রাজধানী ঢাকা এখনও ফাঁকা, বাসে নেই ভিড়

ঈদুল আজহার ছুটি এখনো চলছে। এর মধ্যেই রাজধানীমুখী মানুষের ফিরতি যাত্রা শুরু হয়েছে অল্প পরিসরে। তারপরও ঢাকা এখনও অনেকটাই ফাঁকা। নগরজীবনে ফেরেনি স্বাভাবিক গতি। বিভিন্ন সড়ক, টার্মিনাল, বাজার, এমনকি জনবহুল এলাকাগুলোতেও নেই সেই চিরচেনা ভিড়। এছাড়া শহরের গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম, অধিকাংশ বাসেই যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) ঈদের চতুর্থ দিন রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার টার্মিনালগুলোতে দূরপাল্লার বাসগুলো আসছে ঠিকই, কিন্তু যাত্রী কম। যারা ফিরছেন, তারাও মূলত ঈদের ভিড় এড়িয়ে আগেভাগেই রাজধানীতে পৌঁছাতে চাইছেন। ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতেও ছিল একই চিত্র। ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, মতিঝিল, বাড্ডা, উত্তরা, মিরপুর সব জায়গাতেই ঈদের ছুটির স্পষ্ট প্রভাব রয়েছে। যত্রতত্র গাড়ির সারি নেই, ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে থাকার চাপ নেই, পথচারীদের ভিড়ও কম। ভিআইপি সিটি সার্ভিস বাসের চালক বাবু বলেন, আজ সকাল থেকে রাস্তা ফাঁকা দেখেছি। যানজট তো একেবারেই নেই। ঈদের সময় শুধু এমন খালি রাস্তা দেখা যায়। যাত্রী কম থাকায় তেমন ভাড়াও পাওয়া যায়নি। খিলক্ষেত বাস স্ট্যান্ডে কথা হয় দুরুল হুদার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাড়ি থেকে ট্রেনে বিমানবন্দরে নেমে বাসে খিলক্ষেত এলাম, এখানেই বাসা। ঢাকা এখনও ফাঁকাই দেখা যাচ্ছে। বাসে কোনো ভিড় নেই। ট্রেনেও কোনো ভিড় নেই। মানুষজনের ঢাকায় আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তুরাগ বাসের যাত্রী মাহমুদুল হাসান বলেন, আজ সকালেই বোর্ড বাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। সাধারণত এই সময়টায় বাসে তিল ধারণের জায়গা থাকত না। কিন্তু আজ চিত্রটা পুরো উল্টো। বাসে উঠে দেখি অনেক সিট খালি, দাঁড়িয়ে থাকারও প্রয়োজন হয়নি। ভালোভাবে বসেই পুরোটা পথ আসতে পেরেছি। 'যদিও বাসে ভিড় ছিল না, তবে যাত্রীর জন্য প্রতিটি স্টপেজে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। কারণ, রাস্তায় যাত্রী নেই বললেই চলে। যাত্রী তুলতে বাসও অপেক্ষা করছে।' এদিকে, সরকারি অফিসসহ অনেক বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম এখনও বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটি চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। অফিস খুলবে ১৫ জুন। ফলে রাজধানীর প্রশাসনিক ও আর্থিক কেন্দ্রগুলো যেমন মতিঝিল, আগারগাঁও বা উত্তরা অফিস পাড়া সব জায়গায় একপ্রকার নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি চলছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, ১৩ ও ১৪ জুন থেকে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় বাড়বে এবং ১৫ জুন থেকে ধীরে ধীরে পুরোনো চেহারায় ফিরবে রাজধানী ঢাকা।

ডাকাতি বন্ধে জনগণকে সচেতন হতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ডাকাতি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি জনগণকে জনগণকে সচেতন হতে হবে। সবাই চেষ্টা করলে ডাকাতি অবশ্যই বন্ধ হবে। সোমবার (৯ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা পরিদর্শন শেষে একথা বলেন তিনি। সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে গ্রেপ্তার করা কেন হয়নি তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারাই তো বলেছেন আগে তদন্ত করে যে দোষী তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। যে নির্দোষ সে যেন শাস্তি না পায়। তার তো তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে সে দোষী হলে শাস্তি পাবে আর নির্দোষ হলে ছাড়া পাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাকে বিদেশে যেতে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেই তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী তারা নির্দোষ হলে ছাড়া পাবে আর দোষী হলে শাস্তি পাবে। মাদক ও ডাকাতির ব্যাপারে আপনারা জনগণকে সচেতন করবেন। এইবার দেশবাসী শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করেছেন।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে ব্যাংকের অবস্থা কি ছিল তা আপনারা জানেন। এখন ভালো হচ্ছে। আমরা পুলিশের জন্য ২শ গাড়ী ক্রয় করছি। পরে প্রত্যেকটি থানার জন্য গাড়ী দেওয়া হবে।’ এই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তাসনিম বেগম, আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন, ওসি (তদন্ত) সাইফুউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি পুলিশ সদস্যদের নিজ এবং পরিবারের সদস্যদের খবর নেন। https://www.deshrupantor.com/598092

