশক্তির পুনর্বাসনের পথরোধ করা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নিজ নিজ দলীয় আদর্শ এবং কর্মসূচির বাস্তবায়নের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পদ্ধতিগত বিরোধ দৃশ্যমান হলেও; আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দেশ এবং জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে ফ্যাসিবাদ উত্থান মোকাবেলায় একতরফা ইস্যুতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ ৫ আগস্টের মতোই ঐক্যবদ্ধ।’ ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এসপিপি) সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহদী আমিন, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ভাসানী জনশক্তির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

‘বিষপান করা’ চোখ হারানো চার জুলাই যোদ্ধার পাশে তারেক রহমান
আওয়ামী লীগের পতনের দাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারিয়ে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চান যুবক বিষপান করেছে। যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে এদের দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৫ মে) রাতে প্রতিনিধি দল হাসপাতালে পাঠিয়ে তাদের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব নেন তিনি। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের মাধ্যমে তাদেরকে এই চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। বিষপান করা চারজন হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (তাহের)। বিষপানের পর তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর নির্দেশে সংশ্লিষ্টদের খোঁজ-খবর নিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভী। তিনি গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চারজন এবং তাদের পরিবারের প্রতি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন তিনি। এসময় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন ও ড্যাবের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব ডা. আ.ন.ম মনোয়ারুল কাদির বিটু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ডা. মঞ্জুরুল আজিজ ইমন, ছাত্রদলের সাবেক সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এম আর হাসান, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল সভাপতি ডা. তাওহীদুল ইসলাম সৈকত, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইমরান হোসেন, ছাত্রনেতা শিহাব, সিফাত এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে একটি বৈঠক চলাকালে এই বিষপানের পর ঘটনা ঘটে। সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটির পরিচালকের কক্ষে জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা সেখানেই বিষপান করেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগে থেকে তাদের কাছে বিষ ছিল। বিষপানের ঘটনা নিশ্চিত করে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়ে ভর্তি থাকা চারজন আজ বিষপান করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। আহতদের একজন বলেন, এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না। আমাদের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। জুলাই গণ-আন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা বলছেন, দীর্ঘ নয় মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা টালবাহানা করা হচ্ছে। এর আগে শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ১০/১২ জন আহতকে আর্থিক সহায়তা এবং পুনর্বাসন বিষয়ে বাকবিতণ্ডায় হয়। এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) উদ্দেশ্যে আহতরা বলেন, স্যার আমাদের হয় সহযোগিতা দেন, না হয় আমাদের বিষ কিনে দেন খেয়ে মরে যাই। তাহলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

কিছু উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা শুনলে ভয় পায়: আমিনুল হক
‘স্বৈরাচারের মতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা শুনলে ভয় পায়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক। রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে ‘জিয়া আন্তথানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫’ এর দুইটি খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে আমিনুল হক বলেন, ‘আমরা জানি না, কেন আপনাদের ভয় লাগে? কিসের ভয় আপনাদের? এদেশের সাধারণ মানুষ এবং বিএনপির প্রত্যকটি নেতাকর্মী আপনাদের সমর্থন দিয়েছে। দ্রুত সময়ের ভেতর আপনারা একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের কথা শুনলেই কেন জানি আপনাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। সংস্কার ও বিচারের কথা বলে এবং নতুন নতুন অজুহাত সামনে দাড় করিয়ে দেন।’

