প্রধান উপদেষ্টাকে যে ৫টি বিষয় বলেছে এনসিপি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে, শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে আটটার দিকে এনসিপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যমুনায় প্রবেশ করে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বধীন প্রতিনিধি দলটি। এর আগে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জামায়াতে ইসলামীর দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। পরে সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর মানুষ তিনটি নির্বাচনে তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা নিঃসংকোচে নিজেরা সেই অধিকার প্রয়োগ করতে চায় এবং এ সুযোগ পাবে নিশ্চিত হবে। এ সময় সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারও কোনো পদত্যাগ চায়নি। প্রয়োজন অনুভব করলে সে বিষয়ে জানানো হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকের মাধ্যমে পুরো অস্থিরতা দূর হবে বলে আমরা আশাবাদী। বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা তাদের কথা গভীর মনযোগ সহকারে শুনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন যে দেশ আমাদের সবার। তিনি দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চান। তিনি যেনতেন নির্বাচন দেখতে চান না। সব দলের কথা শুনে তিনি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন নিয়ে কী আলাপ হয়েছে, এমন প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শুধু নয়, সবাই সংস্কারের পর নির্বাচন চায়। তবে আমরা সময় বেঁধে দিইনি। সংস্কার শেষ হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্য কিংবা তা না হলে রোজার পরপরই হতে পারে। এর আগে সন্ধ্যায়, বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

নির্বাচন নিয়ে আজও কোনো আশ্বাস পাইনি: সালাহউদ্দিন আহমেদ

নির্বাচন নিয়ে আজও কোনো আশ্বাস পাননি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শনিবার (২৪ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে শেষে এ কথা বলেন তিনি। আগামী নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন– জানতে চাইলে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে এমন কোনো কথা হয়নি। উনি সুনির্দিষ্টভাবে জানাননি। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। হয়তবা উনারা উনাদের প্রেসের মাধ্যমে জানাবেন। সেজন্য আমরা অপেক্ষা করব। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার নেই। উনাদের (প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর) সংবাদ সম্মেলনে কি বলে, তারপর আমরা প্রতিক্রিয়া দেব। উনার প্রেসকে আগে কথা বলতে বলবেন। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি। আগেও জানিয়েছি নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং দুজন ছাত্র উপদেষ্টা, যাদের কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য। আজও লিখিত বক্তব্যে দিয়েছি। মুখেও বলেছি। এ বিষয় কোনো আশ্বাস দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশ্বাস দিয়েছেন, উনারা দেখবেন। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। এসময় বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মূলত সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন– এই তিনটার ওপর আলোচনা হয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে আমরা পরিষ্কার এবং উনারা একমত হয়েছেন, সংস্কার যেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে হওয়ার কথা, তার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। সেই কাজ অতি সহসা সম্পন্ন করা সম্ভব। এখানে কোনো দ্বিমত পোষণ করেননি। বিচার ব্যবস্থা বিচার বিভাগ করবে এবং বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে যে আলোচনা হয়েছে, এখানে উনাদের কোনো দ্বিমত নেই। সুতরাং ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। এই আলোচনাও হয়েছে। দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, যদি দ্রুত নির্বাচন দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছি আজ বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হচ্ছে, এক অ্যানাউন্সমেন্টের ফলে বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না: জামায়াত আমির

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না। শনিবার রাতে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। জামায়াত আমির বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা- নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভেতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বরে বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে। বৈঠকে জামায়াত আমিরের সঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান জানান, বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনি রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করার দাবি জানিয়েছি। খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, এ জন্য আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি সবচেয়ে বেশি বিএনপির। এই বিচার প্রক্রিয়া কোনোভাবে অসম্পন্ন থেকে গেলে বিএনপি সরকারের দায়িত্বে গেলে বিচারের আওতায় এনে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করবে। বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ দেওয়া দাবি জানিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যেকোনো উসিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে আমরা মনে করি, জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার পুনরায় ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপরে বর্তাবে।

৩ উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছি: সালাহউদ্দিন আহমেদ

অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি, আগেও জানিয়েছি। নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং আর দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা, যাদের কারণে এ সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা আজকেও লিখিতভাবে জানিয়েছি।’ এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সে বিষয়ে ওনারা দেখবেন। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি।’ নানা আলোচনার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হলো। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের যে কথা হলো