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ উপলক্ষ্যে ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা মহড়া

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বনাম সিঙ্গাপুর জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যকার আসন্ন ম্যাচ উপলক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) সকালে জাতীয় স্টেডিয়াম মাঠ গুলিস্তানে এই নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের নেতৃত্বে সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল টিম এবং কে-নাইন টিম অংশগ্রহণ করে। মহড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার কৌশল ও সক্ষমতা প্রদর্শন এবং সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি যাচাই করা। ম্যাচ চলাকালে দর্শক এবং খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ফুটবল ম্যাচ উপলক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবসময় প্রস্তুত থাকবে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াট ও ক্যানাইন ইউনিট। খেলা উপলক্ষ্যে আসা সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বনাম সিঙ্গাপুর জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচটি মঙ্গলবার (১০ জুন) জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

জুলাই মামলায় তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মামলায় তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (৯ জুন) যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন ও ঈদে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের অনেক মামলার তদন্ত হয়নি। তদন্ত শেষে যিনি অপরাধী প্রমাণিত হবেন তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। নির্দোষ কোনও ব্যক্তি যাতে সাজা না পায়। তাই তদন্ত সাপেক্ষে দোষী সাব্যস্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। আইনের বাইরে কেউ নয়।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ ঈদে রাজধানীসহ দেশের কোথায় বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। সড়ক দুর্ঘটনায় কিংবা ছোটখাটো দুই-একটা চুরি ছাড়া কোনও ঘটনা নেই। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’ মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আজ আমরা এখানে এসেছি দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাদের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি দেখার জন্য। তারা জানিয়েছেন তাদের দুপুরের ও রাতের খাবার একই, তবে দাম ভিন্ন। তাই আমরা বলেছি, একই মূল্য ধরার জন্য। এছাড়াও একজন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) খাবারের সময় দেখবালে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যাতে ঈদে তাদের খাবারের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা হয়।’

আকস্মিক দুর্ঘটনায় বিমানের ক্যাপ্টেন সাইফুজ্জামানের মৃত্যু

বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৮৭ এর ক্যাপ্টেন মো. সাইফুজ্জামান কানাডায় আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি রোববার কানাডার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৬ মিনিটে মারা যান বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। আজ এক শোক বার্তায় মো. সাইফুজ্জানের অকাল মৃত্যুতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স লিমিটেড পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করেছে। শোক বার্তায় বলা হয়েছে, ক্যাপ্টেন মো. সাইফুজ্জামান তাঁর পেশাগত দক্ষতা, দায়িত্ববোধ ও অঙ্গীকার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স লিমিটেডের জন্য ছিল গর্বের বিষয়। তাঁর এই অকাল প্রয়াণে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স লিমিটেড পরিবার তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়। তাঁর পরিবারের অভিপ্রায় অনুযায়ী মরদেহ বাংলাদেশে আনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স লিমিটেডের টরন্টো অফিস কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা সন্ধ্যায় লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে আজ সন্ধ্যায় লন্ডন রওনা হবেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট আজ সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।’ গত ৪ জুন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক সফর সম্পর্কে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টাকে রাজা তৃতীয় চার্লসের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হবে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, অন্যান্য সিনিয়র মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, অধ্যাপক ইউনূসকে রাজা তৃতীয় চার্লস ‘কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’-এর জন্য মনোনীত করেছেন। জনগণ এবং পরিবেশের মধ্যে শান্তি, স্থায়িত্ব এবং সম্প্রীতি প্রচারে তার আজীবন কাজের সম্মানার্থে তাঁকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। ১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য কিংস ফাউন্ডেশন তৎকালীন প্রিন্স অফ ওয়েলসের প্রতিষ্ঠিত একটি যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা। প্রতি বছর টেকসই উন্নয়ন এবং মানবিক কারণে অনুকরণীয় সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তিদের এই মর্যাদাপূর্ণ পুরষ্কার প্রদান করে দ্য কিংস ফাউন্ডেশন। সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) মহাসচিবদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তর আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরবেন। তার জনসাধারণের কূটনীতি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি ১১ জুন রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ ভাষণ দেবেন। প্রধান উপদেষ্টা ১৪ জুন দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ঈদের তৃতীয় দিনেও রাজধানী ছাড়ছে মানুষ

ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন আজ সোমবার (৯ জুন)। আজও রাজধানী ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে। সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বাস কাউন্টার ম্যানেজাররা জানিয়েছেন যাত্রী পূর্ণ করেই ছাড়ছে বাস। কোরবানির ব্যস্ততা, যানজট এড়ানোসহ নানা কারণে ঈদের তৃতীয় দিন ঢাকা ছাড়ার সংখ্যা বেশি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানি ঈদের পরে কয়েকদিন যাত্রীর চাপ থাকে। সকাল থেকে ১৭টা গাড়ি গেছে বিভিন্ন গন্তব্যে। কোন গাড়ি খালি যায়নি। স্টার এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার হৃদয় বলেন, সকাল থেকে ২টা গাড়ি গেছে। একটা পৌনে ৭টায়, আরেকটা পৌনে ৮টায়। কোন সিট খালি যায়নি। এখন রাস্তায় যানজট নেই। রিলাক্সে যাওয়া যায়, রাস্তায় ভিড় ভাট্টা নেই। অনেকে ঢাকায় কোরবানি দেয়। এ জন্য ঈদের পরও মানুষ ঢাকা ছাড়ছে, যোগ করেন তিনি। রাজধানীর কচুক্ষেতে কসমেটিকসের ব্যবসা করেন সাজ্জাদ হোসেন। তিনি তার স্ত্রী কন্যা ও ছেলেকে নিয়ে বগুড়া যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এবার প্রথম ঢাকাতেই কোরবানির ঈদ পালন করেছি। মা এবং অন্যদের সঙ্গে ঈদ করতে আজ যাচ্ছি। চাঁদ রাত পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হয়। এছাড়া ঈদের সময় যাওয়া অনেক কষ্টের তাই এবার ঈদের পরে যাওয়া হচ্ছে। ঈদের একদিন আগে ঢাকায় কসাইয়ের কাজ করতে আসেন মানিক। তার বাড়ি দিনাজপুরের বাদুর বাজার এলাকায়। তার সঙ্গে কথা হয় গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে। তিনি বলেন, গত দুইদিন কসাইয়ের কাজ করেছি। খুব ভালো আয় হয়েছে। প্রতিবছর ঈদের এক দিন আগে ঢাকায় আসি। তারপর ঈদের দুই দিন পর চলে যাই। ৩০-৪০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। এই টাকা দিনাজপুরে আয় হয় না। এদিকে, জীবিকার তাগিদে অনেকেই ঈদের তৃতীয় দিনে ঢাকায় ফিরছেন। ছোট ভাইকে নিয়ে রাজবাড়ী নতুন বাজার থেকে ঢাকায় ফিরেছেন মিলন। যাত্রাপথে কোনরকম ঝক্কি ঝামেলা হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, অন্য সময় ৫-৬ ঘণ্টা লাগে ঢাকায় ফিরতে আজকে ৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকায় ফিরতে পেরেছি। ছোট ভাইয়ের মাদরাসা খোলা তাই তাকে নিয়ে ফিরতে হয়েছে। আমিও কর্মস্থলে যোগ দেবো।

সাবেক সংবাদ উপস্থাপকের অস্বাভাবিক মৃত্যু, কারণ জানতে তদন্ত করছে পুলিশ

সাবেক সংবাদ উপস্থাপক সাফিনা আহমেদের (তরী) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৮ জুন) তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ। তার আগে রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এদিকে, সাবেক এই সংবাদ উপস্থাপকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। এরইমধ্যে এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে থানায়। সোমবার (৯ জুন) হাতিরঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাজু বলেন, আসলে তার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর। মরদেহ এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে রয়েছে, সেখানে তদন্ত করা হবে। এ ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন করতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। পরিবারের বরাতে পুলিশ সূত্র জানায়, সাফিনা আহমেদ চ‍্যানেল ২৪ ও আরটিভিতে সংবাদ উপস্থাপকা হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি ব্র্যাক ব‍্যাংকে কর্মরত ছিলেন। বোন ও মায়ের সঙ্গে তিনি রাজধানীর ইস্কাটনে থাকতেন। রোববার হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু গণমাধ্যমকে বলেন, মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাতিরঝিল থানাকে হাসপাতালে থাকা মরদেহের বিষয়ে জানায়। পরে পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুগদা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের ৬ অঞ্চল, গরম আরও বাড়বে

রাজশাহী, রংপুর, খুলনা বিভাগসহ ফেনী ও ময়মনসিংহ জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এমন অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়তে পারে। ফলে দেশজুড়ে গরমের অনুভূতি আরও কিছুটা বাড়তে পারে। সোমবার (৯ জুন) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এমন অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বুধবার (১১ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে ওইদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ওইদিনও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে। অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহের শেষদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

আজ থেকে সচিবালয় ও যমুনা এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে আজ সোমবার (৯ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো.সাজ্জাত আলীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জনশৃঙ্খলা এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ০৯ জুন ২০২৫ খ্রি., সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড়, মিন্টু রোড) যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো। এর আগে গত ১৫ মে প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ রাজধানীর ৯ স্থানে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ করে ডিএমপি।এছাড়া গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপি। তার আগে গত ১৭ মে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর, ঢাকা সেনানিবাসসহ আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

