বাংলাদেশকে আরও ৬০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সরকারি বিনিয়োগের দক্ষতা এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়নে কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করতে বাংলাদেশের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলারের নীতি-ভিত্তিক ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবি এ তথ্য জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, এই ঋণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার এবং স্বচ্ছতা ও সুশাসন ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে ব্যবহার করা যাবে। এডিবির আঞ্চলিক প্রধান অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দ্রুত উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এডিবি এই ঋণের মাধ্যমে পাশে আছে। সংস্কারের লক্ষ্য হবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সুশাসন এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার উন্নতি। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য অংশীদারদের সহযোগিতায় তৈরি এই ঋণ কর্মসূচিতে কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, ট্যাক্স ইনসেনটিভের যৌক্তিককরণ এবং করদাতাদের মনোবল বাড়ানোর উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি এ ঋণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক আইন, বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন প্রক্রিয়া উন্নত করা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিভিন্ন উদ্যোগের কার্যকারিতা উন্নত করা হবে।

সৌদি আরবে ওয়ার্ল্ড ট্রেড এক্সপোতে ইসলামী ব্যাংকের অংশগ্রহণ

সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত তিন দিনের ওয়ার্ল্ড ট্রেড এক্সপো সৌদি আরাবিয়া-২০২৪-তে অংশ নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। ১০-১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেদ্দা ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন এন্ড কনভেনশন সেন্টারে এ এক্সপো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিয়া মো. মাইনুল কবির আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী ব্যাংকের প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সৌদি আরবে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা, ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ ব্যাংকের প্রতিনিধি ও গ্রাহকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ডলারের দর নিয়ে আসছে নতুন সিদ্ধান্ত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাজারে ডলারের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এতে মানুষের হাতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এজন্য ডলারের দর নিয়ে আসতে যাচ্ছে নতুন সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকের আলোচনায় ডলার বাজারের স্থিতিশীলতার বিষয়টি উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় মনিটরি পলিসিতে কিছু পরিবর্তন আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারেরও কিছু পরিবর্তন আনা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আরো বেশি আলোচনা করবে বলে জানা গেছে। এক্সচেঞ্জ রেট নিয়ে জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে এক্সচেঞ্জ রেট বেশ স্থিতিশীল রয়েছে। এর ফলে রেট ওঠা নামা করছে না। যেহেতু ডলারের দর বৃদ্ধি ও কমার সম্ভাবনা কম, তাই মানুষের হাতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এ কারণে ডলারের দর ওঠা নামা করানো যায় কিভাবে, সেটি নিয়ে আইএমএফ’র সঙ্গে আলোচনা চলছে। একইসাথে আবারও আলোচনায় এসেছে ক্রলিং পেগের বিষয়টি। ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি করিডর সৃষ্টি করা হয়। সেই করিডরের ভেতরে থেকে ব্যাংক ও মানি চেঞ্জার কোম্পানিগুলোকে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করতে পারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে আর্জেন্টিনা, ভেনিজুয়েলা, হন্ডুরাসের মতো দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়।

কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়াল সিটি ব্যাংক

ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে সিটি ব্যাংক তার কর্মীদের জীবনযাত্রা সহজ করতে বেতন পুনর্গঠনের এক যুগান্তকারী উদ্যোগ ঘোষণা করেছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৪ সালের জন্য ১৬২ কোটি টাকার বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে, যার সঙ্গে আগামী নতুন বছরে ইনক্রিমেন্ট ও বোনাস যোগ দিলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ আজকের থেকে ব্যাংকটির বার্ষিক বেতন ব্যয় বাড়বে মোট ৩০০ কোটি টাকা। এর ফলে আগামী বছরেই এ ব্যাংকের মোট বেতন বার্ষিক ১ হাজার ২১০ কোটি টাকায় পৌঁছাবে। সম্প্রতি সেরেব্রাস কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চালানো এক সমমানের ব্যাংকসমূহের সঙ্গে মিলিয়ে করা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে সিটি ব্যাংক তাদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জন্য এই বেতন সমন্বয় করলো। বাজারের সঙ্গে বেতনের এই সামঞ্জস্য আনয়নে যে-সকল কর্মীর বর্তমান বেতন বাজারের মানের তুলনায় উল্লেখযোগ্যরকম কম ছিল, তাদের বেতন উচ্চ শতাংশে বৃদ্ধি পেলো , আর যাদের বেতন বাজার গড়ের কাছাকাছি ছিল, তাদেরটি তুলনামূলক কম বাড়লো। ব্যাংকের এসিস্ট্যান্ট অফিসার থেকে নিয়ে সিনিয়র একজিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত সকল পদে বেতন বাড়ল ১০ থেকে ৫০ শতাংশ, যা গড়ে ২৩ শতাংশ। এই প্রকল্পের আওতায় সিটি ব্যাংকের সকল কর্মীর অবস্থান নির্বিশেষে সর্বনিম্ন বেতন বেড়েছে ১০ হাজার টাকা; আর সর্বোচ্চ বেড়েছে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ব্যাংকের সাপোর্ট স্টাফ, আউটসোর্সড স্টাফ ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া স্টাফরাও এই বিশেষ বেতন বৃদ্ধি পাওয়া কর্মীদের তালিকায় আছেন। এই নতুন বেতন কাঠামো ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে। ব্যাংকের কর্মীগণ নভেম্বর মাসের বকেয়াসহ ডিসেম্বর মাসে এ নতুন বেতন প্রাপ্ত হবেন। সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, আমাদের কর্মীরা সিটি ব্যাংকের মেরুদণ্ড। বাজারের অবস্থার সাথে বেতন-ভাতা সমন্বয় করে আমরা আমাদের ব্যাংকটিকে দেশের সেরা কর্মক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য রাখি। সিটি ব্যাংকের এমডি এবং সিইও মাসরুর আরেফিন উল্লেখ করেন, ব্যাংকের মুনাফা অনেক বেড়েছে। আমি এমডি হওয়ার আগের ৬৯৯ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা এবার ২০০০ কোটি টাকার বেশ ওপরে চলে যাচ্ছে। তাই এটা এখন আমাদের কর্মীদের নৈতিক অধিকার যে, তারা পরিবার পরিজন নিয়ে আরও ভালো থাকবেন।