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মূলত দুটি বিষয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছেন তারা। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা বলেছি, নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভিতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বর আমরা বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। জামায়াত আমির বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে। উপদেষ্টাদের পদত্যাগ ইস্যুতে জামায়াত আমির বলেছেন, তারা কারও পদত্যাগ চাননি।

বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি বিএনপির

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি করার পাশাপাশি বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শনিবার রাতে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন। এর আগে নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্যের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ‘পদত্যাগ ভাবনা’ ঘিরে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে তার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে ৫০ মিনিটের মতো। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেন। বৈঠক শেষে বিফ্রিং হওয়ার কথা রয়েছে। সরকারের তরফে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বিফ্রিং করার কথা রয়েছে। হঠাৎ তৈরি হওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এ বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলে মোশাররফের সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য, বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের মতভিন্নতা; সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ‘পদত্যাগের ভাবনা’— সব কিছু মিলিয়ে রাজনীতিতে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মধ্যে আগের দিন এ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বিএনপির পর রাতে জামায়াতে ইসলামী এবং এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। রোববার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টা বসবেন বলে শনিবার বিকালে জানিয়েছেন তার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

যমুনায় প্রবেশ করেছে জামায়াতের প্রতিনিধি দল

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাত ৮টায় তারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এর আগে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর জামায়েতের প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে। এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

জামায়াত আমিরের নেতৃত্বে দুই সদস্যর প্রতিনিধি দল যাচ্ছে যমুনায়

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে যমুনায় প্রবেশ করেছেন। শনিবার রাত ৮টায় তারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এর গতকাল ড. ইউনূসের পদত্যাগের ইস্যুতে আলোচনা শুরু হলে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানায় জামায়াতে ইসলামী।

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না: ডা. জাহিদ

রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ না বানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। শনিবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাহিদ হোসেন এসব কথা বলেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব সফল হবে। মানুষ তাদের পেছনে আছে। কিন্তু তাকে যারা বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেন, এখনও সময় আছে- লাগাম টেনে ধরুন। রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করবেন না। উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আপনারা যা ইচ্ছে করছেন। মনে হচ্ছে, এটা আপনাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কে যাবে, আসবে- আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন; মনে হচ্ছে জনগণের কোনো দায় নেই। যেমনটা পতিত স্বৈরাচার করত। কিন্তু আপনারা এসবের দায় ইউনূস স্যারের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ড. ইউনূসকে বিতর্কিত করার জন্য উপদেষ্টা কাউন্সিলের অনেক সদস্য জড়িত। তিনি আরও বলেন, অতীতকে ভুলে যাবেন না। প্রথমে বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করলেন, ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট- এটি নাকি দ্বিতীয় জন্ম। এসব কথা বলার চেষ্টা করলেন- কিন্তু ’৪৭ যদি না হতো, ’৭১ পেতেন না; ’৭১ না হলে ’২৪ হতো কিনা বিরাট প্রশ্ন। কাজেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবেন না। যার যতটুকু অবদান, সেটাকে স্বীকার করার মধ্যেই সত্যিকারের বীরত্ব আছে। আপনারা যে দেশের ভালো চান, সেটি প্রমাণ করেন। আর যদি এককভাবে কিছু করেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারের মতো অবস্থা আপনাদেরও হতে পারে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্দেশ্যে জাহিদ হোসেন বলেন, আপনারা আইন-আদালতকে বিশ্বাস করেন না। আইন-আদালত যখন আপনাদের পক্ষে থাকে, তখন আপনারা খুশি। আর যখন বিপক্ষে যায়, তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এগুলো তো শেখ হাসিনার মানসিকতা। সবসময় আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্র-জনতা মাঠে থাকে। তারপরে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেয়, কাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু এখানে এটা উল্টো হয়েছে। আপনারা নিজেদের ট্যাগ ধরে ফেলেছেন। আপনারা সব কৃতিত্ব নিজেদের দাবি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। জুলাই-আগস্টে তারা সেটি প্রমাণ করেছে। সুতরাং সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে গেলে নিজেরাই বিতর্কিত হয়ে যাবেন। সংগঠনের চেয়ারম্যান তালুকদার জহিরুল হক তুহিনের সভাপতিত্বে এতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদল

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে বৈঠকে অংশ নিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছেছেন বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। আজ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে যমুনায় পৌঁছেছেন বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে যমুনায় পৌঁছেছেন বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

যমুনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। শনিবার (২৪ মে) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে যমুনার উদ্দেশে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রওনা হয়েছেন। প্রতিনিধিদলটি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করেন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির বৈঠক রাতে