ঈদের তৃতীয় দিনও চলবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ঈদের তৃতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। একইসঙ্গে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন কোরবানি করা পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রোববার (৮ জুন) দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, ঈদের দিনসহ পরবর্তী দুই দিন অর্থাৎ মোট তিন দিন ধরে কোরবানি হয়ে থাকে। সেই অনুযায়ী দ্বিতীয় দিনেও পশু কোরবানি হয়েছে এবং স্বাভাবিকভাবেই সেদিনও বর্জ্য তৈরি হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিনে কোরবানি করা পশুর বর্জ্য নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সেটি দ্বিতীয় দিনের কোরবানি করা পশুর বর্জ্য। তবে অনেকেই সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি না করলেও সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শেষ হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ঈদের তৃতীয় দিনেও চলমান থাকবে বলেও জানান উপদেষ্টা। এর আগে ঈদের দিন দিবাগত রাতে আসিফ মাহমুদ এক পোস্টে উল্লেখ করেন, সব সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ৩৫ হাজার ২৭২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ঈদ আনন্দ বিসর্জন দিয়ে সুন্দর করেছেন আমাদের ঈদ উদযাপন। এজন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনও কোরবানি করা যায়। তাই অনেকেই আজও কোরবানি করবেন। তাই সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনগুলোর পক্ষ থেকে ঈদের তৃতীয় দিনেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে।

এবার পশুর চামড়ার দাম বেশি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার পশুর চামড়ার দাম বেশি বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। রোববার (৮ জুন) পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, গেল বছরগুলোর তুলনায় এবার চামড়ার দাম বেশি। লবনবিহীন চামড়ার ন্যায্য মুল্য না পেলে এতে সরকারের দায় নেই, এর মূল্য ঠিক করবে বাজার ব্যবস্থাপনা। এ সময় আধাপচা চামড়া কম দামে বিক্রি হওয়া নিয়ে অপপ্রচার চলছে বলেও জানান তিনি। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লবণ দেওয়া চামড়া সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করছে। কিন্তু চামড়ার দাম নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়াদের সঙ্গে মিলে চামড়ার বাজারে ধস নামানোর পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই না। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শে এ বছর চামড়া সংরক্ষণ ও মজুদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে, কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এ ছাড়া ঢাকায় সর্বনিম্ন কাঁচা চামড়ার দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা।

ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। রোববার (৮ জুন) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের চিঠিগুলো শেয়ার করা হয়। ৪ জুন পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই পবিত্র উৎসব সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং লাখো ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ এই উৎসব অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে উদ্‌যাপন করেন। এটি আমাদের ত্যাগ, করুণা ও ভ্রাতৃত্বের চিরন্তন মূল্যবোধের কথা মনে করিয়ে দেয়, যা একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠনে অপরিহার্য। শুভেচ্ছাবার্তায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতাও কামনা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার উত্তরে শুক্রবার (৬ জুন) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার এই শুভ উপলক্ষে আপনার (মোদি) চিন্তাশীল বার্তা, আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দনের জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। আমি এই পবিত্র ঈদ উপলক্ষে আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে ভারতের জনগণকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই। পবিত্র ঈদুল আজহা এমন একটি উৎসবের সময়, যা মুসলিম সম্প্রদায়কে উৎসব, ত্যাগ, উদারতা ও ঐক্যের চেতনায় একত্রিত করে এবং বিশ্বব্যাপী জনগণের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য একসাথে কাজ করতে আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে। আমি বিশ্বাস করি যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতার চেতনা আমাদের জনগণের কল্যাণের জন্য একসাথে কাজ করতে নির্দেশনা দেবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এও বলেন, এই পবিত্র ঈদে আমি আপনার (মোদি) সুস্বাস্থ্য ও সুখ এবং ভারতের জনগণকে শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।