প্রধান উপদেষ্টা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে চান: মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমরা সবাই যদি সহযোগিতা করি তাহলে দেশ ও জাতিকে একটি গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করবেন। পাশাপাশি দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলের সবার কাছে তিনি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেবেন। রোববার (২৫ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে শেষে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ড. ইউনূস আমাদের দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেছেন, ২০২৬ সালের জুনের ৩০ তারিখের পর এক ঘণ্টাও ক্ষমতায় থাকবেন না। তার আগেই তিনি নির্বাচন শেষ করবেন। আমরা তিনটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছি উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, প্রথমত, আমরা বলেছি, সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত কোনো লক্ষণ দেখতে পাইনি। এরকম অনিশ্চিত লক্ষ্যের দিকে হাঁটা ঠিক নয়। তাই আমরা বলেছি, সুনির্দিষ্টভাবে নির্দিষ্ট করুন যেকোনো লক্ষণ সংস্কারগুলো আপনারা করছেন। দ্বিতীয়ত, আমরা বলেছি, শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে জুলাই বিপ্লব পর্যন্ত যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, হাসিনাসহ তার প্রধান সহযোগীদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমানভাবে অগ্রগতির কথা, তিনি আমাদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। অতি দ্রুত আমরা এ বিষয়ে একটু সুসংবাদ পাব। মামুনুল হক বলেন, করিডরের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেছেন, দেশবিরোধী কোনো কার্যক্রম তার দ্বারা সংঘটিত হবে না। এ বিষয়ে তার ওপর বিশ্বাস রাখতে বলেছেন, যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তাহলে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই তা করা হবে। তিনি আরও বলেন, একটা অনৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে, সেটা দূর করতে প্রধান উপদেষ্টা যেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘন ঘন আলোচনা করেন। এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা দুই মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিষয়, এ বিষয়টা প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দায়িত্ব নিয়েছেন, আশ্বস্ত করেছেন, এ বিষয়ে একটা বিহিত করে দেবেন। নারী সংস্কার কমিশনের বিষয়েও উদ্বেগের কথা জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, এ ব্যাপারে আমরা এখন পর্যন্ত আশ্বস্ত যে বিতর্কিত কোনো ইসলামী আইন তারা বাংলাদেশে কার্যকর করবে না। নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট একটা সময়ে যাতে নির্বাচন দেওয়া হয়, যেন জনগণের ভেতর কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আমাদের বলেছেন, জুনের মধ্যেই আমরা নির্বাচন ব্যবস্থা করব।

আগামী নির্বাচনে বিএনপি জনগনের রায় নিয়ে সরকার গঠন করবে: এ্যানি
লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। জনগনের রায় নিয়ে সরকার গঠন করবে।’ রোববার (২৫ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ১নং নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ্যানি বলেন, ‘আমাদের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। জেলে ছিলেন। লড়াই করেছেন, অসুস্থ হয়ে মাসের পর মাস হসপিটালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবুও তিনি কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। তার আদর্শ ও নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপি আজও ন্যায়ের সংগ্রামে অবিচল রয়েছে।’ রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক মজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা যুবদলের জেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রাশেদুল হাসান লিংকন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাবুদ্দিন সাবু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ইমাম হোসেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম পিন্টু, ফয়েজুল্লাহ ভূঁইয়া, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কবির হোসেন কানন ও সদস্য সচিব আব্দুস সাত্তার মজুমদার, রামগঞ্জ পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জামাল হোসেন পাটোয়ারী, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে মাশফিকুল হক জয় প্রমুখ। এ সময় বক্তারা বলেন, সরকার পরিবর্তনে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপি তৃণমূল থেকে সুসংগঠিত হচ্ছে। প্রতিটি স্তরে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জামায়াতের মনোনয়ন পেলেন মুফতি আমীর হামজা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মুফতি আমীর হামজা। রোববার (২৫ মে) আব্দুল ওয়াহিদ অডিটরিয়ামে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল সমাবেশে তার নাম ঘোষণা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন। অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হাশেম সভাপতিত্ব করেন। এ সময় প্রধান অতিথি মোবারক হোসেন বলেন, ‘কুষ্টিয়া-৩ আসনের মধ্য দিয়ে ৩০০ আসনের প্রায় অধিকাংশ আসনের প্রার্থী ঘোষণা সম্পূর্ণ হলো।’ মুফতি আমীর হামজাকে নিয়ে মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা এ আসনে যে প্রার্থী (আমীর হামজা) দিয়েছি তিনি শুধু দেশের মধ্যেই নন আন্তর্জাতিকভাবে একজন পরিচিত প্রার্থী।’ বিশেষ অতিথি ছিলেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য আলমগীর বিশ্বাস ও অধ্যাপক খন্দকার এ কে এম আলী মহসীন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল গফুর, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, কুষ্টিয়া শহর আমির এনামুল হক, ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি সেলিম রেজা, জেলা সভাপতি খাজা আহমেদ প্রমুখ।