উদ্বেগ-উৎকন্ঠা-গুঞ্জনের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ৮টায় এনসিপির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শনিবার রাত সাড়ে ৮ টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এদিকে এনসিপির সঙ্গে বৈঠকের আগে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাতের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদেরকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাক্ষাতের সময় জানানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশের চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সার্বিক বিষয় নিয়ে আলাপ করতে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের শনিবার রাতে সাক্ষাতের সময়সূচি জানানো হয়েছে।

অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন থাকতে পারে না: খায়ের ভূঁইয়া

একটি দেশে অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন থাকতে পারে না বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া । শনিবার (২৪ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রুহিতা ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতৃত্ব নির্বাচন পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের কিছু মৌলিক বিষয় আছে, যা জনপ্রতিনিধিরা সংসদে বসে সিদ্ধান্ত নেবে। আর আজকের দেশে প্রতিদিনের ঘটনাগুলো নাটকীয়তায় রুপ নিচ্ছে । আমার স্পষ্টভাবে অর্ন্তবর্তী সরকারের কাছে দাবি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এখানে ডানে বামে অন্য কোন চিন্তার অবকাশ নেই। তিনি আরও বলেন, বিএনপি দীর্ঘ সময় আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। তাদের উপর অনেক নির্যাতিত হয়েছে। বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলনের পরিক্রমায় জুলাই আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। কিন্তু আজ বাংলাদেশকে নিয়ে চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা অন্তবর্তীকালিন সরকারকে বলে দিতে চাই সকল চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র নিঃশেষ হয়ে যাবে আপনারা অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা (পশ্চিম) বিএনপির আহবায়ক আবদুল করিম ভূঁইয়া মিজান, যুগ্ম আহবায়ক ফখরুল ইসলাম স্বপন, বিএনপি নেতা এড. মাহবুব আলম খোকন, এড. জহিরুল আলম, মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বিটু, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক নুরুল ইসলাম বুলবুল, সদস্য সচিব জামাল হোছাইন, সদর থানা ছাত্রদলের আহবায়ক আবদুল মজিদ প্রমুখ।

ভারত চায় না ড. ইউনূস ক্ষমতায় থাকুক: ফয়জুল করীম

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভারত চায় না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, ড. ইউনূস সরকারকে যারা নামাতে চান, তারা এ দেশের রাজনীতি করেন না, তারা দিল্লি ও ‘র’ এর রাজনীতি করেন। তারা দেশ, জনগণ ও মানবতার শত্রু। শনিবার (২৪ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুর দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, ভারত কোনো অবস্থাতেই চায় না ইউনূস বাংলাদেশের গদিতে থাকুক। ভারত সরকার কোনোভাবেই তাকে মেনে নিতে পারছে না। ইউনূস সরকার ভারতের গোলামী থেকে আমাদের মুক্তি করার চেষ্টা করছে। ভারতের গোলামী থেকে বের হওয়ার হাজারো চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এটি ভারত সহ্য করতে পারছে না। এজন্য ‘র’ আমাদের দেশের কিছু মানুষের ওপর সওয়ার হয়ে ক্ষমতার প্রলোভন দেখিয়ে তারা ইউনূস সরকারকে পদত্যাগ করার জন্য বাধ্য করাতে চাচ্ছে। তবে এ দেশের জনগণ সচেতন। কোনো অবস্থাতেই ‘র’ এর ফাঁদে জনগণ পা দেবে না। ‘ডিসেম্বরে নির্বাচনে দেওয়া উচিত’ সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্য নিয়ে ফয়জুল করিম বলেন, সেনাপ্রধানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো। সেনাপ্রধান তার দায়িত্ব পালন করাই উচিত। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব হলো দেশকে রক্ষা করা। দেশের রাজনীতি করা তার দায়িত্ব নয়। করিডোর নিয়ে তিনি বলেন, ভারতের কোনো প্রেসক্রিপশন আমাদের দেশের জনগণ বাস্তবায়ন করবে না। যদি মানবিক করিডোর ভারতের পক্ষে হয়, আমরা নেই। যদি দেশের পক্ষে হয়, আমরা আছি। আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করবো, ভারতের স্বার্থে কাজ করবো না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক নূরুল করীম আকরাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন, সেক্রেটারি জহির উদ্দিন, প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি মোখলেছুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শোরাফ উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।

