
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সম্ভাব্য পদত্যাগ এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রধান আলোচনার বিষয়। দুজনই বর্তমানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তাই তারা সরে গেলে কোন উপদেষ্টা কোন দপ্তরের দায়িত্ব নিতে পারেন, তা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরে তীব্র আলোচনা চলছে।
সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, শেষ সময়ে নতুন কাউকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বরং বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যেই দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের দিকেই বেশি ঝুঁকছে সরকার।
১০ বা ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা থাকায় এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা ছিল। তারা নির্বাচনে প্রার্থী হন বা না-হন, পদত্যাগ করা উচিত বলে পরিষদের বেশিরভাগ সদস্য মত দিয়েছেন।
এদিকে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতেই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সেখানেই তিনি পদত্যাগ ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। বৃহস্পতিবার নাকি দুই উপদেষ্টার শেষ বৈঠকও হতে পারে।
বর্তমানে মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন, আর আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেখছেন।
আলোচনায় উঠে এসেছে, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, যিনি এখন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। পাশাপাশি উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকেও এই দপ্তর দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন।
অন্যদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসতে পারেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, যিনি এখন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া অধ্যাপক আলী রীয়াজকেও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
তবে কোন দায়িত্ব কার হাতে যাবে তা শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বর্তমানে উপদেষ্টার সংখ্যা ২২। দুইজন সরে দাঁড়ালে তা নেমে আসবে ২০-এ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, প্রধান উপদেষ্টা নিজে পাঁচটি মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন এবং দশজন ছাড়া বাকি সব উপদেষ্টাই একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।