আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ: নজরুল ইসলাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:১৮ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, স্বায়ত্তশাসন, গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর ছাত্র আন্দোলন এবং চব্বিশের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে অনেক জীবন দিয়েছে। এত জীবন দেওয়ার পর এখনো অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে?
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ, আর কত লড়াই করবে এ দেশের মানুষ? মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে ওঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, ধীরে ধীরে মানুষ উন্নত হয়। ধীরে ধীরে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দেশে শ্রম আইনে আছে সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে, কিন্তু আমাদের দেশে যত শ্রমিক আছে তার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শ্রমিকও নিয়োগপত্র পায় না। তাদের গ্রাচ্যুইটি, সুবিধা কোনোটাই দেওয়া হয় না, যা শ্রম আইনে লেখা আছে। যারা শ্রমিককে কম মজুরি দেয় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি বা অভিযোগ দেওয়ার কোনো মেকানিজম নেই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের নারী, শিশু, যুবক, শ্রমিক সবার জন্য আইন আছে। কিন্তু তারা কি আইনের বিষয়ে কিছু জানেন, বোঝেন বা সুফল ভোগ করতে পারেন? রাজনৈতিক দলের যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের উচিত সবাইকে আইন বুঝিয়ে দেওয়া, আইনের সুফল বোঝানো। আর যদি তা না করা হয়, সাধারণ মানুষ সেই তিমিরেই থেকে যাবে।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে তারা যদি আইন প্রয়োগে কোনো ভুল করে, ইচ্ছাকৃত ভুল এবং তারা যদি অন্যায়ভাবে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান কোথায়? সংস্কার কমিশনে আলাপ হচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আমাদের যে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো বিশাল ক্ষমতার অধিকারী যারা, তাদের কী হবে? হয় তারা পদত্যাগ করেন কিংবা তাদের অবসর দেওয়া হয়। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ একটা দেশের বা অন্য একটা মানুষের কতই বা ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু যারা বড় বড় পদে বসে আছেন, যারা বড় বড় দায়িত্ব পালন করছেন, তারা তো এই দেশ এবং দেশের মানুষের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারেন।
তিনি বলেন, সব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এই যে সুরক্ষা আইন, এসব আইন যারা কার্যকর করবে, যারাই ক্ষমতার অধিকারী হবে রাষ্ট্রের মাধ্যমে- তাদের প্রত্যেককেই দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহির আওতায় রাখতে হবে। আর সে কারণে তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন কিংবা অপরাধমূলক কোনো কাজে যুক্ত হন, তাহলে তাদের যেন শাস্তি হয়। সেই বিধান যেন সব আইনে থাকে এমন একটা দাবিও আমাদের থাকা দরকার। তা না হলে আইনের ভাষা যত সুন্দরই করি, আমাদের যত আকাঙ্ক্ষা আমাদের আইনের কাগজ দ্বারা লিপিবদ্ধ করি না কেন তাতে সাধারণ মানুষের কল্যাণ হবে না।