
টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বস্বাস্থ্যে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় ড. তাহমিদ আহমেদ
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক খ্যাতনামা সাময়িকী টাইম তাদের ২০২৫ সালের ‘বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তি’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদকে। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং সীমিত-সম্পদের অঞ্চলে স্বাস্থ্য সমস্যার দৃষ্টান্ত-নির্ভর সমাধানে তার অগ্রণী অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে এই সম্মান দিয়েছে সাময়িকীটি। ড. তাহমিদের নেতৃত্বে আইসিডিডিআর,বি অত্যাধুনিক গবেষণা ও জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের লাখো মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিয়েছে এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা সম্পর্ক সুদৃঢ় করেছে। আগামী ১৩ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে 'টাইম ১০০ ইম্প্যাক্ট ডিনার: লিডারস শেপিং দ্য ফিউচার অব হেলথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অন্যান্য মনোনীত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগ দেবেন ড. তাহমিদ আহমেদ। টাইমের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী সেখানে তিনি একটি অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেবেন। এই বক্তব্য টাইমের সম্পাদকীয় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মেও প্রচারিত হবে। এই অসামান্য স্বীকৃতির বিষয়ে ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘টাইমের ২০২৫ সালের স্বাস্থ্যে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় থাকা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এই অর্জন আমার একার নয়, এটি আইসিডিডিআর,বি-র বিজ্ঞানী, কর্মী, বৈশ্বিক অংশীদার ও আমাদের সেবাগ্রহণকারীদের সবার। টাইম আমাকে যে স্বীকৃতি ও গুরুত্ব দিয়েছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আশা করি, এ ধরনের স্বীকৃতি অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই এবং স্বাস্থ্য গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে সাহায্য করবে, যা যুদ্ধ-সংঘাত নয়, বরং ন্যায়, স্বাস্থ্য ও মানুষের মর্যাদার পক্ষে কাজ করবে।’ ড. তাহমিদ আহমেদের এই স্বীকৃতি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয় বরং বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্যও পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার সঙ্গে বাংলাদেশে কাজ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার অনুপ্রেরণা।

‘চীনের উপহারের হাসপাতাল রংপুর অঞ্চলেই হবে, তবে জেলা চূড়ান্ত হয়নি’
চীন সরকারের উপহার হিসেবে ১ হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি রংপুর অঞ্চলেই হবে। তবে কোন জেলায় হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মুহম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। আজ বুধবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানান। এ সময় রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতাল চালু, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধি এবং অচল যন্ত্রপাতি দ্রুত সচল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন যুগ্ম সচিব ড. মুহম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। পরিদর্শনকালে নষ্ট হওয়া ক্যান্সার বিভাগের রেডিওথেরাপি, এক্সরে, সিটি স্ক্যান যন্ত্র পরিদর্শনসহ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমানসহ হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি সোসাইটি বাংলাদেশকে কোটি টাকার অনুদান পূবালী ব্যাংকের
পূবালী ব্যাংক পিএলসি সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশকে স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের জন্য এক কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছে। এ উপলক্ষ্যে পূবালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর ডাক্তার সাবেরা খাতুনের নিকট আর্থিক অনুদানেরচেক হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে পূবালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, আহমদ এনায়েত মনজুর, মো. শাহনেওয়াজ খান ওসুলতানা সরিফুন নাহার উপস্থিত ছিলেন। এ সময় গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ডাক্তার নাজমা হক, পূবালী ব্যাংক জেনারেল ব্যাংকিং ও অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়জুল হক শরীফ এবং জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পূবালী ব্যাংক শুধু মুনাফা অর্জন করার জন্যই ব্যবসায় করে না, এর বাইরে সামাজিক দায়িত্ববোধওরয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী ক্যান্সার অসংখ্য মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, এর মধ্যে নারীদের জন্য সার্ভিক্যাল ও ওভারিয়ান ক্যান্সার আশংকাজনক হারে বেড়ে চলেছে। আমরা মাল্টিডিসিপ্লিনারী সেবা নিশ্চিত করা জন্য ও গাইনোকলজিক্যাল ক্যান্সার আক্রান্ত নারীদের চিকিৎসা এবং এ বিষয়ে উচ্চতর গবেষণায় সহায়তা করার জন্য পাশে থাকতে চাই। এরই প্রেক্ষিতে গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশকে এই অর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।’

তিন বিশিষ্ট চিকিৎসকের স্মরণে স্মরণসভা
সর্বজন শ্রদ্ধেয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, বারডেমের ল্যাবরেটরী সায়েন্সের সাবেক পরিচালক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. টিএ চৌধুরী, রাজশাহী ক্যান্সার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা রোটারিয়ান ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরীর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল দশটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের দোতলায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের ট্রাস্টি ও বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ডা. সারিয়া তাসনিম, বিশিষ্ট প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সরকারের নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. হালিদা হানুম আখতার, দেশের পথিকৃৎ পেলিয়েটিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নেজাম উদ্দিন আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল ও অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর ডিন অধ্যাপক মলয় কুমার মৃধা, অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরীর সহধর্মিণী মিসেস কামনা চৌধুরী, ডা. প্যাট্রিক বিশ্বাসের কন্যা ডা. ইপ্সিতা বিশ্বাস ও জামাতা ডা. অভি চক্রবর্তী এবং ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ এর সভাপতি সৈয়দহুমায়ুনকবীরসহ অনেকে।বক্তারা তিন দিকপাল চিকিৎসকের কর্মময় জীবনের উপর আলোকপাত করেন ও তাদের আদর্শ ধারণ করে মানুষের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন ক্যান্সার প্রতিরোধে তিন প্রয়াত চিকিৎসকের অবদান উল্লেখ করে তাঁদের অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণের ঘোষণা দেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি বছর অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী স্মারক বক্তৃতামালা আয়োজন ও তার অপ্রকাশিত রচনাবলী প্রকাশ, ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী ক্যান্সার হাসপাতাল সম্প্রসারণে সহযোগিতা ও বয়স্কদের জন্য পরিকল্পিত সেবাকেন্দ্র চালু করতে সহায়তা করা। তিনি আরও বলেন সিওসি ট্রাস্ট ও স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। যাঁরা মানবকল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন, তাঁদের স্মরণ ও সম্মাননা জানানো উত্তরসূরীদের কর্তব্য।অনুষ্ঠানটির আয়োজক কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম। সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ।

