
আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গুলশান এভিনিউ ১৯৬ নম্বরের বাসভবনে উঠবেন তিনি, যা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’র পাশেই অবস্থিত।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তারেক রহমানের জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, গুলশানের আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন জানান, তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে জাতীয় রিল-মেকিং প্রতিযোগিতা শুরু করা হচ্ছে।
তারেক রহমানের সঙ্গে তার মেয়ে জাইমা রহমানও ঢাকায় ফিরবেন। বিএনপি ইতিমধ্যে তার আগমনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা তারেক রহমানকে সংবর্ধনা জানাবেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের আগে তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডন যাচ্ছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমাদের নেতার অপেক্ষা আছে দেশবাসী। সেদিন দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবে। আমরা সেই প্রস্তুতির কাজ করছি।”
গত সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তারেক রহমানকে কীভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভার সভাপতিত্ব করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমানের বাসভবন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে গুলশান এভিনিউ ১৯৬ নম্বরের বাড়ি। এই বাড়িটি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৫ জুন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজুর মাধ্যমে বাসার দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বর্তমানে বাড়ির সংস্কার কাজ চলছে। সীমানা প্রাচীর ও অভ্যন্তর সাদা রঙে রঙানো হয়েছে, কক্ষগুলোতে নতুন দরজা ও জানালা বসানো হচ্ছে। বাড়ির সামনে নিরাপত্তা ছাউনি স্থাপন করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সংস্কারের পর নতুন ফার্নিচার দিয়ে বাসাটি সজ্জিত করা হবে।
গুলশানের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আগে মহাসচিব ব্যবহার করতেন। কার্যালয়ের প্রধান ফটক নতুন করে বসানো হয়েছে এবং নিরাপত্তার জন্য ছাউনি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও তার জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, “গুলশানে নতুন অফিসের সংস্কার কাজ চলছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা কক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে।”
৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি বাড়িটি বিএনপি অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। চার তলা ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় ব্রিফিং রুম এবং অন্যান্য তলায় বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা বসবাস করবেন। এখানে একটি গবেষণা সেলও আছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শাইরুল কবির খান বলেন, “আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, তারা অধীর আগ্রহে সময় গুনছি কখন আমাদের প্রিয় নেতা ঢাকায় পা রাখবেন। আমাদের সকল প্রস্তুতি তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে। ইনশাআল্লাহ দেশের মানুষ যেমন প্রত্যাশা করছে, আমরা বিশ্বাস করি আমাদের নেতা হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন।”
মাহাদী আমিন সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, “এটি বিএনপির একটি কার্যালয়। এখান থেকে নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আগামী ২৫ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে জনগণের মধ্যে তীব্র আবেগ ও আগ্রহ রয়েছে।”