কাকরাইল থেকে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:১৪ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২৫

তিন দফা দাবিতে যমুনার অভিমুখে পদযাত্রার সময় পুলিশি বাধা, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে অবশেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা। এরপর দুপুরের দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে এসে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ আন্দোলনকারীদের বারবার সরে যেতে বললেও তারা সাড়া না দেওয়ায় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছোড়ে এবং একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটকও করা হয়। পরে পুলিশ ধীরে ধীরে আন্দোলনকারীদের কাকরাইল থেকে সরিয়ে মৎস্যভবনের দিকে ঠেলে দেয়।
এই অবস্থায় তারা কাকরাইল এলাকা ত্যাগ করে বিভিন্ন পথে বিভক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে জড়ো হন এবং সেখানে নতুন করে অবস্থান নেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর। তিনি বলেন, সকালে তারা জাদুঘরের সামনে ছিল, পরে কাকরাইল হয়ে এখন শহীদ মিনারে অবস্থান করছে।
এ ঘটনার আগে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের একজন প্রতিনিধিকে যমুনায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন এবং বাকি সবাইকে সরে যেতে ১০ মিনিট সময় দেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাতে রাজি না হয়ে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলে পুলিশ বল প্রয়োগ শুরু করে।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা দাবি করেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে অবিচারের শিকার হয়ে আসছেন। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাদের তিনটি প্রধান দাবি হলো—চাকরিচ্যুত সদস্যদের ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বহাল করা, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশনের বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিল এবং বিডিআর নাম পুনরায় চালু করা ও কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দেওয়া।
চাকরিচ্যুত এই সদস্যদের আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শহীদ মিনার এলাকায়ও অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনাও চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।