ইসির কাছে নিবন্ধন চায় সাকা চৌধুরীর এনডিপি
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে আরজি জানিয়েছে প্রয়াত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)। রোববার (২৫ মে) নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন এনডিপির চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের। সংগঠনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইসির সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। আমাদের অতীতের নিবন্ধনের আবেদন স্বৈরাচার সরকার যেসব কারণে দেয়নি, সেগুলো আমরা খোলাসা করে আলোচনা করেছি।’ আবু তাহের বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এই দলের মহাসচিব থাকার কারণেই মূলত দলের রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছিল না, যদিও নির্বাচন কমিশনের সব ক্রাইটেরিয়া আমরা ফুলফিল করেছি।’ আবু তাহের আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে আমাদের সব নেতাকর্মী সড়কে ছিল, আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ ছিল- এই বিষয়গুলো আমরা ইসিকে জানিয়েছি। আমরা চাচ্ছি, এনডিপি যেহেতু একটি জাতীয় গণতান্ত্রিক দল, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলাম, আমরা এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চাচ্ছি।’ এনডিপি থেকে পাঁচজন সিইসি ও ইসির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় দলের মহাসচিব আব্দুল্লাহ হারুন সোহেল, প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুসা মণ্ডল, জামিল আহমেদ, মিজানুর রহমান পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন যত পেছাবে তত ষড়যন্ত্র হবে: নুর
নির্বাচন যত পেছাবে, তত ষড়যন্ত্র হবে বলে মনে করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, কোনো কোনো দল ও ব্যক্তি নির্বাচন দেরিতে চাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, দেরিতে নির্বাচন হলে দল গোছাতে পারবেন। রোববার (২৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোটের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হক নুর বলেন, সংস্কার বাস্তবায়নের পক্ষে, কোনো দল তো বিরোধিতা করেনি। অযথা বিএনপির মতো বড় দলকে ভিলেন বানিয়ে লাভ নেই। বর্তমানে তাদের মতো সাংগঠনিক সক্ষমতা আর কারও নেই। নির্বাচন হলে তো তারাই সরকার গঠন করবে। এজন্য সামাজিক মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ড. ইউনূসের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো দল তো পদত্যাগের কথা বলেনি। বিএনপিসহ আমরা অনেক দল বলছি যে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর ডিসেম্বর থেকে জুন এটা নির্বাচনের জন্য অস্পষ্ট রোডম্যাপ। কোন মাসে নির্বাচন হবে, সেই বিষয়ে একটি স্পষ্ট ঘোষণা আসা উচিত।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচন হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের অনুষ্ঠানের লক্ষ্য জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’ রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডন থকে ভ্যার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দেশে বিদেশে সম্মানিত, দক্ষ ও যোগ্যব্যক্তি এবং অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের নেতৃত্বে জনগণ দেশের ইতিহাসে একটি অবাধ সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই লক্ষ্য আমরা যারা রাজপথে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম তারা সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। সুতরাং দেশে-বিদেশে সম্মানিত দক্ষযোগ্য ব্যক্তি ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের নেতৃত্বে জনগণ দেশের ইতিহাসে একটি অবাধ সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে পারবে।’