সিদ্ধ মিষ্টি আলু খেলে কী হয় শরীরে?
বাজারে এখনও পাওয়া যাচ্ছে মিষ্টি আলু। শীতের মৌসুমে বাজারে আসা এ আলু শুধু নামেই মিষ্টি নয়, এ আলুতে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। পুষ্টিবিদের মতে, মিষ্টি আলু ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, খনিজসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। এছাড়া মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, মেঙ্গানিজ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও মিনারেল।নানা জটিল রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে মিষ্টি আলু। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ‘মিষ্টি আলুর সব পুষ্টিগুণ পেতে তা সিদ্ধ করে খেলে বেশি উপকারিতা মেলে। আসুন এক নজরে জেনে নিই, সিদ্ধ মিষ্টি আলুর কিছু উপকারিতা সম্পর্কে:সিদ্ধ মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে; মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণে কাজ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়; মিষ্টি আলুর ভিটামিন বি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, বিপাকে কাজ করে; মিষ্টি আলুতে থাকা পটাশিয়াম হরমোন ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে, পেশী ও স্নায়ুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে; হাড়ের বিকাশে দারুণ কাজ করতে পারে মিষ্টি আলুতে থাকা মেঙ্গানিজ; নাম মিষ্টি আলু বলে ডায়াবেটিস রোগীরা এ আলু এড়িয়ে যাবেন না। চিকিৎসকরা বলছেন, মিষ্টি আলুতে প্রচুর ফাইবার ও গ্লাসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় রক্ত প্রবাহে সুগারের মাত্রা ধীর করে দেয়; মিষ্টি আলুতে কোনো ফ্যাট বা চর্বি নেই। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ডায়েট লিস্টে রাখতে পারেন মিষ্টি আলুকে; উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও দারুণ কাজ করতে পারে মিষ্টি আলু; মিষ্টি আলুর ফাইবার এবং পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে এবং পেট, কিডনি এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও কাজ করতে পারে মিষ্টি আলু ইত্যাদি।উল্লিখিত উপকারিতাগুলো পেতে মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করুন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, রান্না করা মিষ্টি আলুর তুলনায় সিদ্ধ মিষ্টি আলুতে বেশি পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে। তাই ডায়েট লিস্টে নিয়মিত রাখুন সিদ্ধ মিষ্টি আলু।

প্রবাসীদের মালিকানায় ঢাকায় হবে হাসপাতাল: আসিফ নজরুল
রাজধানী ঢাকার বারিধারায় প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এ হাসপাতালে শুধু প্রবাসীদের চিকিৎসা নয়, এর মালিক হবেন প্রবাসীরা। শুধু প্রবাসীরাই এখানে শেয়ার কিনতে পারবেন। প্রবাসীদের জন্য স্পেশাল ডিসকাউন্ট থাকবে। বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা থাকবে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি, প্রতিবন্ধী ভাতা, অসুস্থ প্রবাসীদের চিকিৎসা সহায়তা এবং প্রবাসে মৃতের পরিবারকে আর্থিক অনুদান, বিমা ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণজনিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, আপনারা (প্রবাসীরা) রেমিট্যান্স দিয়ে পুরো দেশটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমরা বড় বড় কথা বলি, দেশ উন্নত হয়ে যাচ্ছে- এমন নানান ধরনের কথা আমরা বলি। এসব কিছুর মূল অংশীদার হলেন আপনারা (প্রবাসী কর্মীরা)। আপনাদের টাকায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় দুবাইতে আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা গ্রেফতার হন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশে তাদের জেল থেকে গ্রেফতারকৃত দের বের করা প্রায় অসম্ভব- এটা যে কারও পক্ষেই। কিন্ত আমাদের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেটা সম্ভব করেছেন। তার ফোনের মাধ্যমে দুবাই সরকার প্রবাসীদের মুক্তি দেয়। আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি আগে যখন বিভিন্ন কাজে বিদেশ যেতাম, অনেক সময় এয়ারপোর্টে ও বিভিন্ন জায়গায় প্রবাসীদের সঙ্গে দেখা হতো, কত আন্তরিকতা তারা দেখিয়েছেন বোঝাতে পারবো না। সেই তাদের জন্য কিছু করতে আল্লাহ আমাকে এই সুযোগ দিয়েছেন। কিন্ত আমার কাছে মনে হয় খুব কমই করতে পারছি। আজ যে টাকা আমরা দিয়েছি এটা আপনাদেরই টাকা। এই টাকা প্রবাসী কর্মীদের। আপনারা অবহেলিত ছিলেন, আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বৃহৎ পরিকল্পনা আছে। বারিধারায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাড়ে ৮ বিঘা জমি আছে। এখানে প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল হবে। এটা শুধু প্রবাসীদের চিকিৎসা নয়, এর মালিক হবেন প্রবাসীরা। শুধু প্রবাসীরাই এখানে শেয়ার কিনতে পারবেন। প্রবাসীদের জন্য স্পেশাল ডিসকাউন্ট থাকবে। বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা থাকবে। আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসীদের সাময়িকভাবে অবস্থানের জন্য ঢাকায় বিমানবন্দরের সন্নিকটে খিলক্ষেত এলাকায় ওয়েজ আর্নার্স সেন্টারে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ডরমেটরিকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ২০০ শয্যাবিশিষ্ট ভবনে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ভবন নির্মিত হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিদেশগামী ও প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসী নিরাপদে এ সেন্টারে অবস্থান করতে পারবেন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার পাবেন। জেলায় স্থাপিত ওয়েজ আর্নার্স সেন্টারকে বিদেশগামী কর্মীদের ওরিয়েন্টেশন ও ব্রিফিং, বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের ভাষা শিক্ষা, প্রশিক্ষণসহ নানান সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত প্রবাসী কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। এতে অনুদান পাওয়া প্রবাস ফেরত কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশে তিনটি বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবু জাফর বলেছেন, ‘বাংলাদেশে চীনের সহয়তায় তিনটি বড় হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। নীলফামারীতে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল করবে চীন। প্রথমিকভাবে ১৬ একরের মতো একটি জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। এটার দেখভাল করছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আর একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে সাভার ধামরাইয়ে। এটি হবে পুর্নবাসন প্রতিষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় আহতদের সেবা দেওয়া হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার আরও একটি হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এটা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। এর বাইরে চীনের অর্থায়নে চট্টগ্রামে বার্ন ও প্লাস্টিক ইউনিট পরিচালিত হচ্ছে।’ রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে হাসপাতাল করবে চীন। এ হাসপাতাল নীলফামারী নির্মাণের সম্ভাবনা আছে। এটি এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল করবে চীন। হাসপাতাল করার জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূতকে আমরা বলেছিলাম, রবোটিক ফিজিওথেরাপির সেট একটি আমাদের উপহার হিসেবে দিতে। আমাদের শুধু আন্দোলনে আহতদের জন্য না, ভবিষ্যতেও দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য লাগবে। চীন আমাদের কথা রেখেছ, একটি সেট আমাদের উপহার হিসেবে দিয়েছে। এটা বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আছে। এটা স্থাপন করতে আমাদের ৬ হাজার স্কয়ার ফুটের মতো জায়গা লাগবে।’ ‘আমরা সেই জায়গা ঠিক করেছি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বিএসএমএমইউ)। সেখানে এটা ডেডিকেটেড করা থাকবে। আমাদের আহতরা সেখানে ফিজিওথেরাপি নিতে পারবে। তার জন্য আমরা একটি দলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দিবো। ব্যাংকক থেকে আমরা বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসবো, তারা এখানে প্রশিক্ষণ দিয়ে গেলে ভবিষ্যতে সবাই এখান থেকে সহায়তা পাবেন। আমাদের এখানে একটা রবোটিক ফিজিওথেরাপি বসালে হবে না, আমরা উত্তরবঙ্গে এবং চট্টগ্রামে দেওয়ার চেষ্টা করবো। যাতে ওখানকার রোগীদের এখানে ফিজিওথেরাপি দিতে আনতে না হয়।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা.আবুল খায়ের, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ডাক্তার মো. আবুল কেনান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২২
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারা দুইজনই বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। শনিবার (১২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ জন ভর্তি হন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা তিনজন করে মোট ছয়জন। ঢাকা বিভাগের জেলা পর্যায়ে ভর্তি রোগী চারজন। বাকি দুইজন চট্টগ্রাম বিভাগের। বিজ্ঞাপন গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনসহ চলতি বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৬ জন।

