ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ‘ভুল তথ্য’ দিয়েছেন গ্যাবার্ড: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানের পাশে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে, এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য তার কাছে আছে কিনা, অথচ তার গোয়েন্দা সংস্থা আগেই বলেছে যে, তাদের কাছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। ট্রাম্প জবাব দেন, ‘তা হলে আমার গোয়েন্দা সংস্থা ভুল। গোয়েন্দা সংস্থায় কে এটা বলেছে?’ সাংবাদিক বলেন, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘তিনি ভুল বলেছেন।’ গত মার্চ মাসে গ্যাবার্ড কংগ্রেসকে বলেছিলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে; ইরান ২০০৩ সালে স্থগিত করা তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি আবার শুরু করেনি। যদিও তখন ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপাদান ইউরেনিয়ামের মজুদ সর্বোচ্চ সমৃদ্ধ পর্যায়ে ছিল।

পরমাণু প্রযুক্তিতে ইরানকে সহায়তায় প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরান যদি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করতে চায়, তাহলে তাতে রাশিয়ার কোনো আপত্তি নেই। বরং রাশিয়া তাতে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত। খবর আনাদুলুর। একটি সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাতে চায় এমন কোনো প্রমাণ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এখন পর্যন্ত পায়নি। তিনি উল্লেখ করেন, ইরানে পারমাণবিক অস্ত্র হারাম বলে ধর্মীয় ফতোয়া জারি রয়েছে, যা বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে দেয়। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া সবসময় পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তারের বিরুদ্ধে এবং কোনো দেশ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করতে চায়। ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এতে উভয় দেশে প্রাণহানি হয়েছে শতাধিক মানুষের। এই উত্তেজনার মধ্যে পুতিনের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে সমর্থনের ঘোষণা ইরানের পক্ষে একটি বড় কূটনৈতিক সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে এই বার্তা ইরানকে কিছুটা কৌশলগত সুবিধা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইরানে ব্যাপক হামলা, ৫ বিপ্লবী গার্ড নিহত

ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ বিপ্লবী গার্ড নিহত হয়েছেন। ইরানি মিডিয়ার বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানি বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে, শনিবার (২১ জুন) খোরামাবাদ শহরে ইসরায়েলি হামলায় তাদের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। শহরটিতে ব্যাপক হামলা চালিয়ে বহু স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। এর আগে শীর্ষ দুই কমান্ডারের নিহতের খবর আসে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) ড্রোন ইউনিটের দ্বিতীয় কমান্ডারও নিহত হয়েছেন। প্রধান নিহতের পর তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ইসরায়েলে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আইআরজিসির মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যান (ইউএভি) ইউনিটের নতুন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিন পুর জোদখি নামে পরিচিত কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এ কমান্ডার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ইসরায়েলের দিকে শত শত ইউএভি ড্রোন উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া শনিবার (২১ জুন) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ইরানের কুদস ফোর্সের ফিলিস্তিনি কর্পসের কমান্ডার সাইদ ইজাদি ইরানের কোম শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় নিহত হয়েছেন। ইজাদির মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে কাটজ আরও বলেন, ৭ অক্টোবরের গণহত্যার সংঘটনে হামাসকে অর্থায়ন এবং অস্ত্র দিয়েছিলেন ইজাদি। তার নিহত হওয়া ইসরায়েলি গোয়েন্দা ও বিমানবাহিনীর জন্য একটি বিশাল অর্জন। খুন ও অপহৃতদের জন্য ন্যায়বিচার। ইসরায়েলের দীর্ঘ হাত তার সব শত্রুর কাছে পৌঁছাবে।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি পুতিনের

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার মতে, এ দুটি অঞ্চল এখন মারাত্মক সংঘর্ষের সম্ভাব্য কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। শুক্রবার (২০ জুন) সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের (এসপিআইইএফ) মূল অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন এ হুঁশিয়ারি দেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সংঘর্ষের বিপুল আশংকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা বৈশ্বিক যুদ্ধের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। সব সংকটেরই শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত’। তিনি ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের সমালোচনা করে বলেন, ‘এই জোট বারবার রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগকে অগ্রাহ্য করছে। এটি পশ্চিমাদের উপনিবেশবাদী নীতির আরেকটি রূপমাত্র’। পুতিন এ সময় দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় রুশ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘ইসরায়েল যদি সত্যিই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার কথা বিবেচনা করে থাকে, তবে আমি আশা করি এটি কেবল কথার কথা হিসেবেই থাকবে’। এর আগে রুশ প্রেসসচিব দিমিত্রি পেসকভ সেন্ট পিটার্সবার্গের কনস্টান্টিন প্রাসাদে স্কাই নিউজ-কে বলেন, ‘ইরানে সরকার পরিবর্তনের কথা যারা বলছে, তারা যেন মনে রাখে এটা শুধু অগ্রহণযোগ্য নয়, বরং এতে দেশটিতে চরমপন্থার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে’। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যারা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করার কথা বলছে, তারা যেন মনে রাখে তাতে তারা এক ভয়ংকর প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দেবে’। সূত্র: ডেইলি সাবাহ

ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বিস্ফোরণ

ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে। এতে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে ওই এলাকা। শনিবার (২১ জুন) দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় কোনো বিপজ্জনক পদার্থ ছড়িয়ে (লিকেজ) পড়েনি। এ ঘটনায় আইডিএফের কোনো মন্তব্য এখনো নেই। ইরানের ফারস সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনা ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তবে কোনো বিপজ্জনক পদার্থের ভান্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বর্তমান যুদ্ধের সময় ইসরায়েল পারমাণবিক স্থাপনাটিতে আগেও আক্রমণ করেছিল। কয়েকটি সূত্র জানায়, আজ সকালে ইসফাহানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় এর বেশি কোনো তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) ড্রোন ইউনিটের দ্বিতীয় কমান্ডারও নিহত হয়েছেন। প্রধান নিহতের পর তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ইসরায়েলে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিন পুর জোদখি নামে পরিচিত কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এ কমান্ডার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ইসরায়েলের দিকে শত শত ইউএভি ড্রোন উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত ছিলেন।

সামনে আরও কঠিন সময় আসছে: ইসরায়েলের সেনাপ্রধান

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আইয়াল জামির এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। এ বার্তায় ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল অভিযান শুরু করেছি। এই শত্রু বড় ধরনের হুমকি তৈরি করেছে।’ খবর মিডল ইস্ট আই। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেয়েছি, তবে সামনে আরও কঠিন দিন আসছে।’ সেনাপ্রধান জামির জানান, ইসরায়েল দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত এবং বর্তমান পরিস্থিতি যেকোনো সময় আরও খারাপ হতে পারে। ইরানের বিরুদ্ধে একটি ‘দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে বলেও জানান তিনি। কারণ ইসরায়েলের হামলা নবম দিনে গড়িয়েছে। অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং তারা এখনো কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এর আগে ইসরায়েলকে তার চলমান হামলা বন্ধ করতে হবে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান টালসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। গ্যাবার্ড বলেছিলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে- এমন কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু ট্রাম্প বলছেন, তিনি এতে একমত নন। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার পর ইরানের নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে তেজস্ক্রিয় ও রাসায়নিক দূষণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত কেন্দ্রটির বাইরের পরিবেশে কোনো রেডিয়েশন বৃদ্ধি পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে পশ্চিম তীরের হেবরন শহরের আকাশে ইরানের পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেছে। টানা সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।

ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানালেন আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা

ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছেন আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। একইসঙ্গে দ্রুত এই সামরিক উত্তেজনা থামানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। এছাড়া এই আগ্রাসনকে পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। শনিবার (২১ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এই উত্তেজনা থামানোর আহ্বান জানিয়েছে আরব লীগ। গোষ্ঠীটি বলেছে, এই ধরনের হামলা জাতিসংঘের সদস্য একটি দেশের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। এক যৌথ বিবৃতিতে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, “এই উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করতে হবে।” টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, জরুরি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় তুরস্কের ইস্তানবুলে। এই শহরেই ২১-২২ জুন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর ৫১তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠকেরই একটি অংশ হিসেবে আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পৃথকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত, বিশেষ করে ১৩ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে শুরু হওয়া সামরিক সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা করেন। এই সম্মেলনের আয়োজক ছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। বৈঠকে বিভিন্ন মুসলিম ও আরব দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নেন।

নতুন দায়িত্ব নেওয়া ইরানি ড্রোন কমান্ডারকেও মেরে ফেলল ইসরায়েল

ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) জন্য আরও একটি দুঃসংবাদের দিন। শনিবার (২১ জুন) তাদের ড্রোন ইউনিটের দ্বিতীয় কমান্ডারও নিহত হয়েছেন। প্রধান নিহতের পর তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ইসরায়েলে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছিলেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আইআরজিসির মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যান (ইউএভি) ইউনিটের নতুন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। খবর আলজাজিরার। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিন পুর জোদখি নামে পরিচিত কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এ কমান্ডার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ইসরায়েলের দিকে শত শত ইউএভি ড্রোন উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত ছিলেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এর আগে ১৩ জুন আইআরজিসির ড্রোন বাহিনীর প্রধান কমান্ডার তাহার ফারকে হত্যা করেছে। জোদখি তখন থেকে কমান্ড অপারেশনের কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।