দেশে খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশ ১০টি ব্যাংকে

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশই মাত্র ১০টি ব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যেখানে তিন মাস আগেও এই হার ছিল ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশ মাত্র পাঁচটি ব্যাংকে জমা হয়েছে। সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। যদিও ওই প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি। প্রতিবেদনে জানানো হয়, জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় বেশি। সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জুন মাসে এই অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে এই খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের অভাব এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দায়মুক্তি এই সংকটের জন্য দায়ী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী জানান, ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা উভয়ই অনিয়মের জন্য দায়ী। তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি দেখিয়ে ঋণ নেওয়া হয়। ফলে খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো।” বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ তুলনামূলক কম। সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে ঋণগ্রহীতা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকদের জন্য এক্সক্লুসিভ ইভেনিং আয়োজন করল ব্র্যাক ব্যাংক

প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকদের জন্য এক্সক্লুসিভ প্রিমিয়াম ব্যাংকিং ইভেনিংয়ের আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। গ্রাহকদের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক উদযাপনের অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর্থিক অগ্রগতির গর্বিত অংশীদার হিসেবে উৎকৃষ্ট ব্যাংকিং সেবা এবং উদ্ভাবনী ফাইন্যান্সিয়াল সল্যুশনের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক যে গ্রাহকদের সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই আয়োজনটি তারই প্রতিফলন। নেটওয়ার্কিং, সেলিব্রেশন এবং নতুন প্রপোজিশন চালুর এই মনোরোম সন্ধ্যায় উপস্থিত হয়েছিলেন ব্যাংকের ক্লায়েন্ট, স্টেকহোল্ডার, সিনিয়র ব্যাংকার এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় হোটেল শেরাটনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম. হাসান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শেখ মোহাম্মদ আশফাক এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং মো. মাহীয়ুল ইসলাম প্রিমিয়াম ব্যাংকিং প্লাস সেগমেন্টের সাথে ভিসা সিগনেচার মাল্টিকারেন্সি ডেবিট কার্ড এবং প্রিমিয়াম ব্যাংকিং সিনিয়র সেগমেন্টের সাথে ভিসা প্লাটিনাম মাল্টিকারেন্সি ডেবিট কার্ডে প্রপোজিশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পারসোনালাইজড ব্যাংকিং সল্যুশন এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রিমিয়াম ব্যাংকিং প্লাস প্রপোজিশনটি ডিজাইন করা হয়েছে, যা থেকে গ্রাহকরা বিশ্বমানের ব্যাংকিং সেবা এবং অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন। সিনিয়র সিটিজেনস সেগমেন্টটি শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক পদক্ষেপই নয়, বরং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল উদ্যোগের মাধ্যমে সকল বয়সের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংকের মিশনেরও অংশ। ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের অবিচল আস্থা ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ব্যাংকটির চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম. হাসান বলেন, “গ্রাহকদের আস্থা এবং বিশ্বাসই আমাদের সাফল্যের মূল ভিত্তি। আজকের এই আয়োজন আমাদের মূল্যবান প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক উদ্‌যাপন ও আরও দৃঢ়করণের উদ্দেশ্যে। আমরা মনে করি, ব্যাংকিং জিনিসটি লেনদেনের চেয়েও বেশি কিছু; এটি গ্রাহকদের জীবনকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। এ কারণেই আমরা গ্রাহকদের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে উন্নত, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে এবং তাঁদের কাস্টমাইজড সল্যুশন দেওয়ার চেষ্টা করি।” ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “একটি গ্রাহককেন্দ্রিক ব্যাংক হিসেবে আমাদের সেবার মান নিয়ে অবশ্যই গ্রাহকদের মতামত শুনতে হবে। গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ফিডব্যাকের ভিত্তিতেই আমরা বিদ্যমান অফারগুলোকে আরও উন্নত করি এবং তাঁদের নতুন নতুন ব্যাংকিং প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম নতুন নতুন প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস চালু করি। গ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন প্রোডাক্ট এবং প্রপোজিশন চালুর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রিমিয়াম ব্যাংকিং সেবাকে আরও সমৃদ্ধ করেছি। গ্রাহকদের উন্নতির বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক সবসময় প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি ব্যাংকিং সুযোগ-সুবিধা এবং আনন্দদায়ক ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে যাবে।” এই আয়োজনে অতিথিদের সামনে লাইভ পারফর্ম করেন সঙ্গীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়া, বাপ্পা মজুমদার ও এলিটা করিম এবং নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত ও