চীনের বিনিয়োগে দেশে হবে বিশেষায়িত হাসপাতাল
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘চীনের বিনিয়োগে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মিত হবে। বিশেষায়িত একটি হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানালে চীন রাজি হয়। খুব শিগগিরই বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।’ আজ রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার রোগী প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে দেশে কেন আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে না, একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি কুনমিং যান। সেখানে চীনের কো-অপারেশন মিনিস্টারের সঙ্গে তার কথা হয়। ওই সময় বাংলাদেশের রোগীদের সূচিকিৎসার্থে সেখানকার কয়েকটি হাসপাতাল চিহ্নিত করা যায় কি না সে ব্যাপারে তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল।’ ‘অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তারা অতি দ্রুত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য চারটি হাসপাতাল ঠিক করেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সেই চারটি হাসপাতালের একটি ফার্স্ট পিপলস হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ থেকে একটি দল চিকিৎসা গ্রহণের জন্য সেখানে যায়।’ খলিলুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে চীনের কুনমিং যেতে মাত্র ২ ঘণ্টা সময় লাগে। তাছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসার মান ও পরিবেশ অত্যন্ত ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তাতে সন্তুষ্ট হলে চলবে না। বাংলাদেশে অত্যন্ত উঁচু মানের হাসপাতাল প্রয়োজন। এ কারণেই চীন সরকারের কাছে বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণের অনুরোধ করা হয়।’ প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ঈদে জরুরি বিভাগ-ওটি-ল্যাব চালুসহ ১৬ নির্দেশনা অধিদপ্তরের
আসন্ন ঈদুল ফিতরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমারজেন্সি ওটি, ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখাসহ ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর। নির্দেশনায় জরুরি বিভাগে প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়ন করে হলেও সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপযুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, ঈদুল ফিতর ২০২৫-এর ছুটির সময়ে হাসপাতালসমূহে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো— ১. জরুরি বিভাগে প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়নপূর্বক সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ২. জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমারজেন্সি ওটি, ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। ৩. কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে। ৪. প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করবেন। ৫. সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালককে অবহিত করে শুধুমাত্র ঈদের ছুটিকালীন সময়ে নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জনবল সমন্বয় করতে পারবেন। ৬. হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ইউনিট প্রধানরা প্রতিদিন তাদের বিভাগীয় কার্যক্রম তদারকি করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহে জরুরি ল্যাব, এক্সরে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনুকূলে সেবা চালু রাখতে হবে। ৭. ছুটি শুরু হওয়ার পূর্বেই ছুটিকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আইডি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্ভিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটিকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করবেন। ৮. অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। ৯. ছুটিকালীন সময়ে হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগামপত্র দিতে হবে। ১০. ছুটিকালীন সময়ে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ১১. প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা ছুটিকালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন। ১২. প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধিমোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকর্তা সব দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। ১৩. প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ১৪. বহির্বিভাগ একাধারে ৭২ ঘণ্টার অধিক বন্ধ রাখা যাবে না। এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। ১৫. ক. সকল বেসরকারি ক্লিনিক/ হাসপাতাল রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক জরুরি ও প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখবে।খ. কোনো রোগী রেফার্ড করার আগে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং যাত্রাপথের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।গ. রেফার্ড রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। ১৬. যেকোনো দুর্যোগ, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে। বিষয়টি অতীব জরুরি উল্লেখ করে নির্দেশনায় বলা হয়, মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

