ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্তদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল


saurav/565bf18cb40b90045e6bd90f42fe96324bc9cb112e9f23aa.jpg

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে যতই ভিন্নমত থাকুক, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব দল ঐক্যবদ্ধ। মানবতাবিরোধী অপরাধে দল হিসেবে আইসিটি আইনে আওয়ামী লীগের বিচার করা যাবে। ফ্যাসিস্টের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরও আইনের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে।  

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বিএফডিসি মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে ছায়া সংসদ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অ্যাটর্নি জেনারেল। ছায়া সংসদে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। 

অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তাদের অবশ্যই জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, উপসচিব রোকেয়া পারবীন জুই, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান জাবেন ও আহমেদ সারওয়ার ভুইয়া। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়। 

সারা দেশে মব সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, মব সন্ত্রাস যেটা হচ্ছে এটা এক ধরনের ক্রোধ। এটা বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা নয়। বরং গত ১৭ বছরের জমে থাকা ক্রোধ। তবে এই ক্রোধ সমীচীন নয়। স্বজন হারানোর ক্রোধ, গুম করার ক্রোধ, মিথ্যা গায়েবি মামলার ক্রোধ। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা ক্রোধ করছে তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া দরকার। 

নতুন সংবিধান লেখা সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নতুন করে সংবিধান লেখা যেতেই পারে। লিখতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধে রক্তের বিনিময়ে লেখা ৭২-এর সংবিধান। আমি বিশ্বাস করি, এটি এখনও বিশ্বের ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট কনস্টিটিয়েশন। গত ১৫ বছরে সংবিধান অনেক কাটছাঁট করা হয়েছে। বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিয়ে এটি আরও যুগোপযোগী করা সম্ভব। 

নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে কিনা, সেটা সরকারের পলিসির বিষয় উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, এই নিষিদ্ধ সত্ত্বাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা সহযোগিতা করছেন, তারাও অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবেন। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আবু সাঈদ কোনো রাজনৈতিক দলের না। জুলাইয়ের শহীদরা কোনো রাজনীতির কেউ না। তারা স্বৈরাচার আমলের ভুক্তভোগী হয়ে রাস্তায় নেমেছিল। তারা সবাই নাগরিক প্রতিনিধি। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা সুশাসন। দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই এর প্রধান লক্ষ্য। ফ্যাসিস্টরা যেন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। জুলাই চেতনা বাস্তবায়নে সরকার ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। এ আন্দোলনের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ড  শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে দেশের মালিক জনগণ। জনগণকে বঞ্চিত করে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। 

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×