কালকে রাস্তায় নামলে ইউনূস সাহেব ২৪ ঘণ্টাও থাকতে পারবে না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, “আমরা যদি বলি কালকে রাস্তায় নামবো, তাহলে আমার মনে হয় ইউনূস সাহেব (প্রধান উপদেষ্টা) ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারবেন না”। “তাহলে ভবিষ্যৎ কি হবে? এই বিবেচনায় আমরা এই জায়গায়ই সমাপ্ত করতে চাই, আমরা চাই ড. ইউনূসই সফল হোক। ড. ইউনূস সফল মানেই আমাদের জুলাই ও আগস্টের আন্দলনের একটা সফলতা”, বলেন মি. রায়। রোববার (২৫ মে) দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোটের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আপনার তো সংস্কার করার কোন ক্ষমতা নেই। নারী যদি সুন্দরীও হয়, সে যদি বন্ধ্যা হয়, তার প্রতি আকর্ষণ থাকতে পারে, কিন্তু সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা নাই”। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় থাকতে মৌলবাদীদের একসাথে করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই মৌলবাদীরাই সারাবিশ্বে নানা অশান্তি তৈরি করছে। সেইসাথে সরকার দুর্নীতিবাজদের না ধরে, তাদের সাথে আঁতাত করছে বলেও অভিযোগ করেন মি. রায়। জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মি. রায় বলেন, “যারা নাকি চব্বিশের জুলাইয়ে ১১ দিনের আন্দোলন করে মুকুট চায়, তাদের মুকুট অনেক আগেই জাতি দিয়ে দিছে। আমরাও দিয়ে দিছি”।

শপথ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করিনি: ইশরাক হোসেন
শপথের চেয়ে হাইকোর্টে এখনও রিট করেননি বলে জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হওয়া সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন। আজ রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘যেহেতু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ পড়ানোর কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি তাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এখন পর্যন্ত রিট পিটিশন দায়ের অথবা চূড়ান্ত কোনো কিছু হয়নি।’ প্রসঙ্গত, রোবরার বিভিন্ন গণমাধ্যমে শপথ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন ইশরাক হোসেন মর্মে সংবাদ প্রকাশিত করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিবৃতি পাঠান বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।

