
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়া জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, মতপ্রকাশের কারণে ব্যক্তিদের নিশানা করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করা একটি উদ্বেগজনক প্রবণতার অংশ হয়ে উঠছে।
বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা রিহাব মাহামুর বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে সমর্থনের অভিযোগে যেভাবে আনিস আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা মতপ্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতার জন্য গুরুতর হুমকি।
তিনি আরও বলেন, “মানুষের মতামত প্রকাশকে স্তব্ধ করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন অপব্যবহার না করে নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত মতপ্রকাশের পরিবেশ নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদের আওতায় বাংলাদেশের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা মেনে আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে অ্যামনেস্টি জানায়, আদালতে আনিস আলমগীর নিজেকে একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেছেন যে তিনি দুই দশক ধরে ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন করে আসছেন এবং তার কাজ কারও কাছে মাথা নত করা নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারের অভিযোগে আনিস আলমগীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে ঢাকার একটি মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলতি বছরের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। সংশোধনের পর থেকে এই আইন প্রয়োগ করে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের মামলার তালিকায় সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্নার নামও রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে মতপ্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা দমনে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহারকে লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হয়।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অ্যামনেস্টির মতে, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার রক্ষা এবং অধিকারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।