‘সহিংসতা যখন সমাজের ভাষা হয়, সেখানে মানবউন্নয়ন হয় না’


MARCH NAEEM 2ND/pa-20250324160313.jpg

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সমাজজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম জাহান। তিনি বলেছেন, কথা ও আলোচনার পরিবর্তে সব সংকট সব সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছি সহিংসতা বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহিংসতা আমাদের ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহিংসতা যখন একটা সমাজে ভাষা হয়, সেখানে মানবউন্নয়ন হয় না।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা: অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ডিস্টিংগুইশড লেকচার সিরিজের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ (ডিবিএ) ও ক্লাব অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং (সিএফএ) এ আলোচনার আয়োজন করে।

দেশে ভৌত অবকাঠামোর অগ্রগতি হলেও কাঙিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। বৈষম্যের কারণে একটি গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে নিজস্ব কোষাগারের মতো ব্যবহার করেছে বলেও অভিমত এই অর্থনীতিবিদের।

বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ক্রান্তিকাল পার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে অনেক মাতামাতি করছেন। প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ না ৫.৯ শতাংশ। এই ফারাকে কিছু যায়-আসে না। অর্থনীতির অবস্থা যেটা আছে তা মানুষের জীবনে কতখানি উপকার দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির ফলে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছিল, তা আবারও বেড়েছে।

ইউএনডিপির হিউমান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট অফিসের সাবেক এই পরিচালক বলেন, অর্থনীতিতে বড় স্লথগতি এসেছে। বলা হচ্ছে আমাদের প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। অর্থনীতি স্লথ থাকলে আমাদের যা অর্জন তা নষ্ট হবে। আইনশৃঙ্খলার অনুপস্থিতি ও আমরা একে অন্যের সঙ্গে যে ব্যবহার করছি- তা সমাজে একধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আজকের বাংলাদেশের সমাজজীবনে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ- এই ব্যাপারগুলো বিস্মৃত প্রায়।

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের তাৎক্ষণিক কিছু সংস্কার দরকার। কিছু স্বল্পমেয়াদি ও কিছু দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন আছে। অবস্থাভেদে আপনাকে নির্ভর করতে হবে কোন সংস্কার তাৎক্ষণিক করতে হবে। মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে গেছে তখন তাৎক্ষণিক সংস্কার করতে হবে, যাতে মানুষ স্বস্তি পায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন স্থপতি মাহবুবা হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান। তারা তাদের বক্তব্যে জাতীয় উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে অ্যাকাডেমিক সংলাপের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. এম. এ. বাকি খালিলি, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান সারওয়ার আর. চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের সদস্য, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথি।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×