দেশে ২০ লাখ মানুষ চোখের গ্লুকোমায় আক্রান্ত
গ্লুকোমা চোখের এমন একটি রোগ, যার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি চিরতরে দৃষ্টি হারাতে পারেন। দেশের প্রায় ২০ লাখ মানুষ চোখের রোগ গ্লুকোমায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, ৪০ বছর বয়সের পর থেকে গ্লুকোমায় আক্রান্তের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এমন পরিস্থিতিতে রোগটি নিয়ে সচেতনতার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার (১৫ মার্চ) বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটি ও অ্যারিস্টোভিশনের উদ্যোগে রাজধানীর সোবহানবাগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন। সভায় বিশেষজ্ঞরা জানান, মানুষের শরীরে যেমন ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ থাকে, তেমনি চোখেরও প্রেশার আছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের ব্লাড প্রেশার যেমন থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি, তেমনি সাধারণত চোখের ভেতরের প্রেশার ১০ থেকে ২১ মিলিমিটার অব মার্কারি। এ প্রেশার যখন ২১ মিলিমিটারের ওপরে চলে যায়, তখন চোখের ভেতরে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত চাপ যখন চোখের ভেতরের অপটিক নার্ভে চাপ দেয় তখন তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। এর ফলে চোখে কম দেখা শুরু হয় এবং প্রেশারের কারণে অপটিক নার্ভ যত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তত ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। এ সমস্যাটিই হচ্ছে গ্লুকোমা। এদিন সকাল ১০টায় গ্লকোমা সোসাইটির কার্যালয় ধানমন্ডির হারুন আই ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্প, বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবউদ্দিন। একইসঙ্গে সকাল ১০টা থেকে একটা পর্যন্ত বিনামূল্যে চক্ষু রোগী দেখা হয়। পরে রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় গ্লুকোমা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা সহীদ, হারুন আই ফাউন্ডেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ এম এ মান্নাফ গ্লুকোমা রোগের সচেতনতা মূলক বক্তব্য প্রদান করেন। হারুন আই ফাউন্ডেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ডা. জুয়েলা নাসরিন অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন গ্লুকোমা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা সহীদ। তিনি গ্লুকোমা রোগের গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে গণমাধ্যমকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। গ্লুকোমা প্রতিরোধে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জিননুরাইন (নিউটন) গ্লুকোমার ভয়াবহতা ও চিকিৎসা সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান করেন। আলোচনা সভায় অধ্যাপক এম নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মো. আরিফ মিয়া, ডা. এম জিয়াউল করিম ও অধ্যাপক ডা. হাসান শহীদ গ্লুকোমা রোগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এ ছাড়া সভায় গ্লুকোমা সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমান গ্লুকোমা সোসাইটির কার্যক্রম তুলে ধরেন। এসময় তিনি জানান গ্লুকোমা সপ্তাহ উপলক্ষে দেশের সরকারি বেসরকারি ৭০টি প্রতিষ্ঠানে সভা সিম্পজিয়ামসহ প্রচারণা চালানো হয়েছে। তিনি রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন।

পুত্রসন্তান পেতে কোনো পদ্ধতি আছে কিনা, যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারতীয় উপমহাদেশে ছেলে সন্তান পাওয়া নিয়ে মানুষের আগ্রহ অনেক। এ বিষয়ে সমাজে অনেক মিথ প্রচলিত আছে। প্রাচীনকালে অদ্ভূত কিছু পদ্ধতিও গ্রহণ করতেন নারী-পুরুষেরা। এখনও বিভিন্ন সমাজে এসবের প্রচলন রয়ে গেছে। আসলে পুত্রসন্তান পাওয়ার জন্য সহবাসের সময় কোনো বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি আছে কিনা? এমন প্রশ্নে জবাব দিয়েছেন ডা. তাসনিম জারা। এ বিষয়ে তিনি প্রাচীন ফ্রান্সের একটি উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ২০০-২৫০ বছর আগের কথা। ফ্রান্সের সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুরুষরা তাদের বাঁদিকের অণ্ডকোষ বেঁধে রাখতেন। আবার কেউ কেউ অণ্ডকোষ কেটেও ফেলতেন যাতে পুত্রসন্তান হয়। এ কাজটা করার পেছনে তাদের একটা চিন্তা ছিল, বৈজ্ঞানিক শোনা যায় এমন একটা ব্যাখ্যাও ছিল।’ ব্যাখ্যাটা হলো পুরুষের দুইটি অণ্ডকোষ কাজ আলাদা। কেননা, অণ্ডকোশ দুইটির আকার আলাদা, ডান দিকেরটা সাধারণত বড় থাকে। তাই তারা চিন্তা করতো ডান দিকের অণ্ডকোষ থেকে ছেলে হয় আর বাঁদিকে অণ্ডকোষ থেকে মেয়ে হয়। যেহেতু বাঁদিকের অণ্ডকোষ থেকে মেয়ে হয় তাই তারা সেটাকে কেটে ফেলতো বা বেঁধে রাখতো। এই কাজটি করার পেছনে একটি কারণ ছিল, সেখানকার একজন বিজ্ঞানী তার বইয়ে লিখেছিলেন যে, এই অণ্ডকোষ কেটে ফেলা খুব সহজ একটা অপারেশন। দাঁত ফেললে যেমন ব্যথা লাগে এটি কাটলে ঠিক তেমনই একটু ব্যথা লাগবে। তাই অণ্ডকোষ কেটে ফেলা পুত্রসন্তান পাওয়ার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। অন্যদিকে অণ্ডকোষ কাটার সাহস যাদের ছিল না তাদের জন্য ওই বিজ্ঞানী একটি উপায় বের করেছিলেন। সেটি হল- তাদের স্ত্রীরা সহবাসের পর যেন এক দিকে কাত হয়ে শুয়ে থাকে। পুরুষের যেমন অণ্ডকোষ দুইটা তেমনই মেয়েদেরও ডিম্বাশয় দুইটা থাকে। একদিকের ডিম্বাশয় ছেলে আর অন্য দিকেরটায় মেয়ে সন্তান হয়। সুতরাং যেই লিঙ্গের সন্তান সে চায় সেই দিকে সে কাত হয়ে শুয়ে থাকবে। এই কথাগুলো বর্তমান সময় শুনতে খুব হাস্যকর শোনালেও তখনকার সময়ে এ পদ্ধতিটা খুবই জনপ্রিয় ছিল। ওই বিজ্ঞানীর লেখা সেই বইটির অনেকগুলো কপি বিক্রি হয়েছিল সে সময়। বইটির নাম ছিল ‘দ্য আর্ট অব হেভিং বয়েস’ অর্থাৎ পুত্রসন্তান পাওয়ার আর্ট। পুত্রসন্তান পাওয়া জন্য যদি আপনাদেরকে কেউ কোনো চমকপ্রদ পদ্ধতির কথা বলে সেটা এড়িয়ে চলবেন। এটা এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা, এতে আপনার অর্থের ক্ষতি হতে পারে, সময়ের ক্ষতি হতে পারে এবং শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। সত্যিকারার্থে ছেলে ও মেয়ে সন্তান জন্ম হওয়ার বিষয়টি পুরোটাই নির্ভর করে স্রষ্টার ইচ্ছার ওপর। এখানে মনুষ্য ইচ্ছার কোনো সুযোগ নেই।

ন্যাশনাল ব্যাংকের সাথে আজগর আলী হাসপাতালের চুক্তি
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ও আজগর আলী হাসপাতালের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি সই হয়েছে। গত সোমবার (১০ মার্চ) হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের আইটিডির প্রধান ও এসইভিপি কাজী কামাল উদ্দিন আহমেদ, কার্ড ডিভিশনের অপারেশন ইনচার্জ ও ভিপি উজ্জ্বল কুমার পাল, এভিপি প্যাট্রিক অজয় গমেজ, আজগর আলী হাসপাতালের হেড অফ অপারেশনস মোরশেদ আহমেদ চৌধুরী, অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্সের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম তালুকদার, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ম্যানেজার মারুফ বিন হাফিজ। চুক্তি অনুযায়ী ন্যাশনাল ব্যাংকের কার্ডধারী এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ আজগর আলী হাসপাতালের বিভিন্ন ধরনের সেবায় বিশেষ ছাড় ও কর্পোরেট সুবিধা পাবেন।

চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ঢামেক-সোহরাওয়ার্দীর বর্হিবিভাগ সেবা বন্ধ
চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বর্হিবিভাগ সেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে। পাঁচ দাবিতে বুধবার (১২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে গেলে হাসপাতাল দুটির চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসকদের কর্মসূচির কথা জানা না থাকায় সেখানে সকাল থেকে রোগীদের ভিড় দেখা গেছে। অনেকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চলে যাচ্ছেন, অনেকে আবার সেখানেই ঘোরাঘুরি করছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার সারা দেশে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করবে। একই সঙ্গে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালের ইনডোর, আউটডোর সেবা ও বৈকালিক চেম্বার বন্ধ থাকবে। তারা আরও জানান, বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চিকৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ হবে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ হবে। যে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন চিকিৎসকেরা, সেগুলো হলো এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ছাড়া অন্য কেউ ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এবং আদালতে চলমান জনস্বাস্থ্যবিরোধী সব রিট নিষ্পত্তি করতে হবে; রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস/বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না; মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্সের কারিকুলাম সংস্কার এবং মানহীন ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধ করতে হবে; জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের শূন্যপদ পূর্ণ করতে হবে এবং বিসিএস বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে। আন্দোলনের শুরু: এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। সেগুলো শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং চিকিৎসক পেশাজীবীদের ১৭ সংগঠন নিয়ে এ ‘সর্বস্তরের চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে।

এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না: হাইকোর্ট
এমবিবিএস এবং বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া আজ পর্যন্ত যারা নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’ তবে কাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) থেকে আইন ভঙ্গ করে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি করেছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। তবে অন্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও চিকিৎসক পেশাজীবীদের ১৭ সংগঠন নিয়ে ‘সর্বস্তরের চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে। এর অধীনে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন আর ইন্টার্নরা প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন। চিকিৎসকদের পাঁচ দাবি হল এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ছাড়া অন্য কেউ ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এবং আদালতে চলমান জনস্বাস্থ্যবিরোধী সব রিট নিষ্পত্তি করতে হবে; রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস/বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না; মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্সের কারিকুলাম সংস্কার এবং মানহীন ম্যাটস (মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধ করতে হবে; জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের শূন্যপদ পূর্ণ করতে হবে এবং বিসিএস বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।

পাঁচ দাবিতে ফের আন্দোলনে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা
আবার সারা দেশে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন, মেডিকেল অফিসার ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থীরা। বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপতালে গিয়ে দেখা যায়, তাদের এ কর্মসূচির কারণে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা।ঢামেক হাসপাতাতালের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফলে বেশ কয়েক ঘণ্টা বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখায়, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও পাল্টা আন্দোলন শুরু করেন। পরে তারা হাসপাতালে পরিচালকের কাছে যান। সেবা বন্ধ থাকায় পরিচালকের রুমের সামনে সাধারণ রোগীরা বাগবিতণ্ডা শুরু করেন।এরপর হাসপাতালের পরিচালকের অনুরোধে আন্দোলনরত মেডিকেল চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করেন । এদিকে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের মতো আজও ‘সাধারণ মেডিকেল শিক্ষার্থী’র ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে ঢামেক শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেলও তাদের এ কর্মসূচি পালন করছেন। সেখানে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা।শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবি হল এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেয়া শুরু করেছে। এ ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্যা কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না; স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে; সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। এরইমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে এবং চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তায় চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য যে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ডাক্তার সমাজের প্রতিবাদের মুখে ৭ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। যা আজ ৭ মাস পেরিয়েও কোনো আলোর মুখ দেখেনি। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) থেকে তারা এ আন্দোলন শুরু করেন। তাদের দাবি না মানা হলে সব শিক্ষক ও চিকিৎসককে নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

