পঞ্চগড়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি, গ্রেফতার ৪


February 4 2025/rrrrrpp.jpg

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় দুই বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ (২৮)।

এ ঘটনায় শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে পুলিশ উপজেলার জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার তিন মাইলে একটি চা বাগান সংলগ্ন সুরিভিটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূ এবং তার সাথে থাকা দুই বছরের ছেলেকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় শনিবার (৫ জুলাই) সকালে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চার জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও দু’জনকে আসামি করে একটি এজহার দায়ের করেছেন।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭) বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।

মামলার এজহার ও ভুক্তভোগী নারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই গৃহবধূ। শুক্রবার রাতে ইজিবাইকযোগে অসুস্থ দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পরে তিনি পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে তার ইজিবাইকের পেছনে থাকা আরেকটি ইজিবাইকের পরিচিত চালক নাম ধরে ডাকতে থাকেন। পরে থামতেই তাকে জনিসহ ৬ জন সড়কের পাশের একটি চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে দুই বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তারা।  ধর্ষণের এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। পরে স্থানীয় একটি সড়কের ধারে তাকে ফেলে পালিয়ে যান ধর্ষকেরা। পরে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। পরে রাত দেড়টার দিকে ছেলেসহ তাকে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল তারা। তখন আমি নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে চাইলে আমাকে তারা ভয়ভীতি দেখায়। পরে একে একে ৬ জন আমাকে ধর্ষণ করে। চারজন পরিচিত আর দু’জন অপরিচিত। আমি ধর্ষণের শিকার হলাম। এখন আমার কাছের লোকজন আপোষের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কাশেম বলেন, রাতে পুলিশ অচেতন অবস্থায় একজন নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষার পরে জানা যাবে। আপাতত তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আমাদের পুলিশের একটি দল পৌঁছে। সেখানে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি দুই বছরের শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। নারীর জ্ঞান ফিরে এলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×