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের শেয়ারে কারসাজি: ৭১ কোটি টাকা জরিমানা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফাইন্যান্স পিএলসির (বিডি ফাইন্যান্স) শেয়ার নিয়ে কারসাজি ও লেনদেনে আইন লংঘনের দায়ে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই জরিমানা করেছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৯৩৫কম কমিশন সভায় এই জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম এসব তথ্য জানান। ২০২০ সালের ৩ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের শেয়ার নিয়ে সংঘটিত কারসাজি আর বিধিবহির্ভূত লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে আলোচিত জরিমানা করা হয়। যেসব ব্যক্তি বিনিয়োগকারীকে জরিমানা করা হয়েছে তারা হচ্ছেন সামির সেকান্দার, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, আনিকা ফারহিন, মাহির সেকান্দার, আফরা চৌধুরী ও আব্দুল মবিন মোল্লাহ। অন্য দিকে, লেনদেনে আইন ভঙ্গ করায় যে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়, সে দুইটি হচ্ছে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড।

বিএফআইইউর প্রধান পদে মৌখিক পরীক্ষার ডাক পেলেন দশজন

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য দশজন সাক্ষাৎকার বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নয়জন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক। এছাড়া, আরেকজন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সিআরও। আগামী ১১ ও ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের মৌখিক পরীক্ষা হবে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা পদত্যাগে বাধ্য হন, তাদের একজন ছিলেন বিএফআইইউর প্রধান। বিএফআইইউর শূন্য পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহীদের থেকে আবেদন চেয়ে গত ৩ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে ২৯টি আবেদন জমা পড়ে। বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের অর্থ বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত কার্যক্রমে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসহ প্রশাসনিক কাজে ২০ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে যোগ্য হিসেবে ২০ জনের একটি তালিকা করা হয়। তালিকা আরও সংক্ষিপ্ত করে দশজনকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যোগ্যদের তালিকায় আশিকুর রহমানের নাম না থাকলেও তাকে ভাইভাতে ডাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালকদের মধ্যে ডাক পেয়েছেন মো. নূরুল আমিন, একেএম এহসান, সাইফুল ইসলাম খান, কাজী আকতারুল ইসলাম, এএফএম শাহিনুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, এবিএম জহুরুল হুদা ও মামুন হোসেন।

বিজিএমইএ-ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের বৈঠক: বানিজ্য ও পোশাক শিল্প নিয়ে আলোচনা

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ এবং দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া অঞ্চলের ট্রেড পলিসি অ্যানালিস্ট এমিলি অ্যাশবি। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তির (টিকফা) ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মূল বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়। ‘বিজিএমইএ’র প্রশাসক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বিজিএমইএর প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, বিজিএমইএ সাপোর্ট কমিটির সদস্য ইনামুল হক খান বাবলু, আসিফ আশরাফ ও আনম সাইফুদ্দিন। বৈঠকে আনোয়ার হোসেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তার বিবরণ দেন। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতারাও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, শ্রমিকদের অধিকার, শ্রম আইন সংস্কার এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিল্পের অর্জনগুলো তুলে ধরেন। তারা পোশাক শিল্প আন্তর্জাতিক মান পূরণের সাথে সাথে যেন দায়িত্বশীলতার সাথে বিকশিত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিষয়ে শিল্পের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষই তৈরি পোশাক শিল্পকে আরও টেকসই ও শ্রমবান্ধব করার জন্য অব্যাহত সহযোগিতা এবং একসাথে কাজ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ আরও বাড়াতে টিকফার মাধ্যমে ফলপ্রসূ সংলাপের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

জনতা ব্যাংকের পর্ষদ থেকে আসাদউল্লাহকে অব্যাহতি

মোহাম্মদ আসাদউল্লাহকে জনতা ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সরকার। একই সাথে আব্দুল আওয়াল সরকার এবং একেএম খবির উদ্দিন চৌধুরীকে ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত তিনটি পৃথক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত তিনটি নির্দেশনাতে সই করেছেন উপসচিব আফছানা বিলকিস। অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের পদ থেকে মোহাম্মদ আসাদউল্লাহকে প্রত্যাহার করা হল।’ জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। অপর আদেশে বলা হয়েছে, ‘জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আব্দুল আউয়াল সরকার এবং একেএম খবির উদ্দিন চৌধুরীকে তাদের যোগদানের তারিখ থেকে তিন বছর মেয়াদে নিয়োগের লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১’-এর বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ করা হল।’

