
থাইল্যান্ড সোমবার কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছে, যা দুই মাস আগে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিকে নতুন সংকটের মুখে ফেলেছে। সীমান্তবর্তী এলাকা আবারও গোলাগুলির ময়দানে পরিণত হয়েছে।
ভোরে দুই দেশ একে অপরকে সীমান্তে হামলার দায়ারোপ করেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা বাড়ছিল, আর থাইল্যান্ড আগেই যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন স্থগিত করেছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বারবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত জুলাইয়ের পাঁচ দিনের দমবন্ধানো সংঘর্ষে বহু মানুষ নিহত এবং দুই পাশ মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল বলেছেন, “আমরা হিংসা চাই না, তবে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবকিছু করব।” তিনি আরও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী সামরিক অভিযান বাড়ানো হতে পারে। থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে থাকলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কম্বোডিয়া হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তারা আগের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
হামলা ছিল পাল্টা জবাব
থাই সেনাবাহিনী জানায়, সোমবারের বিমান হামলা ছিল পাল্টা হামলা। ভোরে কম্বোডিয়ার হামলায় একজন থাই সৈন্য নিহত ও সাতজন আহত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর দাবি, কম্বোডিয়া ভোর ৩টার দিকে ভারী অস্ত্র নিয়ে সীমান্তে আগ্রাসন শুরু করে।
তবে কম্বোডিয়া এসব অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে। তাদের তথ্যমন্ত্রী নেথ ফেকত্রা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সকাল ৫টার দিকে থাইল্যান্ডের সেনারা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, অন্তত চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। কয়েকটি প্রদেশে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া।
থাইল্যান্ডও সীমান্ত এলাকা থেকে মানুষ সরিয়ে নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪ লাখ মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়ে গেছে।
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি ঝুলে যাচ্ছে
এ বছরের শুরুতে বড় সংঘাতের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ২৮ জুলাই প্রথম যুদ্ধবিরতির চুক্তি করান। পরে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে বিস্তৃত চুক্তি সই হয়।
তবে চুক্তি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ও অন্যান্য উত্তেজনার কারণে থাইল্যান্ড তার অগ্রগতি স্থগিত করে।
দুই দেশের প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে বিতর্কের মূল কারণ ফরাসি উপনিবেশ আমলে তৈরি করা মানচিত্র, যা থাইল্যান্ড স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছে।