ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:০৭ এম, ০৮ জুন ২০২৫

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পশু কোরবানি চলছে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ঈদের দিন ও পরবর্তী দুই দিন অর্থাৎ ১২ জিলহজ পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ রয়েছে।
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী সুযোগ থাকায় এবং ঈদের দিন কসাই না পাওয়ায় অনেকেই আজ কোরবানি দিচ্ছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঈদের দিনের কোরবানির পশুর বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে।
রাজধানীর বাসিন্দারা কোরবানি অব্যাহত রাখলে সোমবার (৯ জুন) পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণের কাজ করবেন। এতে রাজধানীর বাসিন্দারা তাদের সুবিধামতো সময়ে কোরবানি দিতে পারছেন।
রোববার (৮ জুন) সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার অল্প পর থেকেই কোরবানির প্রস্তুতি নেন অনেকে। ঈদের আগেই পশু কিনে রেখে আজ তারা কোরবানি দিচ্ছেন।
রামপুরার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ ঈদের দিন কোরবানি দেন। এতে কসাইদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। দেখা দেয় কসাই সংকট। তাই আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছি দ্বিতীয় দিনে কোরবানি করবো।
তিনি বলেন, আজ খুব নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি। ফজরের নামাজের পরে হুজুর এসে গরু জবাই দিয়ে গেছেন। কসাইরা মাংস বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আশা করছি সকল ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারবো।
মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিলে যা হবে ঈদের পরের দিন কোরবানি দিলেও তাই হবে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী তিনদিন কোরবানি দেওয়া যায়। আর কোরবানি দেওয়া প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কোরবানি দিচ্ছি, এখন কবুল করার মালিক তিনি নিজেই।
রামপুরার আর এক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছা ছিল ঈদের দিনই গরু কোরবানি দেবো। কিন্তু কসাই না পাওয়ায় আজ কোরবানি দিচ্ছি। শুধু আমরা না, অনেকেই কসাই সংকটে আজ কোরবানি দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিতে পারিনি, তা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। তবে অন্যদের কোরবানি দেওয়া দেখে বাচ্চাদের মন একটু খারাপ হয়েছিল। এখন ওরা আবার হাসি খুশি। বাচ্চাদের খুশিই তো আমাদের খুশি। আর কোরবানি দেওয়া হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। কার দোয়া, কার কোরবানি কবুল হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ কেউ জানে না।
খিলগাঁওয়ে বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ঈদের দিন এবং পরের দুদিন পশু কোরবানি দেওয়া যায়। কোরবানি দেওয়া জন্য এই তিনদিনই সমান। কোনদিন সওয়াব বেশি কম হওয়ায় সুযোগ নেই। গতকাল যারা কোরবানি দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, আজ আমরা যারা কোরবানি দিচ্ছি তাদের উদ্দেশ্যও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
তিনি বলেন, কোরবানির মাংস তিনভাগ করতে হয়। আমরা ধর্মীয় বিধান মেনে মাংস তিনভাগ করে, যার যা অংশ বুঝিয়ে দেবো। এখন কবুল করার মালিক আল্লাহ।
মো. হাসান আরও বলেন, আমাদের গরুর মাংস বানানোর কাজ যে কসাই করছে, গত বছরও এই কসাই দিয়ে কাজ করিয়েছিলাম। এদের কাজ ভালো। গতকাল ওরা অনেক ব্যস্ততা ছিলেন। বিকেলে আমাদের কাজ করতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি বিকেলে না করে আজ করতে। আল্লাহর রহমতে এখন নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি।
এদিকে, ঈদের দিনের কোরবানির বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আজ ও আগামীকাল সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণ কাজ চলমান থাকবে।