১৪ কার্গো বিমানে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি থেকে ইসরায়েলে এলো অস্ত্র

ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে আসা ১৪টি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছেছে। এসব বিমানে সেনাবাহিনীর জন্য বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ও সহায়তা উপকরণ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশটি আকাশ ও সমুদ্রপথে সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই নতুন এই চালান এসেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এই সরঞ্জামগুলো সেনাবাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতি জোরদারে সহায়ক হবে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এটি নতুন চালান হলেও গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৮০০-র বেশি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছেছে। তবে নতুন করে আসা সরঞ্জামগুলো কী ধরনের, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য করা হয়নি। উল্লেখ্য, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালালে সংঘাতের সূচনা হয়। এর জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

তুরস্কে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি তুরস্কে গেছেন। শনিবার (২১ জুন) তার আঙ্কারায় পৌঁছানোর তথ্য নিশ্চিত হয়েছে আলজাজিরা। সেখানে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তাতে যোগ দিতেই তুরস্কে গেছেন আব্বাস। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়ং জার্নালিস্টস ক্লাবের তথ্য অনুযায়ী, ৪০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈঠকের জন্য আব্বাস আরাঘচি আঙ্কারায় পৌঁছেছেন। শুক্রবার জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে আরাঘচির সাক্ষাতের পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইরানের ওপর ইসরায়েলের আক্রমণের প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দুবার ফোনে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। যা স্পষ্টতই সংঘাত কমানোর প্রচেষ্টার অংশ। যদিও শুক্রবার ভাষণে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল জয়লাভ করছে। ইসরায়েল যেহেতু বর্তমানে জয়ের পথে রয়েছে, তাই তাদের এখন হামলা বন্ধ করতে বলা আমার জন্য সহজ নয়। ট্রাম্প বলেন, যদি কেউ জয়ী হয়, তাহলে তাকে হামলা বন্ধ করতে বলা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু কেউ যদি পরাজিত হয়, তখন তাকে থামতে বলা সহজ হয়। তবে আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি এবং ইরানের সঙ্গেও কথা বলছি। কী হয়, তা দেখা যাক। এ সময় ট্রাম্প দাবি করেন, চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানের চেয়ে ভালো করছে। তিনি বলেন, ইসরায়েল যখন জয়ের পথে থাকে, তখন তাদের থামানো কঠিন হয়ে পড়ে। ইসরায়েল খুব ভালো করছে যুদ্ধে, আর ইরান তুলনামূলকভাবে কম সফল।

জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করল পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া

জাতিসংঘে ইসরায়েলকে কার্যত তুলোধুনো করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর সামরিক আগ্রাসন নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করে দেশগুলো। এই চারটি দেশ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইরানের ওপর এই হামলা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। শনিবার (২১ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার কঠোর সমালোচনা করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। তারা সতর্ক করে বলেছে, এই হামলা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার যে নজির তৈরি করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। মূলত এই চারটি দেশের অনুরোধেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, “ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে। এতে ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমন স্থাপনায় হামলা চালানো যায় না।” চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, “ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এটি ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকেও ক্ষুণ্ন করছে এবং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন করছে।” পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, “ইসরায়েলের প্রকাশ্য সামরিক আগ্রাসন ও হামলাগুলোকে আমরা নিঃসন্দেহে নিন্দা জানাচ্ছি। এটি কেবল একটি দেশের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের ও বিশ্বশান্তির জন্যও গভীর হুমকি।” আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনদজামা এই হামলাকে বলেন, “বিনা উসকানিতে ও অযৌক্তিকভাবে চালানো এই হামলা জাতিসংঘ সনদের প্রকাশ্য লঙ্ঘন।” প্রসঙ্গত, ইসরায়েল গত ১৩ জুন থেকে ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে। এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে, যার প্রভাব সারা বিশ্বের ওপরই পড়তে পারে।

মোসাদের ৫৪ গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করল ইরান

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা কয়েকদিনের সংঘাতে উত্তপ্ত পুরো মধ্যপ্রাচ্য। উভয় দেশই পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এতে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। প্রাণঘাতী এই সংঘাতের মধ্যেই ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে সম্পর্কিত ৫৪ জন গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের শত্রুর পক্ষ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ, রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শনিবার (২১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খুজেস্তানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা “শত্রুর পক্ষ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ, রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা, মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার” অভিযোগে অভিযুক্ত। ইরানের আধা-সরকারি নিউজ এজেন্সি ফার্স রাষ্ট্রপক্ষের বরাত দিয়ে জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সরাসরি যোগাযোগ থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে এবং এর জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে। ইসরায়েলের সরকারি হিসাব মতে, ইরানের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় তাদের দেশে এখন পর্যন্ত ৬৩৯ জন নিহত এবং ১৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে গোয়েন্দা ও সাইবার লড়াইও তীব্র হয়েছে, যার অংশ হিসেবে ইরান এই ৫৪ জন সন্দেহভাজন গুপ্তচর গ্রেপ্তার করার কথা জানাল।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সমাধান জানালেন পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজ শুক্রবার বলেছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে রক্তপাত বন্ধে রাশিয়া কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি মনে করেন, চলমান সংকটের একটি কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব। পুতিন বলেন, ‘আমরা আমাদের ইসরায়েলি ও ইরানি বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং মস্কোর দেওয়া প্রস্তাবগুলো বর্তমানে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, রাশিয়া সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী এবং দ্বন্দ্বময় পরিস্থিতি শান্তভাবে সমাধানে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। তবে ঠিক কী ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি রুশ প্রেসিডেন্ট। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) পুতিন স্পষ্ট করে জানান, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সম্ভাব্য হত্যার বিষয়ে কোনো আলোচনা করতে রাজি নন। তার মতে, ইরান এখন তেহরান নেতৃত্বের চারপাশে এক হয়ে উঠছে, এবং সংবেদনশীল সময় হলে এই ইস্যুতে মন্তব্য করা অনুচিত। পুতিন এসময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি এই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতেও চাই না। সেসব দেশকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সশস্ত্র হুমকির বদলে পারমাণবিক শক্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত স্থিতিশীল সমঝোতা তৈরি করতে হবে।’ পুতিন এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাশিয়া এবং ইরানের দীর্ঘমেয়াদি পারমাণবিক ও রাজনৈতিক বন্ধুত্ব জোর দিয়ে বলেন, ‘ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সুবিধাগুলো সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়া তাদের স্থাপনাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত না করার নিশ্চয়তা পেয়েছে, এবং বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’ পুতিন আরও বলেন, ‘রাশিয়া ইরানের আণবিক, প্রযুক্তিগত ও জ্বালানি চাহিদা পূরণে প্রস্তুত। একই সঙ্গে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের নিরাপত্তাও আমরা নিশ্চিত করতে পারি।’ সূত্র : রয়টার্স

ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানে ইউরোপের ৯ দেশ

হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে নির্বিচার ও নৃশংস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যাদের বেশির ভাগ শিশু ও নারী। ১৯৪৮ সালে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, এবারও ঠিক একই কায়দায় গাজা থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশটি সেখানে অবৈধ বসতি সম্প্রাসরণের ঘোষণা দিয়েছে। গত ২৯ মে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ২২টি অবৈধ বসতি স্থাপন করবে। এর মধ্যে কিছু তথাকথিত ‘আউটপোস্ট’ রয়েছে, যেগুলো ইতোমধ্যে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ওই দিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। কাটজ বলেন, এই পদক্ষেপ ‘জুডিয়া এবং সামারিয়ায় আমাদের নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করবে। ইসরায়েল ইতোমধ্যে পশ্চিম তীরজুড়ে ১০০টিরও বেশি অবৈধ বসতি নির্মাণ করেছে, যেখানে প্রায় পাঁচ লাখ বসতি স্থাপনকারী বসবাস করছে। এই বসতিগুলো ছোট আউটপোস্ট থেকে শুরু করে আধুনিক অবকাঠামোসহ বড় সম্প্রদায় পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম তীরে ৩০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বসবাস করে, যারা ইসরায়েলি সামরিক শাসনের অধীনে জীবনযাপন করে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সীমিত এলাকায় শাসন পরিচালনা করে। এবার এই অবৈধ বসতি স্থাপন ও অধিগ্রহণের কারণে বিপদে পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইউরোপ থেকে দেশটির ওপর এল বড় এক ধাক্কা। ফিলিস্তিন অধিগ্রহণ করার কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াল ইউরোপের ৯ দেশ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রয়টার্সের অনুসন্ধানে পাওয়া এক গোপন চিঠি অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এই ৯ দেশ ইউরোপীয় কমিশনকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার বিষয়ে প্রস্তাব তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও সুইডেন। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাসকে পাঠানো ওই চিঠিতে সই করেছেন এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, যা তাদের মোট পণ্য বাণিজ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। গত বছর ব্লক এবং ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্য ছিল ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউরো (৪৮ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার); যদিও এই বাণিজ্যের কতটা অংশ অধিকৃত বসতি স্থাপনের সঙ্গে জড়িত, চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি। চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের একটি মতামতের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং সেখানে বসতি স্থাপনে ইসরায়েলের দখল অবৈধ। আরও বলা হয়েছে যে পরিস্থিতি বজায় রাখতে সাহায্যকারী বাণিজ্য বা বিনিয়োগ সম্পর্ক রোধ করার জন্য রাষ্ট্রগুলোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা লিখেছেন, ‘অবৈধ বসতি স্থাপনের সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবার বাণিজ্য কীভাবে কার্যকরভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করার কোনো প্রস্তাব আমরা দেখিনি।’ তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক চিহ্নিত বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে ইউনিয়নের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের জন্য ইউরোপীয় কমিশনের প্রস্তাব তৈরি করা আমাদের প্রয়োজন। এ বিষয়ে জানাতে আল জাজিরা অনুরোধ করলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবস্থিত ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রিভোট রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ইউরোপকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বাণিজ্য-নীতি নিশ্চিত করতে হবে। বাণিজ্য আমাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করতে হবে যে ইইউ নীতিগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অবৈধ পরিস্থিতি বা স্থায়িত্বে অবদান না রাখে।’ আগামী ২৩ জুন বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই এই চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলের সঙ্গে ব্লকের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানা গেছে। গাজার পরিস্থিতির নিয়ে ব্লকটি চুক্তিতে ইসরায়েলের আনুগত্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া ইউরোপের সঙ্গে দেশটি তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণকারী একটি চুক্তিতে মানবাধিকারের ধারা মেনে চলছে কি না, সেটার ওপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মূল্যায়ন করবেন।