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের চুক্তি সই

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক (এআইবি) পিএলসি এবং দেশের শীর্ষ স্থানীয় পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার মধ্যে বাই ওয়ান গেট ওয়ান (বোগো) চুক্তি সই হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়। ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান চৌধুরী ও হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার আশওয়ানি নায়ের চুক্তি সই করেন।অনুষ্ঠানে ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের প্রধান মোহাম্মাদ সাখাওয়াত উল্লাহ্, মোহাম্মাদ আরিফ হাসান, হোটেলের মার্কেটিং ডিরেক্টর সাদমান সালাউদ্দিন এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।চুক্তি অনুসারে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের প্লাটিনাম কার্ডহোল্ডাররা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার পাবেন।

‘প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের প্রকৃষ্ট উদাহরণ টিসিবি, ১৪২ জনের বাজেট সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা’

‘গুটিকয়েক মানুষ দেশ থেকে দেড় বছরের আয়ের সমপরিমাণ অর্থ পাচার করে নিয়ে গেছে। এটা নাগরিক হিসেবে আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের সাগর চুরি করতে যেয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ধ্বংস থেকে রেহাই পায়নি আমাদের কৃষি ও বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোও। গত ১৫ বছরে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল টিসিবি। এখানে ১৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য বছরে বাজেট সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা।’ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার পুরানা পল্টনে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে ইআরএফ-প্রাণ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কৃষির বীজ ও সারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করার জন্য কোন একটা জায়গা বা বিভাগকে বাদ রাখা হয়নি। প্রতিটি জায়গায় গুটিকয়েক মানুষের অবস্থান তৈরি করা হয়েছিল।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করতে যাই, তখন সরকারি প্রতিষ্ঠাগুলোর যে তথ্য পাই, তা বাস্তবতার সাথে মেলে না। এতে সিদ্ধান্ত নিতে বহু সমস্যা তৈরি হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে যৌক্তিক সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে আওয়াজ তুলতে হবে। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের শিক্ষা, কৃষি, বিচারালয়, রাজস্ব বোর্ড থেকে শুরু করে যত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। এটি করতে পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম-যারা দায়িত্বে আসবে তাদের জন্য এটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।’ বৈদেশিক বাণিজ্যে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আমরা কি সব সময় জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভরশীল থাকব? না, আমাদের নিজেদের কর্মক্ষমতা এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে জোয়ার আসুক ভাটা আসুক যাতে নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে পারি। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা বাড়বে। তখন যেন আমরা সুযোগ নিতে পারি।’ টিসিবির কার্যক্রম প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘টিসিবি যে এক কোটি পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষার জন্য খাদ্য পণ্য বিতরণ করে থাকে- এটা তাত্ত্বিকভাবে খুবই সুন্দর একটা প্রকল্প। কিন্তু, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল টিসিবি।’ উপদেষ্টা জানান, টিসিবির বছরে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার একটা বাজেট আছে। যার মধ্যে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, ‘আপনারা শুনে অবাক হবেন, দেশে টিসিবির ১৬টি অফিস রয়েছে। এই ১৬টা অফিসে কর্মকর্তা, কর্মচারী, ড্রাইভার, দরোয়ান- সব মিলিয়ে লোক মাত্র ১৪২ জন, যার বাজেট সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। এটি হাস্যকর!’ শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘এই যে এক কোটি কার্ড (টিসিবির) দেওয়া হয়েছে এবং এর যে ডিলার রয়েছে, এখানে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে। এই অনিয়মগুলোকে চিহ্নিত করতে চাই। ইতিমধ্যে আমরা ৫৭ লাখ কার্ড নির্দিষ্ট করেছি এবং এক কোটি থেকে বাকি কার্ডগুলো আমরা বাদ দিয়েছি। একই সঙ্গে স্মার্টকার্ড নিয়ে এসেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমি নিজে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যারা কার্ড নিয়েছেন এবং ডিস্ট্রিবিউটর আছেন, তাদের দেখতে যাব।’ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারলে দাম বেঁধে দেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই। আমাদের প্রতিযোগিতা কমিশন এটি নিশ্চিত করবে।’ শেখ বশিরউদ্দিন সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা শুধু কৃষির ফলন নিয়ে কথা বলবেন, বিষয়টা এমন না। দয়া করে আপনারা কৃষি সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার নিয়েও কথা বলবেন। কৃষি নিয়ে যৌক্তিক দাবিগুলো আপনারা উপস্থাপন করুন।’ ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

টিসিবির ৫৭ লক্ষ কার্ড বাতিল হচ্ছে

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক কোটি কার্ড দেয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, ‘এ জন্য ৫৭ লাখ কার্ড বাতিল করা হবে।’ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার পল্টন টাওয়ারে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষি খাতে সংস্কার প্রয়োজন। শুধু ফলন নয়, এই খাতে সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট যা যা প্রয়োজন সেসব করা হবে। এছাড়া, আরও দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলোর ওপর জোর দেয়া দরকার।’আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘সামনে আর যেন কোন সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে কাজ চলছে।’বাজার স্থিতিশীল করতে রফতানিমুখী যোগান বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আসছে রমজানে বাজার স্থিতিশীল থেকে নিম্নগামী রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’মুষ্টিমেয় সিন্ডিকেটধারীদের একজন দেশ থেকে পালানোতে ঘাটতি তৈরি হলেও বাজারে তার খুব একটা প্রভাব বোঝা যাচ্ছে না বলে জানান উপদেষ্টা।তিনি বলেন, ‘১৫ বছরে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুকুর চুরির মধ্য দিয়ে বিপুল অর্থ দেশের বাইরে পাচার হয়েছে। বাস্তবতা মেনে নিয়েই তেলের দাম আট টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে এটা করা হয়েছে।’অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই সরকারের মত ট্রান্সপারেন্ট সরকার আগে কখনও ছিল না। পূর্ববর্তী সরকার উন্নয়নের গল্প করতে গিয়ে বাজারে ভুল তথ্য ছড়িয়ে গেছে।’গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘এমন কোন তথ্য দেবেন না, যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।’

এনসিসি ব্যাংকের বার্ষিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সম্মেলন- ২০২৪ অনুষ্ঠিত

ঝুঁকি বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, শক্তিশালী ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা তৈরী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনাবলী মেনে চলার প্রত্যয় নিয়ে এনসিসি ব্যাংক পিএলসির বার্ষিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সম্মেলন-২০২৪ সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ফস্টারিং প্রোএকটিভ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কালচার এন্ড এনডিউরিং রেজিল্যান্স পাওয়ার’। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন-২ বিভাগের পরিচালকএএনএম মইনুল কবীর। এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান ঝুঁকি কর্মকর্তা মো. রাফাত উল্লা খান স্বাগত বক্তব্য দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন-২ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মাহমুদা হক বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনা করেন। এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম, মো. জাকির আনাম ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এসইভিপি ও সিআইও মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ভিপি ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শিহাব হায়াত রিজভী, প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানগণ, বিভিন্ন অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান, বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য শীর্ষ নির্বাহীসহ আরএমডির কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, ব্যাংকের অন্যান্য শাখার ব্যবস্থাপক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডিজিটাল প্লাটফর্মে যুক্ত হন।সম্মেলনে মইনুল কবীর ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতিটি ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী ও টেকসই ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি রেজিল্যান্স ব্যাংকিংয়ে প্রোএকটিভ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কালচারের গুরুত্ব শীর্ষক যুগোপযুগী বিষয় নিয়ে আলোকপাত করার জন্য এনসিসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। এম শামসুল আরেফিন বলেন, ‘এনসিসি ব্যাংক সর্বদাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতোবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় কাজ করে যাচ্ছে।’ তিনি ব্যাংকের ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কালচার’ তৈরীসহ সব ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনারক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার জন্য পরামর্শ দেন।মো. রাফাত উল্লা খান ব্যাংকের প্রধান ঝুঁকিগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনা করেন এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায়করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন।

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সাড়া পেল না পেট্রোবাংলা

বঙ্গোপসাগরের গ্যাস অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় হোঁচট খেল পেট্রোবাংলা। সাতটি বহুজাতিক কোম্পানি দরপত্রের আবেদনপত্র কিনলেও শেষে পর্যন্ত জমা দেয়নি কোন প্রতিষ্ঠানই। মিয়ানমারের সঙ্গে ২০১২ সালে আর ভারতের সঙ্গে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা জয় আশা জাগিয়েছিল বহুমাত্রিক সম্ভাবনার। তবে, কার্যকর উদ্যোগের অভাবে এক যুগেও সমুদ্রবক্ষ তথা সুনীল অর্থনীতির সুফল পায়নি দেশ।স্থবিরতা আর সময়ক্ষেপণের নানা পর্ব কাটিয়ে অবশেষে গেল মার্চে গভীর সমুদ্রে ১৫টি আর অগভীর সমুদ্রে নয়টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। এতে সাড়া দিয়ে দরপত্রের নথি সংগ্রহ করেছিল সাতটি বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি। যার মধ্যে ছিল দুইটি মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিসহ চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, জাপান, থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান। এরপরই সামনে আসে সুনীল অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের আশাজাগানিয়া প্রশ্ন। তবে, সাঙ্গুর পর ফের খুলতে যাচ্ছে সমুদ্র থেকে তেল-গ্যাস পাওয়ার দুয়ার?আকর্ষণীয় প্রস্তাবে মন কাড়বে বিনিয়োগকারীদের, নীতিনির্ধারকদের এমন প্রত্যাশা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আরও এক দফা হোঁচট খেলো পেট্রোবাংলা। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর একটা পর্যন্ত শেষ সময় থাকলেও দরপত্র জমা দেয়নি কোন বহুজাতিক কোম্পানি।শুরুতে আগ্রহ দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত কেন পিছিয়ে গেল বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো? বিশ্লেষকরা মনে করেন, পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব, বৈশ্বিক অস্থিরতা আর অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হতে পারে এর কারণ।জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মু তামিম বলেন, ‘সব মিলিয়ে বৈশ্বিক অস্থির পরিস্থিতি রয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেহেতু বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে এবং সামনেও নতুন সরকার কোথায় কখন গঠিত হবে এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে যে কোন বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগের ব্যাপারে চিন্তা করে।’তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কোন কোম্পানি এল না, তাই দ্রুত সার্ভেগুলো করে ফেললে আমরাও বুঝব, আদৌ সভায় যাব কি না। এখন ইনফরমালি যোগাযোগ করা যেতে পারে, কেন তারা পিছিয়ে গেল।’ভূতত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানি শুধু বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করে না পৃথিবীর সব জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। ফলে, এসব ব্যবসায়ী সবচেয়ে নিরাপদ ও লাভজনক এলাকায় যাওয়ার প্রবণতা থাকে। বিদেশি কোম্পানি আশার জন্য উদ্বেগ হয়ে রয়েছে, তা তো না। ফলে তাদের আগ্রহী করে বাংলাদেশে আনতে হবে।’ব্যাপারটি নিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

শেখ হাসিনা-রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব করা হ‌য়ে‌ছে। এছাড়া ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ এবং চৌধুরী জাফরুল্লাহ সরাফাতের ব্যাংক হিসাবেরও তথ্য চাওয়া হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠায়। লেনদেন তলব করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিএফআইইউর নির্দেশনায় হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টে’র অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে কীভাবে টাকা এসেছে, তা জানাতে বলা হ‌য়ে‌ছে। আবার সেই অর্থ পরবর্তী সময়ে কোথায় খরচ হয়েছে, নগদে উত্তোলন হয়েছে কিনা, এসব বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হ‌য়ে‌ছে। চি‌ঠি‌তে এই ট্রাস্টের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবন। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। তার বোন শেখ রেহানা অন্যতম ট্রাস্টি। এ ছাড়া অন্য যারা এই ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত কিংবা যেসব অ্যাকাউন্টে ট্রাস্টের হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে, জমা হয়েছে, তাদের তথ্যও দিতে বলা হয়েছে। ব‌্যাংকগু‌লো‌তে পাঠা‌নো বিএফআইইউর আরেক চিঠিতে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ও ধারাভাষ্যকার চৌধুরী জাফরুল্লাহ সরাফাত, তার ভাই চৌধুরী হাবিবুল্লাহ সরাফাত, তাদের মা ডালিয়া চৌধুরীর হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর আগে তাদের আরেক ভাই ও পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ। তাদের পরিবার শেখ হাসিনা পরিবারের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

রাজস্বের লক্ষ্য আদায়ে গতি নেই এনবিআরে

রাজস্ব আদায়ে বাড়তি নজর থাকলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। চলতি অর্থবছরের প্রতিমাসেই সংস্থার খাতায় যোগ হয়েছে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারার ব্যর্থতা। যাতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের অনুপস্থিতিকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন বিশ্লেষকরা। সরকার পরিচালনা আর উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের বড় যোগান রাজস্ব খাত। তাই বরাবরই এ খাতের গুরুত্ব বেশি। নজরও থাকে আয়ের খাতা ভারি করার দিকে। তবে খুব একটা ভালো যাচ্ছে না চলতি অর্থবছর। শুরু থেকেই সঙ্গী রাজনৈতিক অস্থিরতা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী শিথিল প্রভাব। ফলে অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় রয়েছে সোয়া এক শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিও। ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই অন্যায্য সুবিধা নিয়েছেন, অনেকে ব্যাংকের লুপপাটের সঙ্গে জড়িত আছেন। তাদের কারণে রাজস্ব আদায় খুব একটা ভালো অবস্থায় যাবে না। তারপরও এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া ঠিক হবে না। তথ্য বলছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন সরকার গঠিত হয়। তবে সহজ হয়নি ব্যবসার পরিবেশ। ব্যাংকে তারল্য সংকট ও বিনিয়োগে সংশয়সহ নানা অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীরা। আবার নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সংকট বা শ্রমিকদের আন্দোলনেও কোথাও কোথাও ব্যাহত হয় উৎপাদন। রয়েছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবও। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, সংস্কার কমিটি অটোমেশনকে এক নম্বর অ্যাজেন্ডা হিসেবে নিয়েছে। যে কাজ গত ৩৪ বছরেও হয়নি, সেক্ষেত্রে সরকারের বড় ধরনের একটি বিনিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। সবশেষ অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে ওই সময়ের চেয়েও এ বছর আয় কমলো ১ শতাংশ।

আরও ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

দেশের বেসরকারি খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে ১০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ধরে)। এই ঋণ দেশের বেসরকারি আর্থিক ইউনিটগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। এডিবি বলছে, বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত অর্থায়ন অনুমোদন করেছে। রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ একটি রূপান্তরমূলক পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাথমিকভাবে সরকারি খাত দিয়ে চালিত, সীমিত সম্পদ এবং বাস্তবায়ন সীমাবদ্ধতার কারণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অবকাঠামো বিনিয়োগের একটি প্রধান বাধা হলো স্থানীয় বাজারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ তহবিলের ঘাটতি। এডিবি ঋণের লক্ষ্য হলো বিআইএফএফএলকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন দেওয়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে এমন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করার সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে এ ব্যবধান পূরণ করবে। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড প্রজেক্ট শক্তিশালীকরণ-অতিরিক্ত অর্থায়ন বেসরকারি খাতের অর্থায়নে বিআইএফএফএল-এর সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক স্পনসর এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আনা নতুন প্রযুক্তির সুবিধা দেবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশকে বেসরকারি খাতের অর্থায়নকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারি অর্থায়নের ওপর চাপ কমাতে এবং আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম করবে। ঋণটি লিঙ্গ জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর দৃঢ় ফোকাসসহ, পিপিপির সংগঠনের মাধ্যমে টেকসই বেসরকারি বিনিয়োগকে সমর্থন করবে। এ জন্য বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

বাড়ল স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।’নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩২ হাজার ৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ৯৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ছয় শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।এর আগে, সবশেষ গেল ১ ডিসেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে এক হাজার ৪৮১ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩৭ হাজার ২২৭ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩০ হাজার ৯৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ১২ হাজার ২৮৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২ ডিসেম্বর থেকে।প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫৭ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩৩ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২৪ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫৭৮ টাকায়।এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫৮৬ টাকায়।

পোশাকশ্রমিকদের বছরে মজুরি বাড়বে নয় শতাংশ

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট হবে নয় শতাংশ। মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দর-কষাকষির পর ব্যাপারটি চূড়ান্ত হয়েছে। নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত পোশাকশ্রমিকেরা নিয়মিত পাঁচ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত চার শতাংশ, অর্থাৎ নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাবেন। চলতি ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে। ফলে, শ্রমিকদের জানুয়ারির মজুরির সাথে নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হবে। ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির পঞ্চম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অতিরিক্ত সচিব মো. সবুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের ছয় ও সরকারপক্ষের চার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, আজকের বৈঠকে এক পর্যায়ে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা ইনক্রিমেন্ট দশ শতাংশ দাবি করেন। তবে, মালিকপক্ষ দিতে চান আট শতাংশ। পরে সবার সম্মতিক্রমে নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এ নিয়ে মালিক, শ্রমিক ও সরকারপক্ষের প্রতিনিধিরা এক যৌথ ঘোষণায় সই করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এএনএম সাইফুদ্দিন ও বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহাম্মাদ; জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুববিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম; বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কবির আহম্মেদ; শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম এমাদুর হক, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. হাসিবুজ্জামান ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান সিকদার। গেল ৩ ডিসেম্বর কমিটির চতুর্থ বৈঠকে মালিকপক্ষ সাত শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিতে রাজি আছে জানালে শ্রমিকপক্ষ আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ১২ শতাংশ দাবি করে। তার আগে শ্রমিকপক্ষ অতিরিক্ত দশ শতাংশসহ মোট ১৫ শতাংশ বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল। গেল আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকেরা টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গেল সেপ্টেম্বরে ১৮টি বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিক ও শ্রমিকনেতারা সমঝোতায় পৌঁছান। সমঝোতা অনুযায়ী, ছয় মাসের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারকে প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপর ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সক্ষমতা ও করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করে শ্রম মন্ত্রণালয়।

শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর, আইসিবির তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ ছাড়

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে বিনিয়োগ ও উচ্চ সুদ হারে গৃহীত আমানত ঋণ পরিশোধসহ নিজস্ব বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য স্বল্প সুদ হারে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের জন্য (আইসিবি) তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চার শতাংশ সুদে নেয়া ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি এই অর্থ দিয়ে পুঁজিবাজারে ভাল শেয়ারে বিনিয়োগ করা হবে। সুদ-আসলে ঋণ পরিশোধের জন্য দেড় বছর বা ১৮ মাস সময় পাবে আইসিবি। এই ঋণের গ্যারান্টি দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা দিবে আইসিবিকে। এর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৭০০ কোটি টাকা, প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা। গেল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানান, ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ করপোরেশনের বিদ্যমান ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ও অবশিষ্ট অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ঋণ সহজীকরণে সার্বভৌম গ্যারান্টি দেয় সরকার। এই গ্যারান্টির ভিত্তিতে গত ২৭ নভেম্বর আইসিবিকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে দশ শতাংশ সুদে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে আইসিবি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায়, দশ শতাংশ সুদের হার প্রতিষ্ঠানটির জন্য টেকসই নয় এবং তা কমিয়ে চার শতাংশ করার অনুরোধ করে। ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশোধিত সুদহারে ঋণ অনুমোদন করে। আবু আহমেদ বলেন, ‘বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ জোরদার করার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে আইসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি করাই এই আর্থিক সহায়তার লক্ষ্য।’

