
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সোমবার (২২ ডিসেম্বর) নিজের পদত্যাগের গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “পদত্যাগ করলে তো এখানে থাকতাম না।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের মূল হোতার অবস্থান এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “তার অবস্থান জানা থাকলে এতক্ষণে তাকে গ্রেপ্তার করা হতো। তবে এ ঘটনায় ফয়সালের বাবা, মা, স্ত্রী, শ্যালক ও মোটরসাইকেল চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত দালালচক্রের সদস্যদের সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।”
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, “এই অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের আরও বেশি সংখ্যায় গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৯৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকদের নিরাপত্তা বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “তাদের জন্য গানম্যান দেওয়া হয়েছে এবং বাসভবনের নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। যাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, তাদেরও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ জনকে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে এলে তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।”
শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, “সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কাজ করছে।”
এদিকে মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফয়সল হাসান জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৮তম সভায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক নিরাপত্তা প্রস্তুতি, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর অগ্রগতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সভায় জকসু নির্বাচনের নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ আয়োজনের জন্যও আলোচনা হয়েছে। এর আগে ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় একইভাবে জকসু নির্বাচনেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশাবাদ প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া সভায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সহিংসতা ও উস্কানিমূলক সাইবার প্রচারণা প্রতিরোধ, চুরি-ছিনতাই ও চাঁদাবাজি দমন, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, মাদকবিরোধী অভিযান, শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিশ্চিতকরণ, শিল্পকারখানায় বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ, সীমান্ত ও পার্বত্য অঞ্চল এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।