‘দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের’ জন্য ইসরায়েলিদের প্রস্তুত থাকতে হবে

ইরানের বিরুদ্ধে ‘দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের’ জন্য ইসরায়েলিদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। শুক্রবার (২০ জুন) একটি ভিডিও বার্তায় আইডিএফ প্রধান ইসরায়েলি নাগরিকদের এ আহ্বান জানান। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। জামির বলেছেন, ‘ইরান বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলকে ধ্বংস করার জন্য একটি স্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে আসছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই পরিকল্পনা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযান শুরু করেছিলাম তখন ইরানের কাছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। তবে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের হার এতটাই বেশি যে, আগামী দুই বছরের মধ্যে তাদের কাছে প্রায় ৮ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে বলে আশা করা হয়েছিল।’ আইডিএফ প্রধান দাবি করেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রচেষ্টা, পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রক্সিদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডই তাদের ওপর আক্রমণ করতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা দেরি করতাম, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত স্পষ্ট ঝুঁকিতে পড়তো। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, ইসরায়েল রাষ্ট্রে ইহুদি জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’ জামির আরও বলেন, ‘ক্রমাগত হুমকির মধ্যে আইডিএফ চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা অস্তিত্বগত হুমকি প্রতিরোধ করতে এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সক্রিয়ভাবে এবং আগে থেকেই আঘাত করব। আইডিএফ বছরের পর বছর ধরে এই অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ ইরানের ওপর আইডিএফের প্রথম আকস্মিক হামলা অসাধারণ ফলাফল অর্জন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের সিনিয়র কমান্ডকে নির্মূল করেছি, পারমাণবিক কর্মসূচির উপাদানগুলোতে গভীর ক্ষতি করেছি, তেহরানের আকাশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি, প্রায় অর্ধেক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার চিহ্নিত করে ধ্বংস করেছি, যা তাদের অবাক করে দিয়েছে।’ জামির আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রিয় নাগরিকগণ, আক্রমণাত্মক অভিযানের পাশাপাশি, হোম ফ্রন্টের প্রতিরক্ষা অব্যাহত রয়েছে। ইরানি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করছে। আমরা সম্ভাব্য আরও হামলায় জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল অভিযান শুরু করেছি, যার জন্য দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি প্রয়োজন।’ ইসরায়েলিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা উল্লেখযোগ্য ফলাফল অর্জন করেছি, তবে সামনে দিনগুলো আরও চ্যালেঞ্জিং, তাই আমাদের অবশ্যই সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