উন্নত চিকিৎসা নিতে চীনের উদ্দেশে রওনা হলেন ১৪ রোগী
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার চিকিৎসা সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৪ জন বাংলাদেশি রোগী উন্নত চিকিৎসা নিতে চীনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সোমবার (১০ মার্চ) প্রথম দফায় তাদের পাঠানো হলো। এ উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে দায়িত্বরত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘এই প্রথম দলে রোগীদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্য, চিকিৎসক, ট্যুর অপারেটর ও সাংবাদিকসহ মোট ৩১ জন রয়েছেন।’ বিমানবন্দরের সিআইপি আউটডোর পথে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশি রোগীরা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই কারণেই অন্তর্বর্তী সরকার চীনের সহায়তা চেয়েছিল এবং চীনা সরকার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।’ ভ্রমণের খরচ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চীনে ভ্রমণের বিমান ভাড়া কমানোর চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা নীতি নেই।’ আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুসরণ করে ভিসার জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেন তিনি। প্রতিনিধি দলের সদস্য ড. রাশেদুল হাসান চীনে উন্নত চিকিৎসার সুযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘চীন গুরুতর রোগ যেমন ট্রান্সপ্লান্ট ও ক্যান্সারের মতো চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উন্নত চিকিৎসা দেয়। তবে অনেক বাংলাদেশি এই সুযোগগুলোর বিষয়ে অবগত নন। আমরা চিকিৎসকরা চীনে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাব, যা বাংলাদেশে প্রয়োগ করা যাবে।’ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা একজন ট্র্যাভেল এজেন্ট বলেন, ‘চীনে চিকিৎসা খরচ ভারতের চেন্নাই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু বা থাইল্যান্ডের মতো। কিছু ক্ষেত্রে চীনে চিকিৎসা আরও সস্তা।’ পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমান এই উদ্যোগকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, রোগীদের প্রতিনিধিরা, চিকিৎসক এবং ভ্রমণ সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ঘোষণা দিয়েছিলেন, চীনের ইউনান প্রদেশের তিনটি শীর্ষ স্থানীয় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের গ্রহণ করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি জানান, উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো চিকিৎসা সেবার প্রক্রিয়া সহজ করতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং দোভাষীর দল গঠনের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি চীন সফরের সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন, বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য খাতে। তিনি চীনকে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসায় সহায়তা এবং বাংলাদেশে হাসপাতাল প্রকল্পের জন্য সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

ইফতারে খালি পেটে বেলের শরবত খেলে কী হয়?
স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই ইফতারে পানীয় হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বেলের শরবত। সারাদিন রোজা রাখার পর খালি পেটে ইফতারে এ শরবত খাওয়া শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই, শরীরে নানা উপকারিতা পেতে বেলের শরবত খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদদের। বেল পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। সেই সঙ্গে এতে আছে নানান ঔষধি গুণ, যা আমাদের দেহের অনেক উপকার করে। প্রাচীন সময় থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে এ ফল।বিভিন্ন উপকারী গুণের পাশাপাশি গরমে ঠান্ডা এক গ্লাস বেলের শরবত নিমেষেই আপনাকে প্রশান্তি এনে দিতে পারে। তাই, গরমের এই সময় ইফতারের শুরুতে বেলের শরবতকে সঙ্গী করে নিতে পারেন।ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে আসুন এক নজরে জেনে নিই, বেলের শরবত খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-কোষ্ঠকাঠিন্য: নিয়মিত বেল খেলে এর ল্যাকোটিভগুণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও মুখের ব্রণ দূর হয় এবং ত্বক ভালো থাকে। টানা ৩ মাস যদি আপনি নিয়মিত বেল খান, তাহলে আপনি সহজেই মুক্তি পেতে পারেন এই সমস্যা থেকে।আলসারের ওষুধ: আলসারের ওষুধ হিসেবে খেতে পারেন বেল। পাকা বেলের শাঁসে সেই ফাইবার আছে, যা আলসার উপশমে খুবই কার্যকরী। এ জন্য সপ্তাহে তিন দিন খান বেলের শরবত।ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে বেল। পাকা বেলে আছে মেথানল নামের এক উপাদান, যা ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ করে। তবে শরবত করে নয়, বেল খেতে হবে এমনিই।আর্থ্রাইটিস: শরীরে হাড়ে কিংবা মাংসে ব্যথা ছাড়া এখন খুব কম মানুষই আছেন। আর্থ্রাইটিসের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও বেলকে সঙ্গী করে নিতে পারেন।এনার্জি: পুষ্টিবিদরা বলছেন, ফাইবারে ভরপুর বেল হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এনার্জি বাড়াতে বেলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১০০ গ্রাম বেল ১৪০ ক্যালরি এনার্জি দেয়। পাচনক্রিয়াকেও শক্তিশালী করে তোলে এই বেল।ব্লাড প্রেশার: ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়ার কারণে চিন্তায় রয়েছেন? এ সময় বেল খেলে দূর হবে এই সমস্যা? চিকিৎসকরা বলছেন, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেলের জুড়ি মেলা ভার।ক্যানসার: বেলে রয়েছে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান। নিয়মিত বেল খেলে শরীর ক্যানসার প্রতিরোধী শক্তি বাড়ে।পানিশূন্যতা কমিয়ে শরীরকে শীতল রাখা: বেল খাওয়ার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এটি শরীরের ইমিউনিটি বুস্ট করার পাশাপাশি শরীরকে শীতল রাখে।হজম শক্তি বাড়ায়: বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এটি অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পাচন প্রক্রিয়া সবল করে হজম শক্তি বাড়াতে পারে।ত্বকের যত্ন: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং সি-র ভালো উৎস বেল। তাই ত্বকের যত্নের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে গোলাকার এ ফলটি।এ ছাড়া ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, যক্ষ্মা, অপুষ্টিতেও ভালো কাজে আসে এই বেল। তাই গরমের এই সময় ইফতারে নিয়মিত খেতে পারেন বেল অথবা বেলের শরবত।

দাবি পূরণের আশ্বাসে বিসিএস চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত
তিন মাসের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম। শনিবার (৮ মার্চ)সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) এসে কর্মবিরতি শুরু করা চিকিৎসদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সম্মতিপত্র আসার পর তারা প্রক্রিয়া শুরু করবেন।’ দাবি পূরণে সময় চেয়ে সায়েদুর রহমান বলেন, ‘এই কাজটি শেষ করতে ২০-২৫ কার্যদিবস লাগবে। সব মিলিয়ে আপনাদের দাবি-দাওয়াগুলো পূরণে আমরা ১২ সপ্তাহ সময় চেয়েছি। এখানে দুইটি মন্ত্রণালয় জড়িত আছে। আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মতি নিয়ে কাজটা করছি। বিষয়টি নিয়ম মেনে করতে হচ্ছে।’ এরপর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন চিকিৎসারা। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষে চিকিৎসক মোহাম্মদ আল আমিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা এসেছিল শুক্রবার (৭ মার্চ)। সেই কর্মসূচি অনুযায়ী পদোন্নতি ও সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের দাবিতে শনিবার সকালে তিন দিনের কর্মবিরতিতে নামে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম। কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার ১০টা থেকে টানা তিন দিন সরকারি হাসপাতালে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করার কথা ছিল চিকিৎসকরা। দাবি আদায় না হলে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তবে জরুরি বিভাগের সেবা এই কর্মসূচির আওতামুক্ত রাখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম। শনিবার সকালে ঢামেকের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে চিকিৎসকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের দাবিগুলো হল- চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও এমবিবিএস ডিগ্রির বৈশ্বিক স্বীকৃতি বজায় রাখতে পদোন্নতিযোগ্য সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অতি দ্রুত ও ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি নিশ্চিত করা। অন্তঃ ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা। তৃতীয় গ্রেড পাওয়া সব যোগ্য চিকিৎসককে নির্দিষ্ট সময় পর দ্বিতীয় ও প্রথম গ্রেডে পদোন্নতি দিয়ে ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করা। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের সদস্য সচিব চিকিৎসক মো. বশির উদ্দিন শনিবার সকালে বলেছেন, ‘তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছেন।’ ‘তিনি দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।’ চিকিৎসক নেতা বশির উদ্দিন বলেছিলেন, ‘রোববার (৯ মার্চ) সব হাসপাতালে কর্মবিরতি চলবে এবং তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থান নিবেন।’ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছিল, দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে চিকিৎসকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতির ঘোষণা আসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আরও কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকেও। বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন, সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ, সোসাইটি অব নিউজরোলজিস্ট অব বাংলাদেশ, সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জনস অব বাংলাদেশ, এসোসিয়েশন ফর দি স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশ দ্য চেস্ট অ্যান্ড হার্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব কোলন অ্যান্ড রেক্টাল সার্জনস এ বিষয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে।