দাম বৃদ্ধির এক ঘণ্টার মধ্যেই বাজারে সয়লাব বোতলজাত সয়াবিন তেল

সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এই খবরে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখা মেলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। অথচ গত কয়েকদিনে সয়াবিন তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না গত কয়েক দিনে মানুষের মুখে মুখে শোনা গেছে এই খবরটি,বাজারে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়া দেশের প্রত্যন্ত এলাকাতেও 'তেল নেই' এমন খবর পাওয়া যায়। এই সংকটের মধ্যেই সোমবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এই খবরে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখে মেলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। অথচ গত কয়েকদিনে সয়াবিন তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৫৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার পর এক ঘণ্টাও অতিবাহিত হয়নি। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেখে গেছে বোতলজাত সয়াবিন তেল।

‘জেড ক্যাটাগরি’ ইস্যুতে যা জানাল বিএসইসি

পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ‘জেড ক্যাটাগরি’ সংক্রান্ত ইস্যুতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কি উদ্যোগ নিয়েছে তা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সোমবার (৯ নভেম্বর) পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ‘জেড ক্যাটাগরি’ সংক্রান্ত ইস্যুতে বিএসইসির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানায় বিএসইসি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএসইসির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসির ক্যাটাগরি ‘জেড’ থেকে ‘এ’-তে উন্নীত হয়েছে। বিএসইসির তড়িৎ পদক্ষেপ ও আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই ওই তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ বিতরণজনিত নন-কমপ্লায়েন্সের বিষয়টির কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়েছে।’ বিএসইসি থেকে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে আয়োজিত সভায় জেড ক্যাটাগরিতে অবনমনপ্রাপ্ত কনফিডেন্স সিমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল। ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিএসইসির ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/সিইও, চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ও কোম্পানি সচিবকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। মূলত লভ্যাংশ বিতরণজনিত নন-কমপ্লায়েন্সের কারণে কনফিডেন্স সিমেন্টকে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমন করা হয় এবং ওই প্রসঙ্গেই আলোচনার জন্য কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল। এরই মধ্যে কনফিডেন্স সিমেন্ট সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের দশ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে ও কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৮ ডিসেম্বর) কনফিডেন্স সিমেন্টকে ‘জেড’ থেকে ‘এ’-তে উন্নীত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বিএসইসি থেকে জানানো হয়েছে, দেশের শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে লভ্যাংশ বিতরণ জনিত নন-কমপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন কারণে জেড ক্যাটাগরিতে অবনমন প্রসঙ্গে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা ও ওই লভ্যাংশ বিধিমোতাবেক বিতরণ করার জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করছে বিএসইসি। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আগামীতেও দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসির এ ধরনের কার্যক্রম ও উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা ও ওই লভ্যাংশ বিধিমোতাবেক বিতরণ যেসব কোম্পানি করবে না, সেসব কোম্পানি ও তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিএসইসি কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

ভোজ্যতেলের মূল্য লিটারে আট টাকা বাড়াল সরকার

ভোজ্যতেলের বাজারে কয়েক দিন ধরে চলা ‘অস্থির’ অবস্থার মধ্যে বোতলজাত সয়াবিন তেল ও খোলা তেলের মূল্য প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছে। গেল দুই দিন ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী মিলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অবশেষে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের এ দাম নির্ধারণ করল সরকার। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৭ টাকা। বর্তমানে তা ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খোলা তেল ছিল ১৪৯ টাকা। বর্তমানে তা ১৫৭ টাকা করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববাজারে দোহাই দিয়ে বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় দেশের পরিশোধনকারী মিলমালিকেরা। এতে সরকার একধরনের নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াতে বাধ্য হল। এর আগে মিলমালিকদের প্রতিনিধিরা জানান, বিশ্ববাজারে দামের তুলনায় বর্তমানে প্রতি লিটারে দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি তারা মেনে নেবেন। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অনেকেই তা বিক্রি করছেন। অনেকে বোতল কেটে খোলাবাজারে তেল বিক্রি করছেন। সংবাদ সম্মেলনে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৫৭ টাকা। আগে বোতলজাত তেল ১৬৭ টাকা ও খোলা তেল ১৪৯ টাকা ছিল। নতুন নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি ও বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মনিটরিং জোরদার করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে তেলের ঘাটতি রয়েছে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভোক্তারাও অস্বস্তিতে রয়েছে। সেজন্য আমরা তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, বাজারে আর তেলের সরবরাহের ঘাটতি হবে না।’ শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘শেষ এপ্রিলে ১৬৭ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে দেশে স্থানীয় মজুদদারি বেড়েছে। তবে, তেলের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। অনেকে কিনে মজুদ করেছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সেটা মনিটরিং করছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এখন একটি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না।’ সাংবাদিকদের এক এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে, আলুর দামে চরম অস্থিরতা এখনও আছে। সেটাও নতুন আলু উঠলে দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি। ’ এ সময় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে আমরা কীভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম এক হাজার ২০০ ডলারে উঠেছে। গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল এক হাজার ৩৫ ডলার। এখন আমরা এক হাজার ১০০ ডলার ধরে লিটারে আট টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল এক হাজার ২০০ ডলারে খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে। সে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে। কারণ, বিশ্ববাজার এখনও স্থিতিশীল নয়।’