এবারও চামড়া নিয়ে হতাশা, লোকসানের শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে এবারও হতাশা দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে বিকোচ্ছে গরু ও ছাগলের চামড়া। দাম কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম গতবারের চেয়ে এবার ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। তবে তার প্রভাব পড়েনি বাস্তবে। কোথাও কোথাও আগের বারের মতো এবারও কম দামে গরুর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। কেউ কেউ বলছেন, চামড়া বিক্রি হয়েছে গতবারের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। গত ২৬ মে কোরবানি পশুর চামড়ার এই দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০-৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা।এছাড়া ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে ট্যানারি পরিচালক ও এজেন্টরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণ দেওয়া প্রস্তুতকৃত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ট্যানারি থেকে কাঁচা চামড়া কেনায় দাম কম পড়েছে। তবে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় সব চামড়া কেনা হয়েছে; এমন তথ্য ভুল দাবি করেছেন তারা। অনেক ভালো মানের চামড়া এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায়ও কেনা হয়েছে বলে জানান ট্যানারি সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিনে রাজধানীর চামড়ার বাজারগুলো ঘুরে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত দরে চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। গত বছরের কাছাকাছি দরে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। কুরবানিদাতাদের থেকে তারা সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়। আর ছাগলের চামড়া কেনায় ব্যবসায়ীদের কোনো আগ্রহ নেই বলেই দেখা গেছে। এবারের ঈদে সব মিলিয়ে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিকরা। যার সিংহভাগ সংগ্রহ হয়েছে ঈদের প্রথম দিনেই। ঈদের দিন কাঁচা চামড়া আসার এই হারও ছিল সন্তোষজনক। যদিও গতবারের চেয়ে প্রতি পিস চামড়া কিছুটা বেশি দরে কিনছেন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, চামড়া বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য মেলেনি। গতবারের চেয়েও দাম কম। সাধারণত বড় আকারের গরুর চামড়া ৩১-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা।পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তগুলো কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের অন্যতম বড় জায়গা। সেখানে শনিবার বিকেলে বড় ও মাঝারি আকারের গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৭০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মোহাম্মদপুর, সায়েন্স ল্যাব ও হাজারীবাগ এলাকায় একই দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। গত বছরও প্রায় একই রকম দাম ছিল।শনিবার বিকেল থেকে সরেজমিন পোস্তা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে শনিবার দুপুরের পর পোস্তায় কাঁচা চামড়া আসতে শুরু করে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিনিধিরা ট্রাক, ভ্যান ও রিকশায় করে কাঁচা চামড়া নিয়ে আসেন। আড়তদারেরা সেই চামড়া দরদাম করে কেনেন। কেনার পর আড়তে সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের কাজটি করেন শ্রমিকরা।পোস্তায় শহীদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত শতাধিক চামড়া কিনেছেন। এবার ৬০০-৯০০ টাকায় চামড়া কিনছেন। উত্তরার চামড়া ব্যবসায়ী হেফাজ উল্লাহ বলেন, কুরবানিদাতাদের থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া সংগ্রহ করে রীতিমতো বিপদে পড়তে হয়েছে। এই এলাকায় ভালো মানের চামড়ার দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা। এর ওপরে কোনোভাবেই চামড়া বিক্রি করা যায়নি। খিলক্ষেতের চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন, ‘আগে জানলে এত দাম দিয়ে চামড়া কিনতাম না। প্রতিবারই ট্যানারি মালিকরা চামড়ার দাম দিতে অনাগ্রহ দেখায়। এতে আমাদের মধ্যেও দাম দিয়ে চামড়া কেনার প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।’ সুমন অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মো. শরীফ জানান, প্রতি পিস গরুর চামড়া ৬৫০-৮০০ টাকায় কিনছেন। একেকটি চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ খরচ পড়ে যাবে ৩৫০-৪০০ টাকা। বাজার মন্দা, সে জন্য গতবারের চেয়ে কিছুটা কমে কিনছেন। ঢাকার কলাবাগান এলাকা থেকে গরুর ১৩ পিস কাঁচা চামড়া গতকাল বিকেলে বিক্রির জন্য সায়েন্স ল্যাব এলাকায় নিয়ে আসেন মৌসুমি ব্যবসায়ী কাউছার আহমেদ। ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কেনা একেকটি চামড়া বিক্রির জন্য দাম চান ১ হাজার ২০০ টাকা করে। তবে আড়তদার বা ট্যানারির মালিকের প্রতিনিধিদের কেউই ৭৫০ টাকার ওপরে দাম দিতে চাননি। শেষ পর্যন্ত ৭৫০ টাকা দরেই সব চামড়া বিক্রি করেন কাউছার। কাউছার আহমেদ বলেন, ‘যে আকারের চামড়া আমি বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি, সেগুলোর দাম হওয়া উচিত ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু একপ্রকার লোকসান করেই চামড়া বিক্রি করতে হলো। সারাদিনের ভ্যান ভাড়া আর একজন সহকারীর মজুরি দিয়ে কিছুই থাকবে না।’ সায়েন্স ল্যাব এলাকাতেই মৌসুমি বিক্রেতাদের কাছ থেকে চামড়া কিনে রাখছিলেন কালাম ব্রাদার্স ট্যানারির পরিচালক সাজেদুল খায়ের। এবার তারা দেড় লাখ পিস লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করবেন। এ ছাড়া কোরবানি ঈদের দুই দিনে নিজেরা ১০ হাজারের মতো কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করবেন।মোহাম্মদপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লবণ ছাড়া বড় ও মাঝারি গরুর কাঁচা চামড়া ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর যেসব গরুর চামড়া আকারে তুলনামূলক ছোট ও মান কিছুটা খারাপ, সেগুলো ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে, গতবারের মতো এবারও ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই বললেই চলে। অনেকেই বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে দিয়েছেন, অনেকক্ষেত্রে দাম উঠেছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। সায়েন্স ল্যাব এলাকায় সড়কের পাশে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ছাগলের চামড়া থেকে মাংস ছাড়াতে দেখা গেল। তাদের মধ্যে কয়েকজন জানালেন, ছাগলের চামড়ার কোনো দাম নেই। তারা বিনামূল্যেই চামড়াগুলো পেয়েছেন। রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্পকে দূষণমুক্ত পরিকল্পিত শিল্পনগরে স্থানান্তরের জন্য ২০০৩ সালে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। ২১ বছরেও এই চামড়াশিল্প নগরকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা যায়নি। সাভারের হেমায়েতপুরের ২০০ একর জমিতে গড়ে ওঠা এই চামড়াশিল্প নগরের সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার) পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় পাশের ধলেশ্বরী নদী দূষণের শিকার হচ্ছে। চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, হেমায়েতপুরের চামড়াশিল্প নগরের দূষণ বন্ধ না হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকার বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি বাংলাদেশি চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশি চামড়ার বড় ক্রেতা বর্তমানে চীন। তারা মূল্য কম দেয়।সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা। তারপর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বড় ধরনের ধস নামে। ন্যূনতম দাম না পেয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে ও মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তাতে প্রায় ২৪২ কোটি টাকার চামড়ার নষ্ট হয়।

লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে চান টিউলিপ সিদ্দিক

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক আগামী সপ্তাহে লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন। রবিবাার (৮ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, একটি চিঠি পাঠিয়ে এই অনুরোধ করেছেন টিউলিপ। চিঠিতে ব্রিটিশ এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগের বিষয়ে এই বৈঠকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে চান তিনি। টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করেছেন। তার খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। দুদক দাবি করেছে, টিউলিপ বা তার মা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে’ অবৈধভাবে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট পেয়েছেন। সিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার আইনি দল অভিযোগগুলোকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে। তিনি দাবি করেছেন এসব বিষয়ে তার সঙ্গে বা তার আইনজীবীদের কেউ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেনি। চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক ড. ইউনূসকে লিখেছেন, লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয়, তবে আমার মায়ের বোন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও প্রশ্নের উত্তর আমাকে দিতে হবে—তা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক ড. ইউনূসকে লিখেছেন, লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয় তাহলে এই বৈঠক ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিটির সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে পারে। যেখানে আমার খালা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও লিখেছেন, আমি লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের প্রতি আমার আবেগ থাকলেও, আমি সেখানে জন্মগ্রহণ করিনি, থাকি না বা কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই। টিউলিপ অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও জবাব পাননি। উল্টো সংস্থাটি ঢাকার একটি ‘অচেনা ঠিকানায়’ কাগজপত্র পাঠিয়ে যাচ্ছে। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, এই কল্পিত তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হচ্ছে না। সিদ্দিক আরও বলেন, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন, এসব অভিযোগ কীভাবে আমার পার্লামেন্টারি দায়িত্ব ও দেশের প্রতি অঙ্গীকারকে ব্যাহত করছে। গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও সিদ্দিক পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন, বিতর্ক কেয়ার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য ‘বিব্রতকর’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৯ জুন লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের আয়োজনে তাকে কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের সঙ্গে তার কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। ড. ইউনূসের এই সফরে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

রাজধানীর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে সম্পন্ন : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সমন্বিত উদ্যোগে মাত্র ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে সম্পন্ন হয়েছে রাজধানী ঢাকার বিস্তৃত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যারা ঘামের বিনিময়ে এই শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখেন, তাঁরা আমাদের নীরব নায়ক। ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে পরিচ্ছন্ন ঢাকা-এটাই কর্মের শক্তি, এটাই নিষ্ঠার গল্প। তারা প্রচারে নেই, তবে তাদের কাজই শহরের মুখ। কোরবানির ঈদের আসল বীরদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।’ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে মাত্র ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে সম্পন্ন হয়েছে বিস্তৃত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি শুধু দক্ষতা ও কর্মদক্ষতার প্রতিফলন নয়, বরং জনকল্যাণে নিবেদিত স্থানীয় সরকারের দায়িত্বশীলতা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের বাস্তব প্রমাণ।’ এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সরেজমিনে অংশ নেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ। দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ২০ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নগরবাসীর দায়িত্ববোধের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। সেবা কার্যক্রমে যুক্ত প্রত্যেক পরিচ্ছন্নতা যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের জন্য বিশেষ খাবার ও প্রণোদনার কথাও বলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঈদুল আযহা উদযাপন শুরুর প্রাক্কালে বলেন, ‘কোরবানির আনন্দ হোক সুস্থ, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টায়, আমরা পারি ঈদের দিনকেও পরিচ্ছন্ন রাখতে। ত্যাগের এই দিনে আমাদের দায়িত্ব কেবল কোরবানিতেই শেষ নয়, পরিবেশ রক্ষা করাটাও বড় ইবাদত।।আসুন সবাই মিলে নিজ নিজ এলাকার কোরবানির বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ি। পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ আমাদের সকলের।’