আমরা চাই ড. ইউনূস সফল হোক: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা যদি বলি যে আগামীকাল রাস্তায় নামবো, তাহলে মনে হয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৪ ঘণ্টাও থাকতে পারবেন না। কিন্তু আমরা চাই ড. ইউনূস সফল হোক। রোববার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি একথা বলেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা যদি বলি যে আগামীকাল রাস্তায় নামবো, তাহলে মনে হয় ড. ইউনূস ২৪ ঘণ্টাও থাকতে পারবেন না। কিন্তু, আমরা চাই ড. ইউনূস সফল হোক। ওনার সফল মানেই হলো, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সফলতা। আজকে যারা জুলাই আন্দোলনের মুকুট চায়, তাদের তো মুকুট অনেক আগেই দেওয়া হয়েছে। আমরাও দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি এবং মন্ত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত সচিবালয়ে প্রবেশ করিনি। কিন্তু, ওনারা (বৈষম্যবিরোধী নেতারা) এত ঘন ঘন সচিবালয়ে যায় কেন, ডিসি অফিসে যায় কেন। আজকে যে জাতি তাদের মাথায় তুলেছে, সেই মাথা থেকে যদি পায়ের তলায় পড়ে যায় সেটার জন্য কি জাতি দায়ী? অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশে তো দুর্নীতি কমেনি বরং বেড়েছে। কারণ হাসিনার আমলের ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখনো রয়ে গেছে। এই সরকার তো দুর্নীতি রোধে হাত দেননি! কয়জনকে ধরা হয়েছে? ধরার উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি বিচারও করেনি। গয়েশ্বর বলেন, আজকে মানুষ বলাবলি করছেন যে, ড. ইউনূসের যত সুবিধা নেওয়া দরকার তাই নেবেন এবং সেজন্য তিনি দেহত্যাগ করলেও পদত্যাগ করবেন না। বন্দর চালানোর জন্য যদি দেশে লোক না থাকে তাহলে বিদেশ থেকে আমরা এক্সপার্ট আনতে পারি। যেমনটি গার্মেন্টস শিল্প উন্নয়নে বিদেশের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ এলিডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলনের মূল সমন্বয়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক তকমা দেওয়া হচ্ছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক দলের তকমা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচার উপদেষ্টাদের সম্মানহানির চেষ্টা এবং এর মাধ্যমে আন্দোলনের সার্বজনীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এই দুই উপদেষ্টা কোনো নির্দিষ্ট দলের নয় বরং চলমান গণঅভ্যুত্থানের সার্বজনীন প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে দায়িত্ব পালন করছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। রোববার (২৫ মে) চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় পথসভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ছাত্র উপদেষ্টাদের দলীয় পরিচয়ে ট্যাগ করার প্রচেষ্টাকে আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই। তারা এনসিপি বা অন্য কোনো দলের প্রতিনিধি নন, তারা এই সরকারে জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। গণমানুষের মতামত জানতে দক্ষিণ চট্টগ্রামে পথসভা করা হচ্ছে বলে জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ ঘুরে জনগণের ভাবনা জানবো এবং নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরবো। এটি একটি পারস্পরিক সংলাপের প্রক্রিয়া। দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণারও দাবি জানানো হয়েছে জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, বিচারব্যবস্থার সংস্কার, নতুন সংবিধান প্রণয়ন, গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন, আহত ও শহীদ পরিবার পুনর্বাসনসহ মৌলিক সংস্কারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণারও দাবি জানানো হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু ও জুবাইরুল আরিফ।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম আমাদেরকে চিরদিন স্বদেশ প্রেমে অনুপ্রাণিত করবে : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম আমাদেরকে চিরদিন স্বদেশ প্রেমে অনুপ্রাণিত করবে। তারেক রহমান জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।’ তারেক রহমান বলেন, ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি, লেখক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গীতিকার ও সঙ্গীতজ্ঞ। স্বাধীনচেতা এই মানুষটি সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে এবং সাম্রাজ্যবাদ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক আপোষহীন সংগ্রামী পুরুষ ছিলেন। জুলুম ও অবিচারের বিরুদ্ধে তাঁর লেখনী ছিল সাহসী ও ক্ষুরধার। তিনি বাংলা সাহিত্যকে করেছেন সমৃদ্ধ ও কালজয়ী।’ তিনি বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন সত্ত্বেও তাঁকে সত্য উচ্চারণ থেকে নিবৃত্ত করা যায়নি। রাজরোষে পড়েও সত্য ও সুন্দর সৃষ্টির মনোবাঞ্ছা থেকে তিনি কখনোই পিছপা হননি। তাঁর সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনাবিহীন। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তাঁর প্রধান পরিচয় তিনি একজন কবি। নির্বাক হওয়া পর্যন্ত সাহিত্য-চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তাঁর সাহিত্যে উচ্ছ্বাস ও স্বতঃস্ফূর্ততা এক অনন্য সৌন্দর্যময়তায় বিশিষ্ট শিল্পরূপ ধারণ করেছে। তিনি বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেন। অন্তর্গত সুন্দরের প্রেরণাতেই তিনি অন্যায়, অবিচার ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করেছেন।’ তারেক রহমান বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের লেখনি সকল স্বৈরাচারের জন্য আতঙ্ক হয়ে থাকবে। তিনি লিখেছেন ‘কৈরে কৈরে স্বৈরাচারী বৈরী এই বাংলার’? তাঁর কবিতা ও গানে মানবতা ও সাম্যের বাণী উচ্চারিত হয়েছে। তাঁর লেখনি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও যুদ্ধে ব্যাপক অনুপ্রেরণ যুগিয়েছিল। তিনিই উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। এছাড়াও তাঁর প্রকৃতি, মানবপ্রেম ও ভক্তিমূলক গান অনন্য বৈচিত্রময় সুর ও বাণীর সংমিশ্রণে এক অনবদ্য স্বপ্নিল পরিবেশ সৃষ্টি করে, যে গানের আবেদন চিরকালীন ও অবিনশ্বর।’ তারেক রহমান বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম আমাদেরকে চিরদিন স্বদেশ প্রেমে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ তারেক রহমান জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকল কর্মসূচির সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন।

আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখাবেন না, আসিফ নজরুলকে সাদিক কায়েম
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখায়। খুনিদের বিচারের কথা বললে আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হাইকোর্টের কথা বলে। আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে বলতে চাই, এই ধরনের হাইকোর্ট আমাদেরকে দেখাবেন না। শনিবার (২৫ মে) রাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত ও কোরআনের হাফেজ মোহাম্মদ হাসানের প্রথম জানাজায় বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাদিক কায়েম বলেন, আপনারা যদি বিচার করতে না পারেন তবে নেমে যান। আপনারা বিচার করতে না পারলে ছাত্র-জনতা দায়িত্ব নেবে। এরপর জানাজার নামাজে ইমামতি করেন সাদিক কায়েম। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন শিবিরের এই নেতা। জানাজার নামাজে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট চট্টগ্রামের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হাসানকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে সে দেশের পায়াথাই পাহোলিওথিন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে হাসান মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ মো. হাসানের মরদেহ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। সেখানে তাকে রিসিভ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যসহ লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এরপর তার মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে রাত ৯টার পরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়

কিছু উপদেষ্টা চলমান সংকটকে ঘনীভূত করার চেষ্টা করছেন: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা চলমান সংকটকে ঘনীভূত করার চেষ্টা করছেন। তারা নিজেদের দায়িত্ব বাদ দিয়ে অন্য কোনও এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করলে আমরা প্রতিবাদ করবোই। রবিবার (২৫ মে) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে। কোনও দলকে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব তাদের নয়। এমনটি হলে জনগণ মানবে না। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও ঘাপটি মেরে বসে আছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা, সাহিত্যকর্ম, গান থেকে যুগে যুগে মানুষ শিক্ষা নিয়েছে। জুলাই আন্দোলন ও বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনে তিনি আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। শত আঘাতের মধ্যেও তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস। শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার জন্য নজরুল আমাদের তাগিদ দিয়েছেন। জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে তিনি আমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ করেন। তাই আজও তিনি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

আমরা কারও পদত্যাগ চাইনি: জামায়াতে ইসলামী
দু’টি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একটি হচ্ছে সংস্কারের রোডম্যাপ আর একটি হচ্ছে নির্বাচনী রোডম্যাপ। ড. ইউনূস জামায়াতের উত্থাপিত এ দুই দাবি ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছেন বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শনিবার (২৪ মে) রাতে বৈঠক করার পর গণমাধ্যমকে কথা বলেন তিনি। এর আগে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করা হয়নি। বিএনপি সরকারের নিরপেক্ষতার জন্য তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন এ বিষয়টি জামায়াত কীভাবে দেখে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পদত্যাগ চাইলো বিএনপি আর ফতোয়া দেবে জামায়াতে ইসলামী? এটা কি মানায়? যারা তিনজনের পদত্যাগ চেয়েছেন তারাই সে ব্যাখ্যা দেবেন। আমরা কারও পদত্যাগ চাইনি।

প্রধান উপদেষ্টাকে যে ৫টি বিষয় বলেছে এনসিপি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে, শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে আটটার দিকে এনসিপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যমুনায় প্রবেশ করে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বধীন প্রতিনিধি দলটি। এর আগে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জামায়াতে ইসলামীর দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। পরে সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর মানুষ তিনটি নির্বাচনে তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা নিঃসংকোচে নিজেরা সেই অধিকার প্রয়োগ করতে চায় এবং এ সুযোগ পাবে নিশ্চিত হবে। এ সময় সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারও কোনো পদত্যাগ চায়নি। প্রয়োজন অনুভব করলে সে বিষয়ে জানানো হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকের মাধ্যমে পুরো অস্থিরতা দূর হবে বলে আমরা আশাবাদী। বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা তাদের কথা গভীর মনযোগ সহকারে শুনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন যে দেশ আমাদের সবার। তিনি দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চান। তিনি যেনতেন নির্বাচন দেখতে চান না। সব দলের কথা শুনে তিনি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন নিয়ে কী আলাপ হয়েছে, এমন প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শুধু নয়, সবাই সংস্কারের পর নির্বাচন চায়। তবে আমরা সময় বেঁধে দিইনি। সংস্কার শেষ হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্য কিংবা তা না হলে রোজার পরপরই হতে পারে। এর আগে সন্ধ্যায়, বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