ইরানের বিরুদ্ধে নতুনভাবে হামলা শুরু ইসরায়েলের

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। এই উত্তেজনার মধ্যে আবারও নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২০ জুন) ভোররাতে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহার শহরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবির অধীনে পরিচালিত ইয়াং জার্নালিস্টস ক্লাব। খবর আল জাজিরার। একই সময়ে ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সামরিক অবকাঠামোর ওপর আঘাত হেনেছে। তবে ঠিক কোন স্থাপনাগুলোর ওপর এই হামলা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। বুশেহার শহরে ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। ফলে এলাকাটিতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু হওয়ার খবরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিশ্লেষক মহল। এদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলের এই নতুন হামলা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ইরান-ইসরায়েল পাল্টা হামলার ধারাবাহিকতা এবং পরবর্তী ধাপ- যা সরাসরি সামরিক অবকাঠামোর ওপর আঘাতে গড়িয়েছে। তবে ইরান সরকার ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) পক্ষ থেকে এই হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখনো উন্নয়নশীল এবং আরও তথ্য পর্যায়ক্রমে পাওয়া যাবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি পাল্টা জবাবে ইরান নতুন করে হামলা চালায়।

ইরানের ছোড়া ড্রোন সিরিয়ার আকাশে গিয়ে ধ্বংস করছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত এবং আল জাজিরার যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, একটি ইসরায়েলি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সিরিয়ার আকাশে গিয়ে একটি ইরানি 'শাহেদ-১৩৬' ড্রোনকে আটকে দিয়েছে। লাইভ প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, ভিডিওটি মূলত ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল। এক্স-পোস্টেও একটি ক্রপ করা ভিডিও শেয়ার করা হয়। ভিডিওগুলোতে তাতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানটি ফায়ার করে ড্রোনটিকে ভূপাতিত করছে। আল জাজিরার মতে, সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের কাছে দেরা অঞ্চলের আকাশে এই ঘটনাটি দেখা যায়। এদিকে, ইরানের মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েলের ওপর শুক্রবার (২০ জুন) বিকালে নতুন করে প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি মিডিয়ার খবর অনুসারে, ইরান থেকে ছোড়া সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ১৭ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা গুরুতর।

ইরানের মিসাইল হামলায় কেঁপে উঠল ইসরায়েল, ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা

ইসরায়েলে এবার ১৭তম বারের মতো ৩৯টি নতুন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। এসব ক্ষেপণাস্ত্র সারা দেশের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে ইরান থেকে ছুটে আসা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলজুড়ে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এই হামলায় প্রায় ৩৯টি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এক পোস্টে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে একগুচ্ছ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা এসব হামলা ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছে। এর আগে ইরানের তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং সামরিক বাহিনীর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করার পর ইসরায়েলে এ হামলা চালানো হয়েছে।