ঈদের ফিরতি যাত্রায় ট্রেনে মাস্ক পরার অনুরোধ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ফিরতি যাত্রায় ট্রেন ভ্রমণে যাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এছাড়া যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানানো হয়েছে। রবিবার (৮ জুন) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সিনিয়র তথ্য অফিসার রেজাউল করিম সিদ্দিকী'র সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়তে থাকায়, জনসমাগমপূর্ণ স্থানে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের এমন স্থান এড়িয়ে চলার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঈদের পরবর্তী ট্রেনযাত্রায় সংক্রমণ রোধে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ট্রেন স্টেশন ও চলন্ত ট্রেনেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে।

চালু হয়েছে মেট্রোরেল, মাংস পরিবহন করা যাবে না

পবিত্র ঈদুল আজহার পরদিন রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল চলাচল। সকাল ৮টা থেকে প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে (হেডওয়ে অনুযায়ী)। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে। তবে এই চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পশু কোরবানি চলছে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ঈদের দিন ও পরবর্তী দুই দিন অর্থাৎ ১২ জিলহজ পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ রয়েছে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী সুযোগ থাকায় এবং ঈদের দিন কসাই না পাওয়ায় অনেকেই আজ কোরবানি দিচ্ছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঈদের দিনের কোরবানির পশুর বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। রাজধানীর বাসিন্দারা কোরবানি অব্যাহত রাখলে সোমবার (৯ জুন) পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণের কাজ করবেন। এতে রাজধানীর বাসিন্দারা তাদের সুবিধামতো সময়ে কোরবানি দিতে পারছেন। রোববার (৮ জুন) সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার অল্প পর থেকেই কোরবানির প্রস্তুতি নেন অনেকে। ঈদের আগেই পশু কিনে রেখে আজ তারা কোরবানি দিচ্ছেন। রামপুরার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ ঈদের দিন কোরবানি দেন। এতে কসাইদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। দেখা দেয় কসাই সংকট। তাই আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছি দ্বিতীয় দিনে কোরবানি করবো। তিনি বলেন, আজ খুব নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি। ফজরের নামাজের পরে হুজুর এসে গরু জবাই দিয়ে গেছেন। কসাইরা মাংস বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আশা করছি সকল ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারবো। মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিলে যা হবে ঈদের পরের দিন কোরবানি দিলেও তাই হবে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী তিনদিন কোরবানি দেওয়া যায়। আর কোরবানি দেওয়া প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কোরবানি দিচ্ছি, এখন কবুল করার মালিক তিনি নিজেই। রামপুরার আর এক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছা ছিল ঈদের দিনই গরু কোরবানি দেবো। কিন্তু কসাই না পাওয়ায় আজ কোরবানি দিচ্ছি। শুধু আমরা না, অনেকেই কসাই সংকটে আজ কোরবানি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিতে পারিনি, তা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। তবে অন্যদের কোরবানি দেওয়া দেখে বাচ্চাদের মন একটু খারাপ হয়েছিল। এখন ওরা আবার হাসি খুশি। বাচ্চাদের খুশিই তো আমাদের খুশি। আর কোরবানি দেওয়া হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। কার দোয়া, কার কোরবানি কবুল হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ কেউ জানে না। খিলগাঁওয়ে বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ঈদের দিন এবং পরের দুদিন পশু কোরবানি দেওয়া যায়। কোরবানি দেওয়া জন্য এই তিনদিনই সমান। কোনদিন সওয়াব বেশি কম হওয়ায় সুযোগ নেই। গতকাল যারা কোরবানি দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, আজ আমরা যারা কোরবানি দিচ্ছি তাদের উদ্দেশ্যও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। তিনি বলেন, কোরবানির মাংস তিনভাগ করতে হয়। আমরা ধর্মীয় বিধান মেনে মাংস তিনভাগ করে, যার যা অংশ বুঝিয়ে দেবো। এখন কবুল করার মালিক আল্লাহ। মো. হাসান আরও বলেন, আমাদের গরুর মাংস বানানোর কাজ যে কসাই করছে, গত বছরও এই কসাই দিয়ে কাজ করিয়েছিলাম। এদের কাজ ভালো। গতকাল ওরা অনেক ব্যস্ততা ছিলেন। বিকেলে আমাদের কাজ করতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি বিকেলে না করে আজ করতে। আল্লাহর রহমতে এখন নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি। এদিকে, ঈদের দিনের কোরবানির বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আজ ও আগামীকাল সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণ কাজ চলমান থাকবে।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী মারা গেছেন

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নাসরিন সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসরিন সিদ্দিকীর প্রথম জানাজা রোববার বাদ জোহর টাঙ্গাইলের পিটিআই স্কুল মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে কালিহাতির ছাতীহাটিতে নিজ বাড়িতে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিজ এলাকায় দাফন সম্পন্ন হবে।