জনতার মেয়র হয়ে যা করবেন ইশরাক

আদালত থেকে রায় ঘোষণার পর মেয়র হিসেবে নিজের দায়িত্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। শুক্রবার (২৩ মে) ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তিনি। ফেসবুকে ইশরাক হোসেন লিখেন, শপথ কেবল একটা ফরমালিটি। জনতার মেয়র হিসাবে আমার দায়িত্ব বর্তায় আগামী কোরবানির ঈদের আগে যাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকে। তিনি আরও লিখেন, আমি ঢাকাবাসীকে নিশ্চিত করছি, উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত সেখানকার প্রশাসন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করব। বিএনপির এই নেতা লিখেন, দক্ষিণে সাবেক কাউন্সিলর ও বিগত নির্বাচনের প্রার্থীদের সমন্বয় করে একটি জোনভিত্তিক মনিটরিং টিম-এর অনুমোদন দিব। বিকালের মধ্যে (১৬ ঘণ্টায়)! একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। দক্ষিণ পরিচ্ছন্নকর্মীদের সাথে আমি নিজেও থাকব।

উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারে যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা যদি রাজনীতি ও নির্বাচন করতে চান তাহলে সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, তারা (উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ) গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সেই সময়ের সরকারে গিয়েছিলেন। আমিও তাদের সঙ্গে ছিলাম। এখন দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক না থাকার পরও তাদেরকে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে যুক্ত করে এক ধরনের অপপ্রচার চলছে এবং তাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বলব এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে যারা গিয়েছেন সরকার থেকে তারা বের হবেন কি না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের প্রত্যাশা, গণঅভ্যুত্থানের বৈধতাসহ আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নে ছাত্র উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টা একত্রে কাজ করবেন। ছাত্র উপদেষ্টাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে যুক্ত করে যে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমরা তার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নাহিদ ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৬২৬ জনের একটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যেটা আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছিলাম। এটা তো আগস্ট মাসের ঘটনা। এটা যদি আগেই প্রকাশ করা হতো তাহলে জনগণের মনে কোনো সন্দেহ তৈরি হতো না। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগও পেত না। সেনাবাহিনী আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। গণঅভ্যুত্থান এবং তার পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী যে ভূমিকা পালন করেছে, সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।

যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে তারা বসে নেই: এ্যানি

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বিএনপির এক সম্মেলনে বলেন, “যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে, তারা বসে নেই। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে, সেই অর্থ দিয়ে দেশ-বিদেশে বসে গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তারা, যাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে পারে।” শনিবার (২৪ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের দত্তপাড়া, চন্দ্রগঞ্জ, উত্তর জয়পুর, কুশাখালী ইউনিয়নে ওয়ার্ড বিএনপির এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ্যানি বলেন, “বর্তমান সরকারকে আরও সতর্ক হতে হবে। শেখ হাসিনার বিচারের প্রক্রিয়া যদি দ্রুত, দৃশ্যমান এবং কার্যকর না হয়, তাহলে দেশের মানুষ কষ্ট পাবে, সংকটে পড়বে। একদিকে নির্বাচন করতে হবে, অন্যদিকে নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। সেইসাথে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এখনো সংস্কার কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করবে। সবাই মিলে যদি দেশকে ঐক্যের পথে না নিতে পারি, সুদৃঢ় ঐক্য গঠন করতে না পারি, তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেবে। ফ্যাসিস্ট শক্তি এখনও দেশে সক্রিয় রয়েছে, পাশ্ববর্তী দেশও হস্তক্ষেপ করতে চায় এবং অতীতেও চেয়েছে।” দেশ বিভাজনের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই ঐক্যের ভিতরে বিভাজনের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়।” এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী, জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার প্রমুখ।

কত দ্রুত নির্বাচন সম্ভব তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হবে: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নির্বাচন ও গণতন্ত্রে ফেরার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান দলটির স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আমীর খসরুর ভাষ্য, গণতান্ত্রিক অর্ডারে ফিরে যেতে হলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাই আজকের আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে—এটা কীভাবে সম্ভব, কত দ্রুত সম্ভব। রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনার নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো—আমরা কীভাবে সামনে এগিয়ে যাবো, কীভাবে একটি গণতান্ত্রিক অর্ডারে দ্রুত ফিরতে পারি। দেশে সংকট আছে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে খসরু বলেন, আমরা সংকট দেখি না। গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে গেলে, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠিত হলে এ দেশের জনগণ আবারও আশার আলো দেখতে পাবে। গত ১৬ বছরে যে ত্যাগ মানুষ করেছে, তারা এখন প্রতীক্ষায় আছে একটি সঠিক দিকনির্দেশনার গতবার ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি ‘অসন্তুষ্ট’ ছিল—এবার কি সন্তুষ্ট হয়ে ফিরতে চায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে খসরু বলেন, এটা আমাদের সন্তুষ্টির বিষয় না। আমরা রাজনীতি করি জনগণের সন্তুষ্টির জন্য। তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতেই আমরা এ ধরনের আলোচনা করছি। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, নির্বাচনের সময় নির্ধারণ প্রসঙ্গে ডিসেম্বরের অপেক্ষা না করে তার আগেই একটি উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হতে পারে।

দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই: নাহিদ

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সরকারে থেকে তাদের রাজনীতির কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তিনি। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা যদি রাজনীতি করতে চান, নির্বাচন করতে চান, তাহলে তারা সরকারের থেকে সেটা পারবেন না। তখন তারা সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, এই দুই উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সেই সময়ে সরকারে গিয়েছিলেন। আমিও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক না থাকার পরও তাদেরকে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত করে এক ধরনের অপপ্রচার এবং তাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বলব এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে যারা গিয়েছে, সরকার থেকে তারা বের হবেন বা আদৌ বের হবে কি না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের প্রত্যাশা, গণঅভ্যুত্থানের বৈধতাসহ আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নের ছাত্র উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টা একত্রে কাজ করবেন। দুজন ছাত্র উপদেষ্টাকে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত করে যে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমরা তার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা উচিত। বিচার সংস্কার এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ একত্রে ঘোষণা করা দরকার। সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু সমাধানে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীলভাবে আলোচনা করতে হবে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কথা ভেবে আমাদেরকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। নাহিদ বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা যদি আগেই প্রকাশ করা হতো তাহলে জনমনে শঙ্কা তৈরি হতো না। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারত না। আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনীতির একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা দেখেছি। এটা সুখকর নয়। বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। যে সব সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে অনেকেই গ্রেফতার হয়নি বা কী অবস্থায় আছে আমরা জানি না। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কাজেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থাটা তৈরি করতে হবে অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে বলে আমরা মনে করি। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মধ্যরাতে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি বৈঠক, নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত

একসময়ের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যেকার দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে আবারও নির্বাচনী সমঝোতার আভাস মিলেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাতে দল দুটির শীর্ষ নেতারা এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এই বৈঠকেই জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়কাল নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তারা। রাজধানীর রমনার একটি বাসায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির আমির শফিকুর রহমান এবং বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও বৈঠকে অংশ নেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে বিরাজমান সংকট এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে তিন দলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার একপর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অভিন্ন অবস্থানে আসে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হলেও, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সরকারকে সময় দেওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করে দল দুটি। যদিও বৈঠকের বিষয়টি কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ এবং জামায়াতের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যে এই সমঝোতার ইঙ্গিত স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, সরকার ডিসেম্বরে বা তার দুই মাস পরেও নির্বাচন দিলে জামায়াতের আপত্তি থাকবে না, তবে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী ও সংস্কারের রোডম্যাপ প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল, যেখানে জামায়াত সংস্কারকে প্রাধান্য দিচ্ছিল। এই নতুন সমঝোতা পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দল দুটির মধ্যে বরফ গলার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা পূর্বে সংঘাত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তবে, এনসিপি নির্বাচন প্রশ্নে তাদের পূর্বের অবস্থানেই রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিচার-সংস্কারের মধ্য দিয়েই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের সরকার। আমরা মনে করি, এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের পরে তৈরি হয়েছে তাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়বদ্ধতা রয়েছে। গণহত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের মধ্য দিয়েই সরকারকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা উচিত। বিচার সংস্কার এবং নির্বাচনী রোড ম্যাপ একত্রে ঘোষণা করা দরকার। সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু সমাধানে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীলভাবে আলোচনা করতে হবে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কথা ভেবে আমাদেরকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা যদি আগেই প্রকাশ করা হতো তাহলে জনমনে শঙ্কা তৈরি হতো না। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারতো না। আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনীতির একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা দেখেছি। এটা সুখকর নয়। বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। যে সব সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে অনেকেই গ্রেঢতার হয়নি, বা কি অবস্থায় আছে আমরা জানি না। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কাজেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থাটা তৈরি করতে হবে অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে বলে আমরা মনে করি। সরকারে থাকা দুইজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা গিয়েছে। এটা তাদের সিদ্ধান্ত তারা সরকার থেকে বের হবে কি না। দুইজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে আমরা এটির তীব্র নিন্দা জানাই।