কর্মবিরতিতে বিসিএস চিকিৎসকরা
দুই দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের চিকিৎসকরা। আজ শনিবার (৮ মার্চ) সকাল থেকে টানা তিন দিন দুই ঘণ্টা করে চলবে এই কর্মসূচি। শুক্রবার (৭ মার্চ) বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষে ডাক্তার মোহাম্মদ আল আমিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল সংগঠনটি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ন্যায্য পদোন্নতি ও সব প্রকার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। বিসিএস (স্বাস্থ্য) বিশেষজ্ঞ ফোরামের উদ্যোগে এবং সব চিকিৎসা সোসাইটির সমর্থনে ৮, ৯ ও ১০ মার্চ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালিত হবে।’ এ সময় চিকিৎসকরা হাসপাতালের সামনে ব্যানার হাতে মৌন প্রতিবাদ করবেন। তবে জরুরি বিভাগ কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে, যাতে রোগীদের জরুরি চিকিৎসা ব্যাহত না হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দাবি আদায় না হলে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।

প্রথম মাইগ্রেশনে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন ১৭৩ শিক্ষার্থী
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিতে প্রথম দফা মাইগ্রেশনের তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে স্বয়ংক্রিয় মাইগ্রেশন শেষে সরকারি মেডিকেল কলেজে শূন্য আসনে ১৭৩ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে ১২ মার্চের মধ্যে মাইগ্রেশন হওয়া কলেজে ভর্তি সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। তা না হলে উভয় কলেজ হতে ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলের ভিত্তিতে প্রচলিত বিধি মোতাবেক মেডিকেল কলেজে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কলেজ পরিবর্তনের পূরণকৃত অনলাইন মাইগ্রেশন ফরমের প্রাপ্ত তথ্যানুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রথম দফায় মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে স্বয়ংক্রিয় মাইগ্রেশন শেষে সরকারি মেডিকেল কলেজে শূন্য আসনে ১৭৩ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হলো। এক্ষেত্রে মেধা, পছন্দক্রম ও আসন শূন্যতার ভিত্তিতে বিভিন্ন কলেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মাইগ্রেশনে সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তিকৃত কলেজের অধ্যক্ষের দপ্তরে যোগাযোগ করে ৬ মার্চ থেকে ১২ মার্চের মধ্যে অবশ্যই মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। এ সময়ের মধ্যে কেউ ভর্তি হতে ব্যর্থ হলে উভয় কলেজ থেকে তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যাবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অপেক্ষমাণ তালিকা ও অভিপ্রায়ণের (মাইগ্রেশন) ফল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইট www.dgme.gov.bd ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েব সাইট www.dghs.gov.bd থেকে জানা যাবে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের শুধু টেলিটকের 01550-155555 নম্বর থেকে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হবে। মাইগ্রেশনে সুযোগপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজে আগামী শনিবারের (৮ মার্চ) মধ্যে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভর্তির পূর্ণ তালিকা ও শূন্য আসনের (যদি থাকে) তথ্য সফট কপি ই-মেইলে ও হার্ড কপি আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা শাখায় (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পুরাতন ভবন), বিশেষ বাহক মারফত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। ভর্তিরত শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দফায় অনলাইন মাইগ্রেশনের সময়সীমা ১২ মার্চ পর্যন্ত ও অধ্যক্ষ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের তথ্য টেলিটকের ওয়েব পোর্টালে অগ্রবর্তীকরণের শেষ তারিখ আগামী ১৩ মার্চ দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

ইফতারে তরমুজ খেলে কী ঘটে দেহে?
তরমুজ বহু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ও রসালো ফল। এটি শিশু থেকে বয়ষ্ক সবারই পছন্দ। গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের এই সময়ে রোজা রাখায় শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি হওয়ায় এটি ইফতারে পানির চাহিদা মেটাতে পারে। এ জন্য ইফতারে রাখা যেতে পারে মৌসুমি এই ফল। তরমুজে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ক্যালোরি খুবই কম। তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ ও সি, ক্যারোটিনয়েডস, লাইকোপিন ও কিউকারবিটাসিন ই আছে। এছাড়া এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তরমুজে হার্টের জন্য উপকারী খনিজ ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন সি আছে।দেখে নিন ইফতারে তরমুজ খেলে কী ঘটে শরীরে- তরমুজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে।তরমুজে প্রচুর আঁশ আছে, যা হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।তরমুজের অ্যামিনো অ্যাসিড, সিট্রুলাইন পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ও রক্তনালি প্রসারিত করে। এতে রক্ত সহজে পাম্প হয়।তরমুজের বেশ কিছু পুষ্টিগুণ চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে প্রচুর আঁশ আছে, যা হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।তবে তরমুজ উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত হওয়ায় এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়ায়। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের এটি বেশি না খাওয়াই ভালো।সাবধানতা: তরমুজ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়ায়। এ জন্য যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের বেশি না খাওয়াই ভালো। তরমুজে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় যাদের কিডনি সমস্যা বা কিডনিজনিত রোগ আছে তাদের না খাওয়াই ভালো। এতে প্রচুর পানি থাকায় তরমুজ খাওয়ার পরপরই পানি পান থেকে বিরত থাকুন।

স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পাঁচ দফা চিকিৎসকদের
দেশের স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও চিকিৎসা পেশার মর্যাদা রক্ষায় পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আগামী ১২ মার্চের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে সকল চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন করবেন। এমনকি ১২ মার্চ হাইকোর্ট কর্তৃক ‘ডাক্তার’ পদবী সংক্রান্ত রিটের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তারা। বুধবার (৫ মার্চ) চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত জোট ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস অব বাংলাদেশের (ইউমব) পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার জন্য আদালতে একটি রিট করা হয়েছিল, যার ফলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বেআইনিভাবে তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করে দেশের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। বিগত ১৩ বছরে ৯০ বার কজ লিস্টে আসার পর, এমনকি শুনানির পর্ব গত তিন মাস আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নানাবিধ অদৃশ্য কারণে এই রিটের রায় প্রদান করা হচ্ছে না। এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি রিটকে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পাঁচ দফা দাবি হল এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রীপ্রাপ্তগণ ব্যতীত অন্য কেউ নামের পূর্বে ‘ডাক্তার’ পদবী ব্যবহার করতে পারবে না এবং আদালতে চলমান এই সংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী সব রিট আগামী ১২ই মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে; রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার কমিটি গঠন করে তাদের কোর্স কারিকুলাম পুনঃনির্ধারণ এবং মানহীন সব ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে; জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য শূন্যপদে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) প্রণয়ন করতে হবে। ওপরের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কিছু কর্মসূচি চলমান থাকবে। এগুলো হল ৬-১০ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকগণ কর্মবিরতি পালন করবেন এবং মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করবেন, পাশাপাশি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন; ৫ মার্চ-১০ মার্চ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল, ডিরেক্টর এবং ডিপার্টমেন্ট প্রধানদের স্মারকলিপি প্রদান, কর্মসূচির ব্যাপারে অবহিতকরণ, সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও অনলাইন প্রচারণা; ১০ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন; ১১ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সব চিকিৎসক কর্মবিরতি পালন করবেন এবং মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করবেন, পাশাপাশি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এবং ১২ মার্চ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন করবেন। ১২ মার্চ ঢাকার সব চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হবেন এবং ঢাকার বাইরে সবাই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। (১২ মার্চ রায় প্রদান না করা হলে এবং অন্যান্য দাবি না মেনে নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মসূচি চলমান থাকবে। জানা গেছে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে বর্তমানে তিনটি রিট চলমান। এগুলো হল ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত ২৭৩০/২০১৩, ডাক্তার পদবি সংক্রান্ত ‘বিএমডিসি অ্যাক্ট ২০১০’-এর ধারা ২৯’কে চ্যালেঞ্জ করে ১৩০৪৬/২০২৪ এবং আপডেটেড ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করার বৈধতা চেয়ে ১৩৪৬২/২০২৪। অনতিবিলম্বে এসব রিটের নিষ্পত্তিকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের নিকট উদাত্ত আহ্বান চিকিৎসক সমাজের। অনাথায় দেশের সচেতন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনতা ক্রমান্বয়ে আদালত এবং সরকারের উপর আস্থা হারাতে বাধ্য হবে বলেও মনে করেন তারা।

ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের সহজ তিন উপায়
লিভার আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অরগান। সেই সাথে এর সমস্যাও বড় বড়। এর থেকে মৃত্যুও হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের প্রতিরোধ ডাক্তারের হাতে না। নিজের হাতে। ফ্যাটি লিভার ডিজিসের চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে কথা বলেছেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রোকসানা বেগম। ফ্যাটি লিভারের কারণ: রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, বিভিন্ন মেডিসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, অতিরিক্ত ওজন বা খুব দ্রুত ওজন কমানো, পেটে অতিরিক্ত মেদ, বেশি পরিমাণ রিফাইন্ড শর্করা গ্রহণ, মদ্যপান বা জেনেটিক্স কারণে একজন মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হতে পারেন। মূলত, শর্করা ও ফ্যাট বিপাক ক্রিয়ার নানা অসামঞ্জস্যতার ফলে এই রোগ হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণ: ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে ওজন কমানো সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। যাদের ওজন বেশি, তারা যদি মাত্র ৭-১০ শতাংশ ওজন কমাতে পারেন তবে ফ্যাটি লিভার থেকে খুব দ্রুতই মুক্তি সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, না খেয়ে বা কোনো মেডিসিনের মাধ্যমে খুব দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না, এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। আপনার ওজন যেমন ১ দিনে বা ৭ দিনে বাড়েনি তাই, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সময় দিতে হবে। সঠিক খাবার গ্রহণ সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন অর্জনে সহায়তা করবে।পানি: যকৃত বা লিভার ভালো রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে পানি পান করা। লিভার ভালো রাখতে অবশ্যই সঠিক পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা আবশ্যক। সুতরাং, অস্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন কার্বোনেটেড বেভারেজ বা রাস্তার মোড়ে থাকা শরবত পানের অভ্যাস থাকলে আজ থেকে বাদ দিন এবং বিশুদ্ধ পানি পান করুন এবং আপনার যকৃতকে ভালো রাখুন। খাদ্যভাসে পরিবর্তন: যে কোনো রোগ থেকে বাঁচার জন্য খাদ্যভাসে পরিবর্তন আনার কোনো বিকল্প নেই। একজন মানুষের ওজন, উচ্চতা, পরিশ্রমের ধরন, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে নিয়মিত সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। বিভিন্ন রঙের শাকসবজি, ফল, লাল আটার রুটি বা লাল চালের ভাত এবং সঠিক পরিমাণে প্রোটিন, খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখতে হবে। চিনি ও চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস, ওজন নিয়ন্ত্রণ বা লিপিড প্রোফাইল ঠিক রাখা কোনো কঠিন বিষয় নয়। আর এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে লিভার থেকে ফ্যাট খুব সহজে দূর হবে। মনে রাখবেন, লিভার ভালো রাখতে ফিট থাকার কোনো বিকল্প নেই।