‘স্যার আপনাকে ৫ বছর চাই’

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার (৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ শুভেচ্ছা জানানো হয়। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় বলা হয়েছে, ঈদুল আজহা আমাদেরকে ত্যাগ ও ধৈর্যের শিক্ষা দেয়। এই পবিত্র দিনে আমরা শুধু পশুই কোরবানি করি না; বরং নিজের অহংকার, স্বার্থপরতা এবং অন্যায়ের সঙ্গে আপসের মনোভাবকেও ত্যাগ করার শপথ নিই। সমাজে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি-চাঁদাবাজি বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সত্য ও সুন্দরের পথ নির্মাণই হোক আজকের দিনের প্রত্যাশা। এতে আরও বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে এই জনপদের মানুষের ত্যাগের সর্বোচ্চ রূপে ফুটে উঠেছিল। সাহসী ও ত্যাগী মানুষেরা নিজেদের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে কর্তা হয়ে না উঠলে পরিবর্তন আসে না আর আত্মত্যাগ ছাড়া মুক্তি অসম্ভব। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই সব শহীদদের, যাদের রক্তে এই জাতি নতুন আশার আলো দেখেছিল।রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (০৭ জুন) সকালে জামাত শুরু হয় ঠিক সাড়ে ৭টায় এবং শেষ হয় ৭টা ৪৩ মিনিটে। এ সময় দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে ঈদ মোবারক। সবাই দেশের মঙ্গলের জন্য দোয়া করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই জামাতে অংশগ্রহণ করেন প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। মোনাজাত শেষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক এগিয়ে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিন উপদেষ্টার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে ঈদ মোবারক জানান। সালাম দিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে আজকে একসঙ্গে ঈদের জামাতে পেলাম। সবাইকে ঈদ মোবারক জানালাম। সবাই এ পবিত্র দিনে দেশের মঙ্গলের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ। তারপর প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যদিয়ে সবার উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে ময়দান ছাড়েন। উপস্থিত জনতার পক্ষ থেকেও তখন শুভেচ্ছা জাননো হয়। জনতার মাঝ থেকে, ‘স্যার আপনাকে ৫ বছর চাই’, দালালদের কথা শুনবেন না, পাঁচ বছর স্যার’ এসব কথা বলতে শোনা যায়। এবারের ঈদের প্রধান জামাতের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ জানায়, প্রায় ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। নারীদের জন্যও ছিল আলাদা নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা। অনেক শিশু বাবা-মায়ের হাত ধরে জামাতে অংশ নেয়, ময়দানে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আয়োজন সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনায় পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।

কোরবানি দিতে গিয়ে রাজধানীতে ৬৫ জন আহত

ঈদুল আজহার প্রথম দিনে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় পশু কোরবানি দিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন। শনিবার (৭ জুন) সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এসব আহত ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মুশতাক আহমেদ জানান, সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে কোরবানি দিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে ৬৫ জন হাসপাতালে এসেছেন। এদের মধ্যে একজনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর ঈদুল আজহার দিন পশু জবাই করার সময় অসাবধানবশত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বহু লোকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

ত্যাগ হোক সমাজ বদলের এক নতুন উচ্চারণ: উপদেষ্টা আসিফ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, পশু নয়, কোরবানি হোক অহংকার, হিংসা ও অবিচারের। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক ভিডিও পোস্টে বলেন, ত্যাগ হোক সমাজ বদলের এক নতুন উচ্চারণ। পশু কোরবানি আমাদের এক ধর্মীয় দায়িত্ব, কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়ানো তা এক মানবিক কর্তব্য। আসুন, ঈদের আনন্দে কেউ যেন না থাকে বঞ্চিত, সাম্য আর সহযোগিতায় গড়ে তুলি সুন্দর সমাজ। ঈদ মোবারক। ত্যাগ হোক উন্নয়নের মূলমন্ত্র। সারা দেশে উৎসবের আমেজে উদযাপিত হচ্ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, কোরবানির ত্যাগ ও পারস্পরিক সহানুভূতির এক মহৎ বার্তা নিয়ে শনিবার (৭ জুন) সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঈদের আনুষ্ঠানিকতা। সকালে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মসজিদ, ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর প্রধান ঈদ জামাত। নামাজ শেষে মুসল্লিরা পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

রাজারবাগে ঈদের নামাজ আদায় করলেন ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ঈদ জামাতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, সব স্তরের পুলিশ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশের অগ্রযাত্রা ও সমৃদ্ধি এবং দেশবাসীর শান্তি ও সার্বিক মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য এবং মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন। ডিএমপি কমিশনার পুলিশ সদস্যদের খোঁজখবর নেন। তিনি নিজেদের ঈদ আনন্দ বিসর্জন দিয়ে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।