নির্বাচন নিয়ে আজও কোনো আশ্বাস পাইনি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
নির্বাচন নিয়ে আজও কোনো আশ্বাস পাননি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শনিবার (২৪ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে শেষে এ কথা বলেন তিনি। আগামী নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন– জানতে চাইলে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে এমন কোনো কথা হয়নি। উনি সুনির্দিষ্টভাবে জানাননি। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। হয়তবা উনারা উনাদের প্রেসের মাধ্যমে জানাবেন। সেজন্য আমরা অপেক্ষা করব। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার নেই। উনাদের (প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর) সংবাদ সম্মেলনে কি বলে, তারপর আমরা প্রতিক্রিয়া দেব। উনার প্রেসকে আগে কথা বলতে বলবেন। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি। আগেও জানিয়েছি নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং দুজন ছাত্র উপদেষ্টা, যাদের কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য। আজও লিখিত বক্তব্যে দিয়েছি। মুখেও বলেছি। এ বিষয় কোনো আশ্বাস দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশ্বাস দিয়েছেন, উনারা দেখবেন। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। এসময় বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মূলত সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন– এই তিনটার ওপর আলোচনা হয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে আমরা পরিষ্কার এবং উনারা একমত হয়েছেন, সংস্কার যেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে হওয়ার কথা, তার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। সেই কাজ অতি সহসা সম্পন্ন করা সম্ভব। এখানে কোনো দ্বিমত পোষণ করেননি। বিচার ব্যবস্থা বিচার বিভাগ করবে এবং বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে যে আলোচনা হয়েছে, এখানে উনাদের কোনো দ্বিমত নেই। সুতরাং ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। এই আলোচনাও হয়েছে। দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, যদি দ্রুত নির্বাচন দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছি আজ বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হচ্ছে, এক অ্যানাউন্সমেন্টের ফলে বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না: জামায়াত আমির
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না। শনিবার রাতে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। জামায়াত আমির বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা- নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভেতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বরে বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে। বৈঠকে জামায়াত আমিরের সঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান জানান, বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনি রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করার দাবি জানিয়েছি। খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, এ জন্য আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি সবচেয়ে বেশি বিএনপির। এই বিচার প্রক্রিয়া কোনোভাবে অসম্পন্ন থেকে গেলে বিএনপি সরকারের দায়িত্বে গেলে বিচারের আওতায় এনে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করবে। বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ দেওয়া দাবি জানিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যেকোনো উসিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে আমরা মনে করি, জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার পুনরায় ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপরে বর্তাবে।

৩ উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি, আগেও জানিয়েছি। নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং আর দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা, যাদের কারণে এ সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা আজকেও লিখিতভাবে জানিয়েছি।’ এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সে বিষয়ে ওনারা দেখবেন। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি।’ নানা আলোচনার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হলো। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের যে কথা হলো
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মূলত দুটি বিষয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছেন তারা। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা বলেছি, নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভিতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বর আমরা বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। জামায়াত আমির বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে। উপদেষ্টাদের পদত্যাগ ইস্যুতে জামায়াত আমির বলেছেন, তারা কারও পদত্যাগ চাননি।

বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি বিএনপির
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি করার পাশাপাশি বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শনিবার রাতে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন। এর আগে নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্যের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ‘পদত্যাগ ভাবনা’ ঘিরে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে তার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে ৫০ মিনিটের মতো। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেন। বৈঠক শেষে বিফ্রিং হওয়ার কথা রয়েছে। সরকারের তরফে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বিফ্রিং করার কথা রয়েছে। হঠাৎ তৈরি হওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এ বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলে মোশাররফের সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য, বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের মতভিন্নতা; সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ‘পদত্যাগের ভাবনা’— সব কিছু মিলিয়ে রাজনীতিতে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মধ্যে আগের দিন এ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বিএনপির পর রাতে জামায়াতে ইসলামী এবং এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। রোববার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টা বসবেন বলে শনিবার বিকালে জানিয়েছেন তার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

যমুনায় প্রবেশ করেছে জামায়াতের প্রতিনিধি দল
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাত ৮টায় তারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এর আগে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর জামায়েতের প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে। এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।