জাতিসংঘের অর্থসংকটে দেশে ফিরছেন ১৩১৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৫৪ এম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল সংকটের কারণে আগামী ৯ মাসে অন্তত ১,৩১৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে দেশে প্রত্যাহার করা হবে।
অর্থনৈতিক চাপের কারণে ১৫ শতাংশ বাজেট হ্রাসের আওতায় আপৎকালীন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পাঁচটি মিশন থেকে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কার্যক্রম বিভাগের মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স দপ্তর (ওএমএ) ১৪ অক্টোবর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চলমান আর্থিক সংকটের কারণে বাজেট হ্রাস বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেট হ্রাস সরাসরি জনবল কমানোর নির্দেশ না হলেও, বাস্তবে মাঠ পর্যায়ে শান্তিরক্ষীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।
চিঠি অনুযায়ী, পাঁচটি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার হবে এভাবে:
দক্ষিণ সুদানের ইউনাইটেড নেশনস মিশন (ইউএনমিস) থেকে ৬১৭ জন, মধ্য আফ্রিকার মিশন (মিনুসকা) থেকে ৩৪১ জন, সুদানের আবেই অঞ্চলের মিশন (ইউনিসফা) থেকে ২৬৮ জন, কঙ্গোর মিশন (মনুসকো) থেকে ৭৯ জন, পশ্চিম সাহারার মিশন (মিনুরসো) থেকে ৮ জন।
ওএমএ আশ্বস্ত করেছে, পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন হলে তা দ্রুত বাংলাদেশকে জানানো হবে। ৯ অক্টোবর এএফপি জানিয়েছে, বিশ্বের ৯টি অঞ্চলের শান্তি রক্ষা মিশন থেকে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী বাহিনী কমানো হবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান কমে যাওয়ায় তহবিল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২০২৫-২৬ সালে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের মোট বাজেট ছিল ৫৪০ কোটি ডলার, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলারে সীমাবদ্ধ হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ‘নীল হেলমেট’ পরে ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বের শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশি সৈন্যরা অংশগ্রহণ করছে। ৩১ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত ১০টি দেশ বা স্থানে ৪৪৪ নারীসহ ৫,৬৯৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এই ৩৫ বছরে ১৬৮ জন জীবন হারিয়েছেন এবং অন্তত ২৫৭ জন আহত হয়েছেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, তিন দশকের বেশি সময়ে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশ ও স্থানে ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে পুলিশও জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়। এ পর্যন্ত ২৪টি দেশের ২৬টি মিশনে ২১,৮১৫ জন বাংলাদেশি পুলিশ অংশ নিয়েছেন এবং ২৪ জন জীবন উৎসর্গ করেছেন।