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ওপর আস্থা আছে জামায়াতের: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের ৯ মাস পার হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে দিতে চান। আমরা তার কথায় বিশ্বাস রাখতে চাই। শনিবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে মগবাজারে ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন হয়। সেখানে তিনি আরও বলেন, আমরাই তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি তো জোর করে এই দায়িত্ব নেননি। আমাদের দায়িত্ব তাকে সহযোগিতা করা। সংঘাত-কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে জাতিকে আর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া সমীচীন হবে না। এর জন্য প্রয়োজন অর্থবহ ডায়ালগ। এটার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যতটুকু সম্ভব তাকে সহযোহিতা করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার যেহেতু আমাদের সবার সরকার। আসুন আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করি। সরকার যদি এই সহযোগিতা গ্রহণ করে তাহলে সমস্যা সমাধান সুন্দরভাবে হবে। জামায়াত আমির বলেন, বর্তমানে দেশে চলমান পরিস্থিতির কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আমরা মনে করি অর্থবহ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই বর্তমান সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। আমরা এখন জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। আমরা বিচলিত না হলেও সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলাম কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাই সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের জন্য। জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আশা করি সেই বৈঠকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে। আওয়ামী লীগের নানা ধরনের অন্যায়ের উদাহরণ টানার পর তিনি বলেন, ৭১ থেকে এই পর্যন্ত অনেক কিছু অর্জন করার ছিল। হয়ত অনেক প্রত্যাশা পূরণও হয়েছে। কিন্তু স্বাধীন দেশে জনগণের মূল জায়গায়গুলো ফাঁকা থেকে গেছে। দেশে অনেক কিছুই হয়নি। ২৪ এ নির্মম কায়দায় যা করা হয়েছে তার সাক্ষী বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা টানা ১৫ বছর দুঃশাসন উপহার দিয়েছেন। একটি ভালো নির্বচানের প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, আমরা দুটা রোডম্যাপ চেয়েছিলাম। একটা সংস্কারের ও আরেকটি নির্বাচনের। কিন্তু কোনো রোডম্যাপ আসেনি। আমরা দাবি জানাই, রোডম্যাপ প্রকাশ করা হোক। তাহলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দুটি রোডম্যাপ জরুরি। আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না। বিচার না হলে অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। বিচারের নামে অবিচার আমরা চাই না। মানবিক করিডোরের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বলেছি এর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত। এটা তাড়াহুড়ো করে করা যাবে না। এখন দেশে পার্লামেন্ট নেই। সব পক্ষের সঙ্গে না বসে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। রাজনৈতিক দল, সিকিউরিটি এক্সপার্টের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। সব থেকে ভালো হয় নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। চট্টগ্রাম পোর্টের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের লাইফলাইন এই বন্দর। দেশের বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সেনাবাহিনীর নানা কাজের প্রশংসা করে জামায়াত আমির বলেন, কোনো কার্যক্রমের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক তা চাই না। সেনাবাহিনীকে নিয়ে যেকোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকা উচিত।

ড. মোশাররফের নেতৃত্বে যমুনায় যাবে বিএনপির প্রতিনিধি দল

রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের শিডিউল পেয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আজ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যাবে। সকালে বিএনপির পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপি মহাসচিব চিকিৎসার জন্য বর্তমানে থাইল্যান্ডে রয়েছেন। এজন্য দলের স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রতিনিধি দলে আমীর খসরু মাহমুদ, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই বিএনপি একাধিকবার সরকারপ্রধানের সাক্ষাৎ চেয়ে পায়নি বলে খবর বের হয়। এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকের শিডিউল ঠিক করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আজ সন্ধ্যায় দুই দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশে আর কোনো এক-এগারো হবে না : রাশেদ খান

বাংলাদেশে আর কোনো এক-এগারো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। শনিবার (২৪ মে) সকালে ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো ১/১১ হবে না। এসব গুজব ছড়িয়ে মূলত জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করা হচ্ছে। এসব কথা যারা বলছে, তারাই মূলত ১/১১ চায় কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ। কারণ তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে আছে ১/১১ এর কুশীলবরা। তাদের পরামর্শেই এসব আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ সংশয় থেকে যায়।’ তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা কেউ থামাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। আমাদের সবার প্রত্যাশা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেই ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা শুরু করবে এবং নতুন ইতিহাস রচনা করবে। আর সেজন্য রাজনৈতিক সহনশীলতা ও ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।’