আতঙ্ক ভর করেছে ইসরায়েলিদের দৈনন্দিন জীবনে

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হচ্ছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষয়ক্ষতি প্রত্যক্ষ করে হতবাক ইসরায়েলের নাগরিকরা। মনোবল হারিয়ে তাদের দৈনন্দিন জীবনে আতঙ্ক ভর করছে। অনেকে এ অবস্থার জন্য সরকারের ইরানে হামলার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। গত বুধবার থেকে স্বল্প পরিসরে কিছু অফিসের কার্যক্রম শুরু হলেও দেশটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং রাস্তাঘাট জনমানবশূন্য রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্যান-ইউরোপীয় টেলিভিশন নিউজ নেটওয়ার্ক ইউরোনিউজ ইসরায়েলের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে আতঙ্ক নিয়ে জীবনযাপন করার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তেল আবিবের দক্ষিণের শহর হলনে বিমান হামলার সাইরেন বাজলে ছোটাছুটি শুরু হয় প্যারামেডিক স্বেচ্ছাসেবক জিমির। জরুরি কর্মীদের সঙ্গে তাকে ঘটনাস্থলে ছুটতে হয়। ৩৬ বছর বয়সী আরব-ইসরায়েলি জিমি বলেন, বৃহস্পতিবার জরুরি কর্মীদের সঙ্গে গাড়িতে উঠে যখন ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে যাই, তখন বুঝতে পারি এটি তো আমারই ভবন। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় চিনতেও কষ্ট হচ্ছিল। ইসরায়েল ও ইরানের প্রকাশ্য সংঘাতের ষষ্ঠ দিন বুধবার থেকে দেশটিতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। কিছু অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং সড়কগুলো জনমানবশূন্য রয়েছে। ইসরায়েলের অনেকের জন্য এই পরিস্থিতিতে সন্তান লালনপালন করা কঠিন। ৩০ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক এমা তার আরব-ইসরায়েলি স্বামী ও ১০ মাস বয়সী ছেলের সঙ্গে দক্ষিণ তেল আবিবের জাফায় থাকেন। তিনি বলেন, আমাদের ভবনে ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্র নেই। এ জন্য প্রতিদিন রাতে আমরা শাশুড়ির বাড়িতে ঘুমাতে যাই। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার মনোবল বেশির ভাগ ইসরায়েলিদের চেয়ে ভালো। এর কারণ হলো, আমি বিশ্বাস করি না যে সরকার যা করছে তা সঠিক। তাই, আমি বুঝতে পারছি কেন আমরা এই অবস্থার মধ্যে আছি।’ ৩৪ বছর বয়সী নিতজান একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। ইরান ও ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে তিনি তেল আবিব থেকে দেশটির উত্তরাঞ্চলের হাইফায় স্থানান্তরিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আমরা যে শব্দ শুনতে পাচ্ছি, তা হামাস বা হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের শব্দের চেয়ে অনেক আলাদা। মনে হচ্ছে, যেন একটি ট্রাক আপনার মাথার ওপর দিয়ে একটি সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’ ইসরায়েলের অনেকেই দোকানে যাওয়া বা বাড়ির বাইরে প্রয়োজনীয় কাজ করার সময় ক্ষেপণাস্ত্রের কবলে পড়ার ভয়ে থাকেন। হামলার আগে সাইরেন বাজলেও দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তাদের আস্থা কমেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, সংঘাতের প্রথম সপ্তাহে ইরানের হামলায় প্রায় ২৪ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। সেখানে ২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানি অধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইরানে কমপক্ষে ৬৫৭ জন নিহত হয়েছেন। তেল আবিবে বসবাসকারী একজন শিক্ষিকা ওরিয়েলা ইউরোনিউজকে বলেছেন, তিনি ক্লান্ত বোধ করছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো রাত নেই, দিন নেই। আপনার মাথা উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভরা। কারণ, আপনি মানসিকভাবে ক্লান্ত, আমরা বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধে আছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি যুদ্ধ পছন্দ করি না, আমি কূটনৈতিক সমাধানে বিশ্বাস করি। আমার মনে হয়, ইরানের সঙ্গে আমাদের এটা করার চেষ্টা করা উচিত। মানুষ এত কষ্ট ভোগ করছে এবং কেন? বারবার যুদ্ধ, বারবার, আবার’ বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন ওরিয়েলা।

ইসরায়েলে ঢুকল অস্ত্রবাহী এক ডজন জার্মান ও মার্কিন বিমান

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটি ইরানের হামলা ঠেকাতে ক্রমশ ব্যর্থ হয়ে পড়ছে। ইসরায়েলের আয়রন ডোম ও আকাশ প্রতিরক্ষা ফাঁকি দিয়ে একের পর এক মূল ভূখণ্ডে আছড়ে পড়ছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মান থেকে সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ইসরায়েলে নামছে এক ডজনের বেশি বিমান। শুক্রবার (২০ জুন) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে ১৪টি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে এসে পৌঁছেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, এসব বিমান সামরিক সরঞ্জাম ও রসদ বহন করছে, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘অপারেশনাল প্রস্তুতি’ জোরদারে সহায়তা করবে। এই চালানটি ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর গঠিত আকাশ ও সমুদ্রপথে সহায়তা চ্যানেলের অংশ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৮০০টিরও বেশি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে এসেছে। তবে এসব বিমানে কী ধরনের সরঞ্জাম এসেছে, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পক্ষ থেকেও এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি। গত শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে সংঘাতে জড়ায় ইরান-ইসরায়েল। এ সময়ে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানি হামলায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৩৯ জন নিহত এবং এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহত

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ড্রোন হামলায় দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। আইডিএফ সূত্র জানিয়েছে , শুক্রবার ভোরে দক্ষিণ লেবাননের টায়ার জেলার আল-আব্বাসিয়েহ শহরে লিতানি নদী এলাকায় একটি গাড়িতে ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর ফায়ারপাওয়ার ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ খাদের আল-হুসেইনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, নিহত হুসেইনি সাম্প্রতিক সংঘাতে উত্তর ইসরায়েলের নাহারিয়া, হাইফা এবং অন্যান্য শহরগুলোতে অসংখ্য রকেট হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি হিজবুল্লাহর রকেট আর্টিলারি ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় জড়িত ছিলেন বলেও জানায় আইডিএফ।

যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধেই বিজয় পায়নি: ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাত নিয়ে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে কোনো হস্তক্ষেপ করতে চায় না। কেননা ওয়াশিংটন যে যুদ্ধেই অবতীর্ণ হয়েছে, সেখানে কোন বিজয় অর্জন করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এবং ইসরায়েল একা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে পারবে না। সম্প্রতি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইসরায়েলের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এসব কথা বলেছেন। সিএনএন-এর সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরের সঙ্গে কথা বলার সময় বারাক বলেন, তেহরানের কর্মসূচি আটকে রাখার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের ক্ষমতা সীমিত। তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে ইসরায়েল একা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে উল্লেখযোগ্য সময়ের জন্য বিলম্বিত করতে পারবে না। সম্ভবত কয়েক সপ্তাহ বা এক মাস, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের কয়েক মাসের বেশি বিলম্বিত করতে পারে না।’ ‘তবে এর অর্থ এই নয় যে, তাদের কাছে (একটি পারমাণবিক অস্ত্র) থাকবে। সম্ভবত তারা এখনও নির্দিষ্ট অস্ত্র তৈরি সম্পন্ন করতে তৎপর, অথবা একটি অপরিশোধিত পারমাণবিক ডিভাইস তৈরি করে মরুভূমির কোথাও পরীক্ষা চালিয়ে পুরো বিশ্বকে দেখাতে পারে। এতে করে দেশটি নিজেদের সক্ষমতার অস্তিত্বের জানান দেবে।’ বারাক বলেন, সামরিক হামলা ‘সমস্যাজনক’ হলেও ইসরায়েল এই পদক্ষেপকে ন্যায্য বলে মনে করে। ‘অলস বসে থাকার চেয়ে তাদের কিছু করতে হবে। সম্ভবত মার্কিনিদের সঙ্গে আমরা আরও কিছু করতে পারি।’ ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি থামাতে একটি বড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে, অথবা শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। আর এজন্য তাদের উপর পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে হবে। এমন পদক্ষেপে ওয়াশিংটনের আগ্রহ আছে বলেও মনে করেন তিনি।

ইরানের পাল্টা মিসাইল হামলায় কাঁপছে ইসরায়েল

ইসরায়েলে এবার নতুন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। দেশটির তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং সামরিক বাহিনীর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবির পর এ হামলা হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এক পোস্টে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে একগুচ্ছ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা এসব হামলা ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এক পোস্টে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে একগুচ্ছ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা এসব হামলা ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছে। এছাড়া বাসিন্দাদের নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, ইরানের হামলায় দেশজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বাজছে। এর আগে ইরান থেকে নতুন করে ড্রোন হামলা চালানোর পর তার আটক করেছে ইসরায়েল। অধিকৃত গোলান হাইটসে এই হামলার পর সাইরেন বাজানো হয়েছে। এ সময় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জানান যে তাদের বাহিনী অধিকৃত গোলান অঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর সময় একটি ড্রোন আটক করেছে। এদিকে ইরানের তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং সামরিক বাহিনীর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। শুক্রবার (২০ জুন) এক বিবৃতিতে আইডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য শহরে ১২৫ মিনিটব্যাপী বিমান অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। আইএএফের ৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান এ অভিযানে অংশ নিয়েছিল। সূত্রঃ আলজাজিরা

আইআরজিসির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি: রিপোর্ট

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) এর সর্বোচ্চ পরিষদের কাছে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ইরান ইন্টারন্যাশনাল। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজানের একটি গোপন বাঙ্কারে সপরিবারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে খামেনিকে। তার সঙ্গে তার প্রভাবশালী ছেলে মোজতবা খামেনিও রয়েছেন। সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেছেন, আমরা জানি তথাকথিত ‘সুপ্রিম লিডার’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি সহজ টার্গেট, তবে আপাতত তাকে হত্যা করা হবে না। কিন্তু আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না বেসামরিক মানুষ বা আমেরিকান সৈন্যদের দিকে আর কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হোক। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষমতা হস্তান্তরের এ পদক্ষেপ একটি সম্ভাব্য ‘প্রি-এম্পটিভ ট্রান্সফার অব অথরিটি’, যার মাধ্যমে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কমান্ড কাঠামো অক্ষুণ্ন রাখা যাবে, যদি খামেনি নিহত হন। ইসরাইল-ইরান চলমান সংঘাতের অষ্টম দিনে উভয় পক্ষ একাধিক হামলা ও পাল্টা হামলায় জড়িয়েছে। ইসরাইলের একাধিক আক্রমণে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং এর পাল্টা জবাবে ইরানও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ইসরাইলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি হামলা অব্যাহত রাখে, তাহলে ইরান আগের চেয়ে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। ইরানি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা সবসময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথ অনুসরণ করেছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যখন জায়নবাদীরা সন্ত্রাসী আগ্রাসন বন্ধ করবে এবং স্থায়ীভাবে তা বন্ধ রাখার গ্যারান্টি দেবে।